ঢাকা ০৩:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ভ্যালেন্টাইনের কোনো অস্তিত্ব আছে?

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৩৭:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৫৫৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সম্রাট মার্কাস অরেলিয়াস ক্লডিয়াস ২১৪ থেকে ২৭০ সাল পর্যন্ত রোমান সাম্রাজ্য শাসনকালে সৈন্যদের বিয়ে করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। কারণ হিসেবে বলা হয়, যে যোদ্ধার কোনো পারিবারিক বন্ধন নেই, সে ততো বেশি সাহসী। সম্পর্কহীনরা জীবনের ঝুঁকি নিতে কম ভয় পায়। কথিত আছে ভ্যালেন্টাইন নামের একজন বিশপ সৈন্যদের বিয়ে দিয়ে তা উদযাপন করে সাম্রাজ্যের ডিক্রিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

এই বিশপ প্রেমে বিশ্বাস করতেন। ভ্যালেন্টাইন নামে আরেক ধার্মিক ব্যক্তিকে ঘিরে ভিন্ন ধরনের গল্প রয়েছে। ওই গল্প অনুযায়ী তিনি রাস্তায় রাস্তায় গোলাপ বিতরণ করতেন। অন্য এক গল্প অনুসারে ভ্যালেন্টাইন নামে একজন কাগজে হৃদয় কেটে সৈন্যদের দিতেন, যাতে তারা সেই কার্ডগুলি দেখে তার প্রিয়জনকে মনে রাখতে পারে।

এছাড়া এমন গল্পও আছে যেখানে ভ্যালেন্টাইন নামে একজন ধর্মযাজক তার প্রভাবশালী আত্মীয়দের পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি প্রেমের প্রকৃত অনুভূতি উপলব্ধি করে এক খ্রিস্টান তরুণ এবং তার প্যাগান বান্ধবীর বিয়ে দিতে সম্মত হয়েছিলেন। প্যাগানরা মূলত বহু-ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন। আর তাদের সঙ্গে খ্রিস্টানদের ব্যাপক বিরোধ ছিল।

সেইন্টদের জীবনী বা হ্যাজিওগ্রাফি গবেষক, ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অফ সাও পাওলো (ইউনিফেস্প) এর গবেষক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হ্যাজিওগ্রাফি সোসাইটির সহযোগী থিয়াগো মায়েরকি জানিয়েছেন, ক্যাথলিক সেইন্টদের রেকর্ড অনুযায়ী, ভ্যালেন্টাইন নামে মোট ১১ জন সেইন্ট আছেন। তাদের মধ্যে অন্তত তিনজন প্রেমের বার্তা ছড়ানোর জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন।

তিনি বলেন, এই তিনটি চরিত্র নিয়ে প্রায়ই বিভ্রান্তি দেখা দেয়, একজনের সঙ্গে আরেকজনকে গুলিয়ে ফেলা হয়। গির্জা বা চার্চে যে সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনকে উদযাপন করা হয় তিনি, রোমের সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন। তার সঙ্গে একজন ডাক্তারের গল্পও মিলে যায়, যিনি পরবর্তীতে একজন ধর্মযাজক হন এবং সম্রাটের আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে সৈন্যদের বিয়ে দেয়া উদযাপন করেন। কিন্তু তার আসলেই কোনো অস্তিত্ব ছিল কি না, সেটা নিয়ে বিতর্ক আছে।

যদি একজন ভ্যালেন্টাইনকে আরেকজন ভ্যালেন্টাইন থেকে আলাদা করা কঠিন হয় তবে এটা প্রমাণ করা আরও কঠিন হবে যে সত্যিই কী ঘটেছে। সেইসঙ্গে এই প্রশ্নও ওঠে যে শত শত বছর ধরে চর্চিত এই কিংবদন্তি চরিত্রের আদৌ কোনো অস্তিত্ব ছিল নাকি সবই মনগড়া?

যেহেতু ১৪ ফেব্রুয়ারি উদযাপন করা চরিত্রটি নিয়ে ক্যাথলিক ধর্মে এতো বিতর্ক রয়েছে, ফলে বাস্তবতা কী এবং পৌরাণিক কাহিনী কী তা নিশ্চিত করতে না পারায় ১৯৬০ সালে দ্বিতীয় ভ্যাটিকান কাউন্সিলের পর ক্যাথলিক চার্চ নিজেরাই তাদের প্রথাগত লিটার্জিকাল ক্যালেন্ডার থেকে ১৪ই ফেব্রুয়ারির উৎসবটিকে সরিয়ে দেয়। তারপরও সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের সম্মানে কিছু কিছু সম্প্রদায় আজও এই উৎসব উদযাপন করে, যেখানে ঐতিহ্য বেশ শক্তিশালী। সূত্র: বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

ভ্যালেন্টাইনের কোনো অস্তিত্ব আছে?

আপডেট সময় : ০১:৩৭:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

সম্রাট মার্কাস অরেলিয়াস ক্লডিয়াস ২১৪ থেকে ২৭০ সাল পর্যন্ত রোমান সাম্রাজ্য শাসনকালে সৈন্যদের বিয়ে করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। কারণ হিসেবে বলা হয়, যে যোদ্ধার কোনো পারিবারিক বন্ধন নেই, সে ততো বেশি সাহসী। সম্পর্কহীনরা জীবনের ঝুঁকি নিতে কম ভয় পায়। কথিত আছে ভ্যালেন্টাইন নামের একজন বিশপ সৈন্যদের বিয়ে দিয়ে তা উদযাপন করে সাম্রাজ্যের ডিক্রিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

এই বিশপ প্রেমে বিশ্বাস করতেন। ভ্যালেন্টাইন নামে আরেক ধার্মিক ব্যক্তিকে ঘিরে ভিন্ন ধরনের গল্প রয়েছে। ওই গল্প অনুযায়ী তিনি রাস্তায় রাস্তায় গোলাপ বিতরণ করতেন। অন্য এক গল্প অনুসারে ভ্যালেন্টাইন নামে একজন কাগজে হৃদয় কেটে সৈন্যদের দিতেন, যাতে তারা সেই কার্ডগুলি দেখে তার প্রিয়জনকে মনে রাখতে পারে।

এছাড়া এমন গল্পও আছে যেখানে ভ্যালেন্টাইন নামে একজন ধর্মযাজক তার প্রভাবশালী আত্মীয়দের পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি প্রেমের প্রকৃত অনুভূতি উপলব্ধি করে এক খ্রিস্টান তরুণ এবং তার প্যাগান বান্ধবীর বিয়ে দিতে সম্মত হয়েছিলেন। প্যাগানরা মূলত বহু-ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন। আর তাদের সঙ্গে খ্রিস্টানদের ব্যাপক বিরোধ ছিল।

সেইন্টদের জীবনী বা হ্যাজিওগ্রাফি গবেষক, ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অফ সাও পাওলো (ইউনিফেস্প) এর গবেষক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হ্যাজিওগ্রাফি সোসাইটির সহযোগী থিয়াগো মায়েরকি জানিয়েছেন, ক্যাথলিক সেইন্টদের রেকর্ড অনুযায়ী, ভ্যালেন্টাইন নামে মোট ১১ জন সেইন্ট আছেন। তাদের মধ্যে অন্তত তিনজন প্রেমের বার্তা ছড়ানোর জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন।

তিনি বলেন, এই তিনটি চরিত্র নিয়ে প্রায়ই বিভ্রান্তি দেখা দেয়, একজনের সঙ্গে আরেকজনকে গুলিয়ে ফেলা হয়। গির্জা বা চার্চে যে সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনকে উদযাপন করা হয় তিনি, রোমের সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন। তার সঙ্গে একজন ডাক্তারের গল্পও মিলে যায়, যিনি পরবর্তীতে একজন ধর্মযাজক হন এবং সম্রাটের আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে সৈন্যদের বিয়ে দেয়া উদযাপন করেন। কিন্তু তার আসলেই কোনো অস্তিত্ব ছিল কি না, সেটা নিয়ে বিতর্ক আছে।

যদি একজন ভ্যালেন্টাইনকে আরেকজন ভ্যালেন্টাইন থেকে আলাদা করা কঠিন হয় তবে এটা প্রমাণ করা আরও কঠিন হবে যে সত্যিই কী ঘটেছে। সেইসঙ্গে এই প্রশ্নও ওঠে যে শত শত বছর ধরে চর্চিত এই কিংবদন্তি চরিত্রের আদৌ কোনো অস্তিত্ব ছিল নাকি সবই মনগড়া?

যেহেতু ১৪ ফেব্রুয়ারি উদযাপন করা চরিত্রটি নিয়ে ক্যাথলিক ধর্মে এতো বিতর্ক রয়েছে, ফলে বাস্তবতা কী এবং পৌরাণিক কাহিনী কী তা নিশ্চিত করতে না পারায় ১৯৬০ সালে দ্বিতীয় ভ্যাটিকান কাউন্সিলের পর ক্যাথলিক চার্চ নিজেরাই তাদের প্রথাগত লিটার্জিকাল ক্যালেন্ডার থেকে ১৪ই ফেব্রুয়ারির উৎসবটিকে সরিয়ে দেয়। তারপরও সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের সম্মানে কিছু কিছু সম্প্রদায় আজও এই উৎসব উদযাপন করে, যেখানে ঐতিহ্য বেশ শক্তিশালী। সূত্র: বিবিসি