ঢাকা ১০:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

৭ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে সেবা

কলাপাড়ায় ১৪ পদের ৯ পদ শূন্য : স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

এএম মিজানুর রহমান বুলেট
  • আপডেট সময় : ০৫:০৮:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৫৭৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যায় গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার মান খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র গুলোতে জনবল ও চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা। ফলে গ্রাম্য চিকিৎসক বা ওষুধের দোকানদাররাই রোগীদের ভরসা। রোগীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের ছুঁটতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এদিকে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও বাস্তবে এর প্রতিফলন নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র আছে। পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়গুলো ৬ রুমবিশিষ্ট। বসবাসের কোয়াটারের অবস্থা ভাল নেই। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে রয়েছে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। সরকারিভাবে এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহ ও প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য জনবলের সৃষ্ট পদ রয়েছে। কিন্তু জনবল সংকটে গ্রামের সরকারি এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হচ্ছে। সৃজনকৃত পদ আছে কিন্তু জনবল নেই। কলাপাড়ায় ৭ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র মধ্যে ৫টির ভবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। চাকামইয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, লালুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, নীলগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, লতাচাপলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব ভবনেই আতঙ্ক নিয়ে সেবা দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ভবন ধসের আশঙ্কায় থাকেন রোগীরাও। পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় গুলো ১৯৮৭ সালে ৪৫ শতাংশ জমির ওপর স্থাপিত হয়। উপজেলাবাসীর ভরসা ৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। কিন্তু পদ থাকলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে অনেক চিকিৎসক নেই। ৭টি কেন্দ্রের প্রধান ১৪ পদের ৯টিই শূন্য। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিটিতে সৃষ্ট জনবলের পদ রয়েছে পাঁচটি। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অধীনে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে samcmo একজন , F W V এক জন, ফার্মাসিস্ট এক জন ও এম এল এস এস এক জন, আয়া এক জন।

বুধবার সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলিতে জনবলের ঘাটতি রয়েছে। অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জনবল এনে সপ্তাহে পালন করে চালু রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে গর্ভবর্তী মায়েদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। গর্ভধারন থেকে শুরু করে সন্তান জন্মদানের পুরো সময়টাতেই চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে তাদের। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে মাতৃস্বাস্থ্য, শিশু স্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা, পিল, কন্ডম, ইমপ্লাসন, আইউডি এবং গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী অন্যান্য সেবা দেয়া হয়। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ে গর্ভবর্তী মায়েরা। কেন্দ্রগুলোতে ২৪ ঘন্টা নিরবচ্ছিন্ন প্রসবকালীন সেবা প্রদান করার কথা। কিন্তু জনবল সঙ্কটের কারণে কেন্দ্র গুলো ২৪ ঘন্টা সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিন এলাকার রোগীদের নিরুপায় হয়ে যেতে হচ্ছে শহর কিংবা অন্য কোনো প্রাইভেট ক্লিনিকে।

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, কলাপাড়ায় ৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র বিভিন্ন রোগের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এসব ক্লিনিকের মধ্যে চাকামইয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, লালুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, নীলগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, ধানখালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, ধুলাসার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, লতাচাপলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জরাজীর্ণ এসব ক্লিনিক ৩৬ বছর আগে নির্মিত। এরপর আর সংস্কার না করায় এগুলো তীব্র ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের শুন্য পদ হলো- চাকামইয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র-samcmo, FWV। লালুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র FWV। মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র samcmo। নীলগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র samcmo,  ধানখালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র samcmo । ধুলাসার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র samcmo  । লতাচাপলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র samcmo, FWV।

নীলগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনগুলোর ছাদ ও চারপাশের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। পলেস্তারা খসে পড়ছে। দরজা-জানলা ভাঙা। কোনো কোনো ভবনের মেঝে দেবে গেছে। বৃষ্টি পানি ছাদ চুইয়ে শ্যাওলা পড়েছে। বর্ষাকালে দেয়াল ও ছাদ চুইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে। পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও নেই। যে কোনো সময় পুরো ভবনটি ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এভাবে একই অবস্থা মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র। চিকিৎসাসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর জন্য সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করে। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্বাস্থ্য বিভাগ ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তবে ইউনিয়ন সংখ্যা অনুসারে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঘাটতি রয়েছে। কেননা সব ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। আর যেগুলো রয়েছে তাতেও নানা সংকটে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আশানুরূপ সেবা পাচ্ছেন না। জনবলের ঘাটতি সেবা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

নীলগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের FWV মোসা. আয়শা আক্তার বলেন, গড়ে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫ জন রোগী ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নানা সমস্যার মধ্যে তাদের সেবা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে বড় সমস্যা ঝুঁকির্পূর্ণ ভবন। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ভবন আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ছাদ থেকে বড় বড় পলেস্তারা খসে পড়ছে। কর্তৃপক্ষ এসব মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছে না।

লালুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের samcmo ছগির হোসেন বলেন, প্রতিদিনই ভয়ে ভয়ে থাকি, কখন মাথায় পলেস্তারা খসে পড়ে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জরাজীর্ন ভবনে বসে অন্তঃসক্তা মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে হচ্ছে।

মজিদপুর গ্রামের আকলিমা বেগম, নাওভাঙ্গা গ্রামের হোসনে আরা বেগম চিকিৎসা নিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছেন। তারা বলেন, বড় ডাক্তার নাই। গরিব মানুষ, কলাপাড়া-পটুয়াখালী যাইয়া ডাক্তার দেহাইতে অনেক টাকা খরচ হইবে। এই জায়গায় একজন ডাক্তার থাকলে হেরে দেহাইতে পারতাম।

কলাপাড়া উপজেলা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র কর্মকর্তা ডা. মেহেদী হাসান রনি জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা করে বেশ কয়েকবার হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র গুলোতে জনবল কম থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জনবল কম থাকার বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

৭ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে সেবা

কলাপাড়ায় ১৪ পদের ৯ পদ শূন্য : স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

আপডেট সময় : ০৫:০৮:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩

জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যায় গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার মান খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র গুলোতে জনবল ও চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা। ফলে গ্রাম্য চিকিৎসক বা ওষুধের দোকানদাররাই রোগীদের ভরসা। রোগীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের ছুঁটতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এদিকে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও বাস্তবে এর প্রতিফলন নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র আছে। পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়গুলো ৬ রুমবিশিষ্ট। বসবাসের কোয়াটারের অবস্থা ভাল নেই। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে রয়েছে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। সরকারিভাবে এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহ ও প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য জনবলের সৃষ্ট পদ রয়েছে। কিন্তু জনবল সংকটে গ্রামের সরকারি এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হচ্ছে। সৃজনকৃত পদ আছে কিন্তু জনবল নেই। কলাপাড়ায় ৭ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র মধ্যে ৫টির ভবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। চাকামইয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, লালুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, নীলগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, লতাচাপলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব ভবনেই আতঙ্ক নিয়ে সেবা দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ভবন ধসের আশঙ্কায় থাকেন রোগীরাও। পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় গুলো ১৯৮৭ সালে ৪৫ শতাংশ জমির ওপর স্থাপিত হয়। উপজেলাবাসীর ভরসা ৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। কিন্তু পদ থাকলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে অনেক চিকিৎসক নেই। ৭টি কেন্দ্রের প্রধান ১৪ পদের ৯টিই শূন্য। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিটিতে সৃষ্ট জনবলের পদ রয়েছে পাঁচটি। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অধীনে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে samcmo একজন , F W V এক জন, ফার্মাসিস্ট এক জন ও এম এল এস এস এক জন, আয়া এক জন।

বুধবার সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলিতে জনবলের ঘাটতি রয়েছে। অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জনবল এনে সপ্তাহে পালন করে চালু রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে গর্ভবর্তী মায়েদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। গর্ভধারন থেকে শুরু করে সন্তান জন্মদানের পুরো সময়টাতেই চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে তাদের। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে মাতৃস্বাস্থ্য, শিশু স্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা, পিল, কন্ডম, ইমপ্লাসন, আইউডি এবং গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী অন্যান্য সেবা দেয়া হয়। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ে গর্ভবর্তী মায়েরা। কেন্দ্রগুলোতে ২৪ ঘন্টা নিরবচ্ছিন্ন প্রসবকালীন সেবা প্রদান করার কথা। কিন্তু জনবল সঙ্কটের কারণে কেন্দ্র গুলো ২৪ ঘন্টা সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিন এলাকার রোগীদের নিরুপায় হয়ে যেতে হচ্ছে শহর কিংবা অন্য কোনো প্রাইভেট ক্লিনিকে।

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, কলাপাড়ায় ৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র বিভিন্ন রোগের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এসব ক্লিনিকের মধ্যে চাকামইয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, লালুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, নীলগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, ধানখালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, ধুলাসার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, লতাচাপলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জরাজীর্ণ এসব ক্লিনিক ৩৬ বছর আগে নির্মিত। এরপর আর সংস্কার না করায় এগুলো তীব্র ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের শুন্য পদ হলো- চাকামইয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র-samcmo, FWV। লালুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র FWV। মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র samcmo। নীলগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র samcmo,  ধানখালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র samcmo । ধুলাসার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র samcmo  । লতাচাপলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র samcmo, FWV।

নীলগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনগুলোর ছাদ ও চারপাশের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। পলেস্তারা খসে পড়ছে। দরজা-জানলা ভাঙা। কোনো কোনো ভবনের মেঝে দেবে গেছে। বৃষ্টি পানি ছাদ চুইয়ে শ্যাওলা পড়েছে। বর্ষাকালে দেয়াল ও ছাদ চুইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে। পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও নেই। যে কোনো সময় পুরো ভবনটি ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এভাবে একই অবস্থা মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র। চিকিৎসাসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর জন্য সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করে। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্বাস্থ্য বিভাগ ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তবে ইউনিয়ন সংখ্যা অনুসারে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঘাটতি রয়েছে। কেননা সব ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। আর যেগুলো রয়েছে তাতেও নানা সংকটে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আশানুরূপ সেবা পাচ্ছেন না। জনবলের ঘাটতি সেবা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

নীলগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের FWV মোসা. আয়শা আক্তার বলেন, গড়ে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫ জন রোগী ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নানা সমস্যার মধ্যে তাদের সেবা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে বড় সমস্যা ঝুঁকির্পূর্ণ ভবন। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ভবন আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ছাদ থেকে বড় বড় পলেস্তারা খসে পড়ছে। কর্তৃপক্ষ এসব মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছে না।

লালুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের samcmo ছগির হোসেন বলেন, প্রতিদিনই ভয়ে ভয়ে থাকি, কখন মাথায় পলেস্তারা খসে পড়ে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জরাজীর্ন ভবনে বসে অন্তঃসক্তা মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে হচ্ছে।

মজিদপুর গ্রামের আকলিমা বেগম, নাওভাঙ্গা গ্রামের হোসনে আরা বেগম চিকিৎসা নিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছেন। তারা বলেন, বড় ডাক্তার নাই। গরিব মানুষ, কলাপাড়া-পটুয়াখালী যাইয়া ডাক্তার দেহাইতে অনেক টাকা খরচ হইবে। এই জায়গায় একজন ডাক্তার থাকলে হেরে দেহাইতে পারতাম।

কলাপাড়া উপজেলা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র কর্মকর্তা ডা. মেহেদী হাসান রনি জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা করে বেশ কয়েকবার হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র গুলোতে জনবল কম থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জনবল কম থাকার বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।