ঢাকা ০১:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

অবন্তিকার আত্মহত্যা : শিক্ষক-সহপাঠীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি পুলিশের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৪:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪
  • / ৪৭৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ মহিদ উদ্দিন। আজ রোববার (১৭ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলার ভিত্তিতে কুমিল্লা পুলিশের চাওয়া অনুযায়ী দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, ইতোমধ্যে দোষীদের কুমিল্লা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ মার্চ রাতে তিনি তার ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, বলা যায় সুইসাইডাল নোট হিসেবে। সে যে সুইসাইডের পথ বেছে নিয়েছে। সেটি স্টাডি করে ও অন্যান্য তথ্য নিয়ে চলতে থাকে। ফাইরুজ অবন্তিকার মা তাসলিমা বেগম কোতোয়ালি থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকীকে আসামি করা হয়েছে।

ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, অভিযোগ ওঠার পর থেকেই দুজনই আমাদের অবজারভেশনে ছিলেন, ওয়াচে ছিলেন। তদন্তের স্বার্থে যখন কুমিল্লার কোতোয়ালি থানা পুলিশ মনে করে যে, আমাদের অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন, তখন আমরা তাদের আটক করি। আজকে আমরা আটক দুজনকে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি।

তিনি বলেন, অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত যা যা ঘটেছে ডিএমপির পক্ষ থেকে আমাদের যতটুকু কাজ তা করেছি। আমরা আশা করছি, বাকি কাজ কুমিল্লা জেলা পুলিশ করবে, অন্য কারো সংশ্লেষ বা অন্য কিছু আছে কি-না।

অতিরিক্ত ডিএমপি কমিশনার বলেন, এ ধরনের আত্মহনন অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা সবাই বিশ্বাস করি… যে কোনো ধরনের আত্মহনন ধর্মীয়ভাবে অন্যায়, সামাজিকভাবেও অন্যায় আমরা মনে করি প্ররোচনার দায়ে দায়ী ব্যক্তিও সমান অপরাধী। যদি কারো প্ররোচনা থেকে থাকে তবে সেটি বেড়িয়ে আসবে। সে অনুযায়ী যারা যারা জড়িত থাকবে আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এটা ডিএমপি কমিশনার গতকালই বলেছেন। আজ তাদের কুমিল্লা জেলা পুলিশে হস্তান্তরও করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আপনারা অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে কী পেয়েছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্নভাবে নানা তথ্য উঠে এসেছে। এর খণ্ডিত অংশের সত্যতা হয়ত আছে। তবে গণমাধ্যমের সব তথ্য মিলছে বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা আছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।

পরিবার ও সহপাঠীরা অভিযোগ করেছেন, অবন্তিকাসহ যে জিডিটা থানায় করা হয়েছিল, সেটির সঠিক পুলিশি তদন্ত হলে হয়তো আজকে এ ঘটনা ঘটতো না। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের ৪ আগস্টের ঘটনা এটি। সেই জিডিটা হয়েছিল অবন্তিকার নামে। অবন্তিকার ফেসবুক আইডি থেকে আপত্তিকর পোস্ট করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম, কথাবার্তা হয়। তবে পরিশুদ্ধির জায়গাটা স্পষ্ট হয়নি। প্রশাসনিকভাবে বিষয়টি তখন নিষ্পত্তি করা হলেও হয়ত অবন্তিকা ভেতরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল। যেটির কারণে এ রকম দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

অবন্তিকার আত্মহত্যা : শিক্ষক-সহপাঠীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি পুলিশের

আপডেট সময় : ০৪:৩৪:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ মহিদ উদ্দিন। আজ রোববার (১৭ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলার ভিত্তিতে কুমিল্লা পুলিশের চাওয়া অনুযায়ী দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, ইতোমধ্যে দোষীদের কুমিল্লা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ মার্চ রাতে তিনি তার ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, বলা যায় সুইসাইডাল নোট হিসেবে। সে যে সুইসাইডের পথ বেছে নিয়েছে। সেটি স্টাডি করে ও অন্যান্য তথ্য নিয়ে চলতে থাকে। ফাইরুজ অবন্তিকার মা তাসলিমা বেগম কোতোয়ালি থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকীকে আসামি করা হয়েছে।

ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, অভিযোগ ওঠার পর থেকেই দুজনই আমাদের অবজারভেশনে ছিলেন, ওয়াচে ছিলেন। তদন্তের স্বার্থে যখন কুমিল্লার কোতোয়ালি থানা পুলিশ মনে করে যে, আমাদের অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন, তখন আমরা তাদের আটক করি। আজকে আমরা আটক দুজনকে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি।

তিনি বলেন, অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত যা যা ঘটেছে ডিএমপির পক্ষ থেকে আমাদের যতটুকু কাজ তা করেছি। আমরা আশা করছি, বাকি কাজ কুমিল্লা জেলা পুলিশ করবে, অন্য কারো সংশ্লেষ বা অন্য কিছু আছে কি-না।

অতিরিক্ত ডিএমপি কমিশনার বলেন, এ ধরনের আত্মহনন অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা সবাই বিশ্বাস করি… যে কোনো ধরনের আত্মহনন ধর্মীয়ভাবে অন্যায়, সামাজিকভাবেও অন্যায় আমরা মনে করি প্ররোচনার দায়ে দায়ী ব্যক্তিও সমান অপরাধী। যদি কারো প্ররোচনা থেকে থাকে তবে সেটি বেড়িয়ে আসবে। সে অনুযায়ী যারা যারা জড়িত থাকবে আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এটা ডিএমপি কমিশনার গতকালই বলেছেন। আজ তাদের কুমিল্লা জেলা পুলিশে হস্তান্তরও করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আপনারা অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে কী পেয়েছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্নভাবে নানা তথ্য উঠে এসেছে। এর খণ্ডিত অংশের সত্যতা হয়ত আছে। তবে গণমাধ্যমের সব তথ্য মিলছে বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা আছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।

পরিবার ও সহপাঠীরা অভিযোগ করেছেন, অবন্তিকাসহ যে জিডিটা থানায় করা হয়েছিল, সেটির সঠিক পুলিশি তদন্ত হলে হয়তো আজকে এ ঘটনা ঘটতো না। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের ৪ আগস্টের ঘটনা এটি। সেই জিডিটা হয়েছিল অবন্তিকার নামে। অবন্তিকার ফেসবুক আইডি থেকে আপত্তিকর পোস্ট করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম, কথাবার্তা হয়। তবে পরিশুদ্ধির জায়গাটা স্পষ্ট হয়নি। প্রশাসনিকভাবে বিষয়টি তখন নিষ্পত্তি করা হলেও হয়ত অবন্তিকা ভেতরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল। যেটির কারণে এ রকম দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।