ঢাকা ০২:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

শাহজাদপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১১ রোগী হাসপাতালে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:২৮:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুলাই ২০২৩
  • / ৪৯৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// শামছুর রহমান শিশির //

সারাদেশের মতো সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায়ও উদ্বেগজনকহারে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ১১ জন রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে ১ জন ঢাকা থেকে ঘুরে আসা রোগী ও বাদবাকীরা শাহজাদপুরের স্থানীয় বাসিন্দা বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রেসিডেন্সিয়াল মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ মাসুদ রানা বাংলা খবর বিডি’কে জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ১১ রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। বাড়ির আশেপাশের ঝোপঝাড়, পরিত্যাক্ত স্থানে জমে থানা পানি, পুরোনো টায়ার, ডাবের খোসায় জমে থাকা পানি, এয়ার কন্ডিশনের (এসি) পানিতে ডেঙ্গু রোগের জীবাণু জন্ম নেয়। এজন্য এসব স্থান পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি এডিস মশা থেকে সুরক্ষায় দিনে বা রাতে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা উচিত। শাহজাদপুরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সচেতনতামূলক কর্মসূচী নেয়া হয়েছে।

 

আরও পড়ুন : ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৫০৩

 

এদিকে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে আরও অধিক সচেতনতামূলক কর্মসূচী নেয়া উচিৎ বলে বিজ্ঞমহল মনে করছেন। কারণ, গত কয়েক দিনে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে ২শ’তাধিক রোগী মারা গেছেন।

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ :

সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেয়ার পর আবারও জ্বর আসতে পারে। ডেঙ্গুর অন্যতম লক্ষণ শরীরে ব্যথা। সঙ্গে মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা হতে পারে। সঙ্গে চামড়ায় লালচে দাগ বা র‌্যাশ থাকতে পারে। শরীর ঠান্ডা হচ্ছে মনে হতে পারে। ক্ষুধা কমে যাওয়া, শরীর ম্যাজম্যাজ করার লক্ষণও দেখা দিতে পারে।

সিভিয়ার ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে তীব্র পেট ব্যথা, পেট ফুলে যাওয়া, রক্তবমি, মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ, ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ, শ্বাসকার্য কঠিন বা দ্রুত হওয়া, শরীর ঠান্ডা অনুভব বা ঘাম হওয়া, দ্রুত নাড়ি স্পন্দন এবং ঘুম ঘুম ভাব, চেতনা হারানো।

ডেঙ্গুর শক সিনড্রোম থেকে মানবদেহে পানিশূন্যতা তৈরি হয়। সঙ্গে সঙ্গে পাল্‌স রেট অনেকটা বেড়ে যায় এবং রক্তচাপ খুব কমে যায়। শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। শ্বাসপ্রশ্বাস খুব দ্রুত চলে। রোগী অস্থির হয়ে ওঠেন। তখন সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত।

 

ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা :

ডেঙ্গু হলে ওষুধ হিসেবে শুধু প্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। অনেকে না জেনে শরীরের বিভিন্ন অংশের তীব্র ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে বিপদ ঘটতে পারে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা। কারণ, ব্যথানাশক ওষুধ শরীরে রক্তক্ষরণ ঘটাতে পারে, যা ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

ডেঙ্গু হলে চিকিৎসকরা বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। যেমন- ভাতের মাড়, স্যালাইন, ডাবের পানি, স্যুপ, ফলের রস, লেবুর পানি ইত্যাদি। তরল খাবার ৯০ শতাংশ কমায় ডেঙ্গুর তীব্রতা। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার ডাল, ডিম, মুরগির মাংস, ছোট মাছের ঝোল বেশি করে রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়।

ডেঙ্গু রোগীর প্লাটিলেট কমে যায়। তাই প্লাটিলেট বাড়ে এমন খাবার খেতে হবে। যেমন- সাইট্রাস ফল, কাঠবাদাম, দই, সূর্যমুখী বীজ, গ্রিন টি, ক্যাপসিকাম, ব্রোকলি, পালংশাক, আদা, রসুন ও হলুদ।

পেয়ারার শরবত পান করা যেতে পারে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই পানীয়টি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে ডেঙ্গু সংক্রমণ উপশম করবে।

রক্তের প্লাটিলেট বাড়াতে নিম পাতার রস ভালো কাজ করে। এটি শ্বেত রক্তকনিকার সংখ্যাও বৃদ্ধি করে। নিম পাতার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর গুণও আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

শাহজাদপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১১ রোগী হাসপাতালে

আপডেট সময় : ০৪:২৮:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুলাই ২০২৩

// শামছুর রহমান শিশির //

সারাদেশের মতো সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায়ও উদ্বেগজনকহারে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ১১ জন রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে ১ জন ঢাকা থেকে ঘুরে আসা রোগী ও বাদবাকীরা শাহজাদপুরের স্থানীয় বাসিন্দা বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রেসিডেন্সিয়াল মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ মাসুদ রানা বাংলা খবর বিডি’কে জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ১১ রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। বাড়ির আশেপাশের ঝোপঝাড়, পরিত্যাক্ত স্থানে জমে থানা পানি, পুরোনো টায়ার, ডাবের খোসায় জমে থাকা পানি, এয়ার কন্ডিশনের (এসি) পানিতে ডেঙ্গু রোগের জীবাণু জন্ম নেয়। এজন্য এসব স্থান পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি এডিস মশা থেকে সুরক্ষায় দিনে বা রাতে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা উচিত। শাহজাদপুরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সচেতনতামূলক কর্মসূচী নেয়া হয়েছে।

 

আরও পড়ুন : ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৫০৩

 

এদিকে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে আরও অধিক সচেতনতামূলক কর্মসূচী নেয়া উচিৎ বলে বিজ্ঞমহল মনে করছেন। কারণ, গত কয়েক দিনে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে ২শ’তাধিক রোগী মারা গেছেন।

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ :

সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেয়ার পর আবারও জ্বর আসতে পারে। ডেঙ্গুর অন্যতম লক্ষণ শরীরে ব্যথা। সঙ্গে মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা হতে পারে। সঙ্গে চামড়ায় লালচে দাগ বা র‌্যাশ থাকতে পারে। শরীর ঠান্ডা হচ্ছে মনে হতে পারে। ক্ষুধা কমে যাওয়া, শরীর ম্যাজম্যাজ করার লক্ষণও দেখা দিতে পারে।

সিভিয়ার ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে তীব্র পেট ব্যথা, পেট ফুলে যাওয়া, রক্তবমি, মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ, ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ, শ্বাসকার্য কঠিন বা দ্রুত হওয়া, শরীর ঠান্ডা অনুভব বা ঘাম হওয়া, দ্রুত নাড়ি স্পন্দন এবং ঘুম ঘুম ভাব, চেতনা হারানো।

ডেঙ্গুর শক সিনড্রোম থেকে মানবদেহে পানিশূন্যতা তৈরি হয়। সঙ্গে সঙ্গে পাল্‌স রেট অনেকটা বেড়ে যায় এবং রক্তচাপ খুব কমে যায়। শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। শ্বাসপ্রশ্বাস খুব দ্রুত চলে। রোগী অস্থির হয়ে ওঠেন। তখন সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত।

 

ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা :

ডেঙ্গু হলে ওষুধ হিসেবে শুধু প্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। অনেকে না জেনে শরীরের বিভিন্ন অংশের তীব্র ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে বিপদ ঘটতে পারে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা। কারণ, ব্যথানাশক ওষুধ শরীরে রক্তক্ষরণ ঘটাতে পারে, যা ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

ডেঙ্গু হলে চিকিৎসকরা বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। যেমন- ভাতের মাড়, স্যালাইন, ডাবের পানি, স্যুপ, ফলের রস, লেবুর পানি ইত্যাদি। তরল খাবার ৯০ শতাংশ কমায় ডেঙ্গুর তীব্রতা। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার ডাল, ডিম, মুরগির মাংস, ছোট মাছের ঝোল বেশি করে রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়।

ডেঙ্গু রোগীর প্লাটিলেট কমে যায়। তাই প্লাটিলেট বাড়ে এমন খাবার খেতে হবে। যেমন- সাইট্রাস ফল, কাঠবাদাম, দই, সূর্যমুখী বীজ, গ্রিন টি, ক্যাপসিকাম, ব্রোকলি, পালংশাক, আদা, রসুন ও হলুদ।

পেয়ারার শরবত পান করা যেতে পারে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই পানীয়টি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে ডেঙ্গু সংক্রমণ উপশম করবে।

রক্তের প্লাটিলেট বাড়াতে নিম পাতার রস ভালো কাজ করে। এটি শ্বেত রক্তকনিকার সংখ্যাও বৃদ্ধি করে। নিম পাতার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর গুণও আছে।