ঢাকা ০২:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

উজিরপুরে হু-হু করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম- ক্রেতারা দিশেহারা

আব্দুর রহিম সরদার, উজিরপুর থেকে
  • আপডেট সময় : ০৬:২৫:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৪৫৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে উজিরপুরে হুহু করে বাড়ছে মাছ, মাংস , ডিম ও জালানি গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম । এক সপ্তাহের ব্যবধানে বয়লার মুরগির মাংস কেজি বিক্রি হচ্ছে ২শ’ ৫০ টাকায়। যা কিছু দিন পূর্বে ছিল ১শ’ ৯০ টাকা থেকে ২শ’ টাকা । গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭শ’ ৫০ টাকায়, যা কিছু দিন পূর্বে ছিলো ৬শ’৫০ থেকে ৭শ’ টাকা। লেয়ার ও সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩শ’ ৫০ থেকে ৩শ’ ৭০ টাকায় । ডিমের দাম কছুটা কমলেও আবার চরা দামে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১শ’ ৪০ টাকায় ।

জ্বালানি কাজে ব্যাবহৃত গ্যাস বিক্রি হচ্ছে বসুন্ধরা ১৭ শ’ টাকা, টোটাল ১ হাজার ৫ ‘ ৫০ থেকে অন্যান্য কোম্পানির গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজর ৪শ’ ৫০ টাকা পর্যন্ত । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্যাস বিক্রেতা জানান, ডিলাররা মাল কম সাপ্লাই দেখিয়ে খামখেয়ালি খাবে দাম বাড়াচ্ছে । ইলিশ এক কেজি করে প্রতি পিস ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে । চিংড়ি মাছ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১৫ শ’ টাকায় । তরমুজ বড় প্রতি পিস ৪ শ’ থেকে ৫ শ’ টাকায় । ২ শ’ টাকার কমে তেমন কোনো তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে না । লাগামহীন পোশাক ও কাপর-চোপরের দাম , যে যার মতো করে ক্রেতাদের পকেট খালি করছে । নেই কোন তদারকি ।

সরেজমিনে উজিরপুর , ধামুড়া, শিকারপুর, সাতলা, হারতা, ওটরা , গুঠিয়া সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের মাংস বাড়তিতে বিক্রি হচ্ছে ।গরুর মাংস ৭শ’ ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে । তবে খাসির মাংসও প্রতি কেজি ১ হাজার ১শ’ টাকা থেকে ১২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মুরগীর মাংসের দাম ।

ক্রেতারা বলছেন, ঈদকে সামনে রেখে কয়েকদিন আগে থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন সেটা অসহনীয় পর্যায়ে পৌছেচে । বাজারে লেগেছে ঈদের হাওয়া। যে যার খুশিমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে ক্রয়ের জন্য যাই ধরা হয়, সেটারই দাম বেশি। চার-পাঁচদিন আগেও মুরগি ছিল কেজি ২শ’ টাকা, কিন্তু এখন দাম বেড়ে ২শ’ ৫০ টাকা।

বাজার করতে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, দিনদিন মাছ-মাংস, ডিমের দাম বেড়েই চলেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় আজকে দেখছি মাছের বাজার চড়া। যে কারণে কিনতে গেলেও বারবার হিসেব করতে হয়। এখন আর আগের মতো প্রতি সপ্তাহেই মাছ , মাংস কেনা যায় না।

আয়শা বেগম নামক আরেক ক্রেতা বলেন, বাজারে ব্রয়লার থেকে শুরু করে মুরগিসহ সব ধরনের মাংস বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বলতে গেলে নিয়মিত এসবের দাম বাড়ছে, দাম নিয়ন্ত্রণে থাকছে না কখনোই। রমজান মাস শুরু হওয়ার পর থেকে পাঁচ টাকা দশ টাকা বাড়তে বাড়তে ব্রয়লার মুরগির দাম এখন ২শ’ ৫০ টাকা কেজি ।

তিনি আরও বলেন, বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার থাকলে কেউ এভাবে খেয়াল খুশি মতো দাম বাড়াতে পারতো না ।

গরুর মাংস বিক্রেতা আনোয়ার ও বাদশা জানান , গরুর মাংস বিক্রি করছেন ৭শ’ ৫০ টাকা কেজি। তবে ঈদে আরও বাড়তে পারে । তাদের ভাষ্যমতে, এরপরও তারা লাভের মুখ তেমন দেখতে পারছেন না। কারণ হিসেবে বলেন, বাজারে গরুর দাম চড়া, যেকারণে বাধ্য হয়েই মাংসের দাম বাড়াতে হয়েছে।

মুরগির খামারী নাসির উদ্দীন গোমস্তা জানান, মুরগির মাংস ও ডিমের দাম বেশি হওয়ার জন্য দায়ী সরকার , কেননা মুরগির খাবারের দাম অনেক বেশি , নেই কোন নিয়ন্ত্রণ। তার পরেও খামার দিন দিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে । ডিমের দাম আরো বারতে পারে । চড়া দামের কারনে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পরেছে নিম্ন আয়ের মধ্যবিত্ত পরিবার ।

এ ব্যাপারে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন জানান, আমাদের বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা চলমান রয়েছে । কেউ অতিরিক্ত মুল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

উজিরপুরে হু-হু করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম- ক্রেতারা দিশেহারা

আপডেট সময় : ০৬:২৫:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে উজিরপুরে হুহু করে বাড়ছে মাছ, মাংস , ডিম ও জালানি গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম । এক সপ্তাহের ব্যবধানে বয়লার মুরগির মাংস কেজি বিক্রি হচ্ছে ২শ’ ৫০ টাকায়। যা কিছু দিন পূর্বে ছিল ১শ’ ৯০ টাকা থেকে ২শ’ টাকা । গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭শ’ ৫০ টাকায়, যা কিছু দিন পূর্বে ছিলো ৬শ’৫০ থেকে ৭শ’ টাকা। লেয়ার ও সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩শ’ ৫০ থেকে ৩শ’ ৭০ টাকায় । ডিমের দাম কছুটা কমলেও আবার চরা দামে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১শ’ ৪০ টাকায় ।

জ্বালানি কাজে ব্যাবহৃত গ্যাস বিক্রি হচ্ছে বসুন্ধরা ১৭ শ’ টাকা, টোটাল ১ হাজার ৫ ‘ ৫০ থেকে অন্যান্য কোম্পানির গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজর ৪শ’ ৫০ টাকা পর্যন্ত । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্যাস বিক্রেতা জানান, ডিলাররা মাল কম সাপ্লাই দেখিয়ে খামখেয়ালি খাবে দাম বাড়াচ্ছে । ইলিশ এক কেজি করে প্রতি পিস ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে । চিংড়ি মাছ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১৫ শ’ টাকায় । তরমুজ বড় প্রতি পিস ৪ শ’ থেকে ৫ শ’ টাকায় । ২ শ’ টাকার কমে তেমন কোনো তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে না । লাগামহীন পোশাক ও কাপর-চোপরের দাম , যে যার মতো করে ক্রেতাদের পকেট খালি করছে । নেই কোন তদারকি ।

সরেজমিনে উজিরপুর , ধামুড়া, শিকারপুর, সাতলা, হারতা, ওটরা , গুঠিয়া সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের মাংস বাড়তিতে বিক্রি হচ্ছে ।গরুর মাংস ৭শ’ ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে । তবে খাসির মাংসও প্রতি কেজি ১ হাজার ১শ’ টাকা থেকে ১২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মুরগীর মাংসের দাম ।

ক্রেতারা বলছেন, ঈদকে সামনে রেখে কয়েকদিন আগে থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন সেটা অসহনীয় পর্যায়ে পৌছেচে । বাজারে লেগেছে ঈদের হাওয়া। যে যার খুশিমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে ক্রয়ের জন্য যাই ধরা হয়, সেটারই দাম বেশি। চার-পাঁচদিন আগেও মুরগি ছিল কেজি ২শ’ টাকা, কিন্তু এখন দাম বেড়ে ২শ’ ৫০ টাকা।

বাজার করতে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, দিনদিন মাছ-মাংস, ডিমের দাম বেড়েই চলেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় আজকে দেখছি মাছের বাজার চড়া। যে কারণে কিনতে গেলেও বারবার হিসেব করতে হয়। এখন আর আগের মতো প্রতি সপ্তাহেই মাছ , মাংস কেনা যায় না।

আয়শা বেগম নামক আরেক ক্রেতা বলেন, বাজারে ব্রয়লার থেকে শুরু করে মুরগিসহ সব ধরনের মাংস বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বলতে গেলে নিয়মিত এসবের দাম বাড়ছে, দাম নিয়ন্ত্রণে থাকছে না কখনোই। রমজান মাস শুরু হওয়ার পর থেকে পাঁচ টাকা দশ টাকা বাড়তে বাড়তে ব্রয়লার মুরগির দাম এখন ২শ’ ৫০ টাকা কেজি ।

তিনি আরও বলেন, বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার থাকলে কেউ এভাবে খেয়াল খুশি মতো দাম বাড়াতে পারতো না ।

গরুর মাংস বিক্রেতা আনোয়ার ও বাদশা জানান , গরুর মাংস বিক্রি করছেন ৭শ’ ৫০ টাকা কেজি। তবে ঈদে আরও বাড়তে পারে । তাদের ভাষ্যমতে, এরপরও তারা লাভের মুখ তেমন দেখতে পারছেন না। কারণ হিসেবে বলেন, বাজারে গরুর দাম চড়া, যেকারণে বাধ্য হয়েই মাংসের দাম বাড়াতে হয়েছে।

মুরগির খামারী নাসির উদ্দীন গোমস্তা জানান, মুরগির মাংস ও ডিমের দাম বেশি হওয়ার জন্য দায়ী সরকার , কেননা মুরগির খাবারের দাম অনেক বেশি , নেই কোন নিয়ন্ত্রণ। তার পরেও খামার দিন দিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে । ডিমের দাম আরো বারতে পারে । চড়া দামের কারনে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পরেছে নিম্ন আয়ের মধ্যবিত্ত পরিবার ।

এ ব্যাপারে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন জানান, আমাদের বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা চলমান রয়েছে । কেউ অতিরিক্ত মুল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।