ঢাকা ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪, ১ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বাংলাদেশের জন্য ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন আইএমএফের

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:১৭:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৭০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণের অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। স্থানীয় সময় সোমবার (৩০ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের সভায় ওই ঋণের আবেদন অনুমোদন করা হয়। আইএমএফের ওয়েবসাইটে ঋণ অনুমোদনের তথ্য জানানো হয়।

আইএমএফের বোর্ড সভায় ঋণ অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিবৃতি দিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ঋণের অনুমোদনের তথ্য জানান।

সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়, আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড বর্ধিত ক্রেডিট সুবিধা (ইসিএফ) বা বর্ধিত তহবিল সুবিধার (ইএফএফ) অধীনে প্রায় ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আরএসএফ তহবিলের আওতায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে। ৪২ মাস ধরে ধাপে ধাপে এই ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করা হবে।

আইএমএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা, সামাজিক ও উন্নয়নমূলক ব্যয়ে সক্ষমতা তৈরিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার, আর্থিক খাত শক্তিশালী, নীতি কাঠামো আধুনিক করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ৪২ মাসের এই ঋণ প্যাকেজ সহায়তা করবে।

এছাড়া আরএসএফ থেকে হওয়া অর্থায়ন বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং প্রশমন প্রচেষ্টাকে সহায়তা করবে বলেও জানিয়েছে আইএমএফ।

এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আরএসএফ তহবিলের ঋণ পেল বলে জানিয়েছে আইএমএফ।

বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেন, আমরা অবশ্যই আইএমএফের প্রতি এই ঋণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিশেষ করে আইএমএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আন্তোয়নেট মনসিও সায়েহ এবং মিশনপ্রধান রাহুল আনন্দসহ যে দলটি এই ঋণের বিষয়ে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন, তাদের প্রতি জানাই ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এবং অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনসহ অর্থ মন্ত্রণালায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যারা এই ঋণ প্রোগ্রাম নিয়ে কাজ করেছেন তাদের প্রতিও রইল আমার কৃতজ্ঞতা।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, অনেকেই সন্দেহ পোষণ করেছিলেন যে আইএমএফ হয়তো বা এই ঋণ দেবে না। তারা ভেবেছিল আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক এলাকাসমূহ দুর্বল তাই আইএমএফ এ ঋণ প্রদান থেকে বিরত থাকবে। এ ঋণ অনুমোদনের মাধ্যমে এটাও প্রমাণিত হলো যে, আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক এলাকাসমূহ শক্ত ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে আছ এবং অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় ভালো।
অর্থমন্ত্রী এর আগে গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম ঠিক সেভাবে ঋণ পাচ্ছি। বাংলাদেশের জন্য মোট ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়া হবে।

ঋণে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে আইএমএফের একটি দল গত বছরের ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর ঢাকা সফর করেন। এরপর আইএমএফের ডিএমডি আন্তোয়নেট মনসিও সায়েহ ১৪ থেকে ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফর করেন।

গত বছরের ২৪ জুলাই ঋণ চেয়ে আইএমএফের কাছে চিঠি দেয় বাংলাদেশ সরকার। এতে পরিমাণের কথা উল্লেখ ছিল না। পরে ১২ অক্টোবর ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তার কথা উল্লেখ করেন। পরে আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ তাঁর ঢাকা সফরের সময় ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। সেদিন তাদের মধ্যে ঋণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।

২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭টি কিস্তিতে এই অর্থ বিতরণ করা হবে। ঋণের গড় সুদ হবে ২.২ শতাংশ। এ ছাড়া, ৪৪৭ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন ডলারের প্রথম কিস্তি ফেব্রুয়ারিতে দেওয়া হবে। অবশিষ্ট পরিমাণ ৬৫৯ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলার ৬টি সমান কিস্তিতে দেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশের জন্য ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন আইএমএফের

আপডেট সময় : ০১:১৭:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণের অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। স্থানীয় সময় সোমবার (৩০ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের সভায় ওই ঋণের আবেদন অনুমোদন করা হয়। আইএমএফের ওয়েবসাইটে ঋণ অনুমোদনের তথ্য জানানো হয়।

আইএমএফের বোর্ড সভায় ঋণ অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিবৃতি দিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ঋণের অনুমোদনের তথ্য জানান।

সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়, আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড বর্ধিত ক্রেডিট সুবিধা (ইসিএফ) বা বর্ধিত তহবিল সুবিধার (ইএফএফ) অধীনে প্রায় ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আরএসএফ তহবিলের আওতায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে। ৪২ মাস ধরে ধাপে ধাপে এই ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করা হবে।

আইএমএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা, সামাজিক ও উন্নয়নমূলক ব্যয়ে সক্ষমতা তৈরিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার, আর্থিক খাত শক্তিশালী, নীতি কাঠামো আধুনিক করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ৪২ মাসের এই ঋণ প্যাকেজ সহায়তা করবে।

এছাড়া আরএসএফ থেকে হওয়া অর্থায়ন বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং প্রশমন প্রচেষ্টাকে সহায়তা করবে বলেও জানিয়েছে আইএমএফ।

এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আরএসএফ তহবিলের ঋণ পেল বলে জানিয়েছে আইএমএফ।

বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেন, আমরা অবশ্যই আইএমএফের প্রতি এই ঋণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিশেষ করে আইএমএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আন্তোয়নেট মনসিও সায়েহ এবং মিশনপ্রধান রাহুল আনন্দসহ যে দলটি এই ঋণের বিষয়ে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন, তাদের প্রতি জানাই ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এবং অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনসহ অর্থ মন্ত্রণালায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যারা এই ঋণ প্রোগ্রাম নিয়ে কাজ করেছেন তাদের প্রতিও রইল আমার কৃতজ্ঞতা।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, অনেকেই সন্দেহ পোষণ করেছিলেন যে আইএমএফ হয়তো বা এই ঋণ দেবে না। তারা ভেবেছিল আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক এলাকাসমূহ দুর্বল তাই আইএমএফ এ ঋণ প্রদান থেকে বিরত থাকবে। এ ঋণ অনুমোদনের মাধ্যমে এটাও প্রমাণিত হলো যে, আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক এলাকাসমূহ শক্ত ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে আছ এবং অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় ভালো।
অর্থমন্ত্রী এর আগে গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম ঠিক সেভাবে ঋণ পাচ্ছি। বাংলাদেশের জন্য মোট ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়া হবে।

ঋণে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে আইএমএফের একটি দল গত বছরের ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর ঢাকা সফর করেন। এরপর আইএমএফের ডিএমডি আন্তোয়নেট মনসিও সায়েহ ১৪ থেকে ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফর করেন।

গত বছরের ২৪ জুলাই ঋণ চেয়ে আইএমএফের কাছে চিঠি দেয় বাংলাদেশ সরকার। এতে পরিমাণের কথা উল্লেখ ছিল না। পরে ১২ অক্টোবর ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তার কথা উল্লেখ করেন। পরে আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ তাঁর ঢাকা সফরের সময় ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। সেদিন তাদের মধ্যে ঋণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।

২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭টি কিস্তিতে এই অর্থ বিতরণ করা হবে। ঋণের গড় সুদ হবে ২.২ শতাংশ। এ ছাড়া, ৪৪৭ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন ডলারের প্রথম কিস্তি ফেব্রুয়ারিতে দেওয়া হবে। অবশিষ্ট পরিমাণ ৬৫৯ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলার ৬টি সমান কিস্তিতে দেওয়া হবে।