ঢাকা ১২:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পাকশী রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টারের ইনচার্জের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২৮:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩
  • / ৪৪৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি //

ঈশ্বরদীর পাকশী রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টার  ইনচার্জ (এএসআই) মোঃ আবু ইউনুস গোপনে কাটিয়েছেন রেলওয়ের তিনটি মাঝারি আকারের রেন্টি কড়ইগাছ। সেই গাছগুলো আবার ট্রেনিং সেন্টারের স্টাফ ও তার আত্মীয় নিকট বিক্রয় করেছেন। বিষয়টি প্রায় দেড় মাস গড়িয়ে গেলেও জানেন না রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ (ডিইএন-২) বীরবল মন্ডল, আইডাব্লিউও (পাকশী) মিনহাজ আকন্দসহ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।
গত মঙ্গল ও বুধবার সরেজমিনে পাকশী রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টার ঘুরে ও বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, গত দুুই বছর পুর্বে ট্রেনিং সেন্টারের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোঃ আহসান হাবিব বদলি হন। ট্রেনিং সেন্টারের হাবিলদার মোঃ আবু ইউনুসকে প্রমোশন দিয়ে এএসআই করে গত বছরে ট্রেনিং সেন্টারে ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর থেকেই তিনি নানা রকম অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। একই সঙ্গে পাকশী সবুজ সৌন্দর্যের প্রতিক রেন্টি কড়ইগাছ কাটিয়ে বিক্রয় করেছেন।
সুত্রগুলো মতে, ইনচার্জ মোঃ আবু ইউনুস ট্রেনিং সেন্টারের স্টাফ ব্যান্ডবাদকদের সঙ্গে অশালিন আচরণ করা, ট্রেনিং সেন্টারের ভিতরে থাকা জমি স্টাফদের নিকট সবজি চাষের জন্য খাজনা দেওয়া, অর্থ ছাড়া স্টাফদের ছুটি না দেওয়া, জনপ্রতি মাসিক দুই হাজার টাকা চুক্তিতে ঈশ্বরদীতে ট্রেন স্কট ডিউটি দেওয়া, স্টাফদের মাসিক টিএ, ডিএ’র দুই লাখ টাকা থেকে ৭০ শতাংশ কেটে নেওয়া, বগিগার্ডকে দিয়ে নিজের গাড়ি ধোয়া মোছা, বাজার করানোসহ ব্যক্তিগত কাজে নিয়োজিত রাখা এবং ট্রেনিং সেন্টারের ভিতরের উত্তর-পশ্চিমপাশে থাকা রেন্টি কড়ইগাছ কাটিয়ে বিক্রয় করার বিষয়ে স্টাফদের মধ্যে অসন্তুষ্টির সৃষ্টি হয়েছে।
গাছ কাটার ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথমে করাত দিয়ে গাছের গোড়ার এক তৃতীয়াংশ কেটে রাখা হয়। এরপর হালকা বাতাসে গাছটি পড়ে যায়। এভাবে গত দেড় মাসে তিনটি গাছ কেটে বিক্রয় করার প্রমান সরেজমিনে গিয়ে পাওয়া গেছে।
ট্রেনিং সেন্টারে দায়িত্বরত রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তারা ইনচার্জ আবু ইউনুসের অনুমোতি ছাড়া কথা বলতে রাজি হননি।
পাকশী বাঁচাও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম নেতা সাবেক মেম্বার জাহাঙ্গীর হোসেন, রেজাউল ও বাবু বলেন, প্রায়ই রেলওয়ের কর্মকর্তারা কারণে ও অকারণে পাকশীর সবুজ সৌন্দর্যের প্রতীক পাকশীর গৌরবময় ইতিহাসের স্বাক্ষী বিশালাকৃতি কড়ইগাছ, মেহগুনি, সেগুন, কৃষ্ণচূড়াসহ বিভিন্ন ধরণের বনজ ও ফলজ গাছগুলো কেটে ফেলছেন। এটা পাকশীবাসির নিকট চরম উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার বিষয়। এভাবে গাছগুলো কেটে ফেলায় পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলছে। গাছগুলো কেটে ফেলার ঘটনা আমাদের নিকট অত্যন্ত কষ্টের বলেও মন্তব্য করেন এসব পরিবেশবিদগণ।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের আইডাব্লিউও মিনহাজ আকন্দ বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টারের ভিতরের গাছ কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। কারণ গাছ কেটে ফেলা ও বিক্রয় করার কোন বৈধতা ইনচার্জের নেই।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের প্রকৌশলী-২ (ডিইএন-২) বীরবল মন্ডল বলেন, রেলওয়ের গাছ কাটার দায়িত্ব আমার। ইনচার্জ গাছ কাটার কে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চিফ কমান্ডেন্ট (রাজশাহী) মোঃ আশাবুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টার পাকশীর ইনচার্জের অনিয়ম, দূর্নীতি, স্টাফদের নিকট জমি খাজনা দেওয়া ও রেলওয়ের গাছ কেটে বিক্রয়ের খবর জানা নেই। খোঁজ নিয়ে অবশ্যই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টার পাকশীর ইনচার্জ (এএসআই) মোঃ আবু ইউনুস বলেন, তিনি কোন অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। স্টাফদের মাসিক টিএ, ডিএ দুই লাখ টাকা থেকে ৭০ শতাংশ না সরকারী নিয়মানুসারে ১২ শতাংশ কাটা হয়। ট্রেন স্কট ডিউটিতে যারা যেতে চান তাদের কে পাঠানো হয়। গাছ কাটিয়ে বিক্রয়ের বিষয়টি সম্পুর্নরুপে এড়িয়ে যান ইনচার্জ আবু ইউনুস।

নিউজটি শেয়ার করুন

পাকশী রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টারের ইনচার্জের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট সময় : ১২:২৮:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩

// ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি //

ঈশ্বরদীর পাকশী রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টার  ইনচার্জ (এএসআই) মোঃ আবু ইউনুস গোপনে কাটিয়েছেন রেলওয়ের তিনটি মাঝারি আকারের রেন্টি কড়ইগাছ। সেই গাছগুলো আবার ট্রেনিং সেন্টারের স্টাফ ও তার আত্মীয় নিকট বিক্রয় করেছেন। বিষয়টি প্রায় দেড় মাস গড়িয়ে গেলেও জানেন না রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ (ডিইএন-২) বীরবল মন্ডল, আইডাব্লিউও (পাকশী) মিনহাজ আকন্দসহ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।
গত মঙ্গল ও বুধবার সরেজমিনে পাকশী রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টার ঘুরে ও বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, গত দুুই বছর পুর্বে ট্রেনিং সেন্টারের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোঃ আহসান হাবিব বদলি হন। ট্রেনিং সেন্টারের হাবিলদার মোঃ আবু ইউনুসকে প্রমোশন দিয়ে এএসআই করে গত বছরে ট্রেনিং সেন্টারে ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর থেকেই তিনি নানা রকম অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। একই সঙ্গে পাকশী সবুজ সৌন্দর্যের প্রতিক রেন্টি কড়ইগাছ কাটিয়ে বিক্রয় করেছেন।
সুত্রগুলো মতে, ইনচার্জ মোঃ আবু ইউনুস ট্রেনিং সেন্টারের স্টাফ ব্যান্ডবাদকদের সঙ্গে অশালিন আচরণ করা, ট্রেনিং সেন্টারের ভিতরে থাকা জমি স্টাফদের নিকট সবজি চাষের জন্য খাজনা দেওয়া, অর্থ ছাড়া স্টাফদের ছুটি না দেওয়া, জনপ্রতি মাসিক দুই হাজার টাকা চুক্তিতে ঈশ্বরদীতে ট্রেন স্কট ডিউটি দেওয়া, স্টাফদের মাসিক টিএ, ডিএ’র দুই লাখ টাকা থেকে ৭০ শতাংশ কেটে নেওয়া, বগিগার্ডকে দিয়ে নিজের গাড়ি ধোয়া মোছা, বাজার করানোসহ ব্যক্তিগত কাজে নিয়োজিত রাখা এবং ট্রেনিং সেন্টারের ভিতরের উত্তর-পশ্চিমপাশে থাকা রেন্টি কড়ইগাছ কাটিয়ে বিক্রয় করার বিষয়ে স্টাফদের মধ্যে অসন্তুষ্টির সৃষ্টি হয়েছে।
গাছ কাটার ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথমে করাত দিয়ে গাছের গোড়ার এক তৃতীয়াংশ কেটে রাখা হয়। এরপর হালকা বাতাসে গাছটি পড়ে যায়। এভাবে গত দেড় মাসে তিনটি গাছ কেটে বিক্রয় করার প্রমান সরেজমিনে গিয়ে পাওয়া গেছে।
ট্রেনিং সেন্টারে দায়িত্বরত রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তারা ইনচার্জ আবু ইউনুসের অনুমোতি ছাড়া কথা বলতে রাজি হননি।
পাকশী বাঁচাও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম নেতা সাবেক মেম্বার জাহাঙ্গীর হোসেন, রেজাউল ও বাবু বলেন, প্রায়ই রেলওয়ের কর্মকর্তারা কারণে ও অকারণে পাকশীর সবুজ সৌন্দর্যের প্রতীক পাকশীর গৌরবময় ইতিহাসের স্বাক্ষী বিশালাকৃতি কড়ইগাছ, মেহগুনি, সেগুন, কৃষ্ণচূড়াসহ বিভিন্ন ধরণের বনজ ও ফলজ গাছগুলো কেটে ফেলছেন। এটা পাকশীবাসির নিকট চরম উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার বিষয়। এভাবে গাছগুলো কেটে ফেলায় পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলছে। গাছগুলো কেটে ফেলার ঘটনা আমাদের নিকট অত্যন্ত কষ্টের বলেও মন্তব্য করেন এসব পরিবেশবিদগণ।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের আইডাব্লিউও মিনহাজ আকন্দ বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টারের ভিতরের গাছ কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। কারণ গাছ কেটে ফেলা ও বিক্রয় করার কোন বৈধতা ইনচার্জের নেই।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের প্রকৌশলী-২ (ডিইএন-২) বীরবল মন্ডল বলেন, রেলওয়ের গাছ কাটার দায়িত্ব আমার। ইনচার্জ গাছ কাটার কে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চিফ কমান্ডেন্ট (রাজশাহী) মোঃ আশাবুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টার পাকশীর ইনচার্জের অনিয়ম, দূর্নীতি, স্টাফদের নিকট জমি খাজনা দেওয়া ও রেলওয়ের গাছ কেটে বিক্রয়ের খবর জানা নেই। খোঁজ নিয়ে অবশ্যই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টার পাকশীর ইনচার্জ (এএসআই) মোঃ আবু ইউনুস বলেন, তিনি কোন অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। স্টাফদের মাসিক টিএ, ডিএ দুই লাখ টাকা থেকে ৭০ শতাংশ না সরকারী নিয়মানুসারে ১২ শতাংশ কাটা হয়। ট্রেন স্কট ডিউটিতে যারা যেতে চান তাদের কে পাঠানো হয়। গাছ কাটিয়ে বিক্রয়ের বিষয়টি সম্পুর্নরুপে এড়িয়ে যান ইনচার্জ আবু ইউনুস।