ঢাকা ০১:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

চিলমারীতে অনাবৃষ্টিতে পুড়ছে জমির ফসল পুড়ছে কৃষকের কপাল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:০৯:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৪৬৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// ফয়সাল হক রকি, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে //

চিলমারীতে বেশ কিছুদিন ধরে চলছে টানা খরা, অনাবৃষ্টি সাথে তীব্র দাবদাহে শুকিয়ে গেছে ফসলি জমি। বর্ষার মৌসুমের শেষ দিকে এসেও বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছে চারদিকে। আবাদ করা আমনের জমিতে পানি না থাকায় দুশ্চিন্তায় মাথায় হাত চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে আমন ধান আবাদ করা হয়। কারণ এই সময়ে বৃষ্টির পানি ও বন্যার পলি মাটি জমিতে থাকে। কিন্তু এ বছর একেবারে ভিন্ন চিত্র। অনাবৃষ্টির কারণে পানি সংকট দেখা দিয়েছে কৃষি জমিতে। কেউ কেউ পাওয়ার পাম্প দিয়ে পানি সেঁচ করে বীজতলা তৈরি করছেন। কারণ বীজ তলা তৈরি হওয়া চারা ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে জমিতে লাগানো হয়। তবে অনেক কৃষকের চারার বয়স মাস পেড়িয়ে গেলেও জমিতে পানি না থাকায় আমন ধান রোপণে সময় ব্যাহত হচ্ছে। আবার পানি সংকটে কারো কারো রোপা বীজ মরেও যাচ্ছে। কোথাও কোথাও তীব্র রোদের জমি ফেটে চৌচির হয়েছে।

 

আরও পড়ুন : মঠবাড়িয়ায় ডিবি পুলিশের হাতে দুই মাদক কারবারি আটক

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ছয় টি ইউনিয়নে ৮ হাজার ২০০ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ১০০ হেক্টর হাইব্রিড, ৫৫ হেক্টর উফসি, স্থানীয় জাতের বীজ ২৫০০ হেক্টর জমিতে আমনের বীজ তলা প্রস্তুত করা হয়েছে।

রমনা ইউনিয়নের কৃষক মাজেদুল ইসলাম বলেন, তিনি ২ বিঘা জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করবেন বলে ঠিক করেছেন। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এখনো তিনি চারা রোপণ এবং জমি প্রস্তুত করতে পারেন নি। বৃষ্টি না হলে সেঁচের পানি দিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হবে। আর বৃষ্টির পানিতে রোপা আমন চাষ ভালো হয়। তবে পরিমান মতো বৃষ্টি না হলে এবার অনেক কৃষক ধান লাগাতেই পারবেনা।

নয়ারহাট ইউনিয়নের কৃষক মাহাফুজার রহমান বলেন, আষাঢ় মাসে শেষে বীজ তোলার উপযুক্ত সময়। কিন্তু শ্রাবণ মাস শেষ হতে চললেও বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আমন ধানের ক্ষেত এখনো প্রস্তুত করতে পারিনি। এদিকে বীজতলা ও রোপণের জমিগুলো রোদে ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। এ বছর তিনি ক্ষতির সম্মূখিন হবে বলে ধারনা করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষাণ দাস বলেন, বর্তমান সময় আমন ধান রোপণের ভরা মৌসুম চলছে। কিন্তু প্রয়োজন মাফিক বৃষ্টি না থাকায় কৃষকরা বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছে। এ মৌসুমে ৮ হাজার ২০০ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ১০০ হেক্টর হাইব্রিড, ৫৫ হেক্টর উফসি, স্থানীয় জাতের বীজ ২৫০০ হেক্টর জমিতে আমনের বীজ তলা প্রস্তুত করা হয়েছে। বর্তমান বৃষ্টি না হলেও আবহাওয়া অফিস সূত্রে জেনেছি কিছুদিনের মধ্যেই বুষ্টি শুরু হবে। আর তাছাড়া আমাদের চিলমারী অঞ্চলে একটু দেরিতেই আমনের আবাদ শুরু হয়। তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে যে সকল কৃষক চারা রোপণ করেছে বৃষ্টি ও জমিতে পানি না থাকার কারণে অধিকাংশ কৃষকের বীজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে প্রতিনিয়ত কৃষকদের বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। সেঁচের মাধ্যমে হলেও বীজগুলো ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে। যদিওবা সেঁচের মাধ্যমে আমনের চাষ করা অনেক ব্যয় বহুল হয়ে পরে।

নিউজটি শেয়ার করুন

চিলমারীতে অনাবৃষ্টিতে পুড়ছে জমির ফসল পুড়ছে কৃষকের কপাল

আপডেট সময় : ০৭:০৯:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৩

// ফয়সাল হক রকি, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে //

চিলমারীতে বেশ কিছুদিন ধরে চলছে টানা খরা, অনাবৃষ্টি সাথে তীব্র দাবদাহে শুকিয়ে গেছে ফসলি জমি। বর্ষার মৌসুমের শেষ দিকে এসেও বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছে চারদিকে। আবাদ করা আমনের জমিতে পানি না থাকায় দুশ্চিন্তায় মাথায় হাত চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে আমন ধান আবাদ করা হয়। কারণ এই সময়ে বৃষ্টির পানি ও বন্যার পলি মাটি জমিতে থাকে। কিন্তু এ বছর একেবারে ভিন্ন চিত্র। অনাবৃষ্টির কারণে পানি সংকট দেখা দিয়েছে কৃষি জমিতে। কেউ কেউ পাওয়ার পাম্প দিয়ে পানি সেঁচ করে বীজতলা তৈরি করছেন। কারণ বীজ তলা তৈরি হওয়া চারা ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে জমিতে লাগানো হয়। তবে অনেক কৃষকের চারার বয়স মাস পেড়িয়ে গেলেও জমিতে পানি না থাকায় আমন ধান রোপণে সময় ব্যাহত হচ্ছে। আবার পানি সংকটে কারো কারো রোপা বীজ মরেও যাচ্ছে। কোথাও কোথাও তীব্র রোদের জমি ফেটে চৌচির হয়েছে।

 

আরও পড়ুন : মঠবাড়িয়ায় ডিবি পুলিশের হাতে দুই মাদক কারবারি আটক

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ছয় টি ইউনিয়নে ৮ হাজার ২০০ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ১০০ হেক্টর হাইব্রিড, ৫৫ হেক্টর উফসি, স্থানীয় জাতের বীজ ২৫০০ হেক্টর জমিতে আমনের বীজ তলা প্রস্তুত করা হয়েছে।

রমনা ইউনিয়নের কৃষক মাজেদুল ইসলাম বলেন, তিনি ২ বিঘা জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করবেন বলে ঠিক করেছেন। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এখনো তিনি চারা রোপণ এবং জমি প্রস্তুত করতে পারেন নি। বৃষ্টি না হলে সেঁচের পানি দিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হবে। আর বৃষ্টির পানিতে রোপা আমন চাষ ভালো হয়। তবে পরিমান মতো বৃষ্টি না হলে এবার অনেক কৃষক ধান লাগাতেই পারবেনা।

নয়ারহাট ইউনিয়নের কৃষক মাহাফুজার রহমান বলেন, আষাঢ় মাসে শেষে বীজ তোলার উপযুক্ত সময়। কিন্তু শ্রাবণ মাস শেষ হতে চললেও বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আমন ধানের ক্ষেত এখনো প্রস্তুত করতে পারিনি। এদিকে বীজতলা ও রোপণের জমিগুলো রোদে ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। এ বছর তিনি ক্ষতির সম্মূখিন হবে বলে ধারনা করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষাণ দাস বলেন, বর্তমান সময় আমন ধান রোপণের ভরা মৌসুম চলছে। কিন্তু প্রয়োজন মাফিক বৃষ্টি না থাকায় কৃষকরা বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছে। এ মৌসুমে ৮ হাজার ২০০ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ১০০ হেক্টর হাইব্রিড, ৫৫ হেক্টর উফসি, স্থানীয় জাতের বীজ ২৫০০ হেক্টর জমিতে আমনের বীজ তলা প্রস্তুত করা হয়েছে। বর্তমান বৃষ্টি না হলেও আবহাওয়া অফিস সূত্রে জেনেছি কিছুদিনের মধ্যেই বুষ্টি শুরু হবে। আর তাছাড়া আমাদের চিলমারী অঞ্চলে একটু দেরিতেই আমনের আবাদ শুরু হয়। তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে যে সকল কৃষক চারা রোপণ করেছে বৃষ্টি ও জমিতে পানি না থাকার কারণে অধিকাংশ কৃষকের বীজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে প্রতিনিয়ত কৃষকদের বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। সেঁচের মাধ্যমে হলেও বীজগুলো ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে। যদিওবা সেঁচের মাধ্যমে আমনের চাষ করা অনেক ব্যয় বহুল হয়ে পরে।