ঢাকা ১২:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

স্কুলছাত্রকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করলেন ইউপি চেয়ারম্যান 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৬:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুন ২০২৩
  • / ৪৩৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// রাহাদ সুমন, বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি //

বরিশালের বানারীপাড়ায় শালিস-বৈঠকে বিশারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম শান্তর বেধরক মারধরে রায়হান (১৫) নামের নবম শ্রেণির এক কিশোর ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে। রায়হান বিশারকান্দি ইউনিয়নের উমারের পাড় গ্রামের বন বিভাগে কর্মরত তোফায়েল হোসেন সরদারের ছেলে ও স্থানীয় ইউবিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ৮ জুন বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে শালিস-বৈঠকে রায়হান তার চাচির কাছে ক্ষমা চাইতে দেরী করায় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শান্ত ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে কিল-ঘুষি মেরে ও মাটিতে ফেলে পা দিয়ে পিষ্ট করে আহত করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে রায়হানকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনরা বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

জানা গেছে, ৫ জুন সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের উমারেরপাড় গ্রামের আ.সালাম সরদারের স্ত্রী লুৎফা ও তার ছোট ভাই মিন্টু সরদারের স্ত্রী কুলসুমের মধ্যে একটি হাঁস নিয়ে ঝগড়া চলছিলো । এ সময় সালাম সরদার ও মিন্টু সরদারের বড় ভাই তোফায়েল হোসেন সরদারের ঘরে মেহমান বেড়াতে আসায় তার স্ত্রী রেহেনা বেগম, মেয়ে তানিয়া ও তাসলিমা গিয়ে বাড়ির সম্মানের কথা বিবেচনা করে মেহমানদের সামনে ঝগড়া না করার জন্য তাদেরকে বলেন। এতে মিন্টু সরদারের স্ত্রী কুলসুম ও মেয়ে আয়শা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের সঙ্গে ঝগড়া বাধায় এবং এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এর এক পর্যায়ে এতে মিন্টু সরদার ও রায়হানও এসে যুক্ত হয়। তিন ভাইয়ের পরিবারের ত্রি-পক্ষীয় এ ঝগড়া ও মারামারির ঘটনা নিরসনে ৮ জুন বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়ির হারুন সরদারের ঘরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শান্ত স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে শালিস-বৈঠকে বসেন। এক পর্যায়ে রায়হানকে চাচির কাছে ক্ষমা চাইতে বললে সে তাতে দেরী করায় চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বেদম মারধর করেন। এ সময় শালিস বৈঠকে উপস্থিত রায়হানের বড় চাচা সালাম সরদার, মহিউদ্দিন, নান্না ও  গ্রাম পুলিশ আ. সালাম ইউপি চেয়ারম্যান শান্তকে নিবৃত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ সময় নান্নার শার্ট  ছিড়ে যায় ও  রায়হানের বোন তাসলিমা এর প্রতিবাদ করলে তাকেও চেয়ারম্যান থাপ্পর দেওয়ার হুমকি দেয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। রায়হানের পিতা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে বন বিভাগে কর্মরত তোফায়েল হোসেন সরদার তার কিশোর ছেলেকে অমানবিকভাবে মারধর করায় মুঠোফোনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এর বিচার দাবি করেন। তিনি কর্মস্থল থেকে বানারীপাড়ায় এসে এ ব্যপারে আইনগত পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান।

এ বিষয়ে বিশারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শান্ত বলেন, চাচিকে লাঠি দিয়ে পেটানোয় শালিস-বৈঠকে রায়হানকে তার কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হয় এতে সে কালক্ষেপন করায় কয়েকটা চর-থাপ্পর দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাসুদ আলম চৌধুরী বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

স্কুলছাত্রকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করলেন ইউপি চেয়ারম্যান 

আপডেট সময় : ০৩:৫৬:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুন ২০২৩

// রাহাদ সুমন, বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি //

বরিশালের বানারীপাড়ায় শালিস-বৈঠকে বিশারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম শান্তর বেধরক মারধরে রায়হান (১৫) নামের নবম শ্রেণির এক কিশোর ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে। রায়হান বিশারকান্দি ইউনিয়নের উমারের পাড় গ্রামের বন বিভাগে কর্মরত তোফায়েল হোসেন সরদারের ছেলে ও স্থানীয় ইউবিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ৮ জুন বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে শালিস-বৈঠকে রায়হান তার চাচির কাছে ক্ষমা চাইতে দেরী করায় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শান্ত ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে কিল-ঘুষি মেরে ও মাটিতে ফেলে পা দিয়ে পিষ্ট করে আহত করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে রায়হানকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনরা বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

জানা গেছে, ৫ জুন সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের উমারেরপাড় গ্রামের আ.সালাম সরদারের স্ত্রী লুৎফা ও তার ছোট ভাই মিন্টু সরদারের স্ত্রী কুলসুমের মধ্যে একটি হাঁস নিয়ে ঝগড়া চলছিলো । এ সময় সালাম সরদার ও মিন্টু সরদারের বড় ভাই তোফায়েল হোসেন সরদারের ঘরে মেহমান বেড়াতে আসায় তার স্ত্রী রেহেনা বেগম, মেয়ে তানিয়া ও তাসলিমা গিয়ে বাড়ির সম্মানের কথা বিবেচনা করে মেহমানদের সামনে ঝগড়া না করার জন্য তাদেরকে বলেন। এতে মিন্টু সরদারের স্ত্রী কুলসুম ও মেয়ে আয়শা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের সঙ্গে ঝগড়া বাধায় এবং এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এর এক পর্যায়ে এতে মিন্টু সরদার ও রায়হানও এসে যুক্ত হয়। তিন ভাইয়ের পরিবারের ত্রি-পক্ষীয় এ ঝগড়া ও মারামারির ঘটনা নিরসনে ৮ জুন বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়ির হারুন সরদারের ঘরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শান্ত স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে শালিস-বৈঠকে বসেন। এক পর্যায়ে রায়হানকে চাচির কাছে ক্ষমা চাইতে বললে সে তাতে দেরী করায় চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বেদম মারধর করেন। এ সময় শালিস বৈঠকে উপস্থিত রায়হানের বড় চাচা সালাম সরদার, মহিউদ্দিন, নান্না ও  গ্রাম পুলিশ আ. সালাম ইউপি চেয়ারম্যান শান্তকে নিবৃত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ সময় নান্নার শার্ট  ছিড়ে যায় ও  রায়হানের বোন তাসলিমা এর প্রতিবাদ করলে তাকেও চেয়ারম্যান থাপ্পর দেওয়ার হুমকি দেয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। রায়হানের পিতা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে বন বিভাগে কর্মরত তোফায়েল হোসেন সরদার তার কিশোর ছেলেকে অমানবিকভাবে মারধর করায় মুঠোফোনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এর বিচার দাবি করেন। তিনি কর্মস্থল থেকে বানারীপাড়ায় এসে এ ব্যপারে আইনগত পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান।

এ বিষয়ে বিশারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শান্ত বলেন, চাচিকে লাঠি দিয়ে পেটানোয় শালিস-বৈঠকে রায়হানকে তার কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হয় এতে সে কালক্ষেপন করায় কয়েকটা চর-থাপ্পর দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাসুদ আলম চৌধুরী বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।