ঢাকা ০৫:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে নেই ইলিশ : জেলেদের দুর্দিন 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:১১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩
  • / ৪৫১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
// এ এম মিজানুর রহমান বুলেট //
গত দুই মাস যাবৎ বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না কাঙ্খিত ইলিশ। সরগরম নেই কুয়াকাটা, আলীপুর, মহিপুর মৎস্য পল্লীতে। মাঝে মধ্যে দুই একটি ট্রলার অল্প কিছু মাছ পেলেও বেশিরভাগ ট্রলার সমুদ্র থেকে ফেরে শুন্য হাতে। ফলে উপকূলের জেলে পল্লীগুলোতে চলছে হাহাকার। ঋণের বোঝায় দিশেহারা কলাপাড়া উপজেলার অত্যন্ত ৩০ হাজার জেলে পরিবার।
মৎস্য পল্লী ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে, মৎস্য আড়তগুলোতে আগের মতো কর্মব্যস্থতা নেই। ঘাটের বয়স্ক শ্রমিকরা বেকার বসে আছেন। যুবক শ্রেণির শ্রমিকরা আড়দে জড়ো হয়ে টেলিভিশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখছেন। পাইকারী ব্যবসায়ীরা চায়ের দোকানে বসে গল্প আড্ডায় সময় পার করছেন। জেলেরা পুরানো জালের ছিড়া ফারা বুনছেন। আড়দের মালিকরা ব্যবসার লাভ ক্ষতি হিসাব কষছেন। এক কথায় কর্মব্যস্ত মাছবাজারের মানুষগুলো কর্মহীন অবস্থায় সময় পার করছেন। এমন চিত্র মহিপুর-আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের।
আলীপুরের মৎস্য শ্রমিক মোঃ বাবুল মিয়া বলেন, ‘গত দুই মাস ধরে মাছ খুবই কম। ট্রলার ঘাটে আসলে কিছু সময় কাজ থাকে। দিনের বেশিরভাগ সময় অলস থাকতে হয়। আয় কম, সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।’
মহিপুরের আল্লাহ ভরসা মৎস্য আড়ৎ মালিক মো: লুনা আকন বলেন, ‘সমুদ্রে মাছ কম। বাজার সওদায় করে ট্রলার সাগরে পাঠাই, ফিশিং শেষে শুন্য হাতে ফিরে আসে। গত মাসে আমার দশ লাখ টাকা লোকশান হয়েছে। এতে করে অনেকেই এখন মৎস্য ব্যবসা থেকে অনয় পেশায় চলে যাচ্ছে।
খাপড়াভাঙ্গা নদীর পাশের  মৎস্য আড়দ গুলোতে পুরানো জাল বুনছেন কয়েকজন জেলে। কথা হয় তাদের সাথে। তারা জানান, প্রচন্ড গরমে সাগরে মাছ নেই। বৃষ্টি না হলে সাগরে গিয়ে লাভ নেই। গত দুই মাসে ৫ বার সাগরে গিয়ে শুন্য হাতে ফিরে এসেছেন। প্রতিবারই বাজারের টাকা লোকশান হয়েছে। তাই এখন সাগরে না গিয়ে পুরানো জাল বুনছেন। মাছের দেখা মিললে সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যাবেন তারা।
আলীপুরের মনি ফিসের মালিক আব্দুল জলিল ঘরামী বলেন, আমার আড়দে গত কয়েক বছর দৈনিক যে মাছ উঠছে তা পুরো মৌসুমে আসে নাই। ব্যবসার অবস্থা ভালো না। অন্য ব্যবসার চিন্তা করছি। তিনি আরও বলেন, যে হারে বৈধ-অবৈধ টলিং সমুদ্রে মাছ শিকার করছে তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মাছই থাকবে না। টলিং জালে সমস্ত মাছের পোনা মারা যাচ্ছে। আমাদের সমুদ্রের মৎস্য সম্পদ রক্ষা করতে হলে অবৈধ ট্রলিং জাল বন্ধ করতে হবে।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ইলিশ মাছ হচ্ছে গভীর সমুদ্রের মাছ। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রচন্ড গরম, অনাবৃষ্টির কারণে মাছ কম পানিতে আসছে না। তাই কুয়াকাটার উপকূলে কম ইলিশ ধরা পরছে। আশা করছি আবহাওয়া পরিবর্তন হলে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পরবে। তিনি আরও বলেন, কুয়াকাটা সংলগ্ন সমুদ্রে দীর্ঘ ডুবোচর থাকায় রামনাবাদ, আগুনমুখা, আন্ধারমানিক ও বলেশ্বর মোহনায়  ইলিশের আনাগোনা কমে গেছে।
বা/খ: এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে নেই ইলিশ : জেলেদের দুর্দিন 

আপডেট সময় : ০২:১১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩
// এ এম মিজানুর রহমান বুলেট //
গত দুই মাস যাবৎ বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না কাঙ্খিত ইলিশ। সরগরম নেই কুয়াকাটা, আলীপুর, মহিপুর মৎস্য পল্লীতে। মাঝে মধ্যে দুই একটি ট্রলার অল্প কিছু মাছ পেলেও বেশিরভাগ ট্রলার সমুদ্র থেকে ফেরে শুন্য হাতে। ফলে উপকূলের জেলে পল্লীগুলোতে চলছে হাহাকার। ঋণের বোঝায় দিশেহারা কলাপাড়া উপজেলার অত্যন্ত ৩০ হাজার জেলে পরিবার।
মৎস্য পল্লী ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে, মৎস্য আড়তগুলোতে আগের মতো কর্মব্যস্থতা নেই। ঘাটের বয়স্ক শ্রমিকরা বেকার বসে আছেন। যুবক শ্রেণির শ্রমিকরা আড়দে জড়ো হয়ে টেলিভিশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখছেন। পাইকারী ব্যবসায়ীরা চায়ের দোকানে বসে গল্প আড্ডায় সময় পার করছেন। জেলেরা পুরানো জালের ছিড়া ফারা বুনছেন। আড়দের মালিকরা ব্যবসার লাভ ক্ষতি হিসাব কষছেন। এক কথায় কর্মব্যস্ত মাছবাজারের মানুষগুলো কর্মহীন অবস্থায় সময় পার করছেন। এমন চিত্র মহিপুর-আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের।
আলীপুরের মৎস্য শ্রমিক মোঃ বাবুল মিয়া বলেন, ‘গত দুই মাস ধরে মাছ খুবই কম। ট্রলার ঘাটে আসলে কিছু সময় কাজ থাকে। দিনের বেশিরভাগ সময় অলস থাকতে হয়। আয় কম, সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।’
মহিপুরের আল্লাহ ভরসা মৎস্য আড়ৎ মালিক মো: লুনা আকন বলেন, ‘সমুদ্রে মাছ কম। বাজার সওদায় করে ট্রলার সাগরে পাঠাই, ফিশিং শেষে শুন্য হাতে ফিরে আসে। গত মাসে আমার দশ লাখ টাকা লোকশান হয়েছে। এতে করে অনেকেই এখন মৎস্য ব্যবসা থেকে অনয় পেশায় চলে যাচ্ছে।
খাপড়াভাঙ্গা নদীর পাশের  মৎস্য আড়দ গুলোতে পুরানো জাল বুনছেন কয়েকজন জেলে। কথা হয় তাদের সাথে। তারা জানান, প্রচন্ড গরমে সাগরে মাছ নেই। বৃষ্টি না হলে সাগরে গিয়ে লাভ নেই। গত দুই মাসে ৫ বার সাগরে গিয়ে শুন্য হাতে ফিরে এসেছেন। প্রতিবারই বাজারের টাকা লোকশান হয়েছে। তাই এখন সাগরে না গিয়ে পুরানো জাল বুনছেন। মাছের দেখা মিললে সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যাবেন তারা।
আলীপুরের মনি ফিসের মালিক আব্দুল জলিল ঘরামী বলেন, আমার আড়দে গত কয়েক বছর দৈনিক যে মাছ উঠছে তা পুরো মৌসুমে আসে নাই। ব্যবসার অবস্থা ভালো না। অন্য ব্যবসার চিন্তা করছি। তিনি আরও বলেন, যে হারে বৈধ-অবৈধ টলিং সমুদ্রে মাছ শিকার করছে তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মাছই থাকবে না। টলিং জালে সমস্ত মাছের পোনা মারা যাচ্ছে। আমাদের সমুদ্রের মৎস্য সম্পদ রক্ষা করতে হলে অবৈধ ট্রলিং জাল বন্ধ করতে হবে।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ইলিশ মাছ হচ্ছে গভীর সমুদ্রের মাছ। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রচন্ড গরম, অনাবৃষ্টির কারণে মাছ কম পানিতে আসছে না। তাই কুয়াকাটার উপকূলে কম ইলিশ ধরা পরছে। আশা করছি আবহাওয়া পরিবর্তন হলে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পরবে। তিনি আরও বলেন, কুয়াকাটা সংলগ্ন সমুদ্রে দীর্ঘ ডুবোচর থাকায় রামনাবাদ, আগুনমুখা, আন্ধারমানিক ও বলেশ্বর মোহনায়  ইলিশের আনাগোনা কমে গেছে।
বা/খ: এসআর।