ঢাকা ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ফারাবির তৈরি টেলিস্কোপে ঘরে বসে দেখা যাচ্ছে মহাকাশসহ চাঁদ, সূর্য ও নক্ষত্র

আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজারহাট প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৪:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৪২৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজারহাটে ফাহাদ আল ফারাবির তৈরি টেলিস্কোপে ঘরে বসে দেখা যাচ্ছে ৩লাখ কিলোমিটার দুরের মহাকাশসহ চাঁদ,সূর্য ও নক্ষত্র। এবছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের পর অবসর সময়ে নিজের মেধা ও প্রযুক্তির ব্যবহারে ঘরে বসেই তিনি তৈরি করেছেন একটি টেলিস্কোপ। বাড়ির পোষা বিড়ালের নামে এর নাম করন করা হয়েছে (ঘঊকঙ-ক-১) নিকো কে-১।

ফাহাদ আল ফারাবি উপজেলা সদরের মেকুরটারী গ্রামের জয়নুল আবেদীন ও পারভীন দম্পত্তির কনিষ্ট পুত্র। সে এবছর রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।

জানা গেছে, বাল্যকাল থেকেই মহাকাশ সম্পর্কে জানার ব্যাপক আগ্রহ ছিল ফারাবির। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি মহাকাশ সম্পর্কিত বই পুস্তক ও পড়তেন ফারাবি। পরে বাজারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন,একটি টেলিস্কোপ ক্রয় করতে প্রায় ৫০ হাজার টাকার প্রয়োজন। এত টাকা ব্যয়ে টেলিস্কোপ ক্রয় না করে তিনি অল্প খরচে নিজে টেলিস্কোপ তৈরির মনোস্থ করেন। ২০২১ সনের শেষ দিকে টেলিস্কোপ তৈরির যন্ত্রাংশ সংগ্রহ শুরু করেন ফারাবি। পরে ২০২৩ সনে টেলিস্কোপ তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি। ফারাবির বড় ভাই ফাহমিদ আল জাবেরও তাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সহযোগিতা করেন। চলতি মাসে পূর্ণাঙ্গ রুপ পায় টেলিস্কোপটি। টেলিস্কোপ তৈরিতে সরকারি ভাবে তাকে সহযোগিতা করা হলে আগ্রহিদের মাঝে স্বল্প মূল্যে তিনি টেলিস্কোপ সরবরাহ করার ইচ্ছা পোষন করেন।

ফারাবি বলেন,মহাকাশ নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আমার ছোট বেলার। তবে ইনষ্টুমেন্ট ও এস্ট্রোনমি না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে ২০২৩সনে ঢাকার একটি এস্ট্রোনমি হাউজ থেকে যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে টেলিস্কোপ বানানো শুরু করি।

তিনি আরো বলেন, এটি তৈরিতে মূলত পিভিসি পাইপ, লেন্স, মাউন্ট, ফোকাল, অ্যাপারচার, মেটাল থ্রিডি স্পাইডার, মিরর, ফোকাসার এবং কাঠের প্রয়োজন হয়েছে। এটির ওজন প্রায় ১২ কেজি। ভবিষ্যতে আরও টেলিস্কোপ ও মাইক্রো টেলিস্কোপ বানানোর ইচ্ছা পোষন করেন।

ফারাবির পিতা জয়নুল আবেদিন বলেন,দাবা খেলায় পারদর্শী ফারাবি জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে দাবা খেলে নগদ প্রাপ্ত পুরস্কারের অর্থ দিয়ে টেলিস্কোপ বানানো শুরুর পর আমি কিছু টাকা দিয়েছি। এতে মাট ১৭হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান। তিনি ছেলের উন্নত ভবিষ্যৎ কামনা করেন তিনি।

ফারাবির তৈরি টেলিস্কোপ দিয়ে তিন লক্ষ কিলোমিটার দূরের মহাকাশ ও চাঁদ-সূর্য দেখতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন দর্শনার্থী ইসলাম মিয়া।

তার বন্ধু রাফিউল বলেন, ফারাবি অহেতুক আড্ডা পছন্দ করে না, টেলিস্কোপ তৈরিতে আমি তাকে সময় দিয়েছি।
রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মোফাকখারুল ইসলাম বলেন,আগে থেকে মেধাবি শিক্ষার্থী ফারাবি সৃজনশীল কাজে বেশ আগ্রহি ছিল।

রাজারহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন,ছোট মানুষ স্থানীয় উপকরণ দিয়ে টেলিস্কোপ তৈরি করেছে এটি অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। উপজেলা পর্যায়ে আগামি বিজ্ঞান মেলায় তার টেলিস্কোপ প্রদর্শনেরও ইচ্ছা পোষন করেন তিনি।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন,ফারাবির প্রতিভা বিকাশে চাহিদা মোতাবেক সরকারি ভাবে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

 

বাখ//আর

নিউজটি শেয়ার করুন

ফারাবির তৈরি টেলিস্কোপে ঘরে বসে দেখা যাচ্ছে মহাকাশসহ চাঁদ, সূর্য ও নক্ষত্র

আপডেট সময় : ০৪:৩৪:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

রাজারহাটে ফাহাদ আল ফারাবির তৈরি টেলিস্কোপে ঘরে বসে দেখা যাচ্ছে ৩লাখ কিলোমিটার দুরের মহাকাশসহ চাঁদ,সূর্য ও নক্ষত্র। এবছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের পর অবসর সময়ে নিজের মেধা ও প্রযুক্তির ব্যবহারে ঘরে বসেই তিনি তৈরি করেছেন একটি টেলিস্কোপ। বাড়ির পোষা বিড়ালের নামে এর নাম করন করা হয়েছে (ঘঊকঙ-ক-১) নিকো কে-১।

ফাহাদ আল ফারাবি উপজেলা সদরের মেকুরটারী গ্রামের জয়নুল আবেদীন ও পারভীন দম্পত্তির কনিষ্ট পুত্র। সে এবছর রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।

জানা গেছে, বাল্যকাল থেকেই মহাকাশ সম্পর্কে জানার ব্যাপক আগ্রহ ছিল ফারাবির। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি মহাকাশ সম্পর্কিত বই পুস্তক ও পড়তেন ফারাবি। পরে বাজারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন,একটি টেলিস্কোপ ক্রয় করতে প্রায় ৫০ হাজার টাকার প্রয়োজন। এত টাকা ব্যয়ে টেলিস্কোপ ক্রয় না করে তিনি অল্প খরচে নিজে টেলিস্কোপ তৈরির মনোস্থ করেন। ২০২১ সনের শেষ দিকে টেলিস্কোপ তৈরির যন্ত্রাংশ সংগ্রহ শুরু করেন ফারাবি। পরে ২০২৩ সনে টেলিস্কোপ তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি। ফারাবির বড় ভাই ফাহমিদ আল জাবেরও তাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সহযোগিতা করেন। চলতি মাসে পূর্ণাঙ্গ রুপ পায় টেলিস্কোপটি। টেলিস্কোপ তৈরিতে সরকারি ভাবে তাকে সহযোগিতা করা হলে আগ্রহিদের মাঝে স্বল্প মূল্যে তিনি টেলিস্কোপ সরবরাহ করার ইচ্ছা পোষন করেন।

ফারাবি বলেন,মহাকাশ নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আমার ছোট বেলার। তবে ইনষ্টুমেন্ট ও এস্ট্রোনমি না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে ২০২৩সনে ঢাকার একটি এস্ট্রোনমি হাউজ থেকে যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে টেলিস্কোপ বানানো শুরু করি।

তিনি আরো বলেন, এটি তৈরিতে মূলত পিভিসি পাইপ, লেন্স, মাউন্ট, ফোকাল, অ্যাপারচার, মেটাল থ্রিডি স্পাইডার, মিরর, ফোকাসার এবং কাঠের প্রয়োজন হয়েছে। এটির ওজন প্রায় ১২ কেজি। ভবিষ্যতে আরও টেলিস্কোপ ও মাইক্রো টেলিস্কোপ বানানোর ইচ্ছা পোষন করেন।

ফারাবির পিতা জয়নুল আবেদিন বলেন,দাবা খেলায় পারদর্শী ফারাবি জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে দাবা খেলে নগদ প্রাপ্ত পুরস্কারের অর্থ দিয়ে টেলিস্কোপ বানানো শুরুর পর আমি কিছু টাকা দিয়েছি। এতে মাট ১৭হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান। তিনি ছেলের উন্নত ভবিষ্যৎ কামনা করেন তিনি।

ফারাবির তৈরি টেলিস্কোপ দিয়ে তিন লক্ষ কিলোমিটার দূরের মহাকাশ ও চাঁদ-সূর্য দেখতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন দর্শনার্থী ইসলাম মিয়া।

তার বন্ধু রাফিউল বলেন, ফারাবি অহেতুক আড্ডা পছন্দ করে না, টেলিস্কোপ তৈরিতে আমি তাকে সময় দিয়েছি।
রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মোফাকখারুল ইসলাম বলেন,আগে থেকে মেধাবি শিক্ষার্থী ফারাবি সৃজনশীল কাজে বেশ আগ্রহি ছিল।

রাজারহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন,ছোট মানুষ স্থানীয় উপকরণ দিয়ে টেলিস্কোপ তৈরি করেছে এটি অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। উপজেলা পর্যায়ে আগামি বিজ্ঞান মেলায় তার টেলিস্কোপ প্রদর্শনেরও ইচ্ছা পোষন করেন তিনি।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন,ফারাবির প্রতিভা বিকাশে চাহিদা মোতাবেক সরকারি ভাবে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

 

বাখ//আর