ঢাকা ০২:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পাবনা প্রকল্পের কম খরচে সেচ বঞ্চিত প্রায় ৯০ ভাগ কৃষক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:০১:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৫৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শফিউল আযম, বিশেষ প্রতিবেদক :

দেশের সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প ভেস্তে যাচ্ছে। ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পটিতে ১৮০ টাকায় কৃষকদের তিন ফসলে সেচ দেয়া হলেও ৯৮ ভাগ কৃষক এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই প্রকল্প আওতাধীন ৯৮ ভাগ কৃষককে বাধ্য হয়ে গভীর অগভীর নলকূপ বসিয়ে সেচ দিতে হচ্ছে। প্রকল্পের সেচ সুবিধাভোগী চাষিদের তিনটি ফসল আবাদের জন্য বিঘা প্রতি বছরে ১৮০ টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। এতে প্রকল্পের সেচ সুবিধাপ্রাপ্ত কৃষকদের ফসল উৎপাদন খরচ অনেক কম পড়ছে। অপরদিকে সেচ সুবিধা বঞ্চিত কৃষকদের শুধুমাত্র বোরো উৎপাদনে সেচ বাবদ চার হাজার টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন ব্যয় বাড়ায় কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বোরো চাষ থেকে কৃষকরা নিরুৎসাহিত হলে খাদ্য সরবরাহে সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৮ সালে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। বেড়ার নাকালিয়ায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মূল কাঠামো সাড়ে ৪২ কি মি প্রধান সেচ ক্যানেল, ১৯টি সেকেন্ডারী ক্যানেল, ৪৭টি টারশিয়ারী ও চার শতাধিক মাইনর ক্যানেল নির্মাণ হয়। ১৯৯২ সালে প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিক চালুর পর থেকে আজ পর্যন্ত কৃষকদের কাঙ্খিত সেচ দিতে পারছে না। প্রকল্প এলাকায় ১৮ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে সেচের আওতায় এনে বছরে অতিরিক্ত এক লাখ ৯১ হাজার টন ফসল উৎপাদনের টার্গেট নিয়ে সেচ প্রকল্প নির্মাণ করা হলেও সে উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে। এখন মাত্র এক হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। অবকাঠামোগত ক্রটির কারণে প্রকল্পের কমান্ড এরিয়ায় প্রায় ১৭ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি বলে বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে।

 

 

প্রকল্প এলাকার কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের কমান্ড এরিয়া বেড়া-সাঁথিয়া উপজেলায় চলতি মওসুমে বোরোর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরণা হয়েছে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। যা গতবছরের চেয়ে ২০০ হেক্টর কম। প্রতি বছরই প্রকল্পের সেচ এলাকায় জমির পরিমাণ কমছে। প্রকল্পের সেচ ক্যানেলের ক্ষতিগ্রস্ত ডাইক বাঁধ লাখ লাখ টাকা খরচ করে নামমাত্র সংস্কার বা মেরামত করা হয়। ফলে প্রকল্প থেকে সেচ সুবিধা পাওয়া যায় না।

অথচ ১৯৯২ সাল থেকে এ পর্যন্ত সেচ ক্যানেলের ডাইক বাঁধ মজমুতকরণ, সম্প্রসারণ, সেচ ক্যানেল সংস্কার বাবদ এডিবি এবং জিওবি খাত থেকে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অথচ প্রকল্পটির একটি সেকেন্ডারি, ৩০ টি টারসিয়ারী ও ২০০ শতাধিক মাইনর ক্যানেলে আজ পর্যন্ত পানির প্রবাহ ঘটানো সম্ভাব হয়নি।

প্রকল্পটির সেচ সঙ্কটের কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, সেচ ক্যানেল নির্মাণে মাটি কম্প্যাক্ট না করা, জমির লেবেল থেকে ক্যানেলের বেডলেবেল অনেক নিচু হওয়ায় পানি ওভারফ্লো করতে গেলেই ডাইক ভেঙ্গে যায়। যার কারণে কৃষকদের সেচ সুবিধা দেয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে সচল ক্যানেলগুলো যথাযথভাবে সংস্কার না করায় অকার্যকর হয়ে পড়ছে। পেঁচাকোলা, হরিরামপুর, বায়া, পানশাইলসহ অনেক এলাকায় সেচ ক্যানেল মাটির সাথে মিশে গেছে। অনেকে ক্যানেল ভরাট করে দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। এ ব্যাপারে বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। প্রকল্পের সেচ ক্যানেলগুলো দিন দিন অকার্যকর হয়ে পড়ায় কৃষকরা সেচ সুবিধা না পেলেও ক্যানেল সংস্কারের নামে ফি বছর সরকারের দেয়া প্রায় এক কোটি টাকার থোক বরাদ্দ নামমাত্র কাজ করে ভাগবাটেয়ারা করা হচ্ছে ।

 

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায় ১৯৯২ সাল থেকে গত অর্থবছর পর্যন্ত সেচ ক্যানেলের ডাইক বাঁধ মজমুতকরণ ,সম্প্রসারণ, সেচ ক্যানেল সংস্কার বাবদ এডিবি এবং জিওবি খাত থেকে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অথচ প্রকল্পটির একটি সেকেন্ডারি, ৩০ টি টারসিয়ারী ও ২০০ শতাধিক মাইনর ক্যানেলে আজ পর্যন্ত পানির প্রবাহ ঘটানো সম্ভাব হয়নি। সচল ক্যানেলগুলো যথাযথভাবে সংস্কার না করায় অকার্যকর হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র দাবি করেছে সরকারি এ বরাদ্দকৃত অর্থের প্রায় ৭০ ভাগই লোক দেখানো নামমাত্র কাজ করে আত্মাসাত করা হয়েছে। এর ফলে গত ৩১ বছরে প্রকল্পের কমান্ড এরিয়ায় সেচ লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার ৬৮০ হেক্টর তো দূরের কথা সিকি ভাগ জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমানে প্রকল্প এলাকায় সেচের জমি কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮০০ হেক্টর। সবচে আশর্য যে বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগ কর্তৃপক্ষ আজ পর্যন্ত পাবনা সেচ প্রকল্পের সফলতা বা ব্যর্থতা নিয়ে কোন মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করেনি।

হরিরামপুর, পেঁচাকোলা, বায়া, পানশাইলসহ অনেক এলাকায় সেচ ক্যানেল মাটির সাথে মিশে গেছে। অনেক ক্যানেল ভরাট করে দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। এ ব্যাপারে বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

পানি ব্যবহারকারি সমিতির সভাপতি আনছার আলী জানান, প্রকল্পের সেচ সুবিধাভোগী চাষিদের তিনটি ফসল আবাদের জন্য বিঘা প্রতি বছরে ১৮০ টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। এতে প্রকল্পের সেচ সুবিধাপ্রাপ্ত কৃষকদের ফসল উৎপাদন খরচ অনেক কম পড়ছে। অপরদিকে সেচ সুবিধা বঞ্চিত কৃষকদের শুধুমাত্র বোরো উৎপাদনে সেচ বাবদ চার হাজার টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

বেড়া পাউবো’র উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, এ অবস্থা উত্তরণে নুতন করে ক্যানেল, ডাইক নির্মাণ করা হলে প্রকল্পটির অচলাবস্থার নিরসন সম্ভব। আর এ জন্য দরকার ৪ শতাধিক কোটি টাকা। আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন এই ইরিগেশন প্রজেক্টটি পুরোদমে চালু করার জন্য পরিকল্পিতভাবে সেচ ও নিস্কাশন ক্যানেলসহ অন্যান্য অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন ও সংস্কার সাধন করতে হবে। তবেই পাবনা সেচ প্রকল্পে ফসল উৎপাদনের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।

 

বা/খ: জই

নিউজটি শেয়ার করুন

পাবনা প্রকল্পের কম খরচে সেচ বঞ্চিত প্রায় ৯০ ভাগ কৃষক

আপডেট সময় : ০১:০১:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

শফিউল আযম, বিশেষ প্রতিবেদক :

দেশের সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প ভেস্তে যাচ্ছে। ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পটিতে ১৮০ টাকায় কৃষকদের তিন ফসলে সেচ দেয়া হলেও ৯৮ ভাগ কৃষক এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই প্রকল্প আওতাধীন ৯৮ ভাগ কৃষককে বাধ্য হয়ে গভীর অগভীর নলকূপ বসিয়ে সেচ দিতে হচ্ছে। প্রকল্পের সেচ সুবিধাভোগী চাষিদের তিনটি ফসল আবাদের জন্য বিঘা প্রতি বছরে ১৮০ টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। এতে প্রকল্পের সেচ সুবিধাপ্রাপ্ত কৃষকদের ফসল উৎপাদন খরচ অনেক কম পড়ছে। অপরদিকে সেচ সুবিধা বঞ্চিত কৃষকদের শুধুমাত্র বোরো উৎপাদনে সেচ বাবদ চার হাজার টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন ব্যয় বাড়ায় কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বোরো চাষ থেকে কৃষকরা নিরুৎসাহিত হলে খাদ্য সরবরাহে সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৮ সালে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। বেড়ার নাকালিয়ায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মূল কাঠামো সাড়ে ৪২ কি মি প্রধান সেচ ক্যানেল, ১৯টি সেকেন্ডারী ক্যানেল, ৪৭টি টারশিয়ারী ও চার শতাধিক মাইনর ক্যানেল নির্মাণ হয়। ১৯৯২ সালে প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিক চালুর পর থেকে আজ পর্যন্ত কৃষকদের কাঙ্খিত সেচ দিতে পারছে না। প্রকল্প এলাকায় ১৮ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে সেচের আওতায় এনে বছরে অতিরিক্ত এক লাখ ৯১ হাজার টন ফসল উৎপাদনের টার্গেট নিয়ে সেচ প্রকল্প নির্মাণ করা হলেও সে উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে। এখন মাত্র এক হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। অবকাঠামোগত ক্রটির কারণে প্রকল্পের কমান্ড এরিয়ায় প্রায় ১৭ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি বলে বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে।

 

 

প্রকল্প এলাকার কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের কমান্ড এরিয়া বেড়া-সাঁথিয়া উপজেলায় চলতি মওসুমে বোরোর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরণা হয়েছে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। যা গতবছরের চেয়ে ২০০ হেক্টর কম। প্রতি বছরই প্রকল্পের সেচ এলাকায় জমির পরিমাণ কমছে। প্রকল্পের সেচ ক্যানেলের ক্ষতিগ্রস্ত ডাইক বাঁধ লাখ লাখ টাকা খরচ করে নামমাত্র সংস্কার বা মেরামত করা হয়। ফলে প্রকল্প থেকে সেচ সুবিধা পাওয়া যায় না।

অথচ ১৯৯২ সাল থেকে এ পর্যন্ত সেচ ক্যানেলের ডাইক বাঁধ মজমুতকরণ, সম্প্রসারণ, সেচ ক্যানেল সংস্কার বাবদ এডিবি এবং জিওবি খাত থেকে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অথচ প্রকল্পটির একটি সেকেন্ডারি, ৩০ টি টারসিয়ারী ও ২০০ শতাধিক মাইনর ক্যানেলে আজ পর্যন্ত পানির প্রবাহ ঘটানো সম্ভাব হয়নি।

প্রকল্পটির সেচ সঙ্কটের কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, সেচ ক্যানেল নির্মাণে মাটি কম্প্যাক্ট না করা, জমির লেবেল থেকে ক্যানেলের বেডলেবেল অনেক নিচু হওয়ায় পানি ওভারফ্লো করতে গেলেই ডাইক ভেঙ্গে যায়। যার কারণে কৃষকদের সেচ সুবিধা দেয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে সচল ক্যানেলগুলো যথাযথভাবে সংস্কার না করায় অকার্যকর হয়ে পড়ছে। পেঁচাকোলা, হরিরামপুর, বায়া, পানশাইলসহ অনেক এলাকায় সেচ ক্যানেল মাটির সাথে মিশে গেছে। অনেকে ক্যানেল ভরাট করে দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। এ ব্যাপারে বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। প্রকল্পের সেচ ক্যানেলগুলো দিন দিন অকার্যকর হয়ে পড়ায় কৃষকরা সেচ সুবিধা না পেলেও ক্যানেল সংস্কারের নামে ফি বছর সরকারের দেয়া প্রায় এক কোটি টাকার থোক বরাদ্দ নামমাত্র কাজ করে ভাগবাটেয়ারা করা হচ্ছে ।

 

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায় ১৯৯২ সাল থেকে গত অর্থবছর পর্যন্ত সেচ ক্যানেলের ডাইক বাঁধ মজমুতকরণ ,সম্প্রসারণ, সেচ ক্যানেল সংস্কার বাবদ এডিবি এবং জিওবি খাত থেকে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অথচ প্রকল্পটির একটি সেকেন্ডারি, ৩০ টি টারসিয়ারী ও ২০০ শতাধিক মাইনর ক্যানেলে আজ পর্যন্ত পানির প্রবাহ ঘটানো সম্ভাব হয়নি। সচল ক্যানেলগুলো যথাযথভাবে সংস্কার না করায় অকার্যকর হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র দাবি করেছে সরকারি এ বরাদ্দকৃত অর্থের প্রায় ৭০ ভাগই লোক দেখানো নামমাত্র কাজ করে আত্মাসাত করা হয়েছে। এর ফলে গত ৩১ বছরে প্রকল্পের কমান্ড এরিয়ায় সেচ লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার ৬৮০ হেক্টর তো দূরের কথা সিকি ভাগ জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমানে প্রকল্প এলাকায় সেচের জমি কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮০০ হেক্টর। সবচে আশর্য যে বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগ কর্তৃপক্ষ আজ পর্যন্ত পাবনা সেচ প্রকল্পের সফলতা বা ব্যর্থতা নিয়ে কোন মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করেনি।

হরিরামপুর, পেঁচাকোলা, বায়া, পানশাইলসহ অনেক এলাকায় সেচ ক্যানেল মাটির সাথে মিশে গেছে। অনেক ক্যানেল ভরাট করে দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। এ ব্যাপারে বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

পানি ব্যবহারকারি সমিতির সভাপতি আনছার আলী জানান, প্রকল্পের সেচ সুবিধাভোগী চাষিদের তিনটি ফসল আবাদের জন্য বিঘা প্রতি বছরে ১৮০ টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। এতে প্রকল্পের সেচ সুবিধাপ্রাপ্ত কৃষকদের ফসল উৎপাদন খরচ অনেক কম পড়ছে। অপরদিকে সেচ সুবিধা বঞ্চিত কৃষকদের শুধুমাত্র বোরো উৎপাদনে সেচ বাবদ চার হাজার টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

বেড়া পাউবো’র উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, এ অবস্থা উত্তরণে নুতন করে ক্যানেল, ডাইক নির্মাণ করা হলে প্রকল্পটির অচলাবস্থার নিরসন সম্ভব। আর এ জন্য দরকার ৪ শতাধিক কোটি টাকা। আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন এই ইরিগেশন প্রজেক্টটি পুরোদমে চালু করার জন্য পরিকল্পিতভাবে সেচ ও নিস্কাশন ক্যানেলসহ অন্যান্য অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন ও সংস্কার সাধন করতে হবে। তবেই পাবনা সেচ প্রকল্পে ফসল উৎপাদনের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।

 

বা/খ: জই