ঢাকা ০৯:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দেড়’শ বছরের পুরাতন ঐতিহ্য জমিদার বাড়ী আজো কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে

বাগেরহাট সংবাদাতা
  • আপডেট সময় : ০৫:১৭:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৬৫৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বৃটিশ শাষনামলে জমিদারি প্রথা শাষন ব্যবস্থা বিলুপ্তি হলেও আজো কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে দেড়’শ বছরের পুরাতন দুটি ভবন জমিদার জিতেন্দ্রনাথ দাসের  জমিদার বাড়ী। এ ভবন দুটি একটিতে এক সময় ব্যবহার হতো বৈঠক খানা, আরেকটিতে জমিদার নিজেই বসবাস করতেন। বর্তমানে এ ভবনগুলো জরাজীর্ণ, পরিত্যাক্ত। চারিদিক থেকে ভবনের চারুকার্য পলেস্তারা ভেঙ্গে পড়ে রুগ্ন শুগ্ন হয়ে দাড়িয়ে আছে এ ভবন দুটি। ঝুকিপূর্ণ ভবনে বসবাস করছেন এক সময় জমিদারদের দেখভালের বংশ পরম্পরা দুটি পরিবার। ইতিহাস এতিহ্য রক্ষার্থে ভবনগুলো সংস্কার ও মেরামত হওয়া জরুরী হয়ে পড়ছে বলে মনে করেছেন এলাকার অভিজ্ঞ সচেতন মহল। প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও ভুমিকম্পের কারনে একসময় হতে পারে বড় ধরনের দূঘটনার কারন।

সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে, পানগুছি নদীর তীরবর্তী সুন্দরবন ঘেষা সরালিয়া মৌজা পরবর্তীতে ইংলিশ শাষনামলে রবার্ট মোড়েলের নামে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ উপজেলাটির নামকরণ করা হয়েছে মোরেলগঞ্জ উপজেলা। ব্যবসার দিক থেকে বড় বন্দর হিসেবে খ্যাত এক সময় ছোট কলকাতা হিসেবে পরিচিত ছিল এ বন্দরটি। দেশ বিদেশের অনেক সওদাগাররা এখানে আসতেন বড় বড় ডিঙ্গা ও গহনার নৌকায় নিয়ে বানিজ্য করতে। আজ তা শুধুই স্মৃতি। এরকম এ উপজেলার জমিদার জিতেন্দ্রনাথ দাস, বৃটিশ শাষিত শাষনাকালে সুন্দরবন পরগনায় ৮হাজার বিঘার তল্লাটে জমির মালিক জমিদার প্রথা প্রজা ছিলো তার। স্বাধীনতার পরবর্তীতে পরিবারের তার স্ত্রী সন্তান তাকে একা রেখে চলে গেছেন। সেখানে থেকে সে একা থেকেই তার ব্যবসা বানিজ্য দেখাশুনা করতেন।

৯২ বছর বয়সি জমিদার জিতেন্দ্র নাথ দাস ১৯৮৯ সালে মৃত্যবরণ করেন। তিনি জীবিত থাকাকালিন স্বাধীনতার পরপরই তার অনেক জমি হাত ছাড়া বেদখল হয়ে যায়। সরকারের তত্ত¡াবধয়নে খাস হয়ে যায় অধিকাংশ জমি। এক পর্যায়ে তার ছোট বোনের ছেলে ভাগ্নে বিমান কুমার রায়কে ১৯৮৯ সালে ২২ একর জমি উইল করে দেন। এ ছাড়াও তার মুল ২য়তলা বাসভবন দুটির ২৫ শতক জমি ভাগ্নের নামে দান করে যান। বর্তমানে এ জমি নিয়ে বাগেরহাট  জেলা বিজ্ঞ সিনিয়র দায়রা জজ ট্রাইবুন্যাল আদালতে ২০১২ সাল থেকে মামলা চলমান রয়েছে। জমিদার বাড়িটি দেখভালের দায়িত্ব থাকা বাড়ীর মালিক  জিতেন বাবুর ভাগ্নে বিমান কুমার রায় জানান ১৯৭৪ সালে মামা জমিদার জিতেন্দ্র নাথ দাস কাছাড়ী ঘরটি এখনকার কৃষি ভবন ২৫০ টাকা মাসিক ভাড়া পরবর্তীতে ৪শ টাকা ভাড়ায় চুক্তিতে ব্যাংকের নিকট ভবনটি ভাড়া দেয়। সেখান থেকে তৎকালীন ব্যাংক  ম্যানেজার কাগজপত্র তৈরী করে জমি ভিপি দেখিয়ে সরকারের তত্তাবধায়নে মামলা দায়ের করে জোড় পূর্বক দখল করে রয়েছেন। এছাড়াও জমিদার জিতেন বাবুর বেদখল হওয়া জমি বর্তমান সরকারী বালিকা বিদ্যালয় ভবন, হোষ্টেল রুমের জায়গা বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের জায়গা নিয়ে ট্রাইবুনালে মামলা করা হয়েছে। বেদখলকৃত জমি অবমুক্ত করণসহ  নিজেদের দখলের জন্য আদালতে দায়েকৃত মামলা চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মিলন কুমার লস্কর বলেন, কৃষি ব্যাংকের ভবনটি তাদের নিজ সম্পত্বি ০.০৮৭৪ শতক জমিতে ১৯৭৬ সালে ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়। তাদের গ্রাহক সংখ্যা রয়েছে  ১৬ হাজার। ভবনটি ঝুকিপূর্ণ  পরিত্যাক্ত হওয়ায় ব্যাংকিং কাযৃক্রম সদ্য মূল ভবন থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

এ সম্পর্কে উজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম তারেক সুলতান বলেন, এ উপজেলার ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষনের জন্য কুঠিবাড়ী ভবনসহ বেশ কয়েকটি ভবনের সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে ঊর্ধতন কর্তপক্ষকে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। এমনকি এ ঐতিহ্য সংরক্ষরণে প্রতœতত্ত অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।

 

বাখ//আর

নিউজটি শেয়ার করুন

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দেড়’শ বছরের পুরাতন ঐতিহ্য জমিদার বাড়ী আজো কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে

আপডেট সময় : ০৫:১৭:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩

বৃটিশ শাষনামলে জমিদারি প্রথা শাষন ব্যবস্থা বিলুপ্তি হলেও আজো কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে দেড়’শ বছরের পুরাতন দুটি ভবন জমিদার জিতেন্দ্রনাথ দাসের  জমিদার বাড়ী। এ ভবন দুটি একটিতে এক সময় ব্যবহার হতো বৈঠক খানা, আরেকটিতে জমিদার নিজেই বসবাস করতেন। বর্তমানে এ ভবনগুলো জরাজীর্ণ, পরিত্যাক্ত। চারিদিক থেকে ভবনের চারুকার্য পলেস্তারা ভেঙ্গে পড়ে রুগ্ন শুগ্ন হয়ে দাড়িয়ে আছে এ ভবন দুটি। ঝুকিপূর্ণ ভবনে বসবাস করছেন এক সময় জমিদারদের দেখভালের বংশ পরম্পরা দুটি পরিবার। ইতিহাস এতিহ্য রক্ষার্থে ভবনগুলো সংস্কার ও মেরামত হওয়া জরুরী হয়ে পড়ছে বলে মনে করেছেন এলাকার অভিজ্ঞ সচেতন মহল। প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও ভুমিকম্পের কারনে একসময় হতে পারে বড় ধরনের দূঘটনার কারন।

সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে, পানগুছি নদীর তীরবর্তী সুন্দরবন ঘেষা সরালিয়া মৌজা পরবর্তীতে ইংলিশ শাষনামলে রবার্ট মোড়েলের নামে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ উপজেলাটির নামকরণ করা হয়েছে মোরেলগঞ্জ উপজেলা। ব্যবসার দিক থেকে বড় বন্দর হিসেবে খ্যাত এক সময় ছোট কলকাতা হিসেবে পরিচিত ছিল এ বন্দরটি। দেশ বিদেশের অনেক সওদাগাররা এখানে আসতেন বড় বড় ডিঙ্গা ও গহনার নৌকায় নিয়ে বানিজ্য করতে। আজ তা শুধুই স্মৃতি। এরকম এ উপজেলার জমিদার জিতেন্দ্রনাথ দাস, বৃটিশ শাষিত শাষনাকালে সুন্দরবন পরগনায় ৮হাজার বিঘার তল্লাটে জমির মালিক জমিদার প্রথা প্রজা ছিলো তার। স্বাধীনতার পরবর্তীতে পরিবারের তার স্ত্রী সন্তান তাকে একা রেখে চলে গেছেন। সেখানে থেকে সে একা থেকেই তার ব্যবসা বানিজ্য দেখাশুনা করতেন।

৯২ বছর বয়সি জমিদার জিতেন্দ্র নাথ দাস ১৯৮৯ সালে মৃত্যবরণ করেন। তিনি জীবিত থাকাকালিন স্বাধীনতার পরপরই তার অনেক জমি হাত ছাড়া বেদখল হয়ে যায়। সরকারের তত্ত¡াবধয়নে খাস হয়ে যায় অধিকাংশ জমি। এক পর্যায়ে তার ছোট বোনের ছেলে ভাগ্নে বিমান কুমার রায়কে ১৯৮৯ সালে ২২ একর জমি উইল করে দেন। এ ছাড়াও তার মুল ২য়তলা বাসভবন দুটির ২৫ শতক জমি ভাগ্নের নামে দান করে যান। বর্তমানে এ জমি নিয়ে বাগেরহাট  জেলা বিজ্ঞ সিনিয়র দায়রা জজ ট্রাইবুন্যাল আদালতে ২০১২ সাল থেকে মামলা চলমান রয়েছে। জমিদার বাড়িটি দেখভালের দায়িত্ব থাকা বাড়ীর মালিক  জিতেন বাবুর ভাগ্নে বিমান কুমার রায় জানান ১৯৭৪ সালে মামা জমিদার জিতেন্দ্র নাথ দাস কাছাড়ী ঘরটি এখনকার কৃষি ভবন ২৫০ টাকা মাসিক ভাড়া পরবর্তীতে ৪শ টাকা ভাড়ায় চুক্তিতে ব্যাংকের নিকট ভবনটি ভাড়া দেয়। সেখান থেকে তৎকালীন ব্যাংক  ম্যানেজার কাগজপত্র তৈরী করে জমি ভিপি দেখিয়ে সরকারের তত্তাবধায়নে মামলা দায়ের করে জোড় পূর্বক দখল করে রয়েছেন। এছাড়াও জমিদার জিতেন বাবুর বেদখল হওয়া জমি বর্তমান সরকারী বালিকা বিদ্যালয় ভবন, হোষ্টেল রুমের জায়গা বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের জায়গা নিয়ে ট্রাইবুনালে মামলা করা হয়েছে। বেদখলকৃত জমি অবমুক্ত করণসহ  নিজেদের দখলের জন্য আদালতে দায়েকৃত মামলা চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মিলন কুমার লস্কর বলেন, কৃষি ব্যাংকের ভবনটি তাদের নিজ সম্পত্বি ০.০৮৭৪ শতক জমিতে ১৯৭৬ সালে ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়। তাদের গ্রাহক সংখ্যা রয়েছে  ১৬ হাজার। ভবনটি ঝুকিপূর্ণ  পরিত্যাক্ত হওয়ায় ব্যাংকিং কাযৃক্রম সদ্য মূল ভবন থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

এ সম্পর্কে উজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম তারেক সুলতান বলেন, এ উপজেলার ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষনের জন্য কুঠিবাড়ী ভবনসহ বেশ কয়েকটি ভবনের সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে ঊর্ধতন কর্তপক্ষকে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। এমনকি এ ঐতিহ্য সংরক্ষরণে প্রতœতত্ত অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।

 

বাখ//আর