ঢাকা ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

এনায়েতপুরে বাদামের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৫২:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৫০০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আসাদুর রহমান, এনায়েতপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি :

বাজান এবার অনেক ভাল বাদাম হইছে, বাদাম বিক্রি করা টাকা দিয়ে ঈদ ভাল কাটবে। এভাবেই নওহাটা গ্রামের আব্দুল মজিদ হাস্যউজ্জল মুখে কথাগুলো বলছিলেন।

অন্যান্য বছরের চাইতে এবছর বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর থানা আওতাধীন যমুনা নদীর চরে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারনে বাদামের ফলন ভাল হয়েছে। বাদাম চাষ লাভ জনক হওয়ার চাষীরা বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছে। আর অন্যান্য ফসলের চাইতে বাদাম চাষ করতে খরচও কম লাগে। অল্প কিছু কীটনাশক ও অল্প পরিসরে চাষ দিলেই বাদাম চাষ করা সম্ভব। বাদাম চাষ করতে বাড়তি সেঁচ ও নিরানি কোন প্রয়োজন হয় না। অন্য ফসলের মতো যত্ন না করেও ভাল ফলন আশা করা যায়। ফলে কম খরচে বেশি মুনাফা অর্জনের জন্য কৃষকরা বাদাম চাষে আগ্রহ বেশি দেখাচ্ছে। যমুনা চরের মাটি বেলে দো-আঁশ, বেলে দো-আঁশ মাটিতে অধিক তাপমাত্রা, পর্যাপ্ত সূর্য্যের আলো ও মাঝারি বৃষ্টি পেলে চীনাবাদাম ও দেশীও জাতের বাদামের ফলন ভাল হয়। প্রনোদনা কর্মসূচির আওতায় ৫’শ কৃষকের মধ্যে বাদামের বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করে চৌহালী কৃষি অফিস। প্রতি বছরই উপজেলার সোদিয়া চাদপুর, স্থল, খাষকাউলিয়া ইউনিয়নের যমুনা নদীর চরে বাদামের চাষ হয়। এছাড়াও ৪টি ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী কিছু জমিতেও বাদাম চাষ করা হয়েছে। তাই দিনদিন যমুনার দুর্গম চরাঞ্চলে বাদাম চাষে ক্রমেই ঝুঁকছে চাষিরা।

সৌদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের চাষী আবুল কাসেম জানান, আমি ১ বিঘার মত জমিতে বাদাম চাষ করেছি, ফলনও ভাল হয়েছে, বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১৩ মণ করে বাদাম পাচ্ছি এবং অন্য অন্য ফসলের চাইতে বাদাম চাষে শুধুই লাভ আর লাভ, খরচ কম হওয়ায় প্রতি বছরই বাদাম চাষ করে আসছি এবং লাভবানও হচ্ছি।

ব্যবসায়ী ও বাজার যাচাই করে জানা যায়, এ বছর বাদাম ৩ হাজার ৫শ থেকে ৪ হাজার ৮শ টাকা মণ ধরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি এবং বাজারে চাহিদা থাকায় বেশ লাভবান হচ্ছে চাষী ও ব্যবসায়ীরা। ফলে গত কয়েক বছর ধরে বাদাম চাষিরা একে অপরের দেখাদেখিতে লাভ জনক বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছে।

চৌহালী কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর যমুনার চরে বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১৩ মণ বাদাম উৎপাদিত হয়েছে। চরাঞ্চলের বেলে দো-আঁশ মাটিতে লাভজনক বাদাম চাষের পরিধি আরও বৃদ্ধি করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বাদাম চাষিদের পরামর্শ ও উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগীতা পাওয়ায় আগামীতে আরও বেশী জমিতে বাদাম চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে স্থানীয় চাষীরা।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মাজেদুর রহমান বলেন, অত্র চরাঞ্চলের মাটি তথা আবহাওয়া ও চিনা বাদাম চাষের জন্য উপযোগী।  এজন্য এ বছর হেক্টর প্রতি ১.৮১ মেট্টিকটন বাদাম চাষ হয়েছে। উমারপুর, ঘোড়জান, স্থল, সৌদিয়াচাঁদপুর, প্রভৃতি এলাকায় অত্র অফিস হইতে কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের ঢাকা-১, ঢাকা-৪ বাড়ী চিনা বাদাম, বিতরণ করা হয়েছে। কৃষক ভাইয়েরা এতে স্থায়ী জাতের চেয়েও অধিক ফলন পাচ্ছে। এতে কৃষকেরা দিন দিন চিনা বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছে। আমরা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রতি বছর কৃষকদের সাহায্য সহযোগিতা করব।

 

বা/খ: জই

নিউজটি শেয়ার করুন

এনায়েতপুরে বাদামের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

আপডেট সময় : ০১:৫২:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩

আসাদুর রহমান, এনায়েতপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি :

বাজান এবার অনেক ভাল বাদাম হইছে, বাদাম বিক্রি করা টাকা দিয়ে ঈদ ভাল কাটবে। এভাবেই নওহাটা গ্রামের আব্দুল মজিদ হাস্যউজ্জল মুখে কথাগুলো বলছিলেন।

অন্যান্য বছরের চাইতে এবছর বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর থানা আওতাধীন যমুনা নদীর চরে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারনে বাদামের ফলন ভাল হয়েছে। বাদাম চাষ লাভ জনক হওয়ার চাষীরা বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছে। আর অন্যান্য ফসলের চাইতে বাদাম চাষ করতে খরচও কম লাগে। অল্প কিছু কীটনাশক ও অল্প পরিসরে চাষ দিলেই বাদাম চাষ করা সম্ভব। বাদাম চাষ করতে বাড়তি সেঁচ ও নিরানি কোন প্রয়োজন হয় না। অন্য ফসলের মতো যত্ন না করেও ভাল ফলন আশা করা যায়। ফলে কম খরচে বেশি মুনাফা অর্জনের জন্য কৃষকরা বাদাম চাষে আগ্রহ বেশি দেখাচ্ছে। যমুনা চরের মাটি বেলে দো-আঁশ, বেলে দো-আঁশ মাটিতে অধিক তাপমাত্রা, পর্যাপ্ত সূর্য্যের আলো ও মাঝারি বৃষ্টি পেলে চীনাবাদাম ও দেশীও জাতের বাদামের ফলন ভাল হয়। প্রনোদনা কর্মসূচির আওতায় ৫’শ কৃষকের মধ্যে বাদামের বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করে চৌহালী কৃষি অফিস। প্রতি বছরই উপজেলার সোদিয়া চাদপুর, স্থল, খাষকাউলিয়া ইউনিয়নের যমুনা নদীর চরে বাদামের চাষ হয়। এছাড়াও ৪টি ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী কিছু জমিতেও বাদাম চাষ করা হয়েছে। তাই দিনদিন যমুনার দুর্গম চরাঞ্চলে বাদাম চাষে ক্রমেই ঝুঁকছে চাষিরা।

সৌদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের চাষী আবুল কাসেম জানান, আমি ১ বিঘার মত জমিতে বাদাম চাষ করেছি, ফলনও ভাল হয়েছে, বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১৩ মণ করে বাদাম পাচ্ছি এবং অন্য অন্য ফসলের চাইতে বাদাম চাষে শুধুই লাভ আর লাভ, খরচ কম হওয়ায় প্রতি বছরই বাদাম চাষ করে আসছি এবং লাভবানও হচ্ছি।

ব্যবসায়ী ও বাজার যাচাই করে জানা যায়, এ বছর বাদাম ৩ হাজার ৫শ থেকে ৪ হাজার ৮শ টাকা মণ ধরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি এবং বাজারে চাহিদা থাকায় বেশ লাভবান হচ্ছে চাষী ও ব্যবসায়ীরা। ফলে গত কয়েক বছর ধরে বাদাম চাষিরা একে অপরের দেখাদেখিতে লাভ জনক বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছে।

চৌহালী কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর যমুনার চরে বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১৩ মণ বাদাম উৎপাদিত হয়েছে। চরাঞ্চলের বেলে দো-আঁশ মাটিতে লাভজনক বাদাম চাষের পরিধি আরও বৃদ্ধি করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বাদাম চাষিদের পরামর্শ ও উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগীতা পাওয়ায় আগামীতে আরও বেশী জমিতে বাদাম চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে স্থানীয় চাষীরা।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মাজেদুর রহমান বলেন, অত্র চরাঞ্চলের মাটি তথা আবহাওয়া ও চিনা বাদাম চাষের জন্য উপযোগী।  এজন্য এ বছর হেক্টর প্রতি ১.৮১ মেট্টিকটন বাদাম চাষ হয়েছে। উমারপুর, ঘোড়জান, স্থল, সৌদিয়াচাঁদপুর, প্রভৃতি এলাকায় অত্র অফিস হইতে কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের ঢাকা-১, ঢাকা-৪ বাড়ী চিনা বাদাম, বিতরণ করা হয়েছে। কৃষক ভাইয়েরা এতে স্থায়ী জাতের চেয়েও অধিক ফলন পাচ্ছে। এতে কৃষকেরা দিন দিন চিনা বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছে। আমরা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রতি বছর কৃষকদের সাহায্য সহযোগিতা করব।

 

বা/খ: জই