ঢাকা ০৮:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

চেয়ারম্যান একাই লুটপাট করলেন ৪৭ কোটি টাকা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৭:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৩৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কুমিল্লা প্রতিনিধি : 

মিথ্যা কার্যাদেশ দেখিয়ে ঋণের নামে ৪৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কুমিল্লার বুড়িচং থানার পিরযাত্রাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

কুমিল্লা থেকে গোয়েন্দা অভিযান চালিয়ে সংস্থাটির উপপরিচালক মো. ফজলুল হকের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে দুইটি মামলা চলমান রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাকে এর আগের দিন সোমবার দিবাগত রাতে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতারে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হকের নেতৃত্বে একটি টিম গোয়েন্দা অভিযান চালায়।

মামলার এজাহার ও দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১০মে চট্টগ্রাম-১ এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আনোয়ারুল হক বাদী হয়ে পৃথক দুইটি মামলা করেন। যার মধ্যে ২২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জাকির হোসেন ও ইউসিবিএলের ৫ কর্মকর্তাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি দায়ের হয়। আর দ্বিতীয় মামলায় জাকিরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

প্রথম মামলার আসামিরা হলেন- গ্রেফতারকৃত মো. জাকির হোসেন, মেসার্স রানা বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আলম, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের তৎকালীন এফ ভিপি এন্ড হেড অব ব্রাঞ্চ ও বর্তমানে স্পেশাল এ্যাসেটস ম্যানেজমেন্ট ডিভিশন মো. সারোয়ার আলম, এ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অপারেশন ম্যানেজার মো. আনিসুজ্জামান, এফএভিপি ছাইফুল আলম মজুমদার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মকামে মাহমুদুল ইসলাম আরেফিন ও দেবু বোশ।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আসামি মোহাম্মদ আলম চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের একটি প্রকল্পের কার্যাদেশপ্রাপ্ত হয়ে নিজে কাজ না করে, অবৈধভাবে জাকির হোসনকে আমমোক্তার নিয়োগ করে। এরপর তাকে কাজের সম্পূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করে। কিন্তু তিনি কাজটি সম্পূর্ণ না করে গণভোগান্তি সৃষ্টি করে সরকারি ৪ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার ৪৩০ টাকা আর্থিক ক্ষতি সাধন করে।

দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফ সাদেক জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ঋণ আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পোর্ট কানেকটিং রোডের টেন্ডারে জালিয়াতি করে কার্যাদেশ বের করেন তিনি। পরে তার বিপরীতে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করেন। ব্যাংকের সেই টাকা আত্মসাৎ করেন জাকির হোসেন। এ ঘটনায় অনুসন্ধানে নামে দুদক। অনুসন্ধান শেষে ২০২২ সালের মে মাসে জাকির হোসেনসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা করে দুদক।

তিনি জানান, আসামি কার্যাদেশ দেখিয়ে কুমিল্লার ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) থেকে ৪৭ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। কিন্তু কাজের বিপরীতে প্রাপ্ত বিলের চেক নগদায়ন করেননি। এমনকি ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ বিষয়ে দুদক সচিব জানান, মামলা দুটির তদন্তকালে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এরপর সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে তাকে কুমিল্লা শহরের নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি সপরিবারে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে দুদকের কাছে তথ্য ছিল। যার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

চেয়ারম্যান একাই লুটপাট করলেন ৪৭ কোটি টাকা

আপডেট সময় : ০৯:৫৭:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৩

কুমিল্লা প্রতিনিধি : 

মিথ্যা কার্যাদেশ দেখিয়ে ঋণের নামে ৪৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কুমিল্লার বুড়িচং থানার পিরযাত্রাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

কুমিল্লা থেকে গোয়েন্দা অভিযান চালিয়ে সংস্থাটির উপপরিচালক মো. ফজলুল হকের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে দুইটি মামলা চলমান রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাকে এর আগের দিন সোমবার দিবাগত রাতে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতারে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হকের নেতৃত্বে একটি টিম গোয়েন্দা অভিযান চালায়।

মামলার এজাহার ও দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১০মে চট্টগ্রাম-১ এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আনোয়ারুল হক বাদী হয়ে পৃথক দুইটি মামলা করেন। যার মধ্যে ২২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জাকির হোসেন ও ইউসিবিএলের ৫ কর্মকর্তাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি দায়ের হয়। আর দ্বিতীয় মামলায় জাকিরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

প্রথম মামলার আসামিরা হলেন- গ্রেফতারকৃত মো. জাকির হোসেন, মেসার্স রানা বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আলম, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের তৎকালীন এফ ভিপি এন্ড হেড অব ব্রাঞ্চ ও বর্তমানে স্পেশাল এ্যাসেটস ম্যানেজমেন্ট ডিভিশন মো. সারোয়ার আলম, এ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অপারেশন ম্যানেজার মো. আনিসুজ্জামান, এফএভিপি ছাইফুল আলম মজুমদার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মকামে মাহমুদুল ইসলাম আরেফিন ও দেবু বোশ।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আসামি মোহাম্মদ আলম চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের একটি প্রকল্পের কার্যাদেশপ্রাপ্ত হয়ে নিজে কাজ না করে, অবৈধভাবে জাকির হোসনকে আমমোক্তার নিয়োগ করে। এরপর তাকে কাজের সম্পূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করে। কিন্তু তিনি কাজটি সম্পূর্ণ না করে গণভোগান্তি সৃষ্টি করে সরকারি ৪ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার ৪৩০ টাকা আর্থিক ক্ষতি সাধন করে।

দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফ সাদেক জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ঋণ আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পোর্ট কানেকটিং রোডের টেন্ডারে জালিয়াতি করে কার্যাদেশ বের করেন তিনি। পরে তার বিপরীতে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করেন। ব্যাংকের সেই টাকা আত্মসাৎ করেন জাকির হোসেন। এ ঘটনায় অনুসন্ধানে নামে দুদক। অনুসন্ধান শেষে ২০২২ সালের মে মাসে জাকির হোসেনসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা করে দুদক।

তিনি জানান, আসামি কার্যাদেশ দেখিয়ে কুমিল্লার ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) থেকে ৪৭ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। কিন্তু কাজের বিপরীতে প্রাপ্ত বিলের চেক নগদায়ন করেননি। এমনকি ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ বিষয়ে দুদক সচিব জানান, মামলা দুটির তদন্তকালে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এরপর সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে তাকে কুমিল্লা শহরের নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি সপরিবারে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে দুদকের কাছে তথ্য ছিল। যার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।