ঢাকা ০২:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নীল জলরাশির সেই সমুদ্র শুকিয়ে চৌচির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৫৭:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৪৬০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কাজাখস্তান ও উজবেকিস্তানের মধ্যে ছিল আস্ত এক সমুদ্র। ছিল দুকূলপ্লাবী নীল জলরাশি। সেই সমুদ্র এখন শুকিয়ে চৌচির। দেখা যাচ্ছে মাটি। নেই এক ফোঁটা পানি। সমুদ্রটির নাম ‘আরল সমুদ্র’।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার প্রভাবে এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে। গত কয়েক বছর ধরেই পৃথিবীর তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দেখা গেছে। এমনকি চলতি বছরের জানুয়ারিতেও বৈশ্বিক তাপমাত্রা স্বাভাবিকে চেয়ে বেশি ছিল।

আরল সাগরের আয়তন ৬৮ হাজার বর্গকিলোমিটার। পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম জলাধার ছিল এটি। এর বিশালাকৃতির কারণে একে সমুদ্রের সঙ্গে তুলনা করা হয়। কিন্তু ১৯৬০–এর দশকে সমুদ্রটি সংকুচিত হতে শুরু করে। কারণ তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এই সমুদ্রে একটি সেচ প্রকল্প শুরু করেছিল। এই প্রকল্পের আওতায় বিপুল পরিমাণ পানি সরিয়ে নিতে শুরু করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন।

সম্প্রতি মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা আরল সাগর শুকিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একটি বিশদ বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে। নাসার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের বিশাল মরু অঞ্চলে তুলা এবং অন্যান্য ফসল উৎপাদের জন্য সেচ প্রকল্প হাতে নিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। ওই প্রকল্পের আওতায় আরল সাগরের দুটি উপনদী—সির দরিয়া ও আমু দরিয়া থেকে পানি অপসারণ করতে শুরু করে এবং নদী দুটির মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এতে বিশাল এই জলাধার শুকিয়ে যেতে শুরু করে। কারণ এ দুটি নদী থেকেই মূলত পানি এসে জমা হতো আরল সাগরে।

নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, অবৈজ্ঞানিকভাবে খাল কাটার কারণেই আরল সাগরের পানির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। আর জাতিসংঘ বলেছে, আরল সাগর শুকিয়ে যাওয়া ২১ শতকের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়।

বর্তমানে আরল সাগরের যেটুকু অংশ অবশিষ্ট রয়েছে, তা সংরক্ষিত করে উজবেকিস্তানের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে বেশির ভাগ বিজ্ঞানী বলছেন, আরল সাগরকে আর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

নীল জলরাশির সেই সমুদ্র শুকিয়ে চৌচির

আপডেট সময় : ১২:৫৭:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

কাজাখস্তান ও উজবেকিস্তানের মধ্যে ছিল আস্ত এক সমুদ্র। ছিল দুকূলপ্লাবী নীল জলরাশি। সেই সমুদ্র এখন শুকিয়ে চৌচির। দেখা যাচ্ছে মাটি। নেই এক ফোঁটা পানি। সমুদ্রটির নাম ‘আরল সমুদ্র’।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার প্রভাবে এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে। গত কয়েক বছর ধরেই পৃথিবীর তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দেখা গেছে। এমনকি চলতি বছরের জানুয়ারিতেও বৈশ্বিক তাপমাত্রা স্বাভাবিকে চেয়ে বেশি ছিল।

আরল সাগরের আয়তন ৬৮ হাজার বর্গকিলোমিটার। পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম জলাধার ছিল এটি। এর বিশালাকৃতির কারণে একে সমুদ্রের সঙ্গে তুলনা করা হয়। কিন্তু ১৯৬০–এর দশকে সমুদ্রটি সংকুচিত হতে শুরু করে। কারণ তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এই সমুদ্রে একটি সেচ প্রকল্প শুরু করেছিল। এই প্রকল্পের আওতায় বিপুল পরিমাণ পানি সরিয়ে নিতে শুরু করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন।

সম্প্রতি মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা আরল সাগর শুকিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একটি বিশদ বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে। নাসার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের বিশাল মরু অঞ্চলে তুলা এবং অন্যান্য ফসল উৎপাদের জন্য সেচ প্রকল্প হাতে নিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। ওই প্রকল্পের আওতায় আরল সাগরের দুটি উপনদী—সির দরিয়া ও আমু দরিয়া থেকে পানি অপসারণ করতে শুরু করে এবং নদী দুটির মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এতে বিশাল এই জলাধার শুকিয়ে যেতে শুরু করে। কারণ এ দুটি নদী থেকেই মূলত পানি এসে জমা হতো আরল সাগরে।

নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, অবৈজ্ঞানিকভাবে খাল কাটার কারণেই আরল সাগরের পানির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। আর জাতিসংঘ বলেছে, আরল সাগর শুকিয়ে যাওয়া ২১ শতকের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়।

বর্তমানে আরল সাগরের যেটুকু অংশ অবশিষ্ট রয়েছে, তা সংরক্ষিত করে উজবেকিস্তানের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে বেশির ভাগ বিজ্ঞানী বলছেন, আরল সাগরকে আর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।