ঢাকা ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, উদ্বারে জোর তৎপরতা চলছে

শাহজাদপুরে স্কুল ছাত্র নিখোঁজ হওয়ায় ৯৫ দিন ধরে অর্ধহারে অনাহারে মা

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০১:১৩:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৫৮৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
আমার বুকের ধন আশরাফুলকে ফিরিয়ে এনে দাও আমি তিন মাসের বেশী দিন ধরে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি । এমনি ভাবে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের পল্লী অঞ্চল জামিরতা জোতপাড়া গ্রামের পুত্র নিখোঁজ আশরাফুল ইসলাম (১৪) এর মা এভাবে চিৎকার করে বলছে। সে জামিরতা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র ।
সরেজমিন সোমবার সকালে শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের জামিরতা এলাকার জোতপাড়া গ্রাম গেলে গ্রাম জুড়ে একটাই আলোচনা নিখোঁজ হওয়া আশরাফুলের কথা। নিখোঁজ আশরাফুলের পিতা সাইফুল ইসলাম ও তার মা নাছিমা খাতুন সাংবাদিক দেখেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তার মা বুক চাপড়িয়ে বলেন, ৩১ আগষ্ট আমার ছেলেকে একই গ্রামের রফিকুল ইব্রাহিম মোবাইলে ডেকে নেওয়ার পর ঐদিন সন্ধ্যার পর আমার ছেলেকে আর খুজে পাচ্ছিনা। আমার ছেলে কে তারা হত্যা করেছে এমন ভাবনায় সে অনেকটা খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে । তার দুটি মেয়ে আর একটি মাত্র ছেলে । অবুঝ মেয়ে দুটিও বার বার ভাইয়ের কথা বলছে। তাদের আর্তনাদ দেখে কে দেবে সান্তনা।
পিতা শরবত ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা কোর্টে রফিকুল ,ইব্রাহিম ও ইছমাইলের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। মামলা হলেও পুলিশের কোন তৎপরতা নাই। গ্রামের আনছার, আরদম সরকার, ময়ুরী খাতুন জানান তিন মাস ৫ দিন হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত পুলিশ শিশু পুত্র আশরাফুলকে উদ্ধার করতে পারে নাই। এ ঘটনায় গ্রামের মানুষ ১৫ সেপ্টম্বর এলাকায় মানববন্ধন করেছে। তার পুলিশ প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে নাই।
এ ঘটনায় এলাকাবাসি ক্ষোভে বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে। প্রায় তিন মাস অপহরণ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করতে পারে নাই শাহজাদপুর থানার পুলিশ।
এ ব্যাপরে মামলা হলেও আসামীরা প্রকাশ্যে দিবালোক ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ আটক করছে না। পুলিশের বিরুদ্ধে আসামী ধরতে টালবাহানার অভিযোগ। ছেলেটি বেঁচে আছে নাকি তারা হত্যা করেছে এ নিয়ে বইছে গোটা এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।
পোরজনা ইউপি চেয়ারম্যান  আনোয়ার হোসেন বাবু জানান, এলাকা থেকে অনেকদিন আগে ছেলেটি নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় মামলা হলেও আজ পর্যন্ত ছেলেকে উদ্ধার করতে পারেনি থানা পুলিশ ।
অন্যদিকে নিখোঁজের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার শাহজাদপুর উপজেলার আইনশৃংখলা সভায় স্থানীয় সাংবাদিকদের পক্ষে প্রেস ক্লাবের সভাপতি বিমল কুমার কুন্ডু আশরাফুল এর  ‍পুরো ঘটনাটি তুলে ধরেন। এসময় উপজেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রফেসর আজাদ রহমান ও ইউএনও মোঃ কামরুজ্জামান ঘটনা শুনে হতবাক হয়ে যান। এ ঘটনায় থানার অফিসার ইনচার্জ খায়রুল বাশার বলেন, আমি যোগ দেয়ার আগে এই ছেলেটি নিখোঁজ হয়েছে। আমার খুব চেষ্টা করছি ছেলেটিকে উদ্ধারের জন্য।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এরশাদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় তিন জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। আমরা খুব চেষ্টা করছি ছেলেটিকে উদ্ধারের জন্য। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাদপুর সার্কেল কামরুজ্জামান পিপিএম সাংবাদিকদের জানান, আমরা ছেলেটিকে উদ্ধারের জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছি তবে যে মোবাইল দিয়ে তাকে ডেকে নিয়ে গেছে সবকটি মোবাইল বন্ধ রয়েছে। আমরা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে চেষ্টা করে দেখেছি। এদিকে ছেলেটি বেঁচে আছে নাকি কেউ হত্যা করে গুম করেছে এমন চিন্তায় রয়েছে তার পরিবারগন।
বাখ//আর

নিউজটি শেয়ার করুন

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, উদ্বারে জোর তৎপরতা চলছে

শাহজাদপুরে স্কুল ছাত্র নিখোঁজ হওয়ায় ৯৫ দিন ধরে অর্ধহারে অনাহারে মা

আপডেট সময় : ০১:১৩:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩
আমার বুকের ধন আশরাফুলকে ফিরিয়ে এনে দাও আমি তিন মাসের বেশী দিন ধরে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি । এমনি ভাবে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের পল্লী অঞ্চল জামিরতা জোতপাড়া গ্রামের পুত্র নিখোঁজ আশরাফুল ইসলাম (১৪) এর মা এভাবে চিৎকার করে বলছে। সে জামিরতা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র ।
সরেজমিন সোমবার সকালে শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের জামিরতা এলাকার জোতপাড়া গ্রাম গেলে গ্রাম জুড়ে একটাই আলোচনা নিখোঁজ হওয়া আশরাফুলের কথা। নিখোঁজ আশরাফুলের পিতা সাইফুল ইসলাম ও তার মা নাছিমা খাতুন সাংবাদিক দেখেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তার মা বুক চাপড়িয়ে বলেন, ৩১ আগষ্ট আমার ছেলেকে একই গ্রামের রফিকুল ইব্রাহিম মোবাইলে ডেকে নেওয়ার পর ঐদিন সন্ধ্যার পর আমার ছেলেকে আর খুজে পাচ্ছিনা। আমার ছেলে কে তারা হত্যা করেছে এমন ভাবনায় সে অনেকটা খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে । তার দুটি মেয়ে আর একটি মাত্র ছেলে । অবুঝ মেয়ে দুটিও বার বার ভাইয়ের কথা বলছে। তাদের আর্তনাদ দেখে কে দেবে সান্তনা।
পিতা শরবত ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা কোর্টে রফিকুল ,ইব্রাহিম ও ইছমাইলের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। মামলা হলেও পুলিশের কোন তৎপরতা নাই। গ্রামের আনছার, আরদম সরকার, ময়ুরী খাতুন জানান তিন মাস ৫ দিন হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত পুলিশ শিশু পুত্র আশরাফুলকে উদ্ধার করতে পারে নাই। এ ঘটনায় গ্রামের মানুষ ১৫ সেপ্টম্বর এলাকায় মানববন্ধন করেছে। তার পুলিশ প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে নাই।
এ ঘটনায় এলাকাবাসি ক্ষোভে বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে। প্রায় তিন মাস অপহরণ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করতে পারে নাই শাহজাদপুর থানার পুলিশ।
এ ব্যাপরে মামলা হলেও আসামীরা প্রকাশ্যে দিবালোক ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ আটক করছে না। পুলিশের বিরুদ্ধে আসামী ধরতে টালবাহানার অভিযোগ। ছেলেটি বেঁচে আছে নাকি তারা হত্যা করেছে এ নিয়ে বইছে গোটা এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।
পোরজনা ইউপি চেয়ারম্যান  আনোয়ার হোসেন বাবু জানান, এলাকা থেকে অনেকদিন আগে ছেলেটি নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় মামলা হলেও আজ পর্যন্ত ছেলেকে উদ্ধার করতে পারেনি থানা পুলিশ ।
অন্যদিকে নিখোঁজের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার শাহজাদপুর উপজেলার আইনশৃংখলা সভায় স্থানীয় সাংবাদিকদের পক্ষে প্রেস ক্লাবের সভাপতি বিমল কুমার কুন্ডু আশরাফুল এর  ‍পুরো ঘটনাটি তুলে ধরেন। এসময় উপজেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রফেসর আজাদ রহমান ও ইউএনও মোঃ কামরুজ্জামান ঘটনা শুনে হতবাক হয়ে যান। এ ঘটনায় থানার অফিসার ইনচার্জ খায়রুল বাশার বলেন, আমি যোগ দেয়ার আগে এই ছেলেটি নিখোঁজ হয়েছে। আমার খুব চেষ্টা করছি ছেলেটিকে উদ্ধারের জন্য।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এরশাদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় তিন জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। আমরা খুব চেষ্টা করছি ছেলেটিকে উদ্ধারের জন্য। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাদপুর সার্কেল কামরুজ্জামান পিপিএম সাংবাদিকদের জানান, আমরা ছেলেটিকে উদ্ধারের জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছি তবে যে মোবাইল দিয়ে তাকে ডেকে নিয়ে গেছে সবকটি মোবাইল বন্ধ রয়েছে। আমরা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে চেষ্টা করে দেখেছি। এদিকে ছেলেটি বেঁচে আছে নাকি কেউ হত্যা করে গুম করেছে এমন চিন্তায় রয়েছে তার পরিবারগন।
বাখ//আর