ঢাকা ০৫:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পাবনায় জলাবদ্ধতায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে রবি ফসল আবাদে অনিশ্চয়তা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৩১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪৪২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শফিউল আযম, বিশেষ প্রতিনিধি :

বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের ডি-২ কাগেশ্বরী (নদী) নিস্কাশন ক্যানালের ২টি পয়েন্টে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা মাছ ধরার জন্য সোঁতি জালের বাঁধ দিয়েছে। ক্যানালে সোঁতিজালের বাঁধ দেয়ার কারণে পানি নিস্কাশন বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় প্রকল্প অভ্যন্তরের ২০টি বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে আসন্ন রবি মৌসুমে বিলগুলোর প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, সরিষাসহ শাক-সবজি আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে ভূক্তভোগী কৃষকরা জানিয়েছেন।

অভিযোগে জানা যায়, পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের কমান্ড এরিয়ার বেড়া কৈটোলা পাম্পিং ষ্টেশন হতে মুক্তরধর বিল পর্যন্ত পানি নিস্কাশনের জন্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘের ডি-২ কাকেশ্বরী নিস্কাশন ক্যানেল রয়েছে। এ ক্যানেল দিয়ে বর্ষা শেষে পাবনা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এরিয়া বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার প্রায় ২০টি বিলের পানি কৈটোলা ¯øুইস গেট দিয়ে যমুনা নদীতে নিস্কাশিত হয়। বিলগুলো থেকে শত শত মন রুই, কাতল, লওলা, মৃগেল, বোয়াল, গজার, সোল, আইড়, চিতল, ফলি, শিং, মাগুড়, টাকি, টেংরা, পুঁটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ কাকেশ্বরী নদীতে নেমে আসে। এই মাছ শিকারের জন্য কাকেশ্বরী নিস্কাশন ক্যানেলের সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের শামুকজানি বাজারের দক্ষিনে ও দত্তপাড়া গ্রামের বড়গ্রাম মাঠের ভিটায় বাঁশ গেড়ে চাটাই, পলিথিন বিছিয়ে ঘন সোঁতি জালের বাঁধ পাঁতা হয়েছে। এতে পাবনা সেচ প্রকল্পের আওতাভূক্ত বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার মুক্তরধর বিল, সোনাই বিল, ঘুঘুদহ বিল, জামাইদহ বিল, বড়গ্রাম বিল, খোলসাখালি বিল, কাটিয়াদহ বিল, আফড়া বিল, গাঙভাঙ্গার বিল, টেংড়াগাড়ীর বিল, বিলসহ প্রায় ২০টি বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিলগুলোর পানি নিস্কাশন না হওয়ায় প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমির পাঁকা, আধাপাঁকা আমন ধান পানিতে পঁচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ভূক্তভোগী কৃষকেরা।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, বর্ষা মওসুমে বিলগুলো মাছের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়। বর্ষা শেষে বিলের পানি কাকেশ্বরী নদী হয়ে কৈটোলা স্লুইচ গেটের মাধ্যমে যমুনা নদীতে গিয়ে পড়ে। এসময় পানির সাথে শত শত মন বিভিন্ন প্রজাতীর ছোট-বড় দেশি মাছ কাকেশ্বরী নদীতে নেমে আসে। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই মাছ শিকারের জন্য কাকেশ্বরী নদীতে (নিস্কাশন ক্যানেল) সোঁিিত জালের বাঁধ দেয়। এতে পানি নিস্কাশন বাঁধাপ্রাপ্ত হয়ে বিলগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। গাঙভাঙ্গা বিল পাড়ের আফড়া গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান জানান, সোঁতি জালের বেড়ার কারণে বিল থেকে পানি নামতে অনেক দেরি হচ্ছে। ফলে বীজতলা তৈরি, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, সরিষাসহ শাক-সবজি আবাদ পিছিয়ে পড়বে। আর বীজতলা তৈরি, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, সরিষাসহ শাক-সবজি আবাদ পেছালে বোরো ধানের আবাদ পেছাবে। এতে ফলন অনেক কম হবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, ডি-২ নিস্কাশন ক্যানেল দিয়ে পানি নিস্কাশিত হয়ে বিলগুলোর হাজার হাজার হেক্টর সমতল ভূমি জেগে ওঠে। স্থানীয় কৃষকরা জেগে ওঠা সমতল ভূমিতে বীজতলা তৈরি, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, সরিষা, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করে থাকেন। নিস্কাশন ক্যানেলে সোঁতি জালের বাঁধ দেয়ায় সৃষ্ট জলাবদ্ধ সমস্যা দ্রæত নিরশন না হলে আসন্ন রবি মওসুমে প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে তারা জানিয়েছেন। এদিকে জমিতে আমন ধান পাকতে শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক ক্ষেতের ধান পেকে গেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কৃষকেরা পুরোদমে আমন ধান কাটতে শুরু করবেন। জমিতে পানি থাকার কারণে পাঁকা ধান জমিতেই নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।

সাঁথিয়ার পাঁচুড়িয়া গ্রামের কৃষক রইজ উদ্দিন খাঁ জানান, আমার ক্ষেতের ধান পেঁকে গেছে। ক্ষেতে পানি থাকার কারণে ধান কাটতে পারছি না। কবে বীজতলা তৈরি করবো আর কবেই বা জমিতে বপন করবো। আফড়া গ্রামের কৃষক আলতাফ ও ইউসুফ আলী জানান, আমরা একদিকে যেমন পাঁকা ধান কাটতে পারছি না অন্য দিকে বীজতলা দেয়ার জন্য সংগৃহিত ছাই স্তুপ করে সড়কের পাশে রাখা হয়েছে। সময়মত ওই ছাই জমিতে প্রযোগ করতে না পারলে রোদে শুকিয়ে ছাইয়ের গুনগতমান কমে যাবে।

ডি-২ কাকেশ্বরী নদী নিস্কাশন ক্যানেল সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, শামুকজানী বাজারের দক্ষিনে ও দত্তপাড়া গ্রামের বড়গ্রাম মাঠের ভিটা নামক স্থানে ২টি পয়েন্টে মৎস্য শিকারিরা সোঁতি জালের বাঁধ দিয়েছে। বাঁশ গেঁড়ে তালাই ও পলিথিন বিছিয়ে সোঁতি জালের বাঁধ দেয়ার ফলে কচুরিপানা আটকে পানি প্রবাহে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এদিকে নিস্কাশন ক্যানেলে যারা সোঁতি জালের বাঁধ দিয়েছেন তারা বলছেন, আমরা প্রতি বছর সাঁথিয়া উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সুপারিশে বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগ থেকে ডি-২ নিস্কাশন ক্যানেল (কাকেশ্বরী নদী) লীজ নিয়ে মাছ শিকার করছি।

বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, মাছ চাষের জন্য ডি-২ নিস্কাশন ক্যানেল (কাকেশ্বরী নদী) লীজ দেয়া হয়েছে। তবে পানি নিস্কাশনে বাধা সৃষ্টি করে সোঁতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার না করার জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। কৃষকের ক্ষতি হবে এমনটা আমরা কখনোই মেনে নেব না। সরেজমিন পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সঞ্জিব কুমার গোস্বামী বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের স্থানীয়ভাবে সোঁতি জালের বাঁধ অপসারণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এতে যদি কাজ না হয় তবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

সাঁথিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা খাদেমুল ইসলাম জানান, পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের ডি-২ নিস্কাশন ক্যানেলে সোঁতি জালের বাঁধ দিয়েছে কি না আমার জানা নেই। যদি কেউ দিয়ে থাকে তাহলে সেটা অবৈধ। আমরা এলাকা পরিদর্শ করবো এবং অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা কওে সোঁতিজাল ও বাঁশের বাঁধ অপসারণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

পাবনায় জলাবদ্ধতায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে রবি ফসল আবাদে অনিশ্চয়তা

আপডেট সময় : ০১:৩১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ নভেম্বর ২০২২

শফিউল আযম, বিশেষ প্রতিনিধি :

বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের ডি-২ কাগেশ্বরী (নদী) নিস্কাশন ক্যানালের ২টি পয়েন্টে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা মাছ ধরার জন্য সোঁতি জালের বাঁধ দিয়েছে। ক্যানালে সোঁতিজালের বাঁধ দেয়ার কারণে পানি নিস্কাশন বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় প্রকল্প অভ্যন্তরের ২০টি বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে আসন্ন রবি মৌসুমে বিলগুলোর প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, সরিষাসহ শাক-সবজি আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে ভূক্তভোগী কৃষকরা জানিয়েছেন।

অভিযোগে জানা যায়, পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের কমান্ড এরিয়ার বেড়া কৈটোলা পাম্পিং ষ্টেশন হতে মুক্তরধর বিল পর্যন্ত পানি নিস্কাশনের জন্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘের ডি-২ কাকেশ্বরী নিস্কাশন ক্যানেল রয়েছে। এ ক্যানেল দিয়ে বর্ষা শেষে পাবনা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এরিয়া বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার প্রায় ২০টি বিলের পানি কৈটোলা ¯øুইস গেট দিয়ে যমুনা নদীতে নিস্কাশিত হয়। বিলগুলো থেকে শত শত মন রুই, কাতল, লওলা, মৃগেল, বোয়াল, গজার, সোল, আইড়, চিতল, ফলি, শিং, মাগুড়, টাকি, টেংরা, পুঁটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ কাকেশ্বরী নদীতে নেমে আসে। এই মাছ শিকারের জন্য কাকেশ্বরী নিস্কাশন ক্যানেলের সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের শামুকজানি বাজারের দক্ষিনে ও দত্তপাড়া গ্রামের বড়গ্রাম মাঠের ভিটায় বাঁশ গেড়ে চাটাই, পলিথিন বিছিয়ে ঘন সোঁতি জালের বাঁধ পাঁতা হয়েছে। এতে পাবনা সেচ প্রকল্পের আওতাভূক্ত বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার মুক্তরধর বিল, সোনাই বিল, ঘুঘুদহ বিল, জামাইদহ বিল, বড়গ্রাম বিল, খোলসাখালি বিল, কাটিয়াদহ বিল, আফড়া বিল, গাঙভাঙ্গার বিল, টেংড়াগাড়ীর বিল, বিলসহ প্রায় ২০টি বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিলগুলোর পানি নিস্কাশন না হওয়ায় প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমির পাঁকা, আধাপাঁকা আমন ধান পানিতে পঁচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ভূক্তভোগী কৃষকেরা।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, বর্ষা মওসুমে বিলগুলো মাছের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়। বর্ষা শেষে বিলের পানি কাকেশ্বরী নদী হয়ে কৈটোলা স্লুইচ গেটের মাধ্যমে যমুনা নদীতে গিয়ে পড়ে। এসময় পানির সাথে শত শত মন বিভিন্ন প্রজাতীর ছোট-বড় দেশি মাছ কাকেশ্বরী নদীতে নেমে আসে। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই মাছ শিকারের জন্য কাকেশ্বরী নদীতে (নিস্কাশন ক্যানেল) সোঁিিত জালের বাঁধ দেয়। এতে পানি নিস্কাশন বাঁধাপ্রাপ্ত হয়ে বিলগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। গাঙভাঙ্গা বিল পাড়ের আফড়া গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান জানান, সোঁতি জালের বেড়ার কারণে বিল থেকে পানি নামতে অনেক দেরি হচ্ছে। ফলে বীজতলা তৈরি, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, সরিষাসহ শাক-সবজি আবাদ পিছিয়ে পড়বে। আর বীজতলা তৈরি, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, সরিষাসহ শাক-সবজি আবাদ পেছালে বোরো ধানের আবাদ পেছাবে। এতে ফলন অনেক কম হবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, ডি-২ নিস্কাশন ক্যানেল দিয়ে পানি নিস্কাশিত হয়ে বিলগুলোর হাজার হাজার হেক্টর সমতল ভূমি জেগে ওঠে। স্থানীয় কৃষকরা জেগে ওঠা সমতল ভূমিতে বীজতলা তৈরি, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, সরিষা, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করে থাকেন। নিস্কাশন ক্যানেলে সোঁতি জালের বাঁধ দেয়ায় সৃষ্ট জলাবদ্ধ সমস্যা দ্রæত নিরশন না হলে আসন্ন রবি মওসুমে প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে তারা জানিয়েছেন। এদিকে জমিতে আমন ধান পাকতে শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক ক্ষেতের ধান পেকে গেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কৃষকেরা পুরোদমে আমন ধান কাটতে শুরু করবেন। জমিতে পানি থাকার কারণে পাঁকা ধান জমিতেই নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।

সাঁথিয়ার পাঁচুড়িয়া গ্রামের কৃষক রইজ উদ্দিন খাঁ জানান, আমার ক্ষেতের ধান পেঁকে গেছে। ক্ষেতে পানি থাকার কারণে ধান কাটতে পারছি না। কবে বীজতলা তৈরি করবো আর কবেই বা জমিতে বপন করবো। আফড়া গ্রামের কৃষক আলতাফ ও ইউসুফ আলী জানান, আমরা একদিকে যেমন পাঁকা ধান কাটতে পারছি না অন্য দিকে বীজতলা দেয়ার জন্য সংগৃহিত ছাই স্তুপ করে সড়কের পাশে রাখা হয়েছে। সময়মত ওই ছাই জমিতে প্রযোগ করতে না পারলে রোদে শুকিয়ে ছাইয়ের গুনগতমান কমে যাবে।

ডি-২ কাকেশ্বরী নদী নিস্কাশন ক্যানেল সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, শামুকজানী বাজারের দক্ষিনে ও দত্তপাড়া গ্রামের বড়গ্রাম মাঠের ভিটা নামক স্থানে ২টি পয়েন্টে মৎস্য শিকারিরা সোঁতি জালের বাঁধ দিয়েছে। বাঁশ গেঁড়ে তালাই ও পলিথিন বিছিয়ে সোঁতি জালের বাঁধ দেয়ার ফলে কচুরিপানা আটকে পানি প্রবাহে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এদিকে নিস্কাশন ক্যানেলে যারা সোঁতি জালের বাঁধ দিয়েছেন তারা বলছেন, আমরা প্রতি বছর সাঁথিয়া উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সুপারিশে বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগ থেকে ডি-২ নিস্কাশন ক্যানেল (কাকেশ্বরী নদী) লীজ নিয়ে মাছ শিকার করছি।

বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, মাছ চাষের জন্য ডি-২ নিস্কাশন ক্যানেল (কাকেশ্বরী নদী) লীজ দেয়া হয়েছে। তবে পানি নিস্কাশনে বাধা সৃষ্টি করে সোঁতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার না করার জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। কৃষকের ক্ষতি হবে এমনটা আমরা কখনোই মেনে নেব না। সরেজমিন পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সঞ্জিব কুমার গোস্বামী বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের স্থানীয়ভাবে সোঁতি জালের বাঁধ অপসারণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এতে যদি কাজ না হয় তবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

সাঁথিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা খাদেমুল ইসলাম জানান, পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের ডি-২ নিস্কাশন ক্যানেলে সোঁতি জালের বাঁধ দিয়েছে কি না আমার জানা নেই। যদি কেউ দিয়ে থাকে তাহলে সেটা অবৈধ। আমরা এলাকা পরিদর্শ করবো এবং অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা কওে সোঁতিজাল ও বাঁশের বাঁধ অপসারণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।