ঢাকা ১২:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বেলকুচি ওসির অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:০৪:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুন ২০২৩
  • / ৫১৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
// আব্দুর রাজ্জাক বাবু, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) //
একেক পর এক জনপ্রতিনিধির উপর সন্ত্রাসী হামলা ও মিথ্যা মামলায় জর্জরিত সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার চেয়ারম্যান, মেয়র ও মেম্বারবৃন্দ । এরই প্রতিবাদে রবিবার দুপুরে বেলকুচি উপজেলা চত্ত্বরে জনপ্রতিনিধি ফোরামের আয়োজনে পৌর কাউন্সিলর মাহবুবুল আজাদ তারেকের উপর এমপি আব্দুল মমিন মন্ডলের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলার ঘটনায় এখনো আসামী গ্রেফতার না করায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে উপজেলা পরিষদের সকল চেয়ারম্যানগন ও পৌর সভার সকল কাউন্সিলরগন উপস্থিত ছিলো।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপজেলা স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ফোরামের সভাপতি ও বড়ধুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছের উদ্দিন মোল্লার  সভাপতিত্বে বক্তরা বলেন, গত প্রায় ৬ মাস ধরে বেলকুচি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে আসলাম হোসেন দায়িত্ব নেবার পর থেকে বেলকুচি উপজেলায় এমপির রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে পরেছেন তিনি। গত ৬ মাসে উপজেলা ও পৌর সভার ৬ জন জনপ্রতিনিধির উপর এমপির ভাড়াটে সন্ত্রাসীর দ্বারা হামলার স্বীকার হয়েছে। এ সকল ঘটনায় অনেকগুলো বিষয়ে থানায় মামলা পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। উপরন্তু এ সকল ঘটনায় আমাদের উপর মিথ্যা মামলা সাজিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। এ সময় বক্তারা উল্লেখ করে বলেন, গত ৬ মাসে ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভূইয়া, প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, বেলকুচি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আকন্দ, তার স্ত্রী রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোনিয়া সবুর আকন্দ, বেলকুচি পৌরসভার ২ নং প্যানেল মেয়র মাহবুবুল আজাদ তারেক হামলার শিকার হয়। আবার কয়েক দিন আগে চরচালা গ্রামের পেপার এজেন্ট দৌলত মন্ডলের ছেলেকে এমপির সন্ত্রাসী বাহিনির মোতালব তুলে নির্জন স্থানে নিয়ে জোড় করে পা ধরিয়ে  ক্ষমা চাওয়ায়ে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপণ তাকে ছেড়ে দেয় এবং সেই ঘটনা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে সেয়ার দেয়,এবং ভুক্তভোগীর ভাই নাবিন মন্ডল থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে ওসি আসলাম হোসেন সেই অভিযোগ নেয় নি। অথচ এখন পর্যন্ত কোনটাতেই সঠিক আইনি বিচার পায়নি আমরা।
এ সময় বেলকুচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু বর্তমান এমপি আব্দুল মমিন মন্ডল তার রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য বিভিন্ন সময় আমাদের জনপ্রতিনিধিদের উপর হামলা চালিয়েছে। হামলার  ঘটনাগুলোতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ওসি আসলাম হোসেন জড়িত। তার সামনে আমাদের উপর হামলা হয় আবার মামলা না নিয়ে উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে হয়রানি করে আসছে। ওসির এমন ক্ষমতার অপ্রব্যবহারের কারনে বেলকুচিতে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে।  তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, এই ওসি এক সময় এমপির কোম্পানির সাথে যুক্ত ছিলেন। আজ সরকারী কর্মকর্তা হয়ে এমপির বেআইনি কর্মকান্ডকে আইনে রুপ দিচ্ছেন।
এ সময় বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সোনিয়া সবুর আকন্দ বলেন, এর আগে আমার উপর হামলা হয়েছে আজো প্রতিকার মেলেনি। আবারো তারেকের উপর হামলা হলো। ঘটনার পাচ দিন পার হলেও এখনো আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। প্রশাসনের সহযোগিতায় তারা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই এই ওসির দ্রুত অপসারণের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা জনপ্রতিনিধিরা আগামীতে কলম বিরতির কর্মসূচি হাতে নিবো বলে আল্টিমেটাম দেন তিনি।
এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন বলেন, আমারা যেকোন ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।  তবে কাউন্সিলর তারেকের ঘটনাটি ঘটার দুই দিনপর আমাদের কাছে একটি অভিযোগপত্র দায়ের করেছে।  আমরা বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছি।  এর আগে যে সকল ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনাগুলো আসলে বিচ্ছিন্ন ঘটনা। একটির সঙ্গে আরেকটির  যোগ সূত্র নেই। তিনি বলেন আমি কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে আইন অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।
মানববন্ধনে বেলকুচি পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রত্না বেগম, সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা সোলায়মান হোসেন, প্যানেল চেয়ারম্যান হাসমত আলী, প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ভুট্টু, ইউপি সদস্য মাহমুদুল হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিকসহ অন্যান জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

বেলকুচি ওসির অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন 

আপডেট সময় : ০৬:০৪:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুন ২০২৩
// আব্দুর রাজ্জাক বাবু, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) //
একেক পর এক জনপ্রতিনিধির উপর সন্ত্রাসী হামলা ও মিথ্যা মামলায় জর্জরিত সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার চেয়ারম্যান, মেয়র ও মেম্বারবৃন্দ । এরই প্রতিবাদে রবিবার দুপুরে বেলকুচি উপজেলা চত্ত্বরে জনপ্রতিনিধি ফোরামের আয়োজনে পৌর কাউন্সিলর মাহবুবুল আজাদ তারেকের উপর এমপি আব্দুল মমিন মন্ডলের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলার ঘটনায় এখনো আসামী গ্রেফতার না করায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে উপজেলা পরিষদের সকল চেয়ারম্যানগন ও পৌর সভার সকল কাউন্সিলরগন উপস্থিত ছিলো।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপজেলা স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ফোরামের সভাপতি ও বড়ধুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছের উদ্দিন মোল্লার  সভাপতিত্বে বক্তরা বলেন, গত প্রায় ৬ মাস ধরে বেলকুচি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে আসলাম হোসেন দায়িত্ব নেবার পর থেকে বেলকুচি উপজেলায় এমপির রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে পরেছেন তিনি। গত ৬ মাসে উপজেলা ও পৌর সভার ৬ জন জনপ্রতিনিধির উপর এমপির ভাড়াটে সন্ত্রাসীর দ্বারা হামলার স্বীকার হয়েছে। এ সকল ঘটনায় অনেকগুলো বিষয়ে থানায় মামলা পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। উপরন্তু এ সকল ঘটনায় আমাদের উপর মিথ্যা মামলা সাজিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। এ সময় বক্তারা উল্লেখ করে বলেন, গত ৬ মাসে ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভূইয়া, প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, বেলকুচি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আকন্দ, তার স্ত্রী রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোনিয়া সবুর আকন্দ, বেলকুচি পৌরসভার ২ নং প্যানেল মেয়র মাহবুবুল আজাদ তারেক হামলার শিকার হয়। আবার কয়েক দিন আগে চরচালা গ্রামের পেপার এজেন্ট দৌলত মন্ডলের ছেলেকে এমপির সন্ত্রাসী বাহিনির মোতালব তুলে নির্জন স্থানে নিয়ে জোড় করে পা ধরিয়ে  ক্ষমা চাওয়ায়ে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপণ তাকে ছেড়ে দেয় এবং সেই ঘটনা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে সেয়ার দেয়,এবং ভুক্তভোগীর ভাই নাবিন মন্ডল থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে ওসি আসলাম হোসেন সেই অভিযোগ নেয় নি। অথচ এখন পর্যন্ত কোনটাতেই সঠিক আইনি বিচার পায়নি আমরা।
এ সময় বেলকুচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু বর্তমান এমপি আব্দুল মমিন মন্ডল তার রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য বিভিন্ন সময় আমাদের জনপ্রতিনিধিদের উপর হামলা চালিয়েছে। হামলার  ঘটনাগুলোতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ওসি আসলাম হোসেন জড়িত। তার সামনে আমাদের উপর হামলা হয় আবার মামলা না নিয়ে উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে হয়রানি করে আসছে। ওসির এমন ক্ষমতার অপ্রব্যবহারের কারনে বেলকুচিতে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে।  তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, এই ওসি এক সময় এমপির কোম্পানির সাথে যুক্ত ছিলেন। আজ সরকারী কর্মকর্তা হয়ে এমপির বেআইনি কর্মকান্ডকে আইনে রুপ দিচ্ছেন।
এ সময় বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সোনিয়া সবুর আকন্দ বলেন, এর আগে আমার উপর হামলা হয়েছে আজো প্রতিকার মেলেনি। আবারো তারেকের উপর হামলা হলো। ঘটনার পাচ দিন পার হলেও এখনো আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। প্রশাসনের সহযোগিতায় তারা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই এই ওসির দ্রুত অপসারণের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা জনপ্রতিনিধিরা আগামীতে কলম বিরতির কর্মসূচি হাতে নিবো বলে আল্টিমেটাম দেন তিনি।
এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন বলেন, আমারা যেকোন ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।  তবে কাউন্সিলর তারেকের ঘটনাটি ঘটার দুই দিনপর আমাদের কাছে একটি অভিযোগপত্র দায়ের করেছে।  আমরা বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছি।  এর আগে যে সকল ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনাগুলো আসলে বিচ্ছিন্ন ঘটনা। একটির সঙ্গে আরেকটির  যোগ সূত্র নেই। তিনি বলেন আমি কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে আইন অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।
মানববন্ধনে বেলকুচি পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রত্না বেগম, সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা সোলায়মান হোসেন, প্যানেল চেয়ারম্যান হাসমত আলী, প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ভুট্টু, ইউপি সদস্য মাহমুদুল হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিকসহ অন্যান জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।