ঢাকা ১০:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে ছুঁটছেন নোয়াখালীর হাতিয়ার জেলেরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০২৩
  • / ৪৫৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// কাজী মো. ফখরুল ইসলাম, নোয়াখালী প্রতিনিধি //

৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে পঙ্গপালের মত ইলিশ শিকারে সমুদ্রে ছুটছেন নোয়াখালীর হাতিয়ার জেলেরা। গতকাল সোমবার থেকে মাছ ধরতে হাতিয়ার প্রায় ৪২টি ছোট-বড় ঘাট থেকে মূলত: ইলিশ মাছ শিকারে নামছেন লক্ষাধিক জেলে। সকালে দেখা যায় অনেকটা জেলেশূন্য ঘাটগুলো। গুটি কয়েক ফিশিং ট্রলার ঘাটে রয়েছে এখনো, তারাও সর্ব শেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে সাগরে যাওয়ার জন্য।

সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সাগরে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল ৬৫ দিন। এ নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত ২৩ জুলাই রোববার মধ্যরাত থেকে। এতে জেলে পল্লী গুলোতে আনন্দের জোয়ার বইছে ।

সরকার প্রতিবছর এই সময় এলে সমুদ্রে মাছের প্রজনন নিরাপদ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে। ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত থাকে এই নিষেধাজ্ঞা। এ সময় সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার বন্ধ থাকে। হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মানস মন্ডল বলেন, এ বছর জেলেরা সরকারি আদেশ কঠিনভাবে পালন করেছেন। নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য অফিসের একাধিক টিম খুবই তৎপর ছিল। সোমবার থেকে জেলেরা সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকার করছেন। জেলেদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। হাতিয়া উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, হাতিয়ায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এর মধ্যে কার্ডধারী জেলের সংখ্যা ১২ হাজার।

মাদারগঞ্জে মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

হাতিয়ার সবচেয়ে বেশি ফিশিং ট্রলারের উপস্থিতি থাকে জাহাজমারা কাটাখালী ঘাটে। কাটাখালী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি আব্দুল আলী জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা কেটে যাওয়ার পরপরই নিষেধাজ্ঞার সময় চলে আসে। মাছ শিকারে এ বছর তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি তারা। তিনি আরও জানান, তাঁর ট্রলারে একজন বাবুর্চিসহ ১৮ জন মাঝিমল্লা কাজ করেন। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে সবাই বেকার হয়ে পড়েন।  সন্ধ্যার পর সাগরে যাবেন। তিনি আশা করছেন বাকি সময়ে বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবেন।

হাতিয়া ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রাশেদ উদ্দিন জানান, হাতিয়ায় গভীর সমুদ্রে যাওয়া ২০টি ঘাটে ছোট-বড় প্রায় ২ হাজার ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় ৩০ হাজার জেলে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে এসব জেলে অর্ধাহারে-অনাহারে ছিলেন। সরকারিভাবে যে চাল দেওয়া হয়, তা অপ্রতুল ছিল। হাতিয়ায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ৪ হাজার ৮০০ পরিবারকে ৬৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। এর মধ্যে নিবন্ধন না থাকায় গভীর সমুদ্রে যাওয়া অনেক জেলে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।

হাতিয়া সূর্যমুখী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক জানান, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর থেকে জেলেদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। এ ঘাটে সাগরে গিয়ে মাছ শিকার করার মতো দুই শতাধিক ফিশিং ট্রলার রয়েছে। জেলেদের হাঁকডাকে অনেক দিন পর প্রাণ ফিরে পেয়েছে ঘাটটি। স‚র্যমুখী ঘাটের একজন মাঝি জানান, ১৮ মাঝি-মাল্লার মধ্যে দুজন অসুস্থ থাকায় রাতে সাগরে যেতে পারেননি। বিকেলে সাগরে যাবেন। এ জন্য সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন। তিনি আরও জানান, একই ঘাটের প্রায় শতাধিক ট্রলার রাতেই সাগরে চলে গেছে। এখনো মৌসুমের অর্ধেক সময় আছে। এতে আশানুরুপ মাছ পাবেন বলে তার আশা।

নিউজটি শেয়ার করুন

৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে ছুঁটছেন নোয়াখালীর হাতিয়ার জেলেরা

আপডেট সময় : ০৪:৪৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০২৩

// কাজী মো. ফখরুল ইসলাম, নোয়াখালী প্রতিনিধি //

৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে পঙ্গপালের মত ইলিশ শিকারে সমুদ্রে ছুটছেন নোয়াখালীর হাতিয়ার জেলেরা। গতকাল সোমবার থেকে মাছ ধরতে হাতিয়ার প্রায় ৪২টি ছোট-বড় ঘাট থেকে মূলত: ইলিশ মাছ শিকারে নামছেন লক্ষাধিক জেলে। সকালে দেখা যায় অনেকটা জেলেশূন্য ঘাটগুলো। গুটি কয়েক ফিশিং ট্রলার ঘাটে রয়েছে এখনো, তারাও সর্ব শেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে সাগরে যাওয়ার জন্য।

সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সাগরে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল ৬৫ দিন। এ নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত ২৩ জুলাই রোববার মধ্যরাত থেকে। এতে জেলে পল্লী গুলোতে আনন্দের জোয়ার বইছে ।

সরকার প্রতিবছর এই সময় এলে সমুদ্রে মাছের প্রজনন নিরাপদ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে। ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত থাকে এই নিষেধাজ্ঞা। এ সময় সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার বন্ধ থাকে। হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মানস মন্ডল বলেন, এ বছর জেলেরা সরকারি আদেশ কঠিনভাবে পালন করেছেন। নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য অফিসের একাধিক টিম খুবই তৎপর ছিল। সোমবার থেকে জেলেরা সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকার করছেন। জেলেদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। হাতিয়া উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, হাতিয়ায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এর মধ্যে কার্ডধারী জেলের সংখ্যা ১২ হাজার।

মাদারগঞ্জে মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

হাতিয়ার সবচেয়ে বেশি ফিশিং ট্রলারের উপস্থিতি থাকে জাহাজমারা কাটাখালী ঘাটে। কাটাখালী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি আব্দুল আলী জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা কেটে যাওয়ার পরপরই নিষেধাজ্ঞার সময় চলে আসে। মাছ শিকারে এ বছর তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি তারা। তিনি আরও জানান, তাঁর ট্রলারে একজন বাবুর্চিসহ ১৮ জন মাঝিমল্লা কাজ করেন। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে সবাই বেকার হয়ে পড়েন।  সন্ধ্যার পর সাগরে যাবেন। তিনি আশা করছেন বাকি সময়ে বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবেন।

হাতিয়া ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রাশেদ উদ্দিন জানান, হাতিয়ায় গভীর সমুদ্রে যাওয়া ২০টি ঘাটে ছোট-বড় প্রায় ২ হাজার ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় ৩০ হাজার জেলে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে এসব জেলে অর্ধাহারে-অনাহারে ছিলেন। সরকারিভাবে যে চাল দেওয়া হয়, তা অপ্রতুল ছিল। হাতিয়ায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ৪ হাজার ৮০০ পরিবারকে ৬৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। এর মধ্যে নিবন্ধন না থাকায় গভীর সমুদ্রে যাওয়া অনেক জেলে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।

হাতিয়া সূর্যমুখী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক জানান, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর থেকে জেলেদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। এ ঘাটে সাগরে গিয়ে মাছ শিকার করার মতো দুই শতাধিক ফিশিং ট্রলার রয়েছে। জেলেদের হাঁকডাকে অনেক দিন পর প্রাণ ফিরে পেয়েছে ঘাটটি। স‚র্যমুখী ঘাটের একজন মাঝি জানান, ১৮ মাঝি-মাল্লার মধ্যে দুজন অসুস্থ থাকায় রাতে সাগরে যেতে পারেননি। বিকেলে সাগরে যাবেন। এ জন্য সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন। তিনি আরও জানান, একই ঘাটের প্রায় শতাধিক ট্রলার রাতেই সাগরে চলে গেছে। এখনো মৌসুমের অর্ধেক সময় আছে। এতে আশানুরুপ মাছ পাবেন বলে তার আশা।