লাঠি, বোমা আনবে বলেই বিএনপি পল্টনে সমাবেশ চায় : কাদের
- আপডেট সময় : ০৮:১৭:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২২
- / ৪৩৮ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামী ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে বিএনপি লাঠি, বোমা আনবে বলেই দলটি পল্টনে সমাবেশ করতে চায় বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঢাবি ছাত্রলীগের সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন। এখানেই পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ফখরুলের পছন্দ নয়। তিনি চান পল্টন, ৩৫ হাজার স্কয়ার ফিট। অথচ সোহরাওয়াদী উদ্যানে বেগম জিয়া গত নির্বাচনেও সভা করেছেন। ফখরুলের কেন পছন্দ নয়? স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের বিশ্বাস তার নাই, আবারও প্রমাণ দিলেন। এ জন্য সোহরাওয়ার্দী আপনাদের পছন্দ নয়। এটা ওনাদের জন্য খাঁচা। আর পল্টনের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ওনাদের জন্য ভালো। কেন ভালো সেটা আমরা জানি। লাঠি, বোমা নিয়ে আসবেন, এ জন্য এটা ভালো।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে করে কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব পল্টনকে আওয়ামী লীগ ভয় পায় না। আপনারা ঢাকা দখল করবেন, আরে আল্লাহ, কত বড় সাহস। শেখ হাসিনা কাউকে ভয় পায় না, এক আল্লাহ ছাড়া। আওয়ামী লীগ ভয় পায়, আপনাদের আগুনসন্ত্রাস, লাঠি নিয়ে খেলাধুলা। আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাব না। সেই বদ মতলব আপনাদের আছে। খবর পেলাম বিএনপি নেতাকর্মীরা হাড়ি-পাতিল, লোটা-কম্বল নিয়ে তাঁবু গেড়েছে। কেন? আমরা তো পরিবহন বন্ধ করতে বলিনি। ৬ তারিখ ছাত্রলীগের সম্মেলন। ছাত্রলীগ আপনাদের ধারে-কাছেও যাবে না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রঙিন খোয়াব দেখে লাভ নাই মন্তব্য করে তিনি বলেন, সংবিধানকে অনেক কচুকাটা করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর ফিরে আসবে না।
এসময় তিনি মির্জা ফখরুলকে লন্ডনের আদেশে দেশে আওয়াজ না দেওয়ার জন্য বলেন। তিনি বলেন, লন্ডনের মিটিংয়ের আদেশে আওয়াজ দিলে কাজ হবে না।
তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য কাদের বলেন, একুশে আগস্ট আমাদের নেত্রীকে প্রাইম টার্গেট করে আইভি রহমানসহ ২৩ জনকে হত্যার মাস্টারমাইন্ড কে ছিল? হাওয়া ভবনের যুবরাজ তারেক রহমান; মির্জা ফখরুলের নেতা। এমন নেতা যিনি আর রাজনীতি করবেন না- তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আর দেশে আসেননি। কত বড় সাহসী নেতা। তিনি আজ লন্ডনে বসে বসে হুংকার দিচ্ছেন। বলছেন, ‘হাসিনা পালিয়ে যাবে’। কত বড় বেয়াদব শেখ হাসিনাও বলে নাই। ‘তার মন্ত্রীরাও পালিয়ে যাবে। তোমরা রাস্তা দখল করে রাখবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা শহরে বাড়ির সামনে লেখা থাকে কুকুর থেকে সাবধান, জনগণ বলে বিএনপি থেকে সাবধান। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি প্রশ্ন করেন, বিএনপিকে কেউ বিশ্বাস করে? তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জবাব দেয় না..। আবার প্রশ্ন করেন খেলা হবে? তখন নেতাকর্মীরা বলেন, হবে…।
বিএনপির সমাবেশে পরিবহন বন্ধ না করতে ওবায়দুল কাদের পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন দাবি করে কাদের বলেন, এখনই শুনলাম বিএনপির নেতাকর্মীরা বিছানা, বালিশ শীতের কম্বল, সঙ্গে মশার কয়েল নিয়ে তাবু পাতছে। এত আগে আসার কি দরকার? তত্ত্বাবধায়ক আর হবে না, সংবিধান পরিবর্তনের সুযোগ নেই। আমি পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের অনুরোধ করেছি তারা যেন গাড়ি বন্ধ না করে। তারাও বলেছে গাড়ি বন্ধ করবেন না।
ছাত্রলীগের সঙ্গেও যেন কোনো কিছু না ঘটে সেজন্য ছাত্রলীগের সম্মেলন এগিয়ে আনা হয়েছে। ছাত্রলীগ আপনাদের ধারে কাছেও যাবে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতি দুই বছর পরপর সম্মেলনের কথা থাকলেও কভিড-১৯ মহামারির কারণে সাড়ে চার বছর পর ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।
ঢাবি ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটি এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের কমিটি একসঙ্গে ঘোষণা হবে।
এসময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ বিভিন্ন হল ইউনিট ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।