ঢাকা ১০:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আসুন আবার জেগে উঠি, নতুন বাংলাদেশ গড়ি : মির্জা ফখরুল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:২০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৪৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকারের লক্ষ্য একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা। এই সরকারকে সরিয়ে দিতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। আসুন আমরা আবার জেগে উঠি, একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় ১০ দফা দাবি আদায় ও বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবিতে আগামী ১৬ জানুয়ারি দেশের সব জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌরসভায় মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল।

আজ সব রাজনৈতিক দল একত্র হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকারকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য সব দল একমত হয়েছে। তারা ১০ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে এই আন্দোলন সফল করবে। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, এ সরকারের লক্ষ্য একটাই, অন্যায়ভাবে একদলীয় শাষণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমরা তা করতে দিতে পারি না। তাই এই অন্যায়ের প্রতিবাদে সরকার হটানোর আন্দোলন শুরু হয়েছে, সব রাজনৈতিক দল এক হয়েছে। আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। আমাদের নেতা দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। সুশীল সমাজ, বিশিষ্ট নাগরিকরাও এগিয়ে এসেছেন, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। ১০ দফা নিয়ে সবাই রাজপথে নেমে গেছে। তবে এজন্য আরও শক্তিশালী হয়ে জেগে উঠতে হবে। আসুন জেগে উঠি, জনগণের বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

তিনি বলেন, আমরা ১০ দফা দিয়েছি, যে দফার ভিত্তিতে আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটিয়ে সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করে রাষ্ট্রের মেরামতের কাজ শুরু করবো, যা এই সরকারের পক্ষে করা সম্ভব নয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সারা দেশের জনগণ জেগে উঠেছে। আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। এই আন্দোলন আজকের নয়; এই আন্দোলন শুরু হয়েছে তখন থেকে, যখন থেকে বেআইনিভাবে দুই-দুইবার ভোট ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে বেআইনিভাবে জোর করে তারা ক্ষমতা দখল করেছে।

তিনি বলেন, আমরা জানি, আওয়ামী লীগ একটি অত্যন্ত পরিচিত পুরোনো দল। কিন্তু আওয়ামী লীগ এখন সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে; আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে দেউলিয়া দলে পরিণতি হয়েছে। তাদের এখন পুলিশের ওপর নির্ভর করে, আমলাদের ওপর নির্ভর করে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে হচ্ছে। তারা নির্যাতন-নিপীড়ন ছাড়া কোনোভাবেই ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার পথ পাচ্ছে না। তাই তো এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের থেকে জনগণ মুক্তি চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সাধারণ মানুষ আজ বলছে, তারা আর পারে না । চাল কিনতে পারে না। খাদ্য কিনতে পারে না। ওয়াসার এমডি আমেরিকায় ১৪টি বাড়ি কিনেছে। তিনি কত হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। আজকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তারা সব ব্যাংক লুটে ফোকলা করে দিয়েছে। সরকার লুটের রাজ্য গড়ে তুলেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেও ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশ বানচাল করা যায়নি; ঢাকাসহ দেশের মানুষ সফল করেছেন। আসুন, আমরা ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে নতুন প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য দেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হই।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের গণঅবস্থান মহাসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। আমরা আজ একটা যুগের সন্ধিক্ষণে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। যখন এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি তখন কেরানীগঞ্জে ৬০০ কর্মী অবর্ণনীয় দুর্দশায় কারাগারে দিন কাটাচ্ছেন। তারা তাকিয়ে আছেন আপনাদের গণআন্দোলনের দিকে। আপনারা তাদের মুক্ত করবেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গণ-অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এটি বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে। এতে সভাপতিত্ব করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আসুন আবার জেগে উঠি, নতুন বাংলাদেশ গড়ি : মির্জা ফখরুল

আপডেট সময় : ০৪:২০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকারের লক্ষ্য একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা। এই সরকারকে সরিয়ে দিতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। আসুন আমরা আবার জেগে উঠি, একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় ১০ দফা দাবি আদায় ও বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবিতে আগামী ১৬ জানুয়ারি দেশের সব জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌরসভায় মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল।

আজ সব রাজনৈতিক দল একত্র হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকারকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য সব দল একমত হয়েছে। তারা ১০ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে এই আন্দোলন সফল করবে। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, এ সরকারের লক্ষ্য একটাই, অন্যায়ভাবে একদলীয় শাষণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমরা তা করতে দিতে পারি না। তাই এই অন্যায়ের প্রতিবাদে সরকার হটানোর আন্দোলন শুরু হয়েছে, সব রাজনৈতিক দল এক হয়েছে। আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। আমাদের নেতা দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। সুশীল সমাজ, বিশিষ্ট নাগরিকরাও এগিয়ে এসেছেন, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। ১০ দফা নিয়ে সবাই রাজপথে নেমে গেছে। তবে এজন্য আরও শক্তিশালী হয়ে জেগে উঠতে হবে। আসুন জেগে উঠি, জনগণের বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

তিনি বলেন, আমরা ১০ দফা দিয়েছি, যে দফার ভিত্তিতে আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটিয়ে সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করে রাষ্ট্রের মেরামতের কাজ শুরু করবো, যা এই সরকারের পক্ষে করা সম্ভব নয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সারা দেশের জনগণ জেগে উঠেছে। আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। এই আন্দোলন আজকের নয়; এই আন্দোলন শুরু হয়েছে তখন থেকে, যখন থেকে বেআইনিভাবে দুই-দুইবার ভোট ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে বেআইনিভাবে জোর করে তারা ক্ষমতা দখল করেছে।

তিনি বলেন, আমরা জানি, আওয়ামী লীগ একটি অত্যন্ত পরিচিত পুরোনো দল। কিন্তু আওয়ামী লীগ এখন সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে; আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে দেউলিয়া দলে পরিণতি হয়েছে। তাদের এখন পুলিশের ওপর নির্ভর করে, আমলাদের ওপর নির্ভর করে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে হচ্ছে। তারা নির্যাতন-নিপীড়ন ছাড়া কোনোভাবেই ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার পথ পাচ্ছে না। তাই তো এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের থেকে জনগণ মুক্তি চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সাধারণ মানুষ আজ বলছে, তারা আর পারে না । চাল কিনতে পারে না। খাদ্য কিনতে পারে না। ওয়াসার এমডি আমেরিকায় ১৪টি বাড়ি কিনেছে। তিনি কত হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। আজকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তারা সব ব্যাংক লুটে ফোকলা করে দিয়েছে। সরকার লুটের রাজ্য গড়ে তুলেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেও ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশ বানচাল করা যায়নি; ঢাকাসহ দেশের মানুষ সফল করেছেন। আসুন, আমরা ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে নতুন প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য দেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হই।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের গণঅবস্থান মহাসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। আমরা আজ একটা যুগের সন্ধিক্ষণে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। যখন এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি তখন কেরানীগঞ্জে ৬০০ কর্মী অবর্ণনীয় দুর্দশায় কারাগারে দিন কাটাচ্ছেন। তারা তাকিয়ে আছেন আপনাদের গণআন্দোলনের দিকে। আপনারা তাদের মুক্ত করবেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গণ-অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এটি বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে। এতে সভাপতিত্ব করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।