ঢাকা ১১:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

এনায়েতপুরে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

মতিয়ার রহমান, এনায়েতপুর প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১২:১২:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৫৭৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
বাঙালি জীবনের হাজার বছরের ঐতিহ্য বহনকারী মাটির তৈরি সামগ্রীর চাহিদা কমতে থাকায় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন শিল্পটি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। আধুনিক জিনিসপত্রের ভিড়ে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকা এবং মাটির দাম বৃদ্ধিসহ নানা সংকটের কারনে এ শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে বলে জানান কুমারেরা। মৃৎশিল্প বাঙালির শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য।
এনায়েতপুরের বেতিলে একসময় অর্ধশতাধিক মৃৎশিল্প কারিগরদের ঘর থাকলেও এখন সে সংখ্যায় এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ছয় ঘরে। আধুনিকতার যুগে মৃৎশিল্পকে ধরে রাখতে সরকারি ভাবে উদ্যোগী না হলে বিলুপ্তি হবে এ শিল্প। কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে এই শিল্পের প্রসার। অনেকে এ পেশায় থাকলেও মাটির তৈরি সামগ্রীর চাহিদা না থাকায় অভাব-অনটনে সংসার চালাতে পারছেন না তারা। একবেলা আধবেলা খেয়ে দিনাতিপাত করছেন অনেক মৃৎশিল্পী। এক সময়ের কর্মব্যস্ত কুমারপাড়ায় এখন শুনসান নিরবতা।
বেতিল গ্রামের ক্ষুদ্র মৃৎশিল্পী শ্রী বানু রাম পাল,ও তার স্ত্রী শ্যামলী রাণী পাল বাংলা খবর কে জানান, আমরা অনেক কষ্ট করে মাটি সংগ্রহ করে এই সকল মাটির তৈরি আসবাবপত্র তৈরী করি, কিন্তুু এই কাজের বিনিময়ে ন্যায্য মূল্য পাই না। এতে আমাদের অনেক কষ্টে সংসার চলে। আমার পূর্বপুরুষগন এই পেশা করেছেন। ৩ ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ দিতে পারি না ঠিক মত, ছেলেমেয়েদের লেখা পড়া করাতে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়, কিন্তুু আমরা পারি না, অনেক কষ্টে দিন চলছে আমাদের।
অপরদিকে, রিনা রাণী ও তার স্বামী লক্ষণ পাল বলেন, প্রথমে মাটি তৈরি করে তার পর বিভিন্ন আসবাপত্র তৈরি করতে হয়। মাটির তৈরি এসব সামগ্রী শুকানো, রং করাসহ পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত করতে সাত দিন সময় লাগে। পরে এসব সামগ্রী বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বেতিলের বিভিন্ন এলাকায়।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার কাছে আবেদন, আমাদের যেন সাহায্যে সহোযোগিতা করেন, যাতে করে আমরা ছেলে সন্তান নিয়ে সুখে শান্তি তে থাকতে পারি, এবং মৃৎশিল্পে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্হা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বেতিল এর ১নং সোদিয়া চাঁদপুর এর ইউপি চেয়ারম্যান বাংলা খবর কে জানান, মাটির জিনিসের চাহিদা কমতে থাকায় এবং দূরের এলাকা থেকে বেশি দামে মাটি কিনতে হয় বলে মৃৎশিল্পীরা দিন দিন এ ঐতিহ্য থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। তবে কিছু সংখ্যক পরিবার বংশ পরম্পরার কারণে এ শিল্প ধরে রেখেছে। এ শিল্পের জন্য সরকারিভাবে যদি কোনো সহযোগিতা করা হয় তবে বাঙালির ঐতিহ্যময় এ শিল্প ধরে রাখতে পারবে মৃৎশিল্পীরা।
বাখ//আর

নিউজটি শেয়ার করুন

এনায়েতপুরে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

আপডেট সময় : ১২:১২:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩
বাঙালি জীবনের হাজার বছরের ঐতিহ্য বহনকারী মাটির তৈরি সামগ্রীর চাহিদা কমতে থাকায় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন শিল্পটি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। আধুনিক জিনিসপত্রের ভিড়ে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকা এবং মাটির দাম বৃদ্ধিসহ নানা সংকটের কারনে এ শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে বলে জানান কুমারেরা। মৃৎশিল্প বাঙালির শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য।
এনায়েতপুরের বেতিলে একসময় অর্ধশতাধিক মৃৎশিল্প কারিগরদের ঘর থাকলেও এখন সে সংখ্যায় এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ছয় ঘরে। আধুনিকতার যুগে মৃৎশিল্পকে ধরে রাখতে সরকারি ভাবে উদ্যোগী না হলে বিলুপ্তি হবে এ শিল্প। কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে এই শিল্পের প্রসার। অনেকে এ পেশায় থাকলেও মাটির তৈরি সামগ্রীর চাহিদা না থাকায় অভাব-অনটনে সংসার চালাতে পারছেন না তারা। একবেলা আধবেলা খেয়ে দিনাতিপাত করছেন অনেক মৃৎশিল্পী। এক সময়ের কর্মব্যস্ত কুমারপাড়ায় এখন শুনসান নিরবতা।
বেতিল গ্রামের ক্ষুদ্র মৃৎশিল্পী শ্রী বানু রাম পাল,ও তার স্ত্রী শ্যামলী রাণী পাল বাংলা খবর কে জানান, আমরা অনেক কষ্ট করে মাটি সংগ্রহ করে এই সকল মাটির তৈরি আসবাবপত্র তৈরী করি, কিন্তুু এই কাজের বিনিময়ে ন্যায্য মূল্য পাই না। এতে আমাদের অনেক কষ্টে সংসার চলে। আমার পূর্বপুরুষগন এই পেশা করেছেন। ৩ ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ দিতে পারি না ঠিক মত, ছেলেমেয়েদের লেখা পড়া করাতে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়, কিন্তুু আমরা পারি না, অনেক কষ্টে দিন চলছে আমাদের।
অপরদিকে, রিনা রাণী ও তার স্বামী লক্ষণ পাল বলেন, প্রথমে মাটি তৈরি করে তার পর বিভিন্ন আসবাপত্র তৈরি করতে হয়। মাটির তৈরি এসব সামগ্রী শুকানো, রং করাসহ পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত করতে সাত দিন সময় লাগে। পরে এসব সামগ্রী বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বেতিলের বিভিন্ন এলাকায়।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার কাছে আবেদন, আমাদের যেন সাহায্যে সহোযোগিতা করেন, যাতে করে আমরা ছেলে সন্তান নিয়ে সুখে শান্তি তে থাকতে পারি, এবং মৃৎশিল্পে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্হা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বেতিল এর ১নং সোদিয়া চাঁদপুর এর ইউপি চেয়ারম্যান বাংলা খবর কে জানান, মাটির জিনিসের চাহিদা কমতে থাকায় এবং দূরের এলাকা থেকে বেশি দামে মাটি কিনতে হয় বলে মৃৎশিল্পীরা দিন দিন এ ঐতিহ্য থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। তবে কিছু সংখ্যক পরিবার বংশ পরম্পরার কারণে এ শিল্প ধরে রেখেছে। এ শিল্পের জন্য সরকারিভাবে যদি কোনো সহযোগিতা করা হয় তবে বাঙালির ঐতিহ্যময় এ শিল্প ধরে রাখতে পারবে মৃৎশিল্পীরা।
বাখ//আর