ঢাকা ১০:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পয়োবর্জ্যের কারণে লেকে মাছ ছাড়তে পারছে না ডিএনসিসি : মেয়র আতিক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৩:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৪৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, পয়োবর্জ্যের কারণে লেকগুলোর পানি দূষিত হয়ে গেছে। তাই লেকে মাছ চাষ করা যাচ্ছে না। মশা নিধনে ন্যাচারাল সলিউশন সম্ভব হচ্ছে না মাছ চাষ করতে না পারার কারণে। আমরা ড্রেন ও খাল আর দূষিত হতে দেবো না।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর বারিধারা এলাকায় পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে, খালে বা লেকে দেওয়া বন্ধ করতে অভিযান শেষে তিনি এ কথা বলেন।

আতিকুল ইসলাম বলেন, মশা নিধনে ন্যাচারাল সলিউশন সম্ভব হচ্ছে না মাছ চাষ করতে না পারার কারণে। গুলশান, বারিধারা, নিকেতন, বনানী লেকে যদি এমন পয়োবর্জ্যের কারণে পানি দূষিত না হতো তাহলে আমরা মাছ চাষ করতে পারতাম এসব খালে। অভিজাত এলাকার অসচেতন মানুষের কারণে লেকের পানি বারবার দূষিত হচ্ছে। তবে আমরা ড্রেন ও খাল আর দূষিত হতে দেব না। তারা যদি সারফেস ড্রেন থেকে পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ সরিয়ে না নেয়, বাড়ির মালিকরা অনতিবিলম্বে নিজ থেকে এসব সংযোগ বন্ধ না করে, তাহলে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেবে ডিএনসিসি।

তিনি বলেন, লাইনে পয়োবর্জ্যের সংযোগ কোনোভাবেই দেওয়া যাবে না। ওয়াসার পৃথক লাইনে এসব বাড়ির বর্জ্য যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি নেই। যেখানে ওয়াসার লাইন নেই সেখানে নিজস্ব ব্যবস্থায় ইটিপি প্ল্যান্ট বসিয়ে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করব। গুলশান, বারিধারার পর আমরা বনানী ও নিকেতন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করব।

এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, দেশের সবচেয়ে অভিজাত এলাকা হিসেবে খ্যাত বারিধারার ৫৫০টি বাড়ির মধ্যে ৩৪২ বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেওয়া হয়েছে। সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী বেঁধে দেওয়া আট স্তরের ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে বারিধারা এলাকার মাত্র পাঁচটি বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেওয়া হয়নি। এছাড়াও ২০৩টি বাড়ি আটটি শর্তের মধ্যে কিছু শর্ত পূরণ করেছে। অন্যদিকে একদমই শর্ত পূরণ করেনি ৩৪২টি বাড়ি, যাদের পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে। অভিজাত এলাকায় ড্রেন-খালে পয়োবর্জ্যের সংযোগ খুবই দুঃখজনক।

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, একটি অভিজাত এলাকায় যদি এমন চিত্র আমাদের দেখতে হয় তাহলে আর কী করার? অভিজাত এলাকায় পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ খুবই দুঃখজনক। বারবার বলছি সিটি করপোরেশনের স্যুয়ারেজ লাইনে পয়োবর্জ্যের সংযোগ দেওয়া যাবে না। ওয়াসার পৃথক লাইনে এসব বাড়ির বর্জ্য যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি নেই। যেখানে ওয়াসার লাইন নেই সেখানে নিজস্ব ব্যবস্থায় ইটিপি প্ল্যান্ট বসিয়ে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে। আজ আমরা দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান পরিচালনা করেছি। পরে বনানী ও নিকেতন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।

অভিযানের অংশ হিসেবে বারিধারা ১১ নম্বর সড়কের চারটি বাড়ির সামনে ড্রেনে কলাগাছ দিয়ে সারফেস ড্রেন থেকে পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাড়ির মালিকরা অনতিবিলম্বে নিজ থেকে এসব সংযোগ বন্ধ না করলে স্থায়ীভাবে বন্ধ করারও হুঁশিয়ারি দেন ডিএনসিসি মেয়র।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতন এলাকায় ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. মুজিবুর রহমান, ঢাকা ওয়াসার প্রতিনিধি, বুয়েট প্রতিনিধি, হাউজিং সোসাইটির প্রতিনিধি এবং ইউনেসেফের প্রতিনিধির সমন্বয়ে সাসটেইনশন কমপ্লাইন্স কমিটি জরিপ কাজটির তত্ত্বাবধান করেছে। চারটি এলাকার ৩ হাজার ৮৩০টি বাড়িতে জরিপ করা হয়। এই বাড়িগুলোর মধ্যে ৩ হাজার ২৬৫টি বাড়ির পয়োবর্জ্য সরাসরি সারফেস ড্রেন ও লেকে পড়ছে। মাত্র ৪১টি বাড়িতে পয়োবর্জ্যের সংযোগ সঠিকভাবে দেওয়া আছে এবং ৫২৪টি বাড়িতে আংশিকভাবে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে। ফলে লেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে ও মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসির সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হাছিনা বারী চৌধুরী প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

পয়োবর্জ্যের কারণে লেকে মাছ ছাড়তে পারছে না ডিএনসিসি : মেয়র আতিক

আপডেট সময় : ০৭:৫৩:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, পয়োবর্জ্যের কারণে লেকগুলোর পানি দূষিত হয়ে গেছে। তাই লেকে মাছ চাষ করা যাচ্ছে না। মশা নিধনে ন্যাচারাল সলিউশন সম্ভব হচ্ছে না মাছ চাষ করতে না পারার কারণে। আমরা ড্রেন ও খাল আর দূষিত হতে দেবো না।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর বারিধারা এলাকায় পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে, খালে বা লেকে দেওয়া বন্ধ করতে অভিযান শেষে তিনি এ কথা বলেন।

আতিকুল ইসলাম বলেন, মশা নিধনে ন্যাচারাল সলিউশন সম্ভব হচ্ছে না মাছ চাষ করতে না পারার কারণে। গুলশান, বারিধারা, নিকেতন, বনানী লেকে যদি এমন পয়োবর্জ্যের কারণে পানি দূষিত না হতো তাহলে আমরা মাছ চাষ করতে পারতাম এসব খালে। অভিজাত এলাকার অসচেতন মানুষের কারণে লেকের পানি বারবার দূষিত হচ্ছে। তবে আমরা ড্রেন ও খাল আর দূষিত হতে দেব না। তারা যদি সারফেস ড্রেন থেকে পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ সরিয়ে না নেয়, বাড়ির মালিকরা অনতিবিলম্বে নিজ থেকে এসব সংযোগ বন্ধ না করে, তাহলে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেবে ডিএনসিসি।

তিনি বলেন, লাইনে পয়োবর্জ্যের সংযোগ কোনোভাবেই দেওয়া যাবে না। ওয়াসার পৃথক লাইনে এসব বাড়ির বর্জ্য যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি নেই। যেখানে ওয়াসার লাইন নেই সেখানে নিজস্ব ব্যবস্থায় ইটিপি প্ল্যান্ট বসিয়ে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করব। গুলশান, বারিধারার পর আমরা বনানী ও নিকেতন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করব।

এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, দেশের সবচেয়ে অভিজাত এলাকা হিসেবে খ্যাত বারিধারার ৫৫০টি বাড়ির মধ্যে ৩৪২ বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেওয়া হয়েছে। সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী বেঁধে দেওয়া আট স্তরের ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে বারিধারা এলাকার মাত্র পাঁচটি বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেওয়া হয়নি। এছাড়াও ২০৩টি বাড়ি আটটি শর্তের মধ্যে কিছু শর্ত পূরণ করেছে। অন্যদিকে একদমই শর্ত পূরণ করেনি ৩৪২টি বাড়ি, যাদের পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে। অভিজাত এলাকায় ড্রেন-খালে পয়োবর্জ্যের সংযোগ খুবই দুঃখজনক।

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, একটি অভিজাত এলাকায় যদি এমন চিত্র আমাদের দেখতে হয় তাহলে আর কী করার? অভিজাত এলাকায় পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ খুবই দুঃখজনক। বারবার বলছি সিটি করপোরেশনের স্যুয়ারেজ লাইনে পয়োবর্জ্যের সংযোগ দেওয়া যাবে না। ওয়াসার পৃথক লাইনে এসব বাড়ির বর্জ্য যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি নেই। যেখানে ওয়াসার লাইন নেই সেখানে নিজস্ব ব্যবস্থায় ইটিপি প্ল্যান্ট বসিয়ে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে। আজ আমরা দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান পরিচালনা করেছি। পরে বনানী ও নিকেতন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।

অভিযানের অংশ হিসেবে বারিধারা ১১ নম্বর সড়কের চারটি বাড়ির সামনে ড্রেনে কলাগাছ দিয়ে সারফেস ড্রেন থেকে পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাড়ির মালিকরা অনতিবিলম্বে নিজ থেকে এসব সংযোগ বন্ধ না করলে স্থায়ীভাবে বন্ধ করারও হুঁশিয়ারি দেন ডিএনসিসি মেয়র।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতন এলাকায় ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. মুজিবুর রহমান, ঢাকা ওয়াসার প্রতিনিধি, বুয়েট প্রতিনিধি, হাউজিং সোসাইটির প্রতিনিধি এবং ইউনেসেফের প্রতিনিধির সমন্বয়ে সাসটেইনশন কমপ্লাইন্স কমিটি জরিপ কাজটির তত্ত্বাবধান করেছে। চারটি এলাকার ৩ হাজার ৮৩০টি বাড়িতে জরিপ করা হয়। এই বাড়িগুলোর মধ্যে ৩ হাজার ২৬৫টি বাড়ির পয়োবর্জ্য সরাসরি সারফেস ড্রেন ও লেকে পড়ছে। মাত্র ৪১টি বাড়িতে পয়োবর্জ্যের সংযোগ সঠিকভাবে দেওয়া আছে এবং ৫২৪টি বাড়িতে আংশিকভাবে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে। ফলে লেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে ও মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসির সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হাছিনা বারী চৌধুরী প্রমুখ।