ঢাকা ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সরকারের পতন ছাড়া ঘরে ফিরবে না বিএনপি: গয়েশ্বর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:২৩:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৪৪৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজশাহী ব্যুরো অফিস : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকার দেশকে আবার তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। মেগা প্রকল্পের নামে আওয়ামী লীগের নেতারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সুইস ব্যাংকে রেখেছে। বিদেশে বাড়ি-গাড়ি সব করে নিয়েছে। সময় এলে এসব কিছুর হিসাব করা হবে। এবার সরকারের পতন ছাড়া বিএনপি ঘরে ফিরবে না।

শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত গণমিছিল শেষে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর ভুবন মোহন পার্ক শহীদ মিনারে এই সমাবেশ হয়।
গয়েশ্বর বলেন, সরকার পেটোয়াবাহিনী দিয়ে ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী সন্ত্রাসী দিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হত্যা করছে।

সমাবেশে তিনি বলেন, বিএনপির আর হারানোর কিছু নেই। এখন শুধু পাওয়া আর পাওয়া। এজন্য বিএনপি আন্দোলন করছে। তবে আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। এই আন্দোলন জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলন।

তিনি বলেন, এই সরকার পৃথিবীর সব স্বৈরাচারী সরকারকে হার মানিয়েছে। বিএনপি এবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের ভোটের অধিকার ও এই সরকারের নির্যাতনের কবল থেকে মানুষকে রক্ষা করতে আন্দোলন করছে। বিএনপি দিনের ভোট দিনে এবং জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে চায়।

বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি তুলে ধরে তিনি বলেন, এই সরকার পৃথিবীর সকল স্বৈরাচারী সরকারকে হার মানিয়েছে। ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করে রাখতে সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের বিনা ওয়ারেন্টে এবং কোনোরকম মামলা ছাড়াই গ্রেফতার করছে। দলের মহাসচিব, যিনি অতি সজ্জন বলে শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীতে পরিচিতি লাভ করেছেন সেই মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে কোনোরকম কারণ ছাড়াই রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছে। তাদের কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকার ভাবছে দলের মহাসচিব, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের আটক করলে বিএনপির আন্দোলন থেমে যাবে। কিন্তু না তা হবে না। বিএনপির একজন নেতা বাইরে থাকলেও সব ধরনের আন্দোলন চলবে। যার প্রমাণ ঢাকার গণসমাবেশ। কোনো বাধাই বিএনপিকে রুখতে পারেনি। যার প্রমাণ জনগণ, দেশ বিদেশের সকল মিডিয়া।

তিনি বলেন, বিএনপির আর হারানোর কিছু নাই। এখন শুধু পাওয়া আর পাওয়া। শেখ হাসিনার সরকার দেশকে তার পিতার মতো আবারও তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। সকল প্রকার নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। রেমিটেন্স কমে এসেছে। সরকারি রিজার্ভ অনেক কমে গেছে। গার্মেন্টস সেক্টর ধ্বংসের পথে। ব্যাংকের তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন নিত্যাপণ্যের মূল্য বাড়ছে সেদিকে নজর না দিয়ে বিএনপির গণমুখী আন্দোলনকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য এই সরকার উঠে পড়ে লেগেছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপির এবারের আন্দোলন গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলন। এই সরকারের নির্যাতনের কবল থেকে রক্ষা করতেই বিএনপি আন্দোলন করছে, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছে না।

বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, আমরা স্থিতিশীল পরিবেশে ও শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। তাই ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে বিএনপির ঢাকার কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ প্রমুখ।
আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। তিনি বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যদি বর্তমান সরকার পদত্যাগ না করে, গণআন্দোলনের মাধ্যমে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।

কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, দেলোয়ার হোসেন। এছাড়া মহানগর ও জেলা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

সরকারের পতন ছাড়া ঘরে ফিরবে না বিএনপি: গয়েশ্বর

আপডেট সময় : ০৯:২৩:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২

রাজশাহী ব্যুরো অফিস : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকার দেশকে আবার তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। মেগা প্রকল্পের নামে আওয়ামী লীগের নেতারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সুইস ব্যাংকে রেখেছে। বিদেশে বাড়ি-গাড়ি সব করে নিয়েছে। সময় এলে এসব কিছুর হিসাব করা হবে। এবার সরকারের পতন ছাড়া বিএনপি ঘরে ফিরবে না।

শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত গণমিছিল শেষে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর ভুবন মোহন পার্ক শহীদ মিনারে এই সমাবেশ হয়।
গয়েশ্বর বলেন, সরকার পেটোয়াবাহিনী দিয়ে ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী সন্ত্রাসী দিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হত্যা করছে।

সমাবেশে তিনি বলেন, বিএনপির আর হারানোর কিছু নেই। এখন শুধু পাওয়া আর পাওয়া। এজন্য বিএনপি আন্দোলন করছে। তবে আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। এই আন্দোলন জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলন।

তিনি বলেন, এই সরকার পৃথিবীর সব স্বৈরাচারী সরকারকে হার মানিয়েছে। বিএনপি এবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের ভোটের অধিকার ও এই সরকারের নির্যাতনের কবল থেকে মানুষকে রক্ষা করতে আন্দোলন করছে। বিএনপি দিনের ভোট দিনে এবং জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে চায়।

বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি তুলে ধরে তিনি বলেন, এই সরকার পৃথিবীর সকল স্বৈরাচারী সরকারকে হার মানিয়েছে। ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করে রাখতে সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের বিনা ওয়ারেন্টে এবং কোনোরকম মামলা ছাড়াই গ্রেফতার করছে। দলের মহাসচিব, যিনি অতি সজ্জন বলে শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীতে পরিচিতি লাভ করেছেন সেই মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে কোনোরকম কারণ ছাড়াই রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছে। তাদের কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকার ভাবছে দলের মহাসচিব, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের আটক করলে বিএনপির আন্দোলন থেমে যাবে। কিন্তু না তা হবে না। বিএনপির একজন নেতা বাইরে থাকলেও সব ধরনের আন্দোলন চলবে। যার প্রমাণ ঢাকার গণসমাবেশ। কোনো বাধাই বিএনপিকে রুখতে পারেনি। যার প্রমাণ জনগণ, দেশ বিদেশের সকল মিডিয়া।

তিনি বলেন, বিএনপির আর হারানোর কিছু নাই। এখন শুধু পাওয়া আর পাওয়া। শেখ হাসিনার সরকার দেশকে তার পিতার মতো আবারও তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। সকল প্রকার নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। রেমিটেন্স কমে এসেছে। সরকারি রিজার্ভ অনেক কমে গেছে। গার্মেন্টস সেক্টর ধ্বংসের পথে। ব্যাংকের তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন নিত্যাপণ্যের মূল্য বাড়ছে সেদিকে নজর না দিয়ে বিএনপির গণমুখী আন্দোলনকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য এই সরকার উঠে পড়ে লেগেছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপির এবারের আন্দোলন গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলন। এই সরকারের নির্যাতনের কবল থেকে রক্ষা করতেই বিএনপি আন্দোলন করছে, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছে না।

বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, আমরা স্থিতিশীল পরিবেশে ও শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। তাই ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে বিএনপির ঢাকার কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ প্রমুখ।
আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। তিনি বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যদি বর্তমান সরকার পদত্যাগ না করে, গণআন্দোলনের মাধ্যমে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।

কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, দেলোয়ার হোসেন। এছাড়া মহানগর ও জেলা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।