ঢাকা ১২:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ঢাকায় যাত্রাবিরতিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মোমেনের বৈঠক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:১৭:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৩৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আফ্রিকা সফরে যাওয়ার পথে ঢাকায় যাত্রাবিরতি করেছেন চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং। কয়েক ঘণ্টার জন্য ঢাকায় অবস্থান করেন তিনি। সোমবার (৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।

২টা ৭ মিনিটে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সেখানে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশল বিনিময়ের পর বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে বৈঠকে বসেন তারা।

ঢাকায় পৌঁছেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

চীনের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না বলে দেশটির নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাংকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মোমেন বলেন, আমরা করোনার টিকার জন্য ওনাদের ধন্যবাদ দিয়েছি। আমরা ৮০০ মিলিয়নের জিনিস বিক্রি করি। আর ১৩ বিলিয়নের জিনিস কিনি। এটা একপেশে হয়ে যাচ্ছে। বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য ৯৮ পারসেন্ট প্রোডাক্টে ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি এক্সেস দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছে চীন। কিন্তু গেজেটটা হয়নি বলে আমাদের ব্যবসায়ীরা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। আমি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে, এতে আমাদের সুবিধা হয়।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রায় ১৪০০ কোটি ডলার কিন্তু এরমধ্যে চীনের রফতানি ১৩০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশকে ৯৮ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল চীন। কিন্তু এটির এখনও গেজেট না হওয়ার কারণে আমাদের ব্যবসায়ীরা এর সুবিধা পাচ্ছে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আলোচনার পরে চীনের মন্ত্রী জানিয়েছেন এটি তিনি করবেন।

dhakapost

বিভিন্ন বৃহৎ প্রকল্পে চীন যে কাজ করছে সেটি যেন আরও ত্বরান্বিত হয়, সেটির জন্য আলোচনা করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

ড. মোমেন বলেন, আমি বলেছি, আপনারা বিভিন্ন প্রজেক্টে আমাদের সাহায্য করেছেন পদ্মা সেতুতে, মেট্রোরেলে। আপনারা আমাদের উন্নয়ন অংশীদার।
তিনি বলেন, আমরা এক চায়নায় বিশ্বাস করি। এটা আমাদের মূলনীতি। এটা আমাদের পররাষ্ট্রনীতি। আমাদের সবাইকে নিয়েই চলতে হয়। সুতরাং আমরা আপনাদের (চীনকে) টাইম টু টাইম সাপোর্ট নেব।

২০১৬ সালের অক্টোবরে ঢাকা সফর করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনা প্রেসিডেন্টের ওই সফরে বেইজিং ঢাকার সঙ্গে বেশ কয়েকটি চুক্তি করলেও সেগুলোর অনেকগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বিষয়টি নতুন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মোমেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি যখন ঢাকায় এসেছিলেন তখন অনেক চুক্তি করেছিলাম। অনেক টাকার এগ্রিমেন্ট কিন্তু সবগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।

গ্যাং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বেইজিং সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে জানান মোমেন। তিনি বলেন, তিনি দাওয়াত দিয়েছেন যাওয়ার জন্য। আমি বলেছি, আপনি অল্পসময়ের জন্য নয়, রেগুলার আসেন। তখন আমরা আমাদের একাধিক বিষয়ে আলাপ করতে পারব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে চলছে ও এর উন্নয়ন অভাবনীয় এবং চীন এর সহযোগী হিসেবে কাজ করতে চায়। চীনের মন্ত্রী জানিয়েছেন— রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যোগান ব্যহত হচ্ছে, আর্থিক লেনদেনে সমস্যা হচ্ছে এবং নতুন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের বড় ইস্যু হচ্ছে রোহিঙ্গা এবং এ বিষয়ে চীনারা আমাদের সহায়তা করেছে। সেই সহায়তা অব্যহত থাকবে বলে তিনি অঙ্গীকার করেছেন। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন মিয়ানমারে কিছু অসুবিধা আছে। সেজন্য এটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আফ্রিকার ৫ দেশ ইথিওপিয়া, গ্যাবন, অ্যাঙ্গোলা, বেনিন ও মিসর সফরে গেছেন কিন গ্যাং। ৯ থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি দেশগুলো সফর করবেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কিছুদিন আগে দায়িত্ব গ্রহণ করেন কিন গ্যাং।

ঘণ্টাখানেকের যাত্রাবিরতি শেষে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিবাগত রাত ৩টার দিকে আফ্রিকার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন ছিন গ্যাং। এসময় ড. মোমেন তাকে বিদায় জানান।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজটি বেইজিং থেকে আফ্রিকা যাওয়ার পথে জ্বালানি সংগ্রহের জন্য মধ্যরাতে ঢাকার বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করে। ইথিওপিয়াসহ আফ্রিকার পাঁচ দেশ সফরে যাচ্ছেন চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সদ্য শেষ হওয়া বছরের দুই দিন আগে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান গ্যাং। দায়িত্ব পাওয়ার পর আফ্রিকায় প্রথম বিদেশ সফরে যাচ্ছেন গ্যাং।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঢাকায় যাত্রাবিরতিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মোমেনের বৈঠক

আপডেট সময় : ১২:১৭:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আফ্রিকা সফরে যাওয়ার পথে ঢাকায় যাত্রাবিরতি করেছেন চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং। কয়েক ঘণ্টার জন্য ঢাকায় অবস্থান করেন তিনি। সোমবার (৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।

২টা ৭ মিনিটে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সেখানে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশল বিনিময়ের পর বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে বৈঠকে বসেন তারা।

ঢাকায় পৌঁছেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

চীনের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না বলে দেশটির নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাংকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মোমেন বলেন, আমরা করোনার টিকার জন্য ওনাদের ধন্যবাদ দিয়েছি। আমরা ৮০০ মিলিয়নের জিনিস বিক্রি করি। আর ১৩ বিলিয়নের জিনিস কিনি। এটা একপেশে হয়ে যাচ্ছে। বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য ৯৮ পারসেন্ট প্রোডাক্টে ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি এক্সেস দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছে চীন। কিন্তু গেজেটটা হয়নি বলে আমাদের ব্যবসায়ীরা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। আমি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে, এতে আমাদের সুবিধা হয়।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রায় ১৪০০ কোটি ডলার কিন্তু এরমধ্যে চীনের রফতানি ১৩০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশকে ৯৮ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল চীন। কিন্তু এটির এখনও গেজেট না হওয়ার কারণে আমাদের ব্যবসায়ীরা এর সুবিধা পাচ্ছে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আলোচনার পরে চীনের মন্ত্রী জানিয়েছেন এটি তিনি করবেন।

dhakapost

বিভিন্ন বৃহৎ প্রকল্পে চীন যে কাজ করছে সেটি যেন আরও ত্বরান্বিত হয়, সেটির জন্য আলোচনা করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

ড. মোমেন বলেন, আমি বলেছি, আপনারা বিভিন্ন প্রজেক্টে আমাদের সাহায্য করেছেন পদ্মা সেতুতে, মেট্রোরেলে। আপনারা আমাদের উন্নয়ন অংশীদার।
তিনি বলেন, আমরা এক চায়নায় বিশ্বাস করি। এটা আমাদের মূলনীতি। এটা আমাদের পররাষ্ট্রনীতি। আমাদের সবাইকে নিয়েই চলতে হয়। সুতরাং আমরা আপনাদের (চীনকে) টাইম টু টাইম সাপোর্ট নেব।

২০১৬ সালের অক্টোবরে ঢাকা সফর করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনা প্রেসিডেন্টের ওই সফরে বেইজিং ঢাকার সঙ্গে বেশ কয়েকটি চুক্তি করলেও সেগুলোর অনেকগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বিষয়টি নতুন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মোমেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি যখন ঢাকায় এসেছিলেন তখন অনেক চুক্তি করেছিলাম। অনেক টাকার এগ্রিমেন্ট কিন্তু সবগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।

গ্যাং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বেইজিং সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে জানান মোমেন। তিনি বলেন, তিনি দাওয়াত দিয়েছেন যাওয়ার জন্য। আমি বলেছি, আপনি অল্পসময়ের জন্য নয়, রেগুলার আসেন। তখন আমরা আমাদের একাধিক বিষয়ে আলাপ করতে পারব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে চলছে ও এর উন্নয়ন অভাবনীয় এবং চীন এর সহযোগী হিসেবে কাজ করতে চায়। চীনের মন্ত্রী জানিয়েছেন— রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যোগান ব্যহত হচ্ছে, আর্থিক লেনদেনে সমস্যা হচ্ছে এবং নতুন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের বড় ইস্যু হচ্ছে রোহিঙ্গা এবং এ বিষয়ে চীনারা আমাদের সহায়তা করেছে। সেই সহায়তা অব্যহত থাকবে বলে তিনি অঙ্গীকার করেছেন। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন মিয়ানমারে কিছু অসুবিধা আছে। সেজন্য এটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আফ্রিকার ৫ দেশ ইথিওপিয়া, গ্যাবন, অ্যাঙ্গোলা, বেনিন ও মিসর সফরে গেছেন কিন গ্যাং। ৯ থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি দেশগুলো সফর করবেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কিছুদিন আগে দায়িত্ব গ্রহণ করেন কিন গ্যাং।

ঘণ্টাখানেকের যাত্রাবিরতি শেষে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিবাগত রাত ৩টার দিকে আফ্রিকার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন ছিন গ্যাং। এসময় ড. মোমেন তাকে বিদায় জানান।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজটি বেইজিং থেকে আফ্রিকা যাওয়ার পথে জ্বালানি সংগ্রহের জন্য মধ্যরাতে ঢাকার বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করে। ইথিওপিয়াসহ আফ্রিকার পাঁচ দেশ সফরে যাচ্ছেন চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সদ্য শেষ হওয়া বছরের দুই দিন আগে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান গ্যাং। দায়িত্ব পাওয়ার পর আফ্রিকায় প্রথম বিদেশ সফরে যাচ্ছেন গ্যাং।