ঢাকা ০৯:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কুমিল্লায় বৃক্ষপ্রেমী আবু নাঈমের ‘উদ্ভিদ জাদুঘর’

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:১৫:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০২৩
  • / ৪৬৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// কামাল আতার্তুক মিসেল //

কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার একটি ছোট্ট গ্রামের নাম গুণানন্দী। ওই গ্রামের একজন বৃক্ষপ্রেমী ডা. মো. আবু নাঈমের বাড়ির ছাদ, আঙিনা, বারান্দা, সিঁড়ি সর্বত্র বর্ণিল উদ্ভিদের সমাহার, বাদ যায়নি খাবারের টেবিলও। নানা প্রজাতির ক্যাকটাস আর দেশি-বিদেশি নানান জাতের ফুল ও অর্কিডে সাজানো হয়েছে বাড়িটির প্রতি ইঞ্চি জায়গা। এটা তার ১০ বছরের সাধনা। তার বাড়িটিকে কেউ বলেন ‘গাছবাড়ি’, আবার কেউবা বলেন ‘উদ্ভিদ জাদুঘর’। বর্তমানে তার বাড়িতে আছে হাজারেরও অধিক দেশি-বিদেশি ফলদ-বনজ, ঔষধিসহ নানান প্রজাতির ফুলের গাছ। এখান থেকে তিনি বিনা মূল্যে বিতরণ করেছেন অর্ধ-লক্ষাধিক গাছ। তার এ ‘উদ্ভিদ জাদুঘরের’ কথা এখন বৃক্ষপ্রেমী মানুষের মুখে মুখে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে বাড়িতে। বৃক্ষপ্রেমী ডা. আবু নাঈম ও এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডা. আবু নাঈমের বাড়ির পুরোটাই গাছের দখলে, কোথায়ও যেন পা ফেলার স্থান নেই। একটি ভবনের ছাদ যেন ফুলের মেলা। সেখানে দেখা মেলে অন্তত ৪৪ প্রজাতির গোলাপ। আরেকটি ভবন যেন দেশী-বিদেশী অর্কিড, ক্যাকটাস, ফুল ও নানান প্রজাতির গাছে মোড়ানো। আছে পারুল ফুল, মাংকি ব্রাশ ফ্লাওয়ার, লাল কদম, বারমাসি কদম, সাদা ও নীল মণিলতা, সোলান্ডত্থা, পেন্ডাসহ পাঁচ শতাধিক রকমের ফুল। স্থল থেকে জলের সংগ্রহেও কম যাননি ডা. নাঈম। জলজ গাছের মধ্যে আছে দেশি শাপলা, থাই শাপলা, জলজ লজ্জাবতী, ফ্ল্যাগ প্ল্যান্ট, স্বর্ণ কুমুদ, জল গোলাপ, জলজ পপি ও পানি ফল গাছ। আছে রেকর্ড সংখ্যক ৫০-৬০ প্রজাতির ক্যাকটাস। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য জিমনো, ম্যামিলারিয়া, ওলডম্যান, সাকুলেন্ট ও জীবন্ত পাথর। অর্কিডের মধ্যে আছে শতাধিক প্রজাতির ডেনড্রবিয়াম, ক্যাটেলিয়া, ফ্যালনপ্সিস, ভ্যান্ডা ও মোকারা প্রভৃতি। মাটিতে জন্মেছে ২০ প্রজাতির অর্কিড। বাড়ির ভবনের ছাদে ঝুলছে মাটির সঙ্গে সংযোগহীন দুর্বা ঘাসের মতো এক প্রকার গাছ, যার নাম এয়ারপ্লান্ট। মেয়েদের কানের ঝুমকার মতো এক প্রকারের ফুলও আছে সেখানে, নাম চাইনিজ লণ্ঠন। ডা. নাঈম এসবের বীজ, কলম আর চারা বিনামূল্যে বিতরণ করেন।
ডা. আবু নাঈম বলেন, তিনি কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের প্রভাষক, চিকিৎসক পেশার পাশাপাশি গাছ আর ফুলের পরিচর্যায় আনন্দ খুঁজে পান। সামাজিক বন বিভাগ কুমিল্লার বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বাসসকে বলেন, পরিবেশ ও প্রকৃতির জন্য গাছের বিকল্প নেই। তবে নানা কারণে গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে ডা. নাইমের এ প্রচেষ্টা তরুণদের সবুজ আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

কুমিল্লায় বৃক্ষপ্রেমী আবু নাঈমের ‘উদ্ভিদ জাদুঘর’

আপডেট সময় : ০২:১৫:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০২৩

// কামাল আতার্তুক মিসেল //

কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার একটি ছোট্ট গ্রামের নাম গুণানন্দী। ওই গ্রামের একজন বৃক্ষপ্রেমী ডা. মো. আবু নাঈমের বাড়ির ছাদ, আঙিনা, বারান্দা, সিঁড়ি সর্বত্র বর্ণিল উদ্ভিদের সমাহার, বাদ যায়নি খাবারের টেবিলও। নানা প্রজাতির ক্যাকটাস আর দেশি-বিদেশি নানান জাতের ফুল ও অর্কিডে সাজানো হয়েছে বাড়িটির প্রতি ইঞ্চি জায়গা। এটা তার ১০ বছরের সাধনা। তার বাড়িটিকে কেউ বলেন ‘গাছবাড়ি’, আবার কেউবা বলেন ‘উদ্ভিদ জাদুঘর’। বর্তমানে তার বাড়িতে আছে হাজারেরও অধিক দেশি-বিদেশি ফলদ-বনজ, ঔষধিসহ নানান প্রজাতির ফুলের গাছ। এখান থেকে তিনি বিনা মূল্যে বিতরণ করেছেন অর্ধ-লক্ষাধিক গাছ। তার এ ‘উদ্ভিদ জাদুঘরের’ কথা এখন বৃক্ষপ্রেমী মানুষের মুখে মুখে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে বাড়িতে। বৃক্ষপ্রেমী ডা. আবু নাঈম ও এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডা. আবু নাঈমের বাড়ির পুরোটাই গাছের দখলে, কোথায়ও যেন পা ফেলার স্থান নেই। একটি ভবনের ছাদ যেন ফুলের মেলা। সেখানে দেখা মেলে অন্তত ৪৪ প্রজাতির গোলাপ। আরেকটি ভবন যেন দেশী-বিদেশী অর্কিড, ক্যাকটাস, ফুল ও নানান প্রজাতির গাছে মোড়ানো। আছে পারুল ফুল, মাংকি ব্রাশ ফ্লাওয়ার, লাল কদম, বারমাসি কদম, সাদা ও নীল মণিলতা, সোলান্ডত্থা, পেন্ডাসহ পাঁচ শতাধিক রকমের ফুল। স্থল থেকে জলের সংগ্রহেও কম যাননি ডা. নাঈম। জলজ গাছের মধ্যে আছে দেশি শাপলা, থাই শাপলা, জলজ লজ্জাবতী, ফ্ল্যাগ প্ল্যান্ট, স্বর্ণ কুমুদ, জল গোলাপ, জলজ পপি ও পানি ফল গাছ। আছে রেকর্ড সংখ্যক ৫০-৬০ প্রজাতির ক্যাকটাস। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য জিমনো, ম্যামিলারিয়া, ওলডম্যান, সাকুলেন্ট ও জীবন্ত পাথর। অর্কিডের মধ্যে আছে শতাধিক প্রজাতির ডেনড্রবিয়াম, ক্যাটেলিয়া, ফ্যালনপ্সিস, ভ্যান্ডা ও মোকারা প্রভৃতি। মাটিতে জন্মেছে ২০ প্রজাতির অর্কিড। বাড়ির ভবনের ছাদে ঝুলছে মাটির সঙ্গে সংযোগহীন দুর্বা ঘাসের মতো এক প্রকার গাছ, যার নাম এয়ারপ্লান্ট। মেয়েদের কানের ঝুমকার মতো এক প্রকারের ফুলও আছে সেখানে, নাম চাইনিজ লণ্ঠন। ডা. নাঈম এসবের বীজ, কলম আর চারা বিনামূল্যে বিতরণ করেন।
ডা. আবু নাঈম বলেন, তিনি কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের প্রভাষক, চিকিৎসক পেশার পাশাপাশি গাছ আর ফুলের পরিচর্যায় আনন্দ খুঁজে পান। সামাজিক বন বিভাগ কুমিল্লার বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বাসসকে বলেন, পরিবেশ ও প্রকৃতির জন্য গাছের বিকল্প নেই। তবে নানা কারণে গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে ডা. নাইমের এ প্রচেষ্টা তরুণদের সবুজ আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করবে।