নেছারাবাদে নার্সের টানা হেচড়ায় ডেলিভারির সময় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময় : ০৭:৪৭:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০২৩
- / ৪৪৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ
(Google News) ফিডটি
// নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি //
নেছারাবাদ উপজেলার এপেক্স হেল্থ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে আফিয়া নামে এক নার্সের একক কর্তৃত্বে নরমাল ডেলিভারির সময় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ওই প্রসূতির স্বামী বাদী হয়ে নেছারাবাদ কাউখালি থানার সহকারি পুলিশ সুপার বরাবর নার্স আফিয়া, এপেক্স ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও এক ডাক্তারকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রসূতির স্বামী মো: ওমর ফারুক ওই অভিযোগ করেন। তার অভিযোগ নার্স, ক্লিনিককর্তৃপক্ষ এবং ডাক্তারের অবহেলা জণিত কারণে তাদের নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি কোর্টে মামলা করবেন বলে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ওমর ফারুজ অভিযোগে জানান, বরিশাল থেকে আগত এক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে তার স্ত্রীকে নিয়মিত পরীক্ষা করাতেন। তখন ডাক্তার জানিয়েছেন, গর্ভের সন্তান এবং মা সুস্থ আছে। সবকিছু নরমালে সম্ভব। তাই সন্তান ও স্ত্রীর গর্ভের বাচ্চার বয়স আট মাস হওয়া মাত্র তিনি নেছারাবাদ উপজেলা হাসপাতালের আফিয়া নার্সের শরনাপন্ন হন। এ সময় আফিয়া বলেন, সময়মত এপেক্স ক্লিনিকে নিয়ে আসলে নরমাল ডেলিভারি করে দেব। এ সময় আমি ডাক্তারের কথা বললে নার্স আফিয়া আরো বলেন, ক্লিনিকের নির্ধারিত ডাক্তার আসাদুজ্জামান আছেন। তেমন কিছু হলে তিনি দেখবেন। তাই তার কথামত ডাক্তারের সাথে কথা না বলে ২৬ জুলাই (বুধবার) স্ত্রীর ব্যাথা ওঠায় ওই ক্লিনিকে নিয়ে আসি। সন্ধ্যার দিকে স্ত্রীর স্বাস্থ্যর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। এসময় ডাক্তারের কথা বললে নার্স আফিয়া তাদের বকাঝকা করে বলেন, এ সময় এ রকম হয়। রাত আনুমানিক ৩ টা ৫০ মিনিটের সময় আফিয়া আমার স্ত্রীর ডেলিভারি করে রুম থেকে নিস্তব্দ একটি বাচ্চা বের করে অক্সিজেন রুমে নিয়ে যায়। তখন আমাদের কান্নাকাটিতে সরকারি হাসপাতাল থেকে ঘুমন্ত এক ডাক্তার ডেকে এনে জানতে পারি বাচ্চাটি মৃত।
ওমর ফারুক অভিযোগ করে বলেন, আফিয়া নার্সের টানা হেচড়ায় ডেলিভারির সময় আমার বাচ্চা মারা গেছে। নার্স, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ একটু দৃষ্টি দিলে এরকম ঘটনা হতনা। আমি এর বিচার চাই।
অভিযুক্ত নার্স আফিয়া বলেন, ওই প্রসূতির ডেলিভারির সময় মৃত বাচ্চা হয়েছে। গর্ভে বসেই বাচ্চাটি মারা গেছে। এ নিয়ে এতকিছু করার কি আছে। হাসপাতালের আরে কয়েকজন নার্স এখানে রোগী এনে ডেলিভারি করে। তখন অনেক বাচ্চা মারা যায়। তখনতো এরকম ঝামেলা হয়না। আমার পেছনে শত্রু লেগেছে।
এ বিষয়ে নেছারাবাদ হাসপাতালের মা ও শিশু বিষয়ে অভিজ্ঞ আবাসিক ডাক্তার আসাদুজ্জামান জানান, ওই রোগী কোথা থেকে এসেছে তা আমি জানিনা। আমার নাম করে আফিয়া নার্স ওই রোগীকে ভর্তি দিয়ে ক্লিনিকে বসে নাকি নরমাল ডেলিভারি করেছে। ডেলিভারির করার পর বাচ্চাটা নাকি মারা গেছে। ওই রোগীর স্বজন বা নার্স আফিয়া ওই রোগীকে ভর্তির ব্যাপারে আমাকে কিছুই জানায়নি।
এ বিষয়ে এ্যাপেক্স ক্লিনিকের পরিচালক ডাঃ মো.মাসুমবিল্লাহ বলেন,আফিফাসহ কয়েকজন সিনিয়র নার্স রোগী এনে ভর্তি করার পর নিজেরা তত্ত্বাবাধয়ন করেন। ওই নার্সরা বেশী টাকা আয়ের লোভে সহজে ডাক্তারদের জানাতে চায়না। সেইসব নার্সদের ক্লিনিকে ডুকতে দেন কেন জানতে চাইলে, তিনি আরো বলেন, ওইসব নার্স এলাকার প্রভাবশালী।
সহকারী পুলিশ সুপার (নেছারাবাদ-কাউখালী সার্কেল) সাবিহা মেহেবুবা বলেন, ভুক্তভোগীরা আমার কাছে এসে মৌখিক অভিযোগ করেছে। আমি তাদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ হাতে আসলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।