ঢাকা ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কয়রা মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ নিয়োগে সদস্যকে পিটিয়ে স্বাক্ষর করালেন সভাপতি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:০৯:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩
  • / ৪৭২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কয়রা প্রতিনিধি :

খুলনার কয়রা উপজেলার কয়রা উত্তর চক আমিনিয়া বহুমুখি কামিল মাদ্রাসায় প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগ পরিক্ষায় কমিটির এক সদস্য নিয়োগের কাগজে স্বাক্ষর না করায় রাস্তার মধ্যে বেধড়ক পিটিয়ে বেঁধে ঘরের মধ্যে আটকিয়ে স্বাক্ষর করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত আনুঃ ৯ টার সময় উপজেলার দেয়াড়া গ্রামে।

প্রত্যক্ষদর্শী এমন একাধিক ব্যক্তি জানায়, নিয়োগ কমিটির সদস্য ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রতিনিধি ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নজরুল ইসলামের গাড়ী আটকে দেয় মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ তার বাড়ীর সামনে কয়রা খুলনা সড়কের উপর। চেয়ারম্যান উত্তর চক কামিল মাদ্রাসার সভাপতি এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক। শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে গাড়ী আটকিয়ে চেয়ারম্যান নিজেই নজরুল ইসলামকে টেনে হিচড়ে গাড়ী থেকে নামিয়ে নিজ হাতে পিটিয়ে বেধে ফেলে এবং চেয়ারম্যানের পেটুয়া বাহিনি নজরুল ইসলামকে বাধা অবস্থায় চেয়ারম্যানের ঘরে নিয়ে অধ্যক্ষ নিয়োগের কাগজে স্বাক্ষর করে নেয়। এসময় অধ্যক্ষ পদ লোভী সাবেক ছাত্র শিবির ও বর্তমান জামায়াত নেতা মাওঃ মাসুদ চেয়ারম্যানকে বলে কাজ শেষ হয়েছে এবার হারামিকে ছেড়ে দাও। অতঃপর বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ আহত নজরুল ইসলামকে উদ্ধার করে রাত আনুঃ ১০ টার সময় জায়গীরমহল হাসপাতালে ভর্তি করে এবং পরে খুলনায় উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন।

আহত নজরুল ইসলাম চিকিৎসাধীন আছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ বিষয় খবর নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার জুম্মার নামাজ বাদ কয়রা উত্তর চক কামিল মাদ্রাসাায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানে ১৪ জন আবেদনকারির মধ্যে ৬ জন অংশ নেয়। তবে কেউ পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়নি। এরপর মাদ্রসা সভাপতি চেয়ারম্যান মাহমুদ তার পছন্দের প্রার্থী পূর্বেই ঠিক করা জামায়াত নেতা মাওঃ মাসুদকে নিয়োগ দিতে চাপ প্রয়োগ করলে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম নিয়ম অনুযায়ী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন, কিন্তু মাহমুদ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ তাকে দেখে নেবেন বলে মাদ্রাসা কমিটির সকলের সামনে হুমকী দেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ খুলনার ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসার সভাপতি একজন অর্থলোভী ও ছোট মনের মানুষ। তিনি বলেন, রাতে ঢাকায় ফেরার পথে মাহমুদের বাড়ীর সামনে গাড়ী আটকিয়ে মাহমুদ তাকে যেভাবে নির্যাতন করে নিয়োগ কাগজে স্বাক্ষর করে নিয়েছেন তা কোন মানুষের দ্বারা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান মাহমুদ নিজে ও তার পেটুয়া বাহিনি আমার উপর সীমাহীন শারিরিক নির্যাতন করে ফোন সহ কাগজ পত্র ছিনিয়ে নিয়েছেন। এমনকি মাহমুদের সাথে এসময় নিয়োগের কাগজ পত্র নিয়ে অধ্যক্ষ পদলোভী মাসুদও উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমিনুর রহমান বলেন, মারপিটের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কয়রা থানা অফিসার ইনচার্জ এবিএম এস দোহা বিষয়টি তদন্ত করছেন বলে জানান।

জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আকতারুজ্জামান বাবু ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক বলে তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, একজন রাষ্ট্রদ্রোহী ১৩ টি মামলার আসামী সাবেক খুলনা জেলা শিবিরের সভাপতি বর্তমান জামাতে ইসলামের শীর্ষ নেতা মাওঃ মাসুদকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিতে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা যারা ঘটিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে সার্বিক বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে সকল কতৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া জোর পূর্বক মারপিট করে স্বাক্ষর করা নিয়োগ বাতিলের জন্য তিনি কতৃপক্ষকে জানাবেন।

এ সম্পর্কে চেয়ারম্যান মাহমুদ জানান, অধ্যাপক নজরুল তার বাড়ীতে নাশতা শেষে অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

এদিকে এ ঘটনায় সুধিমহলে চেয়ারম্যান মাহমুদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া কয়েক মাস আগেও মাহমুদ তার সচিবকে বেধড়ক পিটিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন।

 

বা/খ: জই

নিউজটি শেয়ার করুন

কয়রা মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ নিয়োগে সদস্যকে পিটিয়ে স্বাক্ষর করালেন সভাপতি

আপডেট সময় : ০৬:০৯:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩

কয়রা প্রতিনিধি :

খুলনার কয়রা উপজেলার কয়রা উত্তর চক আমিনিয়া বহুমুখি কামিল মাদ্রাসায় প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগ পরিক্ষায় কমিটির এক সদস্য নিয়োগের কাগজে স্বাক্ষর না করায় রাস্তার মধ্যে বেধড়ক পিটিয়ে বেঁধে ঘরের মধ্যে আটকিয়ে স্বাক্ষর করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত আনুঃ ৯ টার সময় উপজেলার দেয়াড়া গ্রামে।

প্রত্যক্ষদর্শী এমন একাধিক ব্যক্তি জানায়, নিয়োগ কমিটির সদস্য ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রতিনিধি ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নজরুল ইসলামের গাড়ী আটকে দেয় মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ তার বাড়ীর সামনে কয়রা খুলনা সড়কের উপর। চেয়ারম্যান উত্তর চক কামিল মাদ্রাসার সভাপতি এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক। শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে গাড়ী আটকিয়ে চেয়ারম্যান নিজেই নজরুল ইসলামকে টেনে হিচড়ে গাড়ী থেকে নামিয়ে নিজ হাতে পিটিয়ে বেধে ফেলে এবং চেয়ারম্যানের পেটুয়া বাহিনি নজরুল ইসলামকে বাধা অবস্থায় চেয়ারম্যানের ঘরে নিয়ে অধ্যক্ষ নিয়োগের কাগজে স্বাক্ষর করে নেয়। এসময় অধ্যক্ষ পদ লোভী সাবেক ছাত্র শিবির ও বর্তমান জামায়াত নেতা মাওঃ মাসুদ চেয়ারম্যানকে বলে কাজ শেষ হয়েছে এবার হারামিকে ছেড়ে দাও। অতঃপর বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ আহত নজরুল ইসলামকে উদ্ধার করে রাত আনুঃ ১০ টার সময় জায়গীরমহল হাসপাতালে ভর্তি করে এবং পরে খুলনায় উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন।

আহত নজরুল ইসলাম চিকিৎসাধীন আছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ বিষয় খবর নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার জুম্মার নামাজ বাদ কয়রা উত্তর চক কামিল মাদ্রাসাায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানে ১৪ জন আবেদনকারির মধ্যে ৬ জন অংশ নেয়। তবে কেউ পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়নি। এরপর মাদ্রসা সভাপতি চেয়ারম্যান মাহমুদ তার পছন্দের প্রার্থী পূর্বেই ঠিক করা জামায়াত নেতা মাওঃ মাসুদকে নিয়োগ দিতে চাপ প্রয়োগ করলে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম নিয়ম অনুযায়ী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন, কিন্তু মাহমুদ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ তাকে দেখে নেবেন বলে মাদ্রাসা কমিটির সকলের সামনে হুমকী দেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ খুলনার ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসার সভাপতি একজন অর্থলোভী ও ছোট মনের মানুষ। তিনি বলেন, রাতে ঢাকায় ফেরার পথে মাহমুদের বাড়ীর সামনে গাড়ী আটকিয়ে মাহমুদ তাকে যেভাবে নির্যাতন করে নিয়োগ কাগজে স্বাক্ষর করে নিয়েছেন তা কোন মানুষের দ্বারা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান মাহমুদ নিজে ও তার পেটুয়া বাহিনি আমার উপর সীমাহীন শারিরিক নির্যাতন করে ফোন সহ কাগজ পত্র ছিনিয়ে নিয়েছেন। এমনকি মাহমুদের সাথে এসময় নিয়োগের কাগজ পত্র নিয়ে অধ্যক্ষ পদলোভী মাসুদও উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমিনুর রহমান বলেন, মারপিটের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কয়রা থানা অফিসার ইনচার্জ এবিএম এস দোহা বিষয়টি তদন্ত করছেন বলে জানান।

জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আকতারুজ্জামান বাবু ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক বলে তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, একজন রাষ্ট্রদ্রোহী ১৩ টি মামলার আসামী সাবেক খুলনা জেলা শিবিরের সভাপতি বর্তমান জামাতে ইসলামের শীর্ষ নেতা মাওঃ মাসুদকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিতে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা যারা ঘটিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে সার্বিক বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে সকল কতৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া জোর পূর্বক মারপিট করে স্বাক্ষর করা নিয়োগ বাতিলের জন্য তিনি কতৃপক্ষকে জানাবেন।

এ সম্পর্কে চেয়ারম্যান মাহমুদ জানান, অধ্যাপক নজরুল তার বাড়ীতে নাশতা শেষে অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

এদিকে এ ঘটনায় সুধিমহলে চেয়ারম্যান মাহমুদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া কয়েক মাস আগেও মাহমুদ তার সচিবকে বেধড়ক পিটিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন।

 

বা/খ: জই