ঢাকা ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না : ফখরুল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:১০:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪৪২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সিলেট ব্যুরো অফিস : 
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এই দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না। যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন করবে তাদের চিহ্নিত করা হবে। তারা গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবে।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে বক্তব্যকালে এই কথা বলেন তিনি।

সিলেটবাসীর উদ্দেশ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আপনারা নতুন যুদ্ধে নেমেছেন। এই যুদ্ধ মুক্তির যুদ্ধ। এ যুদ্ধ নিজের অধিকার ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ। এ যুদ্ধ নিজের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ। শাহজালাল রাহ. যেভাবে যুদ্ধ করে সিলেটে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন, আপনাদের সিলেট থেকেই আজ নতুন যুদ্ধ শুরু হলো। এ যুদ্ধ সরকারকে হটিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ। এই সিলেট থেকেই মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। আজকে এই স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র ফেরাতে এই সিলেট থেকেই আবার যুদ্ধ শুরু হলো।

বিএনপির এই নেতা বলেন, গত ১৪ বছরে এই সরকার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। এই সরকারের বিচার হবে জনগণের আদালতে। মানুষের সব অধিকার কেড়ে নেওয়ার অপরাধে এই বিচার হবে।

তিনি আরো বলেন, সাধারণ, খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষক শ্রমিক কিন্তু এখন শান্তিতে নেই। সরকার ১০ টাকা দরে চাল খাওয়াবে বলে এখন ৭০/৮০ টাকায় চাল খাওয়াচ্ছে। চিনির দাম বেড়েছে, শাক-সবজি, ডিমের দাম বেড়েছে। একজন কৃষক-শ্রমিক তার ছেলের মুখে ডিম তুলে দিতে পারছে না। এই সরকার এদেশের প্রত্যেক তরুণের স্বপ্নকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। বাংলাদেশের তিন কোটি মানুষ এখন বেকার। তাই প্রত্যেক তরুণ, যুবকের স্বপ্ন দেশকে গড়ে তুলবে। ভোট চুরি করে মানুষের স্বপ্নকে ভেঙে দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার বিচার হবে জনতার আদালতে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার আবারও মামলা-হামলার খেলা শুরু করেছে। গায়েবি মামলার আসামি করা হচ্ছে। হবিগঞ্জের লাখাইয়ে পুলিশ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ মিলে নেতাকর্মীদের ওপর মামলা দিয়েছে। এই অত্যাচার জুলুম বন্ধ করতে হবে। জনগণের অধিকার আদায় করে নিতে হবে। আমরা দেশে শান্তি চাই। এক দফা এক দাবি, এই সরকারের পদত্যাগ।

নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার আবার নতুন করে খেলা শুরু করেছে। গায়েবি মামলা দিয়ে নেতা-কর্মীদের হয়রানি করেছে। তারা আবার হুমকি দেয় আমাদের নাকি খেলাফত মজলিশ ও হেফাজতের মতো অবস্থা করবে। কোনও কিছুই ঘটেনি। তবু তারা নাশকতার কথা বলে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। আমি বলতে চাই, হুমকি-ধমকিতে কাজ হবে না। জনগণ আজ জেগে উঠেছে। জনগণ বিজয় ছাড়া ঘরে ফিরবে না।

সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা কথায় কথায় সংবিধানের কথা বলেন। বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কোন সংবিধানের কথা আপনারা বলেন, যে সংবিধান আপনারা ১০ বার টানাহেঁচড়া করেছেন, সেই সংবিধানের?’

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী কেবল সংবিধানের দোহাই দেন। এই সংবিধান তো তিনি সংশোধন করিয়েছেন। এই সংবিধান আমরা মানি না। আর যদি একটি মিথ্যে মামলা দেয়া হয় তবে জনগণ তা প্রতিহত করবে। আমরা দেশে শান্তি চাই। অশান্তি চাই না। আমাদের দাবি এক- সরকারের পতন চাই। রাজপথেই এর ফয়সালা হবে। এই দানবীয় সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। মধ্যবর্তী সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সব দলকে আমরা আহ্বান জানাই, আসুন আমরা একাত্তরের মতো এক হই। এই দানবীয় সরকারকে সবাই মিলে পরাজিত করি। ইভিএমে কোনো ভোট বাংলাদেশে হবে না। জনগণ এবার তাদের ভোট দেখে নেবে। দিনের ভোট রাতে দেয়া আর চলবে না।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইমরান আহমদ ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব সিদ্দিকীর যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ হোসেন। এছাড়াও বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না : ফখরুল

আপডেট সময় : ০৮:১০:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২

সিলেট ব্যুরো অফিস : 
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এই দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না। যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন করবে তাদের চিহ্নিত করা হবে। তারা গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবে।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে বক্তব্যকালে এই কথা বলেন তিনি।

সিলেটবাসীর উদ্দেশ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আপনারা নতুন যুদ্ধে নেমেছেন। এই যুদ্ধ মুক্তির যুদ্ধ। এ যুদ্ধ নিজের অধিকার ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ। এ যুদ্ধ নিজের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ। শাহজালাল রাহ. যেভাবে যুদ্ধ করে সিলেটে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন, আপনাদের সিলেট থেকেই আজ নতুন যুদ্ধ শুরু হলো। এ যুদ্ধ সরকারকে হটিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ। এই সিলেট থেকেই মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। আজকে এই স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র ফেরাতে এই সিলেট থেকেই আবার যুদ্ধ শুরু হলো।

বিএনপির এই নেতা বলেন, গত ১৪ বছরে এই সরকার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। এই সরকারের বিচার হবে জনগণের আদালতে। মানুষের সব অধিকার কেড়ে নেওয়ার অপরাধে এই বিচার হবে।

তিনি আরো বলেন, সাধারণ, খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষক শ্রমিক কিন্তু এখন শান্তিতে নেই। সরকার ১০ টাকা দরে চাল খাওয়াবে বলে এখন ৭০/৮০ টাকায় চাল খাওয়াচ্ছে। চিনির দাম বেড়েছে, শাক-সবজি, ডিমের দাম বেড়েছে। একজন কৃষক-শ্রমিক তার ছেলের মুখে ডিম তুলে দিতে পারছে না। এই সরকার এদেশের প্রত্যেক তরুণের স্বপ্নকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। বাংলাদেশের তিন কোটি মানুষ এখন বেকার। তাই প্রত্যেক তরুণ, যুবকের স্বপ্ন দেশকে গড়ে তুলবে। ভোট চুরি করে মানুষের স্বপ্নকে ভেঙে দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার বিচার হবে জনতার আদালতে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার আবারও মামলা-হামলার খেলা শুরু করেছে। গায়েবি মামলার আসামি করা হচ্ছে। হবিগঞ্জের লাখাইয়ে পুলিশ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ মিলে নেতাকর্মীদের ওপর মামলা দিয়েছে। এই অত্যাচার জুলুম বন্ধ করতে হবে। জনগণের অধিকার আদায় করে নিতে হবে। আমরা দেশে শান্তি চাই। এক দফা এক দাবি, এই সরকারের পদত্যাগ।

নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার আবার নতুন করে খেলা শুরু করেছে। গায়েবি মামলা দিয়ে নেতা-কর্মীদের হয়রানি করেছে। তারা আবার হুমকি দেয় আমাদের নাকি খেলাফত মজলিশ ও হেফাজতের মতো অবস্থা করবে। কোনও কিছুই ঘটেনি। তবু তারা নাশকতার কথা বলে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। আমি বলতে চাই, হুমকি-ধমকিতে কাজ হবে না। জনগণ আজ জেগে উঠেছে। জনগণ বিজয় ছাড়া ঘরে ফিরবে না।

সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা কথায় কথায় সংবিধানের কথা বলেন। বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কোন সংবিধানের কথা আপনারা বলেন, যে সংবিধান আপনারা ১০ বার টানাহেঁচড়া করেছেন, সেই সংবিধানের?’

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী কেবল সংবিধানের দোহাই দেন। এই সংবিধান তো তিনি সংশোধন করিয়েছেন। এই সংবিধান আমরা মানি না। আর যদি একটি মিথ্যে মামলা দেয়া হয় তবে জনগণ তা প্রতিহত করবে। আমরা দেশে শান্তি চাই। অশান্তি চাই না। আমাদের দাবি এক- সরকারের পতন চাই। রাজপথেই এর ফয়সালা হবে। এই দানবীয় সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। মধ্যবর্তী সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সব দলকে আমরা আহ্বান জানাই, আসুন আমরা একাত্তরের মতো এক হই। এই দানবীয় সরকারকে সবাই মিলে পরাজিত করি। ইভিএমে কোনো ভোট বাংলাদেশে হবে না। জনগণ এবার তাদের ভোট দেখে নেবে। দিনের ভোট রাতে দেয়া আর চলবে না।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইমরান আহমদ ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব সিদ্দিকীর যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ হোসেন। এছাড়াও বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।