ঢাকা ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পাষণ্ড স্বামী কর্তৃক আগুনে দগ্ধ সেই স্ত্রীর মৃত্যু

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:১৪:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩
  • / ৪৭৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি :

ঈশ্বরদীতে প্রকাশ্যে পাষণ্ড স্বামী কর্তৃক পেট্টোল ঢেলে আগুন দেওয়া দগ্ধ স্ত্রী মোছা. নিলুফা ইয়াসমিন হ্যাপি (২৫) মৃত্যু বরণ করেছে। শুক্রবার ১২ মে সকাল ৮ টার সময় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সে মৃত্যু বরণ করে।

মৃতের ভাই ফরহাদুল আকন্দ তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মৃতের ভাই জানান, নিলুফার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে। পরে নেত্রকোনা জেলার উলুকান্দায় নিজ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখানেই তার দাফনকার্য সম্পন্ন করা হবে।

ঈশ্বরদী থানার ওসি তদন্ত হাসান বশির দগ্ধ নিলুফার মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মৃত দেহটি ঢাকা থেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং পূর্বের মামলার সঙ্গে হত্যা মামলা যুক্ত হবে ‌।

এর আগে বৃহস্পতিবার ১১ মে পেট্রোল ঢেলে আগুন প্রদানকারী পাষণ্ড স্বামী মো. রনি (৩০) কে পাবনা বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার অভিযুক্ত রনিকে জেলহাজতে প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, সোমবার ৮ মে দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গরুর হাটে রানার চায়ের দোকানে পারিবারিক কলহের জেরে প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রীর শরীরে পেট্টোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে শরীর ঝলসে দেয় পাষন্ড স্বামী রনি।

অভিযুক্ত রনি আওতা পাড়া বাজার এলাকার মো. রমজান সরদারের ছেলে এবং ভুক্তভোগী  নেত্রকোনা জেলার উলুকান্দার আব্দুল লতিফ আকন্দের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে এবং রনির দ্বিতীয় স্ত্রী।

প্রায় ৪ বছর আগে ফেসবুকে সম্পর্কের সূত্রধরে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়ার রমজানের ছেলে রনির সাথে নেত্রকোনার উলুকান্দার আব্দুল লতিফ আকন্দের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে হ্যাপী জানতে পারে রনির আগে থেকেই স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর নিজের বাড়ীতে দ্বিতীয় স্ত্রী হ্যাপীকে না তুলে তাকে নিয়ে রনি পাকশীর রূপপুরে ভাড়াবাড়ীতে থাকতেন। রনির দেওয়া ওয়াদা মোতাবেক ভাড়া বাড়ি ছেড়ে হ্যাপী রনির নিজ বাড়ীতে বসবাস করতে চাইলে তাদের মধ্যে প্রায়ই কলহ সৃষ্টি হতো।

ঘটনারদিন দুপুর ১টার দিকে স্বামীর বসতবাড়ীতে বসবাসের জন্য হ্যাপী স্বামী রনির অনুমতি ছাড়াই আওতাপাড়া গেলে উভয়ের মধ্যে চরম বাক বিতন্ডা তৈরী হয়। এ সময় রনি হ্যাপিকে বেধড়ক মারপিট করে হ্যাপিকে টেনে হিচড়ে বাজারের মধ্যে একটি চায়ের দোকানে এসে বসেন। এক পর্যায়ে রনি উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য বন্ধু পলাশকে পেট্রোল কিনে আনতে বলে। রনির কথামত পলাশ পাশের একটি দোকান থেকে পেট্রোল এনে রনিকে দিলে সে উত্তেজিত হয়ে  হ্যাপীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

এসময় হ্যাপির চিৎকারে  স্থানীয়রা হ্যাপীর শরীরে পানি ঢেলে আগুন নেভান। হ্যাপির শরীরে আগুন দিতে গিয়ে রনিরও দুই হাত আগুনে ঝলসে যায়। পরে স্থানীয়রা হ্যাপিকে উদ্ধার করে সিএনজিযোগে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  পাঠিয়ে দেন। হ্যাপির অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হ্যাপির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। রামেকেও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়।

অপরদিকে অভিযুক্ত রনির বিরুদ্ধে মাদক, চাঁদাবাজি, হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

 

বা/খ: জই

নিউজটি শেয়ার করুন

পাষণ্ড স্বামী কর্তৃক আগুনে দগ্ধ সেই স্ত্রীর মৃত্যু

আপডেট সময় : ০১:১৪:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি :

ঈশ্বরদীতে প্রকাশ্যে পাষণ্ড স্বামী কর্তৃক পেট্টোল ঢেলে আগুন দেওয়া দগ্ধ স্ত্রী মোছা. নিলুফা ইয়াসমিন হ্যাপি (২৫) মৃত্যু বরণ করেছে। শুক্রবার ১২ মে সকাল ৮ টার সময় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সে মৃত্যু বরণ করে।

মৃতের ভাই ফরহাদুল আকন্দ তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মৃতের ভাই জানান, নিলুফার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে। পরে নেত্রকোনা জেলার উলুকান্দায় নিজ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখানেই তার দাফনকার্য সম্পন্ন করা হবে।

ঈশ্বরদী থানার ওসি তদন্ত হাসান বশির দগ্ধ নিলুফার মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মৃত দেহটি ঢাকা থেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং পূর্বের মামলার সঙ্গে হত্যা মামলা যুক্ত হবে ‌।

এর আগে বৃহস্পতিবার ১১ মে পেট্রোল ঢেলে আগুন প্রদানকারী পাষণ্ড স্বামী মো. রনি (৩০) কে পাবনা বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার অভিযুক্ত রনিকে জেলহাজতে প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, সোমবার ৮ মে দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গরুর হাটে রানার চায়ের দোকানে পারিবারিক কলহের জেরে প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রীর শরীরে পেট্টোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে শরীর ঝলসে দেয় পাষন্ড স্বামী রনি।

অভিযুক্ত রনি আওতা পাড়া বাজার এলাকার মো. রমজান সরদারের ছেলে এবং ভুক্তভোগী  নেত্রকোনা জেলার উলুকান্দার আব্দুল লতিফ আকন্দের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে এবং রনির দ্বিতীয় স্ত্রী।

প্রায় ৪ বছর আগে ফেসবুকে সম্পর্কের সূত্রধরে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়ার রমজানের ছেলে রনির সাথে নেত্রকোনার উলুকান্দার আব্দুল লতিফ আকন্দের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে হ্যাপী জানতে পারে রনির আগে থেকেই স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর নিজের বাড়ীতে দ্বিতীয় স্ত্রী হ্যাপীকে না তুলে তাকে নিয়ে রনি পাকশীর রূপপুরে ভাড়াবাড়ীতে থাকতেন। রনির দেওয়া ওয়াদা মোতাবেক ভাড়া বাড়ি ছেড়ে হ্যাপী রনির নিজ বাড়ীতে বসবাস করতে চাইলে তাদের মধ্যে প্রায়ই কলহ সৃষ্টি হতো।

ঘটনারদিন দুপুর ১টার দিকে স্বামীর বসতবাড়ীতে বসবাসের জন্য হ্যাপী স্বামী রনির অনুমতি ছাড়াই আওতাপাড়া গেলে উভয়ের মধ্যে চরম বাক বিতন্ডা তৈরী হয়। এ সময় রনি হ্যাপিকে বেধড়ক মারপিট করে হ্যাপিকে টেনে হিচড়ে বাজারের মধ্যে একটি চায়ের দোকানে এসে বসেন। এক পর্যায়ে রনি উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য বন্ধু পলাশকে পেট্রোল কিনে আনতে বলে। রনির কথামত পলাশ পাশের একটি দোকান থেকে পেট্রোল এনে রনিকে দিলে সে উত্তেজিত হয়ে  হ্যাপীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

এসময় হ্যাপির চিৎকারে  স্থানীয়রা হ্যাপীর শরীরে পানি ঢেলে আগুন নেভান। হ্যাপির শরীরে আগুন দিতে গিয়ে রনিরও দুই হাত আগুনে ঝলসে যায়। পরে স্থানীয়রা হ্যাপিকে উদ্ধার করে সিএনজিযোগে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  পাঠিয়ে দেন। হ্যাপির অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হ্যাপির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। রামেকেও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়।

অপরদিকে অভিযুক্ত রনির বিরুদ্ধে মাদক, চাঁদাবাজি, হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

 

বা/খ: জই