ঢাকা ০৩:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নেছারাবাদে ব্যাসকাঠি পাটিকেলবাড়ি দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগে দুর্নীতি অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:১৩:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩
  • / ৪৬০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি :
নেছারাবাদ উপজেলার ব্যাসকাঠি পাটিকেলবাড়ি দাখিল মাদ্রসায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর তিনজন কর্মচারী নিয়োগে লাখ লাখ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই মাদ্রসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমানকে সাড়ে তিন লাখ টাকা ঘুষ দিয়েও আয়া পদের চাকুরী পায়নি মুন্নি আক্তার নামের এক দরিদ্র গৃহবধূ। অসহায় মুন্নি তার গরু, ছাগল বিক্রি করা সহ এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সভাপতিকে ওই টাকা দিয়েছিলেন।
মুন্নি আক্তারের অভিযোগে তিনি বলেন, টাকা দিয়েও তিনি লিখিত পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান পেয়েছিলেন। তারপরেও সভাপতি নিয়োগবোর্ড ম্যানেজ করে অন্য প্রার্থীর কাছ থেকে বেশী টাকা নিয়ে তাকে মৌখিক পরীক্ষায় বাদ দিয়েছেন । এ কারনে ঘুষের টাকা ফেরতসহ নিয়োগে অনিয়মের বিচার দাবী করে চাকুরী বঞ্চিত মুন্নি আক্তার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর  একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়াও মাদ্রসার অফিস সহকারী  ও নাইট গার্ড পদের নিয়োগেও  টাকা লেনদেনসহ  স্বজন প্রীতির অভিযোগ রয়েছে সভাপতি ও মাদরাসার সুপার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। গত ৬ মে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাগেছে ব্যাসকাঠি পাটিকেলবাড়ি দাখিল মাদ্রাসায় একজন অফিস সহকারী,একজন নাইট গার্ড ও একজন আয়া  নিয়োগের আগেই দর দামের আলোচনা  এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ৪-৫ বছর ধরে ওই মাদ্রসার লিল্লাহ বোডিংয়ে  বাবুর্চির কাজ করা রেহেনা বেগম তার পুত্রবধু মুন্নিকে আয়া পদে চাকুরী দিতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পুলিশের উপ পরিদর্শক হাবিবুর রহমান হাওলাদারের দারস্থ হন। প্রথম দিকে দীর্ঘদিনের বাবুর্চি রেহেনার প্রতি সহানুভুতিশীল  সভাপতি হাবিবুর রহমান মুন্নিকে চাকুরী দেয়ার সুবিধার্থে আরো ২ জন দুর্বল প্রার্থী ( বিধি অনুযায়ী ন্যুনতম ৩জন আবেদনকারী থাকা বাধ্যতামুলক) সংগ্রহ করে আবেদন  করাতে পরামর্শ দেন।  সে ভাবেই শাশুরী রেহেনা মুন্নি আকতারের  সাপোর্টে  আরো দুইটি আবেদন করানোর  ব্যবস্থা করেন। কিন্তু আয়া পদে ৪জন প্রার্থী  পরীক্ষায়  অংশ নেন। পরীক্ষার দিন মুন্নির চাকুরী  না হলে অফিস অঙ্গিনায় বসেই সভাপতির বিরুদ্ধে রেহেনা চিৎকার চেঁচামেছি করতে থাকেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে নিয়োগ পরীক্ষায় উপস্থিত মন্ত্রীর প্রতিনিধি প্রকৌশলী পলাশ সিকদার তাকে সান্তনা দিয়ে বিকল্প কোথাও কর্মসংস্থানের আশ্বাস দেন। পরে নয়ন শেখসহ এলাকার  মাঝারী ক্লাশের কিছু প্রভাবশালীর  চাপে ও নিয়োগ বানিজ্যের চিন্তা থেকে সভাপতি হাবিবুর রহমান তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন বলে জানান একজন শিক্ষক।
গুয়ারেখা ইউপির সাবেক সদস্য ও আওয়ামীলীগের সহসভাপতি মো. শাহ আলম শেখ জানান, অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দেয়া আসাদ খান সভাপতির ভাইয়ের শ্যালক এবং সে অনেকটা বোদলেস (অপ্রকৃতস্থ)। শাহ আলমের দাবী তিনটি  পদে নিয়োগ দিয়ে অন্তত ১০ লাখ টাকার বানিজ্য করা হয়েছে। গুয়ারেখা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আঃ কুদ্দুস সিকদার বলেন,দরিদ্র বাবুর্চি রেহেনার কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি আগে থেকেই এলাকায় আলোচিত ঘটনা। তবুও মানুষ আশা করছিলো দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মুন্নির চাকরী হওয়া দরকার। কোনো প্রকার টাকা পয়সা লেনদেনের কথা অস্বীকার করেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান হাওলাদার। পরীক্ষায়  যিনি ভালো করেছেন তাকেই চাকুরী দেয়া হয়েছে দাবী করে হাবিবুর রহমান বলেন,  এলাকায়  দলাদলির কারনে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
মাদ্রসার সুপার মাওলানা রফিকুল ইসলাম এ বিষয় কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছেন কীনা জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মাহবুবুল্লাহ মজুমদার বলেন, তিনি বিদেশে প্রশিক্ষন শেষে সবেমাত্র যোগদান করেছেন। পরবর্তী কার্য দিবসে অভিযোগের বিষয় ব্যবস্থা নিবেন।
নিয়োগ বোর্ডের সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাংগীর হোসেন বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মুন্নির কাছ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বা/খ: জই

নিউজটি শেয়ার করুন

নেছারাবাদে ব্যাসকাঠি পাটিকেলবাড়ি দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগে দুর্নীতি অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৩:১৩:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩
নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি :
নেছারাবাদ উপজেলার ব্যাসকাঠি পাটিকেলবাড়ি দাখিল মাদ্রসায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর তিনজন কর্মচারী নিয়োগে লাখ লাখ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই মাদ্রসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমানকে সাড়ে তিন লাখ টাকা ঘুষ দিয়েও আয়া পদের চাকুরী পায়নি মুন্নি আক্তার নামের এক দরিদ্র গৃহবধূ। অসহায় মুন্নি তার গরু, ছাগল বিক্রি করা সহ এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সভাপতিকে ওই টাকা দিয়েছিলেন।
মুন্নি আক্তারের অভিযোগে তিনি বলেন, টাকা দিয়েও তিনি লিখিত পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান পেয়েছিলেন। তারপরেও সভাপতি নিয়োগবোর্ড ম্যানেজ করে অন্য প্রার্থীর কাছ থেকে বেশী টাকা নিয়ে তাকে মৌখিক পরীক্ষায় বাদ দিয়েছেন । এ কারনে ঘুষের টাকা ফেরতসহ নিয়োগে অনিয়মের বিচার দাবী করে চাকুরী বঞ্চিত মুন্নি আক্তার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর  একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়াও মাদ্রসার অফিস সহকারী  ও নাইট গার্ড পদের নিয়োগেও  টাকা লেনদেনসহ  স্বজন প্রীতির অভিযোগ রয়েছে সভাপতি ও মাদরাসার সুপার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। গত ৬ মে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাগেছে ব্যাসকাঠি পাটিকেলবাড়ি দাখিল মাদ্রাসায় একজন অফিস সহকারী,একজন নাইট গার্ড ও একজন আয়া  নিয়োগের আগেই দর দামের আলোচনা  এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ৪-৫ বছর ধরে ওই মাদ্রসার লিল্লাহ বোডিংয়ে  বাবুর্চির কাজ করা রেহেনা বেগম তার পুত্রবধু মুন্নিকে আয়া পদে চাকুরী দিতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পুলিশের উপ পরিদর্শক হাবিবুর রহমান হাওলাদারের দারস্থ হন। প্রথম দিকে দীর্ঘদিনের বাবুর্চি রেহেনার প্রতি সহানুভুতিশীল  সভাপতি হাবিবুর রহমান মুন্নিকে চাকুরী দেয়ার সুবিধার্থে আরো ২ জন দুর্বল প্রার্থী ( বিধি অনুযায়ী ন্যুনতম ৩জন আবেদনকারী থাকা বাধ্যতামুলক) সংগ্রহ করে আবেদন  করাতে পরামর্শ দেন।  সে ভাবেই শাশুরী রেহেনা মুন্নি আকতারের  সাপোর্টে  আরো দুইটি আবেদন করানোর  ব্যবস্থা করেন। কিন্তু আয়া পদে ৪জন প্রার্থী  পরীক্ষায়  অংশ নেন। পরীক্ষার দিন মুন্নির চাকুরী  না হলে অফিস অঙ্গিনায় বসেই সভাপতির বিরুদ্ধে রেহেনা চিৎকার চেঁচামেছি করতে থাকেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে নিয়োগ পরীক্ষায় উপস্থিত মন্ত্রীর প্রতিনিধি প্রকৌশলী পলাশ সিকদার তাকে সান্তনা দিয়ে বিকল্প কোথাও কর্মসংস্থানের আশ্বাস দেন। পরে নয়ন শেখসহ এলাকার  মাঝারী ক্লাশের কিছু প্রভাবশালীর  চাপে ও নিয়োগ বানিজ্যের চিন্তা থেকে সভাপতি হাবিবুর রহমান তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন বলে জানান একজন শিক্ষক।
গুয়ারেখা ইউপির সাবেক সদস্য ও আওয়ামীলীগের সহসভাপতি মো. শাহ আলম শেখ জানান, অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দেয়া আসাদ খান সভাপতির ভাইয়ের শ্যালক এবং সে অনেকটা বোদলেস (অপ্রকৃতস্থ)। শাহ আলমের দাবী তিনটি  পদে নিয়োগ দিয়ে অন্তত ১০ লাখ টাকার বানিজ্য করা হয়েছে। গুয়ারেখা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আঃ কুদ্দুস সিকদার বলেন,দরিদ্র বাবুর্চি রেহেনার কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি আগে থেকেই এলাকায় আলোচিত ঘটনা। তবুও মানুষ আশা করছিলো দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মুন্নির চাকরী হওয়া দরকার। কোনো প্রকার টাকা পয়সা লেনদেনের কথা অস্বীকার করেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান হাওলাদার। পরীক্ষায়  যিনি ভালো করেছেন তাকেই চাকুরী দেয়া হয়েছে দাবী করে হাবিবুর রহমান বলেন,  এলাকায়  দলাদলির কারনে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
মাদ্রসার সুপার মাওলানা রফিকুল ইসলাম এ বিষয় কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছেন কীনা জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মাহবুবুল্লাহ মজুমদার বলেন, তিনি বিদেশে প্রশিক্ষন শেষে সবেমাত্র যোগদান করেছেন। পরবর্তী কার্য দিবসে অভিযোগের বিষয় ব্যবস্থা নিবেন।
নিয়োগ বোর্ডের সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাংগীর হোসেন বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মুন্নির কাছ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বা/খ: জই