ঢাকা ০৫:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাজারহাটে ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষকদের মাঝে শংকা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:২৯:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মে ২০২৩
  • / ৪৪৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :

রাজারহাটে ধানকাটা শ্রমিক সংকট ও মজুরী বেশি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে হতাশায় ভূগছেন তারা। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থানায় এবং ফলন ভালো হওয়ার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা।

জানা গেছে, চলতি মাসের শেষার্ধে উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে ধানকাটা উৎসব। প্রকৃতি অনুকূলে থাকায় দ্রুত ইরি-বোরো ধান ঘরে তুলতে তোড়জোর করছেন কৃষকরা। তবে মজুর সংকটের কারনে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মজুরী বাড়িয়ে দিয়েছেন মজুররা। উপজেলার গ্রামেগঞ্জে পাঁচ শতক (একসের জমি) জমির ধান কাটতেই ৬০০ থেকে ৮০০টাকা নিচ্ছেন শ্রমিকরা। অর্থাৎ ১বিঘা জমির ধান কাটতেই শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে ৪হাজার ২শ টাকা থেকে ৫হাজার ৬শ টাকা পর্যন্ত। এরপর রয়েছে মাড়াই, ঝাড়াই ও শুকানোর খরচ। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে রাজারহাট উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ১২হাজার ২২০হেক্টর জমিতে ইরি-বোরোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এরমধ্যে ১২হাজার ২১০হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে।

কৃষকরা জানান, ইরি-বোরো মৌসুমে এমনিতেই এলাকায় মজুর সংকট, তার উপর মজুরদের প্রায় অর্ধেকাংশেই বেশি উপার্জনের আশায় বগুড়া, জয়পুরহাট, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মজুরীর কাজ করতে যায়। ফলে এ মৌসুমে মজুরদের তীব্র সংকট দেখা দেয়।

এদিকে ফলন ভালো হলেও বাজার মূল্য কম হওয়ায় ধান উৎপাদনে উৎসাহ-উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলছেন কৃষকরা। বর্তমানে স্থানীয় হাট-বাজার গুলোতে ৯শ থেকে ১হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে ইরি-বোরো ধান। কৃষকরা বলছেন,এতে করে ব্যয় নির্বাহের পর তাদের পারিশ্রমিকেই উঠছে না।

ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম দেবত্তর গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক দূর্যোগ ছিল না, ফলনও ভালো হয়েছে। তবে ন্যায্য মূল্য না পেলে এরপর থেকে আর ধানের চাষাবাদ করা যাবে না।

উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের পীলমামুদ গ্রামের কৃষক ওছমান আলী বসুনিয়া বলেন, ধান কাটাই মাড়াই করতেই খরচ পড়ে ১হাজার টাকা, ধান রোপন, সার-কীটনাশক, নিড়ানী, সেচ প্রয়োগে কমপক্ষে আরও ১হাজার টাকা। পাঁচ শতক জমিতে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন হয় ৩মন পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে একসের জমিতে চাষাবাদ খরচ ২হাজার টাকা যাওয়ার পর পারিশ্রমিকের মজুরি টিকে না।

রাজারহাট সদরের ফুলবাড়ি উপনচৌকি গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, ৩দিন থেকে শ্রমিকদের পিছনে ঘুরছি, তারা এপর্যন্ত আমার ধান কাটা শুরু করতে পারে নাই। কারণ আমার আগে যাদের জমি কাটার চুক্তি নিয়েছে সেগুলোই শেষ করতে পারে নাই।

রাজারহাট সদরের দেবিচরন গ্রামের শ্রমিক (ক্ষেত মজুর) আজিজার রহমান বলেন, “খালি মজুরী বাড়াটায় দেখলেন, সারা দিনের ইনকাম নিয়া বাজার যায়্যাও মাছ-গোস্ত কেনার টাকা থাকে না।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাথি বেগম বলেন, রাজারহাট উপজেলায় ভর্তুকিতে কৃষকদের ৬টি হারভেষ্টার মেশিন দেয়া হয়েছে, সেগুলো দিয়ে মাঠে ধান কাটার কাজ চলছে। এছাড়া শ্রমিক সংকটের কারনে আমরা সবসময় কৃষকদের আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে আসছি।

 

বা/খ: জই

নিউজটি শেয়ার করুন

রাজারহাটে ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষকদের মাঝে শংকা

আপডেট সময় : ০৩:২৯:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মে ২০২৩

আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :

রাজারহাটে ধানকাটা শ্রমিক সংকট ও মজুরী বেশি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে হতাশায় ভূগছেন তারা। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থানায় এবং ফলন ভালো হওয়ার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা।

জানা গেছে, চলতি মাসের শেষার্ধে উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে ধানকাটা উৎসব। প্রকৃতি অনুকূলে থাকায় দ্রুত ইরি-বোরো ধান ঘরে তুলতে তোড়জোর করছেন কৃষকরা। তবে মজুর সংকটের কারনে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মজুরী বাড়িয়ে দিয়েছেন মজুররা। উপজেলার গ্রামেগঞ্জে পাঁচ শতক (একসের জমি) জমির ধান কাটতেই ৬০০ থেকে ৮০০টাকা নিচ্ছেন শ্রমিকরা। অর্থাৎ ১বিঘা জমির ধান কাটতেই শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে ৪হাজার ২শ টাকা থেকে ৫হাজার ৬শ টাকা পর্যন্ত। এরপর রয়েছে মাড়াই, ঝাড়াই ও শুকানোর খরচ। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে রাজারহাট উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ১২হাজার ২২০হেক্টর জমিতে ইরি-বোরোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এরমধ্যে ১২হাজার ২১০হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে।

কৃষকরা জানান, ইরি-বোরো মৌসুমে এমনিতেই এলাকায় মজুর সংকট, তার উপর মজুরদের প্রায় অর্ধেকাংশেই বেশি উপার্জনের আশায় বগুড়া, জয়পুরহাট, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মজুরীর কাজ করতে যায়। ফলে এ মৌসুমে মজুরদের তীব্র সংকট দেখা দেয়।

এদিকে ফলন ভালো হলেও বাজার মূল্য কম হওয়ায় ধান উৎপাদনে উৎসাহ-উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলছেন কৃষকরা। বর্তমানে স্থানীয় হাট-বাজার গুলোতে ৯শ থেকে ১হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে ইরি-বোরো ধান। কৃষকরা বলছেন,এতে করে ব্যয় নির্বাহের পর তাদের পারিশ্রমিকেই উঠছে না।

ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম দেবত্তর গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক দূর্যোগ ছিল না, ফলনও ভালো হয়েছে। তবে ন্যায্য মূল্য না পেলে এরপর থেকে আর ধানের চাষাবাদ করা যাবে না।

উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের পীলমামুদ গ্রামের কৃষক ওছমান আলী বসুনিয়া বলেন, ধান কাটাই মাড়াই করতেই খরচ পড়ে ১হাজার টাকা, ধান রোপন, সার-কীটনাশক, নিড়ানী, সেচ প্রয়োগে কমপক্ষে আরও ১হাজার টাকা। পাঁচ শতক জমিতে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন হয় ৩মন পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে একসের জমিতে চাষাবাদ খরচ ২হাজার টাকা যাওয়ার পর পারিশ্রমিকের মজুরি টিকে না।

রাজারহাট সদরের ফুলবাড়ি উপনচৌকি গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, ৩দিন থেকে শ্রমিকদের পিছনে ঘুরছি, তারা এপর্যন্ত আমার ধান কাটা শুরু করতে পারে নাই। কারণ আমার আগে যাদের জমি কাটার চুক্তি নিয়েছে সেগুলোই শেষ করতে পারে নাই।

রাজারহাট সদরের দেবিচরন গ্রামের শ্রমিক (ক্ষেত মজুর) আজিজার রহমান বলেন, “খালি মজুরী বাড়াটায় দেখলেন, সারা দিনের ইনকাম নিয়া বাজার যায়্যাও মাছ-গোস্ত কেনার টাকা থাকে না।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাথি বেগম বলেন, রাজারহাট উপজেলায় ভর্তুকিতে কৃষকদের ৬টি হারভেষ্টার মেশিন দেয়া হয়েছে, সেগুলো দিয়ে মাঠে ধান কাটার কাজ চলছে। এছাড়া শ্রমিক সংকটের কারনে আমরা সবসময় কৃষকদের আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে আসছি।

 

বা/খ: জই