ঢাকা ০৬:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাসিক নির্বাচনী প্রচারণায় কঠিন তোপের মুখে ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী রনি সমর্থকরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:২৮:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ জুন ২০২৩
  • / ৪৬০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
// মাসুদ পারভেজ, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি //
আসন্ন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রচার প্রচারণায় প্রতিনিয়ত চরম বাঁধার মুখে পড়ছেন ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী তারুণ্যের অহংকার, শিক্ষিত হেভিওয়েট প্রার্থী মেহেদী হাসান রনি। রনি ওই ওয়ার্ডে টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে এবার নির্বাচন করছেন। বর্তমান কাউন্সিলর প্রার্থী মাহাতাব হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি। প্রচার প্রচারণায় মেহেদী হাসান রনি’র সমর্থকদের প্রতিনিয়ত বাঁধা প্রদানসহ অব্যাহত হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে মাহাতাব হোসেন চৌধুরী’র সমর্থকরা।
এমন বক্তব্য উপস্থাপন করে মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিয়ে ওই কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মেহেদী হাসান রনি বলেন, হুমকি ধামকি বা বাঁধা বিপত্তি উপেক্ষা করে, তাদের ওইসব বিষয়ে কর্ণপাত না করে, আমি আমার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
মাহাতাবের অশিক্ষিত কিছু গুন্ডাবাহিনী প্রতিনিয়ত আমার নারী কর্মীদের ভয়ভীতিসহ অশ্লীল কটূক্তি করছেন। বিষয়গুলো নিয়ে মৌখিকভাবে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত রিটানিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তিনি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন।
গত রবিবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় রনির প্রচারনী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে নির্বাচনী মাঠ ও তার জনপ্রিয়তা তুলে ধরে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর রয়েছেন মাহাতাব হোসেন চৌধুরী। তিনি এখন পর্যন্ত এই ওয়ার্ডের দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন করতে পারেননি। ওয়ার্ডের বেশিরভাগ ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ। যার কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তার উপর হাটু পানি হয়। বেশিরভার রাস্তার বেহাল দশা। আমাদের বর্তমান মেয়র খুবই উন্নয়ন বান্ধব। তার কাছে শুধু বলতে হবে। তিনি সব সময় দিতে প্রস্তুত। মেয়রের কাছে বলার মত যাকে প্রতিনিধি করা হয়েছে, তার কাছে সমস্যার বলতে বলতে মানুষ শুধু হয়রানি হয়েছে। অথচ আমাদের কাউন্সিলর এই ওয়ার্ডের সমস্যার বিষয়ে কোন দৃষ্টিপাত করেননি।  তার কাজ শুধু চাঁদাবাজি ও লুটপাট করা। আপনারা সবাই জানেন, মাত্র কিছুদিন আগে এই মাহাতাব হোসেনের বিরুদ্ধে বাস শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ ও কোটি কোটি টাকা লোপাটের সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাস টার্মিনালে জুয়ার আসর বসে তার ছত্রছায়ায়। এগুলো আমার কথা নয়, সংবাদ পত্রের কথা। এছাড়াও তিনি টিসিবি’র কার্ডকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। আজ যারা টিসিবি’র কার্ড পেয়েছে সবাই তার লোকজন।  এই টিসিবি কার্ডের লোভ দেখাচ্ছে এবং হুমকি দিচ্ছে যে, তাকে ভোট না দিলে সামনে তাদের এই কার্ড থেকে বঞ্চিত করা হবে।
আজকে বর্তমান কাউন্সিলরের আচরনের কারণে এই ওয়ার্ডের সুশীল সমাজ ও সচেতন মহল আমার পাশে এসেছে। আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করবো এবং এত সুন্দর নগরীর যিনি রূপকার আমাদের বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ভাইয়ের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী উন্নয়নে কাজ করবো। ওয়ার্ডে মাদক নির্মূলে কাজ করবো। আমাদের এই ওয়ার্ডে অনেক হতদরিদ্র মানুষ আছে, তাদের ছেলে মেয়েরা টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে পারেনা, পরীক্ষা দিতে পারেনা। আমি তাদের জন্য লিটন ভাইকে নিয়ে এসে একটি ফান্ড করবো এবং সেই ফান্ড থেকে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করবো। তারা যেন ঝরে না পড়ে। আপনারা জানেন এবার লিটন ভাইয়ের প্রতিশ্রুতি কর্মসংস্থানের।  আমিও এই ওয়ার্ডের শিক্ষিত সমাজ ও বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান করে দিবো ইনশাআল্লাহ। পরিশেষে ওয়ার্ডবাসির সেবা করার প্রত্যয় নিয়ে সকলের কাছে টিফিন ক্যারিয়ার (মার্কায়) ভোট চেয়েছেন তিনি। পরে স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা বর্তমান কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় এলাকাবাসি বর্তমান কাউন্সিলরের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধরেন। সবশেষে তারা অবাধ  সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহনের প্রত্যাশা করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী (ট্রাক্টর প্রতীক) মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছে। আমার কর্মী সমর্থকরা কাউকে হুমকি ধামকি দেয়নি।
উল্লেখ্য, হলফনামা অনুযায়ী প্রার্থী মেহেদী হাসান রনি এমবিএ পাস, অপরদিকে মাহাতাব স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পূর্ণ প্রার্থী। মাহাতাবের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে তিন মামলা বিচারাধীন ও একটি ফৌজদারি মামলায় খালাস পেয়েছেন তিনি। অপর প্রার্থী মেহেদী হাসান রনি’র বিরুদ্ধে দুটি মামলা। একটি বিচারাধীন অন্যটি বেখসুর খালাস পেয়েছেন। ব্যবসায় প্রতি বৎসর মাহাতাবের নিজের আয় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও স্ত্রী বাসা ভাড়া পায় ৩০ হাজার টাকা। ব্যবসায় রনি’র আয় ৫ লক্ষ ৬০ হাজার ও চাকুরী থেকে ২ লক্ষ ৪০ হাজার। মাহাতাবের নিজ নামে ব্যাংকে জমা আছে ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে আছে ৬ হাজার টাকা। রনি নিজ নামে আছে ৬ লক্ষ টাকা। মাহাতাবের নামে ১ টি বাস ও স্ত্রী নামে ৪ টি বাস আছে। রনি’র ১০ লক্ষ টাকার শেয়ার ক্রয় করা আছে। মাহাতাবের অকৃষি জমি ৪ কাঠাসহ ৫ তলা একটি বাড়ির মালিক আছে। এছাড়াও পূবালী ব্যাংকে মাহাতাবের ২৫ লক্ষ টাকা লোন আছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে হলফনামায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

রাসিক নির্বাচনী প্রচারণায় কঠিন তোপের মুখে ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী রনি সমর্থকরা

আপডেট সময় : ০৪:২৮:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ জুন ২০২৩
// মাসুদ পারভেজ, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি //
আসন্ন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রচার প্রচারণায় প্রতিনিয়ত চরম বাঁধার মুখে পড়ছেন ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী তারুণ্যের অহংকার, শিক্ষিত হেভিওয়েট প্রার্থী মেহেদী হাসান রনি। রনি ওই ওয়ার্ডে টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে এবার নির্বাচন করছেন। বর্তমান কাউন্সিলর প্রার্থী মাহাতাব হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি। প্রচার প্রচারণায় মেহেদী হাসান রনি’র সমর্থকদের প্রতিনিয়ত বাঁধা প্রদানসহ অব্যাহত হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে মাহাতাব হোসেন চৌধুরী’র সমর্থকরা।
এমন বক্তব্য উপস্থাপন করে মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিয়ে ওই কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মেহেদী হাসান রনি বলেন, হুমকি ধামকি বা বাঁধা বিপত্তি উপেক্ষা করে, তাদের ওইসব বিষয়ে কর্ণপাত না করে, আমি আমার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
মাহাতাবের অশিক্ষিত কিছু গুন্ডাবাহিনী প্রতিনিয়ত আমার নারী কর্মীদের ভয়ভীতিসহ অশ্লীল কটূক্তি করছেন। বিষয়গুলো নিয়ে মৌখিকভাবে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত রিটানিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তিনি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন।
গত রবিবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় রনির প্রচারনী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে নির্বাচনী মাঠ ও তার জনপ্রিয়তা তুলে ধরে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর রয়েছেন মাহাতাব হোসেন চৌধুরী। তিনি এখন পর্যন্ত এই ওয়ার্ডের দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন করতে পারেননি। ওয়ার্ডের বেশিরভাগ ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ। যার কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তার উপর হাটু পানি হয়। বেশিরভার রাস্তার বেহাল দশা। আমাদের বর্তমান মেয়র খুবই উন্নয়ন বান্ধব। তার কাছে শুধু বলতে হবে। তিনি সব সময় দিতে প্রস্তুত। মেয়রের কাছে বলার মত যাকে প্রতিনিধি করা হয়েছে, তার কাছে সমস্যার বলতে বলতে মানুষ শুধু হয়রানি হয়েছে। অথচ আমাদের কাউন্সিলর এই ওয়ার্ডের সমস্যার বিষয়ে কোন দৃষ্টিপাত করেননি।  তার কাজ শুধু চাঁদাবাজি ও লুটপাট করা। আপনারা সবাই জানেন, মাত্র কিছুদিন আগে এই মাহাতাব হোসেনের বিরুদ্ধে বাস শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ ও কোটি কোটি টাকা লোপাটের সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাস টার্মিনালে জুয়ার আসর বসে তার ছত্রছায়ায়। এগুলো আমার কথা নয়, সংবাদ পত্রের কথা। এছাড়াও তিনি টিসিবি’র কার্ডকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। আজ যারা টিসিবি’র কার্ড পেয়েছে সবাই তার লোকজন।  এই টিসিবি কার্ডের লোভ দেখাচ্ছে এবং হুমকি দিচ্ছে যে, তাকে ভোট না দিলে সামনে তাদের এই কার্ড থেকে বঞ্চিত করা হবে।
আজকে বর্তমান কাউন্সিলরের আচরনের কারণে এই ওয়ার্ডের সুশীল সমাজ ও সচেতন মহল আমার পাশে এসেছে। আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করবো এবং এত সুন্দর নগরীর যিনি রূপকার আমাদের বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ভাইয়ের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী উন্নয়নে কাজ করবো। ওয়ার্ডে মাদক নির্মূলে কাজ করবো। আমাদের এই ওয়ার্ডে অনেক হতদরিদ্র মানুষ আছে, তাদের ছেলে মেয়েরা টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে পারেনা, পরীক্ষা দিতে পারেনা। আমি তাদের জন্য লিটন ভাইকে নিয়ে এসে একটি ফান্ড করবো এবং সেই ফান্ড থেকে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করবো। তারা যেন ঝরে না পড়ে। আপনারা জানেন এবার লিটন ভাইয়ের প্রতিশ্রুতি কর্মসংস্থানের।  আমিও এই ওয়ার্ডের শিক্ষিত সমাজ ও বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান করে দিবো ইনশাআল্লাহ। পরিশেষে ওয়ার্ডবাসির সেবা করার প্রত্যয় নিয়ে সকলের কাছে টিফিন ক্যারিয়ার (মার্কায়) ভোট চেয়েছেন তিনি। পরে স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা বর্তমান কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় এলাকাবাসি বর্তমান কাউন্সিলরের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধরেন। সবশেষে তারা অবাধ  সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহনের প্রত্যাশা করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী (ট্রাক্টর প্রতীক) মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছে। আমার কর্মী সমর্থকরা কাউকে হুমকি ধামকি দেয়নি।
উল্লেখ্য, হলফনামা অনুযায়ী প্রার্থী মেহেদী হাসান রনি এমবিএ পাস, অপরদিকে মাহাতাব স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পূর্ণ প্রার্থী। মাহাতাবের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে তিন মামলা বিচারাধীন ও একটি ফৌজদারি মামলায় খালাস পেয়েছেন তিনি। অপর প্রার্থী মেহেদী হাসান রনি’র বিরুদ্ধে দুটি মামলা। একটি বিচারাধীন অন্যটি বেখসুর খালাস পেয়েছেন। ব্যবসায় প্রতি বৎসর মাহাতাবের নিজের আয় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও স্ত্রী বাসা ভাড়া পায় ৩০ হাজার টাকা। ব্যবসায় রনি’র আয় ৫ লক্ষ ৬০ হাজার ও চাকুরী থেকে ২ লক্ষ ৪০ হাজার। মাহাতাবের নিজ নামে ব্যাংকে জমা আছে ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে আছে ৬ হাজার টাকা। রনি নিজ নামে আছে ৬ লক্ষ টাকা। মাহাতাবের নামে ১ টি বাস ও স্ত্রী নামে ৪ টি বাস আছে। রনি’র ১০ লক্ষ টাকার শেয়ার ক্রয় করা আছে। মাহাতাবের অকৃষি জমি ৪ কাঠাসহ ৫ তলা একটি বাড়ির মালিক আছে। এছাড়াও পূবালী ব্যাংকে মাহাতাবের ২৫ লক্ষ টাকা লোন আছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে হলফনামায়।