ঢাকা ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গোদাগাড়ীতে চাঁদাবাজি মামলায় প্রভাবশালী দলের দুই যুবক গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
  • আপডেট সময় : ০৫:০৮:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৪২০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে দুই যুবক। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো উপজেলার প্রেমতলী কাঠালবাড়িয়া এলাকার মৃত্যু আব্দুল হামিদ বাবুর ছেলে হাফিজুর রহমান সনি (২৬) ও একই এলাকার রেজাউল করিমের ছেলে জাহিদুল ইসলাম সোহাগ (২৮)।
ওই ঘটনায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মাহাফুজ হোসেন মঙ্গলবার রাতে ৬ জন আসামীর নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ৩ জনের নামে গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং ৪৯। মামলার আসামীরা সকলেই ওই এলাকার স্থানীয় ও ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সাথে জড়িত।
মামলার অন্য আসামীরা হলেন, আব্দুল হামিদ সাবুর ছেলে মোজাহিদুল রহমান শফিউর রহমান শুভ (৩০), আব্দুর বারী সরকারের ছেলে দিনার বারিক, আব্দুল বারিকের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বদর ও তোফাজ্জলের ছেলে সোহলে রানা (৩৫)। মামলার বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, বরিশাল জেলার ‘রুপালি কনস্ট্রাকশন এ্যান্ড সাদ এন্টার প্রাইজ (জেবি) নামীয় কনস্ট্রাকশন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ম্যানেজার গোদাগাড়ী থানাধীন গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (প্রেমতলী) এর নতুন বিল্ডিং নির্মান কাজ পরিচালনা করছি। “রুপালি কনস্ট্রাকশন এ্যান্ড সাদ এন্টার প্রাইজ (জেবি)” নামীয় প্রতিষ্ঠানের হয়ে নতুন বিল্ডিং নির্মান কাজ পরিচালনা করা কালীন বিভিন্ন সময় আসামীগণ আমার নিকট এসে বিভিন্ন অংকের চাঁদা দাবী করে আসছিল।
সর্বশেষ গত ২৩ এপ্রিল সকাল অনুমান ১০ টার দিকে আসামীরা আমার নিকট এসে ২ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আসামী মোঃ শফিউর রহমান শুভ আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আরো লোক আনার জন্য চলে যায়। আমি জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পর আসামীরা একই দিন দুপুর আড়াইটার দিকে আবার প্রেমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্মানাধীন ভবনে আসে এবং নিকট পুনঃরায় ২ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে।
চাঁদা দিতে পুনঃরায় অস্বীকার করলে শফিউর রহমান শুভ আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার গলায় চাপ দেয়। আমি গোঙ্গাইতে থাকি। আমাকে বাঁচানোর জন্য আমার সাইডের ম্যানেজার মাহাবুব ইসলাম মুন্না এগিয়ে আসেন। তখন আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বদর আমার সাইডের ম্যানেজার মাহাবুব ইসলাম মুন্নাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গলা চেপে ধরে।
আমাদের গঙ্গানি গুণে কর্মরত অন্যান্য শ্রমিকরা এগিয়ে আসেন এবং আমাদের নিশ্চিত মৃত্যু হাত থেকে রক্ষা করেন। আসামী হাফিজুর রহমান সনি আমার পকেটে থাকা নগদ ১০ হাজার টাকা চাঁদা হিসেবে বাহির করে নেয় এবং বলতে থাকে যে, ‘আপাতত এই ১০ হাজার টাকা চাঁদা হিসেবে নিলাম, আমাদের চাঁদা না দিলে তোরা এলাকা ছেড়ে চলে যা, তারপর আমি ঠিকাদারকে দেখছি, ইত্যাদি।
স্থানীয় লোকজন আসামী মোজাহিদুল রহমান সোহাগ ও মোঃ হাফিজুর রহমান সনিকে আটক করেন। আমরা প্রাণ ভয়ে ঘটনাস্থলের পার্শ্বেই আমার ভাড়া বাসায় (জনৈক মোঃ বাবুর বাড়ি) প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেই এবং পুনঃরায় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করি। তখন পুনঃরায় পুলিশ আসে।
পুলিশ আসামী মোজাহিদুল রহমান সোহাগ ও মোঃ হাফিজুর রহমান সনিকে গ্রেপ্তার করে। তাছাড়া পুলিশ ঘটনাস্থল হতে আসামীদের ব্যবহৃত TVS APACHE RTR 4V 160 CC মোটর সাইকেল ও চাঁদা হিসেবে গ্রহণকৃত নগদ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করে।
একই দিনে বিকেলে আসামী শফিউর রহমান শুভর নেতৃত্বে অন্যান্য আসামীরা আমার ভাড়া বাসায় আসেন এবং ভাড়ার বাসার দরজা জানালা ভেঙ্গে অনুমান এক লাখ টাকার ক্ষতি করে বাসায় প্রবেশ করে শফিউর রহমান শুত আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পুনঃরায় আমার গলা চেপে ধরে। আমাদের ডাক-চিৎকারে আশে-পাশের লোকজন ও স্থানীয় পুলিশ এসে আমাদেরকে উদ্ধার করে।
আসামীরা চাঁদা না দিলে ভবিষ্যতে আমাকে খুন করার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আব্দুল মতিন বলেন, দায়েরকৃত মামলায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসাসীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাখ//আর

নিউজটি শেয়ার করুন

গোদাগাড়ীতে চাঁদাবাজি মামলায় প্রভাবশালী দলের দুই যুবক গ্রেপ্তার

আপডেট সময় : ০৫:০৮:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে দুই যুবক। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো উপজেলার প্রেমতলী কাঠালবাড়িয়া এলাকার মৃত্যু আব্দুল হামিদ বাবুর ছেলে হাফিজুর রহমান সনি (২৬) ও একই এলাকার রেজাউল করিমের ছেলে জাহিদুল ইসলাম সোহাগ (২৮)।
ওই ঘটনায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মাহাফুজ হোসেন মঙ্গলবার রাতে ৬ জন আসামীর নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ৩ জনের নামে গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং ৪৯। মামলার আসামীরা সকলেই ওই এলাকার স্থানীয় ও ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সাথে জড়িত।
মামলার অন্য আসামীরা হলেন, আব্দুল হামিদ সাবুর ছেলে মোজাহিদুল রহমান শফিউর রহমান শুভ (৩০), আব্দুর বারী সরকারের ছেলে দিনার বারিক, আব্দুল বারিকের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বদর ও তোফাজ্জলের ছেলে সোহলে রানা (৩৫)। মামলার বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, বরিশাল জেলার ‘রুপালি কনস্ট্রাকশন এ্যান্ড সাদ এন্টার প্রাইজ (জেবি) নামীয় কনস্ট্রাকশন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ম্যানেজার গোদাগাড়ী থানাধীন গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (প্রেমতলী) এর নতুন বিল্ডিং নির্মান কাজ পরিচালনা করছি। “রুপালি কনস্ট্রাকশন এ্যান্ড সাদ এন্টার প্রাইজ (জেবি)” নামীয় প্রতিষ্ঠানের হয়ে নতুন বিল্ডিং নির্মান কাজ পরিচালনা করা কালীন বিভিন্ন সময় আসামীগণ আমার নিকট এসে বিভিন্ন অংকের চাঁদা দাবী করে আসছিল।
সর্বশেষ গত ২৩ এপ্রিল সকাল অনুমান ১০ টার দিকে আসামীরা আমার নিকট এসে ২ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আসামী মোঃ শফিউর রহমান শুভ আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আরো লোক আনার জন্য চলে যায়। আমি জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পর আসামীরা একই দিন দুপুর আড়াইটার দিকে আবার প্রেমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্মানাধীন ভবনে আসে এবং নিকট পুনঃরায় ২ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে।
চাঁদা দিতে পুনঃরায় অস্বীকার করলে শফিউর রহমান শুভ আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার গলায় চাপ দেয়। আমি গোঙ্গাইতে থাকি। আমাকে বাঁচানোর জন্য আমার সাইডের ম্যানেজার মাহাবুব ইসলাম মুন্না এগিয়ে আসেন। তখন আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বদর আমার সাইডের ম্যানেজার মাহাবুব ইসলাম মুন্নাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গলা চেপে ধরে।
আমাদের গঙ্গানি গুণে কর্মরত অন্যান্য শ্রমিকরা এগিয়ে আসেন এবং আমাদের নিশ্চিত মৃত্যু হাত থেকে রক্ষা করেন। আসামী হাফিজুর রহমান সনি আমার পকেটে থাকা নগদ ১০ হাজার টাকা চাঁদা হিসেবে বাহির করে নেয় এবং বলতে থাকে যে, ‘আপাতত এই ১০ হাজার টাকা চাঁদা হিসেবে নিলাম, আমাদের চাঁদা না দিলে তোরা এলাকা ছেড়ে চলে যা, তারপর আমি ঠিকাদারকে দেখছি, ইত্যাদি।
স্থানীয় লোকজন আসামী মোজাহিদুল রহমান সোহাগ ও মোঃ হাফিজুর রহমান সনিকে আটক করেন। আমরা প্রাণ ভয়ে ঘটনাস্থলের পার্শ্বেই আমার ভাড়া বাসায় (জনৈক মোঃ বাবুর বাড়ি) প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেই এবং পুনঃরায় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করি। তখন পুনঃরায় পুলিশ আসে।
পুলিশ আসামী মোজাহিদুল রহমান সোহাগ ও মোঃ হাফিজুর রহমান সনিকে গ্রেপ্তার করে। তাছাড়া পুলিশ ঘটনাস্থল হতে আসামীদের ব্যবহৃত TVS APACHE RTR 4V 160 CC মোটর সাইকেল ও চাঁদা হিসেবে গ্রহণকৃত নগদ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করে।
একই দিনে বিকেলে আসামী শফিউর রহমান শুভর নেতৃত্বে অন্যান্য আসামীরা আমার ভাড়া বাসায় আসেন এবং ভাড়ার বাসার দরজা জানালা ভেঙ্গে অনুমান এক লাখ টাকার ক্ষতি করে বাসায় প্রবেশ করে শফিউর রহমান শুত আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পুনঃরায় আমার গলা চেপে ধরে। আমাদের ডাক-চিৎকারে আশে-পাশের লোকজন ও স্থানীয় পুলিশ এসে আমাদেরকে উদ্ধার করে।
আসামীরা চাঁদা না দিলে ভবিষ্যতে আমাকে খুন করার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আব্দুল মতিন বলেন, দায়েরকৃত মামলায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসাসীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাখ//আর