ঢাকা ১২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকারকে দুষলেন বিএনপি মহাসচিব

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:০৮:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মার্চ ২০২৩
  • / ৪৪৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বিস্ফোরণের ঘটনার জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, গতকাল সীতাকুণ্ডে এবং আজ ঢাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে…। আমাদের প্রশ্ন এই বিস্ফোরণগুলো ঘটছে কেন? পঞ্চগড়ে সাম্প্রদায়িক সংকটের জন্যও সরকারকে দোষারোপ করেছেন তিনি।

রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে একথা বলেন তিনি। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক হয়।

তিনি বলেন, সরকার যখন ব্যর্থ হয় তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে ব্যর্থ হয়। যারা এ বিষয়গুলোর দায়িত্বে রয়েছে তারা দেখবে সব কিছু সঠিকভাবে আছে কিনা। অর্থাৎ সেখানে যেন বিস্ফোরণ না ঘটে, কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে। দুর্ঘটনা ঘটলে যেন মানুষের জীবন নাশ না হয় সেই ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে কিনা। সরকারি সংস্থাগুলো সেই ব্যবস্থা নিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে এবং সরকারের ব্যর্থতার কারণে এই ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে।

চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিস্ফোরণে নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ যখন গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করেছে, অধিকার আদায়ের জন্য যখন সংগ্রাম শুরু করেছে, দ্রব্যমূল্য যখন জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে, মানুষ যখন এই নিয়ে সোচ্চার হচ্ছে, মিছিল করছে। রাজনৈতিক দলগুলো যখন রাস্তায় নেমে এসেছে। তখন এই ধরনের ডাইভারশন করানোর জন্য, শুধু জনমনে বিভ্রান্ত করার জন্য, অন্যখাতে প্রবাহিত করার জন্য এই ধরনের সাম্প্রদায়িকতা ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন নস্যাৎ করতে চায়। আমরা এই ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী করছি সরকারকে। তাদেরই জবাবদিহি করতে হবে এবং যারা দায়ী এই ঘটনার জন্য তাদের বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, পঞ্চগড়েও চরম একটা সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। দুই জন নিহত হয়েছে। দোকান-পাটসহ বাড়িঘর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন, এই ধরনের একটা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে সরকার চুপ করে থাকলো কেন? সেখানে সমাবেশ করা অনুমতিই বা দেওয়া হলো কেন? বা পরবর্তীকালে যখন আক্রমণ হয়েছে তখন পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেটা দেখলো কেন? সেটাকে তারা প্রতিহত করতে সক্ষম হলো না কেন?

তিনি বলেন, এই যে সাম্প্রদায়িক সমস্যা সৃষ্টি করা, বিভেদ সৃষ্টি করা –এটা সরকার সৃষ্টি করছে। আমরা মনে করি তারা অত্যন্ত অসৎ উদ্দেশ্যে এটা করছে।

বিদ্যুৎ নিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের করা চুক্তি বাতিল চেয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার তাদের নিজেদের স্বার্থে, ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে সম্প্রতি ভারতের একটি কোম্পানি, যারা অত্যন্ত বড়, যারা ইতোমধ্যে বিশ্বে অর্থনীতিতে বদনাম কুড়িয়েছে, সেই আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি করেছে। যে চুক্তি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিরোধী। এখানে বড় রকমের দুর্নীতি হয়েছে। এই দুর্নীতির কারণে তারা জনগণের পকেট থেকে প্রচুর টাকা কেটে নিয়ে যাবে। আমরা এই চুক্তি বাতিল চাই।

সরকার মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে। তিনবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে, গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে।

বৈঠকে ‘সরকার পতনে’ বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য। মির্জা ফখরুল ছাড়াও বৈঠকে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের পক্ষের সমন্বয়ক প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের মহাসচিব হারুন আল রশীদ খান, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, নুরে আলম ও শাহজালাল মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকারকে দুষলেন বিএনপি মহাসচিব

আপডেট সময় : ০৭:০৮:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বিস্ফোরণের ঘটনার জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, গতকাল সীতাকুণ্ডে এবং আজ ঢাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে…। আমাদের প্রশ্ন এই বিস্ফোরণগুলো ঘটছে কেন? পঞ্চগড়ে সাম্প্রদায়িক সংকটের জন্যও সরকারকে দোষারোপ করেছেন তিনি।

রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে একথা বলেন তিনি। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক হয়।

তিনি বলেন, সরকার যখন ব্যর্থ হয় তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে ব্যর্থ হয়। যারা এ বিষয়গুলোর দায়িত্বে রয়েছে তারা দেখবে সব কিছু সঠিকভাবে আছে কিনা। অর্থাৎ সেখানে যেন বিস্ফোরণ না ঘটে, কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে। দুর্ঘটনা ঘটলে যেন মানুষের জীবন নাশ না হয় সেই ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে কিনা। সরকারি সংস্থাগুলো সেই ব্যবস্থা নিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে এবং সরকারের ব্যর্থতার কারণে এই ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে।

চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিস্ফোরণে নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ যখন গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করেছে, অধিকার আদায়ের জন্য যখন সংগ্রাম শুরু করেছে, দ্রব্যমূল্য যখন জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে, মানুষ যখন এই নিয়ে সোচ্চার হচ্ছে, মিছিল করছে। রাজনৈতিক দলগুলো যখন রাস্তায় নেমে এসেছে। তখন এই ধরনের ডাইভারশন করানোর জন্য, শুধু জনমনে বিভ্রান্ত করার জন্য, অন্যখাতে প্রবাহিত করার জন্য এই ধরনের সাম্প্রদায়িকতা ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন নস্যাৎ করতে চায়। আমরা এই ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী করছি সরকারকে। তাদেরই জবাবদিহি করতে হবে এবং যারা দায়ী এই ঘটনার জন্য তাদের বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, পঞ্চগড়েও চরম একটা সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। দুই জন নিহত হয়েছে। দোকান-পাটসহ বাড়িঘর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন, এই ধরনের একটা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে সরকার চুপ করে থাকলো কেন? সেখানে সমাবেশ করা অনুমতিই বা দেওয়া হলো কেন? বা পরবর্তীকালে যখন আক্রমণ হয়েছে তখন পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেটা দেখলো কেন? সেটাকে তারা প্রতিহত করতে সক্ষম হলো না কেন?

তিনি বলেন, এই যে সাম্প্রদায়িক সমস্যা সৃষ্টি করা, বিভেদ সৃষ্টি করা –এটা সরকার সৃষ্টি করছে। আমরা মনে করি তারা অত্যন্ত অসৎ উদ্দেশ্যে এটা করছে।

বিদ্যুৎ নিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের করা চুক্তি বাতিল চেয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার তাদের নিজেদের স্বার্থে, ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে সম্প্রতি ভারতের একটি কোম্পানি, যারা অত্যন্ত বড়, যারা ইতোমধ্যে বিশ্বে অর্থনীতিতে বদনাম কুড়িয়েছে, সেই আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি করেছে। যে চুক্তি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিরোধী। এখানে বড় রকমের দুর্নীতি হয়েছে। এই দুর্নীতির কারণে তারা জনগণের পকেট থেকে প্রচুর টাকা কেটে নিয়ে যাবে। আমরা এই চুক্তি বাতিল চাই।

সরকার মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে। তিনবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে, গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে।

বৈঠকে ‘সরকার পতনে’ বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য। মির্জা ফখরুল ছাড়াও বৈঠকে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের পক্ষের সমন্বয়ক প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের মহাসচিব হারুন আল রশীদ খান, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, নুরে আলম ও শাহজালাল মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।