ঢাকা ০১:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

যশোরে নাসরিনের ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করে অনেকেই এখন নারী উদ্যোক্তা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:১০:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৬৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

যশোরের ঝিকরগাছার বারবাকপুর গ্রামের নাসরিনের ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি এলাকার নারী কর্মসংস্থানে সাড়া ফেলেছে। বাড়িতে জৈব সার তৈরি করে নিজের পড়ালেখার খরচ মিটিয়ে পরিবারেও অর্থের জোগান দেওয়া শিক্ষার্থী নাসরিন সুলতানার হাত ধরে এলাকার অনেক নারীই এখন উদ্যোক্তা। উচ্চ শিক্ষিত নাসরিন এখন এলাকার নারী কর্মসংস্থানের প্রতীক। ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির পাশাপাশি তিনি কাজ করছেন নারীর ক্ষমতায়ন, বাল্যবিয়ে, যৌতুক ও নারী পাচার রোধ এবং নারীদের নানা সমস্যা নিয়ে। নারী উদ্যোক্তা নাসরিন সুলতানা যশোরের ঝিকরগাছার বারবাকপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ে। তিনি উপজেলা নারী সামাজিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক ও ঝিকরগাছার জাগরণী সংসদের সদস্য।
নাসরিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঝিকরগাছা মহিলা কলেজ থেকে অনার্স শেষ করে সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তরে অধ্যায়নের পাশাপাশি ডিপ্লোমা করেছেন কৃষির ওপর। তার জৈব সার কারখানায় প্রতি মাসে অন্তত ৩০ মণ ভার্মি কম্পোস্ট সার (কেঁচো সার) তৈরি হয়। ২০১৬ সালের প্রথম দিকে তিনি দুইটি নান্দায় (সার তৈরির পাত্র) দেড় ‘ টাকা দিয়ে একশ গ্রাম কেঁচো কিনে শুরু ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি শুরু করলেও বর্তমানে এ কারখানা থেকে প্রতি মাসে আয় হয় ১০-১২ হাজার টাকা।

নাসরিন সুলতানার জৈব সারের এ কারখানা দেখে শুধু বারবাকপুর নয় আশেপাশের গ্রামগুলোতেও গৃহিণী ও যুবক-যুবতীরা কেঁচো কম্পোস্ট সার কারখানা গড়ে তুলেছেন। বারবাকপুর গ্রামের মাজেদা বেগম বলেন, নাসরিনের কাছ থেকে কেঁচো কম্পোস্টের প্রশিক্ষণ নিয়ে জৈব সার কারখানা তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছি। এখন নিজেদের জমিতে এ সার ব্যবহার করে যা উদ্বৃত্ত থাকে তা বিক্রি করে সংসারের অন্যান্য খরচ মিটিয়ে থাকি। একই কথা বলেছেন, বারবাকপুরের গৃহিণী বিথি বেগম, সাকিনা খাতুন ও পদ্মপুকুর গ্রামের সেলিনা বেগম।

ঝিকরগাছার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব হোসেন বলেন, নাসরিন এলাকায় নারী কর্মসংস্থানের প্রতীক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তার কেঁচো দিয়ে জৈব সার তৈরি দেখে বারবাকপুর গ্রামের অনেক নারী এখন জৈব সার তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছেন। কৃষিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে উদ্যেক্তা নাসরিন সুলতানা ২০২২ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারও পেয়েছেন।
নাসরিন সুলতানা বলেন, আমি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে হাঁস-মুরগির ভ্যাকসিনের, পিছিয়ে পড়া নারীদের স্বামী নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে জেন্ডার সমতা, ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি ও বসতবাড়িতে সবজি চাষ করে পারিবারিক চাহিদা মেটানোর ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে পাড়ায় পাড়ায় প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। এসব প্রশিক্ষণ নিয়ে এলাকার যুবক-যুবতী ও নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, উপজেলার এক হাজার ৯২০টি পরিবারের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করছি। পাশাপাশি উপজেলা নারী সামাজিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক হিসেবে ৬৪টি গ্রুপ নিয়ে বাল্যবিয়ে যৌতুক ও নারী নির্যাতন বিষয় কাজ করছি।
ঝিকরগাছা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা অনিতা মল্লিক বলেন, নাসরিন সুলতানা স্বাবলম্বী ক্যাটাগরিতে ২০২১ সালে উপজেলা পর্যায় জয়িতা পুরস্কার পান। তিনি নারী ও যুব সমাজের উদাহরণ। -[সূত্র : বাসস]

বা/খ: এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

যশোরে নাসরিনের ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করে অনেকেই এখন নারী উদ্যোক্তা

আপডেট সময় : ০৩:১০:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :

যশোরের ঝিকরগাছার বারবাকপুর গ্রামের নাসরিনের ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি এলাকার নারী কর্মসংস্থানে সাড়া ফেলেছে। বাড়িতে জৈব সার তৈরি করে নিজের পড়ালেখার খরচ মিটিয়ে পরিবারেও অর্থের জোগান দেওয়া শিক্ষার্থী নাসরিন সুলতানার হাত ধরে এলাকার অনেক নারীই এখন উদ্যোক্তা। উচ্চ শিক্ষিত নাসরিন এখন এলাকার নারী কর্মসংস্থানের প্রতীক। ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির পাশাপাশি তিনি কাজ করছেন নারীর ক্ষমতায়ন, বাল্যবিয়ে, যৌতুক ও নারী পাচার রোধ এবং নারীদের নানা সমস্যা নিয়ে। নারী উদ্যোক্তা নাসরিন সুলতানা যশোরের ঝিকরগাছার বারবাকপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ে। তিনি উপজেলা নারী সামাজিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক ও ঝিকরগাছার জাগরণী সংসদের সদস্য।
নাসরিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঝিকরগাছা মহিলা কলেজ থেকে অনার্স শেষ করে সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তরে অধ্যায়নের পাশাপাশি ডিপ্লোমা করেছেন কৃষির ওপর। তার জৈব সার কারখানায় প্রতি মাসে অন্তত ৩০ মণ ভার্মি কম্পোস্ট সার (কেঁচো সার) তৈরি হয়। ২০১৬ সালের প্রথম দিকে তিনি দুইটি নান্দায় (সার তৈরির পাত্র) দেড় ‘ টাকা দিয়ে একশ গ্রাম কেঁচো কিনে শুরু ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি শুরু করলেও বর্তমানে এ কারখানা থেকে প্রতি মাসে আয় হয় ১০-১২ হাজার টাকা।

নাসরিন সুলতানার জৈব সারের এ কারখানা দেখে শুধু বারবাকপুর নয় আশেপাশের গ্রামগুলোতেও গৃহিণী ও যুবক-যুবতীরা কেঁচো কম্পোস্ট সার কারখানা গড়ে তুলেছেন। বারবাকপুর গ্রামের মাজেদা বেগম বলেন, নাসরিনের কাছ থেকে কেঁচো কম্পোস্টের প্রশিক্ষণ নিয়ে জৈব সার কারখানা তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছি। এখন নিজেদের জমিতে এ সার ব্যবহার করে যা উদ্বৃত্ত থাকে তা বিক্রি করে সংসারের অন্যান্য খরচ মিটিয়ে থাকি। একই কথা বলেছেন, বারবাকপুরের গৃহিণী বিথি বেগম, সাকিনা খাতুন ও পদ্মপুকুর গ্রামের সেলিনা বেগম।

ঝিকরগাছার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব হোসেন বলেন, নাসরিন এলাকায় নারী কর্মসংস্থানের প্রতীক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তার কেঁচো দিয়ে জৈব সার তৈরি দেখে বারবাকপুর গ্রামের অনেক নারী এখন জৈব সার তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছেন। কৃষিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে উদ্যেক্তা নাসরিন সুলতানা ২০২২ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারও পেয়েছেন।
নাসরিন সুলতানা বলেন, আমি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে হাঁস-মুরগির ভ্যাকসিনের, পিছিয়ে পড়া নারীদের স্বামী নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে জেন্ডার সমতা, ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি ও বসতবাড়িতে সবজি চাষ করে পারিবারিক চাহিদা মেটানোর ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে পাড়ায় পাড়ায় প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। এসব প্রশিক্ষণ নিয়ে এলাকার যুবক-যুবতী ও নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, উপজেলার এক হাজার ৯২০টি পরিবারের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করছি। পাশাপাশি উপজেলা নারী সামাজিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক হিসেবে ৬৪টি গ্রুপ নিয়ে বাল্যবিয়ে যৌতুক ও নারী নির্যাতন বিষয় কাজ করছি।
ঝিকরগাছা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা অনিতা মল্লিক বলেন, নাসরিন সুলতানা স্বাবলম্বী ক্যাটাগরিতে ২০২১ সালে উপজেলা পর্যায় জয়িতা পুরস্কার পান। তিনি নারী ও যুব সমাজের উদাহরণ। -[সূত্র : বাসস]

বা/খ: এসআর।