ঢাকা ০৪:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আদিবাসী মিলন মেলায় মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি

সিধু-কানুদের আত্মত্যাগ আজকের অসাম্প্রদায়ীক বাংলাদেশ

// মোঃ খাদেমুল ইসলাম, দিনাজপুর প্রতিনিধি //
  • আপডেট সময় : ০৯:২৯:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৭৬৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেছেন, এদেশে একদিন সিধু-কানুরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে। তাদের রক্ত তখন বৃথা যায়নি। নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তা রক্ষা এবং বিকাশে শেখ হাসিনা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সমতলে কাউকে পেছনে ফেলে নয়, সবাইকে একযোগে এগিয়ে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনা বদ্ধ পরিকর। এদেশের আদিবাসীরা আর্থিকভাবে, শিক্ষাগতভাবে পশ্চাৎপদ হলেও সংগ্রামে স্বাধীনতায় তারা অনেক বেশি অগ্রগামী। মহান মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীদের ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ রাখবে। কারণ আদিবাসীদের তীরের মাথায় এখনো লাল সবুজের পতাকা। আদিবাসীদের কেউ রাজাকারের খাতায় নাম লেখায় নি। বরং তারা এই তীর দিয়েই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত’ করে তাদের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়েছিল। সেই সিধু-কানু থেকে আজকের বাংলাদেশের একটা মায়াবী বন্ধন আছে।অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে তাদের অবদান অনিবার্য। শিবু-কানুদের আত্মত্যাগের সাথে আজকের অসাম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের নিবিঢ় যোগসূত্র রয়েছে।

আজ ২৫ অক্টোবর ২০২৩ বিকেলে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ১১নং মরিচা ইউনিয়নের গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে আদিবাসী মিলন মেলার উদ্বোধন শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বীরগঞ্জ আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সদস্য শ্যামলাল মুরমু’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বীরগঞ্জ সার্কেল) মো. খোদাদাদ হোসেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) রাজকুমার বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নুর ইসলাম নুর, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আকতারুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল, ১১নং মরিচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাহারুল ইসলাম চৌধুরী হেলাল, ৬নং নিজপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আনিসসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী একটি চমৎকার দর্শন দিয়েছেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আজকের এই জনসমাগম প্রমাণ করেছে, এটি আসলেই মিলন মেলা। যা বছরের পর বছর ধরে এই অঞ্চলের মানুষ পালন করে আসছে। তিনি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শারদীয় দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানান। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে অভয় দিয়ে বলেন, যে যত শক্তিশালী হোক রাষ্ট্রের থেকে কেউ শক্তিশালী নয়। তাই কোন প্রকার ভয়ভীতির উর্দ্ধে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।মানুষ মরে তখন যখন সে ভয় পেয়ে যায়।

উল্লেখ্য, প্রায় দুই শত বছর ধরে বীরগঞ্জের গোলাপগঞ্জে আদিবাসীদেও এই মিলন মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। যা এক সময় বৌ মেলা নামে পরিচিত ছিল। পৌরানিক কাহিনী রয়েছে, এই মেলায় এসে আদিবাসী ছেলে-মেয়েরা তাদেও পছন্দের মানুষকে খুঁজে পরিবারের কাছে তা জানাতেন। পরে পরিবার থেকে দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা হতো। যারা এই মেলায় নিজেরা জীবনসঙ্গী পছন্দ করতো পরবর্তী বছর মেলায় তাদেও নাম পরিচয় তুলে ধরা হতো। এখনও এই মেলায় অনেকে পরিবারের সম্মতিতে পছন্দের পাত্র পাত্রিকে নিয়ে এসে বিয়ে দিয়ে থাকেন। মেলাটি শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীর পর অনুষ্ঠিত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আদিবাসী মিলন মেলায় মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি

সিধু-কানুদের আত্মত্যাগ আজকের অসাম্প্রদায়ীক বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০৯:২৯:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৩

দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেছেন, এদেশে একদিন সিধু-কানুরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে। তাদের রক্ত তখন বৃথা যায়নি। নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তা রক্ষা এবং বিকাশে শেখ হাসিনা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সমতলে কাউকে পেছনে ফেলে নয়, সবাইকে একযোগে এগিয়ে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনা বদ্ধ পরিকর। এদেশের আদিবাসীরা আর্থিকভাবে, শিক্ষাগতভাবে পশ্চাৎপদ হলেও সংগ্রামে স্বাধীনতায় তারা অনেক বেশি অগ্রগামী। মহান মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীদের ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ রাখবে। কারণ আদিবাসীদের তীরের মাথায় এখনো লাল সবুজের পতাকা। আদিবাসীদের কেউ রাজাকারের খাতায় নাম লেখায় নি। বরং তারা এই তীর দিয়েই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত’ করে তাদের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়েছিল। সেই সিধু-কানু থেকে আজকের বাংলাদেশের একটা মায়াবী বন্ধন আছে।অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে তাদের অবদান অনিবার্য। শিবু-কানুদের আত্মত্যাগের সাথে আজকের অসাম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের নিবিঢ় যোগসূত্র রয়েছে।

আজ ২৫ অক্টোবর ২০২৩ বিকেলে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ১১নং মরিচা ইউনিয়নের গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে আদিবাসী মিলন মেলার উদ্বোধন শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বীরগঞ্জ আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সদস্য শ্যামলাল মুরমু’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বীরগঞ্জ সার্কেল) মো. খোদাদাদ হোসেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) রাজকুমার বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নুর ইসলাম নুর, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আকতারুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল, ১১নং মরিচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাহারুল ইসলাম চৌধুরী হেলাল, ৬নং নিজপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আনিসসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী একটি চমৎকার দর্শন দিয়েছেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আজকের এই জনসমাগম প্রমাণ করেছে, এটি আসলেই মিলন মেলা। যা বছরের পর বছর ধরে এই অঞ্চলের মানুষ পালন করে আসছে। তিনি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শারদীয় দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানান। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে অভয় দিয়ে বলেন, যে যত শক্তিশালী হোক রাষ্ট্রের থেকে কেউ শক্তিশালী নয়। তাই কোন প্রকার ভয়ভীতির উর্দ্ধে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।মানুষ মরে তখন যখন সে ভয় পেয়ে যায়।

উল্লেখ্য, প্রায় দুই শত বছর ধরে বীরগঞ্জের গোলাপগঞ্জে আদিবাসীদেও এই মিলন মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। যা এক সময় বৌ মেলা নামে পরিচিত ছিল। পৌরানিক কাহিনী রয়েছে, এই মেলায় এসে আদিবাসী ছেলে-মেয়েরা তাদেও পছন্দের মানুষকে খুঁজে পরিবারের কাছে তা জানাতেন। পরে পরিবার থেকে দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা হতো। যারা এই মেলায় নিজেরা জীবনসঙ্গী পছন্দ করতো পরবর্তী বছর মেলায় তাদেও নাম পরিচয় তুলে ধরা হতো। এখনও এই মেলায় অনেকে পরিবারের সম্মতিতে পছন্দের পাত্র পাত্রিকে নিয়ে এসে বিয়ে দিয়ে থাকেন। মেলাটি শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীর পর অনুষ্ঠিত হয়।