ঢাকা ১২:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গাজীপুরে আ.লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান’র ইশতেহার ঘোষণা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:২১:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ মে ২০২৩
  • / ৪৩৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// কাজী মকবুল, গাজীপুর //

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রাথী এডভোকেট আজমত উল্লা খান সিটি কর্পোরেশনের অনিয়ম দুর্নীতি দূর করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেই এই সিটিকে উন্নয়নের মডেল বানাতে চান।

রোববার (২১ মে) বেলা পৌনো ১১ টার মহানগরের রাজবাড়ী সড়কের প্রকৌশলী ভবনে তিনি তার নির্বাচনী ইশতেহার তুলে ধরেন।  তিনি আশা করেন তিনি নির্বাচিত হতে পারলে  তার জীবনের নানা অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নগরবাসীদের দেয়া তার ওয়াদা পুরোপুরি পালন করতে সক্ষম হবেন।

তার ইশতেহারে উল্লেখ আছে, একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধমে রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, ব্রিজসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সেবামূলক খাতগুলোকে আরো শক্তিশালী করে সেবার মানকে সুনিশ্চিত করতে এক বৎসর, দুই বৎসর ও পাঁচ বৎসর মেয়াদ বিশিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন তিনি।

তার প্রশাসনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সিটি মাস্টারপ্ল্যান এবং জনগণের অংশগ্রহনের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত একটি সমৃদ্ধ সুষম নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ঘোষনা দিয়েছেন এই ইশতেহারে।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার  যে অভূতপূর্ব উন্নয়ণ যাত্রা শুরু করেছেন তার সাথে সংগতি রেখে আধুনিক মহানগর ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি কাজ করবেন।

এছাড়াও নগরের উন্নয়নে পরিকল্পনা প্রনয়ণ এবং বাস্তবায়নে“পরামর্শক কমিটি/নগর উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি” গঠন,  বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করে তাদের পরামর্শ ও সুপারিশের ভিত্তিতে সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নমুলক বিভিন্ন প্রকল্প প্রনয়ণ এবং বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সেবার মান বৃদ্ধিকরণের লক্ষ্যে , অভিজ্ঞ নগরবিদ ও প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে বিশ্বমানের একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে জনগণের সেবা নিশ্চিত করা হবে। হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, নাগরিক সনদসহ বিভিন্ন সনদের ফি, ইউটিলিটি বিল ইত্যাদি অনলাইন- এর মাধ্যমে পরিশোধের ব্যবস্থা, ওয়ার্ডগুলোকে সিসি ক্যামেরার আওতায়  আনা ও ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন করার উদ্যোগ গ্রহনের কথা উল্লেখ করেছেন ইশতেহারে।

 হোল্ডিং করের বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন, নাগরিকদের হোল্ডিং করের হার না বাড়িয়ে রিভিউ বোর্ডের মাধ্যমে সহনশীল পর্যায়ে চূড়ান্ত করা সরকার কর্তৃক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ভুমি অধিগ্রহণের যে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা যথাযথভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে প্রদান করা হবে।

মহানগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবার জন্য সকল নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ,  স্বল্পমূল্যে এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সেবা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া, দুঃস্থ ও অসহায় মানুষদের মৃত্যুর পর প্রয়োজন অনুযায়ী কাফনের কাপড়ের ব্যবস্থা করা এবং সরকারি-বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক, ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিসহ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর সাথে সমন্বয় করে শ্রমিক, বস্তিবাসী ও দরিদ্র মানুষের জন্য বিনামুল্যে স্বাস্থ্য কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে ইশতেহারে।

নগরের পানি ও পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ণে সরকারি ও বেসরকারি সেবাদানকারী স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহায়তা প্রতিষ্ঠানসমুহের সাথে সমন্বয় করে সকল নাগরিকদের সুপেয় পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার জন্য ‘জি আই এস’ পদ্ধতি অবলম্বন করে সার্ভের মাধ্যমে ড্রেন ও খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করে প্রয়োজনীয়  সংস্কারের মাধ্যমে উপযোগী করে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হবে। প্রতিবন্ধি নাগরিক এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে।

গুরুত্ব বিবেচনায় সড়ক উন্নয়ন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট জনদের নামে রাস্তার নামকরণ ও নির্মাণ কাজের গুনগতমান নিরীক্ষার জন্য শক্তিশালী মনিটরিং টিম গঠন করা হবে।

নগরের যানজট নিরসন, পার্কিং, ফুটপাথসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ: পথচারীবাদ্ধব ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের জন্য ফুটপাথ নেটওয়ার্ক ,যানজট নিরসনের জন্য বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ এবং পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক সংগঠন সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সাথে  সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে বহুতল ও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ, নতুন ফুটওভার ব্রিজ, আধুনিক বাসস্ট্যান্ড ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ এবং রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে নাগরিকদের রেলে যাতায়াত সহজীকরণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে জয়দেবপুর রেলক্রসিং এর উপর ফ্লাইওভার নির্মাণসহ সরকারের সহযোগিতায় সমগ্র গাজীপুরে সংযোগ সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহনের কথা উল্লেখ আছে ইশতেহারে।

শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রয়োজনে জিসিসি’র অধীনে কারিগরি ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। নগরীতে অবস্থিত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও এতিমখানাসমূহে সাহায্য প্রদান করা হবে। এছাড়াও অনাথ, গরীব, যোগ্যতাসম্পন্ন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব পাঠাগারের আধুনিকীকরণ, নতুন পাঠাগার প্রতিষ্ঠা এবং ব্যক্তি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পাঠাগার সমূহকে সহায়তা প্রদান করা হবে ।

পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকার সংরক্ষণ ও নির্যাতন প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হবে। শ্রমজীবী মায়ের শিশুদের পরিচর্যার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘ডে-কেয়ার’ সেন্টার স্থাপন এবং বিকেল ৫টার পর তারা যেন টিসিবি’র সরবরাহকৃত খাদ্যসামগ্রী পেতে পারেন সেই উদ্যোগসহ সরকার ও মালিক পক্ষের সহযোগিতায় বেতন-ভাতাদি, নিরাপত্তা, বাসস্থান ও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে সহয়তা প্রদান করা হবে। গাজীপুর মহানগরীর সকল বস্তিবাসীর প্রাপ্ত নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে । শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ী সমাজের ভোগান্তি কমাতে জিসিসির আ লিক কার্যালয়ে হেল্প-ডেক্স স্থাপন করা হবে।

তরুণদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি ও উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের লক্ষ্যে এবং বয়স্ক ও শিশুদের মিলনস্থল ও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘ওয়ার্ড সেন্টার’ নির্মাণ করার উদ্যোগ গ্রহন করা হবে। সেগুলোতে কমিউনিটি সেন্টার, সেবাদান কেন্দ্র, আত্মরক্ষাসহ বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, শিল্পকলা শিক্ষা কেন্দ্র,পাঠাগার প্রতিষ্ঠাসহ বহুমূখী ব্যবহার উপযোগী করা হবে। ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার তৈরির মাধ্যমে নাগরিক সেবা ও নিরাপত্তা, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং স্মার্ট নেইবারহুড কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পারস্পরিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত পাড়া উৎসবসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হচ্ছে ইশতেহারে।

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করণে, সিটিজেন চার্টার বা নাগরিক সনদ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি বিভাগকে দুর্নীতিমুক্ত রেখে জিসিসির সার্বিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। “জনতার মুখোমুখী” শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মহানগর ও ওয়ার্ড ভিত্তিক সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।

ইশতেহার ঘোষণার সময় তার সাথে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আতাউল্লা মন্ডলসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজীপুরে আ.লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান’র ইশতেহার ঘোষণা

আপডেট সময় : ০৫:২১:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ মে ২০২৩

// কাজী মকবুল, গাজীপুর //

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রাথী এডভোকেট আজমত উল্লা খান সিটি কর্পোরেশনের অনিয়ম দুর্নীতি দূর করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেই এই সিটিকে উন্নয়নের মডেল বানাতে চান।

রোববার (২১ মে) বেলা পৌনো ১১ টার মহানগরের রাজবাড়ী সড়কের প্রকৌশলী ভবনে তিনি তার নির্বাচনী ইশতেহার তুলে ধরেন।  তিনি আশা করেন তিনি নির্বাচিত হতে পারলে  তার জীবনের নানা অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নগরবাসীদের দেয়া তার ওয়াদা পুরোপুরি পালন করতে সক্ষম হবেন।

তার ইশতেহারে উল্লেখ আছে, একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধমে রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, ব্রিজসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সেবামূলক খাতগুলোকে আরো শক্তিশালী করে সেবার মানকে সুনিশ্চিত করতে এক বৎসর, দুই বৎসর ও পাঁচ বৎসর মেয়াদ বিশিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন তিনি।

তার প্রশাসনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সিটি মাস্টারপ্ল্যান এবং জনগণের অংশগ্রহনের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত একটি সমৃদ্ধ সুষম নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ঘোষনা দিয়েছেন এই ইশতেহারে।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার  যে অভূতপূর্ব উন্নয়ণ যাত্রা শুরু করেছেন তার সাথে সংগতি রেখে আধুনিক মহানগর ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি কাজ করবেন।

এছাড়াও নগরের উন্নয়নে পরিকল্পনা প্রনয়ণ এবং বাস্তবায়নে“পরামর্শক কমিটি/নগর উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি” গঠন,  বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করে তাদের পরামর্শ ও সুপারিশের ভিত্তিতে সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নমুলক বিভিন্ন প্রকল্প প্রনয়ণ এবং বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সেবার মান বৃদ্ধিকরণের লক্ষ্যে , অভিজ্ঞ নগরবিদ ও প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে বিশ্বমানের একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে জনগণের সেবা নিশ্চিত করা হবে। হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, নাগরিক সনদসহ বিভিন্ন সনদের ফি, ইউটিলিটি বিল ইত্যাদি অনলাইন- এর মাধ্যমে পরিশোধের ব্যবস্থা, ওয়ার্ডগুলোকে সিসি ক্যামেরার আওতায়  আনা ও ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন করার উদ্যোগ গ্রহনের কথা উল্লেখ করেছেন ইশতেহারে।

 হোল্ডিং করের বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন, নাগরিকদের হোল্ডিং করের হার না বাড়িয়ে রিভিউ বোর্ডের মাধ্যমে সহনশীল পর্যায়ে চূড়ান্ত করা সরকার কর্তৃক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ভুমি অধিগ্রহণের যে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা যথাযথভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে প্রদান করা হবে।

মহানগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবার জন্য সকল নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ,  স্বল্পমূল্যে এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সেবা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া, দুঃস্থ ও অসহায় মানুষদের মৃত্যুর পর প্রয়োজন অনুযায়ী কাফনের কাপড়ের ব্যবস্থা করা এবং সরকারি-বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক, ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিসহ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর সাথে সমন্বয় করে শ্রমিক, বস্তিবাসী ও দরিদ্র মানুষের জন্য বিনামুল্যে স্বাস্থ্য কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে ইশতেহারে।

নগরের পানি ও পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ণে সরকারি ও বেসরকারি সেবাদানকারী স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহায়তা প্রতিষ্ঠানসমুহের সাথে সমন্বয় করে সকল নাগরিকদের সুপেয় পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার জন্য ‘জি আই এস’ পদ্ধতি অবলম্বন করে সার্ভের মাধ্যমে ড্রেন ও খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করে প্রয়োজনীয়  সংস্কারের মাধ্যমে উপযোগী করে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হবে। প্রতিবন্ধি নাগরিক এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে।

গুরুত্ব বিবেচনায় সড়ক উন্নয়ন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট জনদের নামে রাস্তার নামকরণ ও নির্মাণ কাজের গুনগতমান নিরীক্ষার জন্য শক্তিশালী মনিটরিং টিম গঠন করা হবে।

নগরের যানজট নিরসন, পার্কিং, ফুটপাথসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ: পথচারীবাদ্ধব ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের জন্য ফুটপাথ নেটওয়ার্ক ,যানজট নিরসনের জন্য বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ এবং পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক সংগঠন সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সাথে  সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে বহুতল ও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ, নতুন ফুটওভার ব্রিজ, আধুনিক বাসস্ট্যান্ড ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ এবং রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে নাগরিকদের রেলে যাতায়াত সহজীকরণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে জয়দেবপুর রেলক্রসিং এর উপর ফ্লাইওভার নির্মাণসহ সরকারের সহযোগিতায় সমগ্র গাজীপুরে সংযোগ সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহনের কথা উল্লেখ আছে ইশতেহারে।

শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রয়োজনে জিসিসি’র অধীনে কারিগরি ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। নগরীতে অবস্থিত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও এতিমখানাসমূহে সাহায্য প্রদান করা হবে। এছাড়াও অনাথ, গরীব, যোগ্যতাসম্পন্ন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব পাঠাগারের আধুনিকীকরণ, নতুন পাঠাগার প্রতিষ্ঠা এবং ব্যক্তি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পাঠাগার সমূহকে সহায়তা প্রদান করা হবে ।

পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকার সংরক্ষণ ও নির্যাতন প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হবে। শ্রমজীবী মায়ের শিশুদের পরিচর্যার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘ডে-কেয়ার’ সেন্টার স্থাপন এবং বিকেল ৫টার পর তারা যেন টিসিবি’র সরবরাহকৃত খাদ্যসামগ্রী পেতে পারেন সেই উদ্যোগসহ সরকার ও মালিক পক্ষের সহযোগিতায় বেতন-ভাতাদি, নিরাপত্তা, বাসস্থান ও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে সহয়তা প্রদান করা হবে। গাজীপুর মহানগরীর সকল বস্তিবাসীর প্রাপ্ত নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে । শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ী সমাজের ভোগান্তি কমাতে জিসিসির আ লিক কার্যালয়ে হেল্প-ডেক্স স্থাপন করা হবে।

তরুণদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি ও উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের লক্ষ্যে এবং বয়স্ক ও শিশুদের মিলনস্থল ও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘ওয়ার্ড সেন্টার’ নির্মাণ করার উদ্যোগ গ্রহন করা হবে। সেগুলোতে কমিউনিটি সেন্টার, সেবাদান কেন্দ্র, আত্মরক্ষাসহ বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, শিল্পকলা শিক্ষা কেন্দ্র,পাঠাগার প্রতিষ্ঠাসহ বহুমূখী ব্যবহার উপযোগী করা হবে। ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার তৈরির মাধ্যমে নাগরিক সেবা ও নিরাপত্তা, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং স্মার্ট নেইবারহুড কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পারস্পরিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত পাড়া উৎসবসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হচ্ছে ইশতেহারে।

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করণে, সিটিজেন চার্টার বা নাগরিক সনদ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি বিভাগকে দুর্নীতিমুক্ত রেখে জিসিসির সার্বিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। “জনতার মুখোমুখী” শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মহানগর ও ওয়ার্ড ভিত্তিক সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।

ইশতেহার ঘোষণার সময় তার সাথে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আতাউল্লা মন্ডলসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।