ঢাকা ১০:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নারী-পুরুষ সমানতালে না এগোলে দেশ এগোতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৪৪:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৪৩৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
নারী-পুরুষ সমানতালে না এগোলে দেশ এগোতে পারে না বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর উচ্চ আদালতে বিচারক ও সশস্ত্র বাহিনীতে অফিসার নিয়োগসহ সব ক্ষেত্রে নারীদের সুযোগ করে দিয়েছি। দেশে জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। নারী-পুরুষ সমানতালে না এগোলে দেশ এগোতে পারে না।

তিনি বলেন, নারীদের সংসারের কাজও কম নয়, সেটাও কর্মক্ষেত্র। ঘরের কাজ নারী-পুরুষ দুজনে মিলেই ভাগ করে নেন। এতে লজ্জার কিছু নেই। এতে কোনো ক্ষতি হয় না। বরং পরিবারকে সময় দেয়া যায়।

শেখ হাসিনা বলেন, নারী অধিকারে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন প্রায় পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। সংসদ উপনেতার পদ কোনো নারীকে দিয়েই আমরা পূরণ করব।

সবাইকে সাশ্রয়ী, সঞ্চয়ী ও মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞা বিশ্বজুড়েই মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। সেজন্য যার যেখানে জমি আছে, উৎপাদন কাজে ব্যবহার করুন।

দ্রব্যমূল্যের জন্য কিছুটা কষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা কিন্তু আন্তর্জাতিক কারণে। বিশ্বের অনেক দেশ মন্দা ঘোষণা করেছে। কিন্তু আমরা মিতব্যয়ী-সাশ্রয়ী হলে আমাদের এমন ঘোষণা দিতে হবে না। নিজেদের পায়েই নিজেরা দাঁড়াতে পারব।

সমাজে নিজেদের মান উন্নয়নে সারা দিন ফেসবুক না দেখে নারীদের ফ্রিল্যান্সিং করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নারীদের পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের উন্নয়নেও সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, অফিসের পাশাপাশি বাসায় ফিরেও কাজ করতে হয় নারীদের। অনেকটা বিনা পারিশ্রমিকে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

তাদের সহযোগিতায় পুরুষদেরও বাসাবাড়ির কাজ ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার ছেলেও বাসাবাড়ির কাজ করে, থালাবাসন নিজের হাতে পরিষ্কার করে।

সমাজকে এগিয়ে নিতে নারী-পুরুষকে সমানতালে কাজ করতে হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, নারী ও শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে সরকার। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের সুরক্ষা বলয়ের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে দেশের চলমান অর্থনৈতিক সঙ্কটের বিষয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সবাইকে আবারও সঞ্চয়ী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, করোনাভাইরাস, ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণেই বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্কট কাটিয়ে উঠছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ২১০০ সালের জন্য ডেল্টা প্ল্যান করে গেলাম, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পারে।

অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের পাঁচ বিশিষ্ট নারীর হাতে বেগম রোকেয়া পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছর এদিন সারা দেশে সরকারিভাবে রোকেয়া দিবস পালন করা হয়।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বেগম রোকেয়া দিবস ও বেগম রোকেয়া পদক প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ বছর পদকপ্রাপ্তরা হলেন:

নারীশিক্ষায় ফরিদপুরের রহিমা খাতুন, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় চট্টগ্রামের প্রফেসর কামরুন নাহার বেগম (অ্যাডভোকেট), নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সাতক্ষীরার ফরিদা ইয়াসমিন, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে নারী জাগরণে নড়াইলের ড. আফরোজা পারভীন এবং পল্লী উন্নয়নে ঝিনাইদহের নাছিমা বেগম।

পদকপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে আঠারো ক্যারেট মানের পঁচিশ গ্রাম স্বর্ণ নির্মিত একটি পদক, পদকের রেপ্লিকা, চার লাখ টাকার চেক ও সম্মাননাপত্র দেয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

নারী-পুরুষ সমানতালে না এগোলে দেশ এগোতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:৪৪:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
নারী-পুরুষ সমানতালে না এগোলে দেশ এগোতে পারে না বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর উচ্চ আদালতে বিচারক ও সশস্ত্র বাহিনীতে অফিসার নিয়োগসহ সব ক্ষেত্রে নারীদের সুযোগ করে দিয়েছি। দেশে জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। নারী-পুরুষ সমানতালে না এগোলে দেশ এগোতে পারে না।

তিনি বলেন, নারীদের সংসারের কাজও কম নয়, সেটাও কর্মক্ষেত্র। ঘরের কাজ নারী-পুরুষ দুজনে মিলেই ভাগ করে নেন। এতে লজ্জার কিছু নেই। এতে কোনো ক্ষতি হয় না। বরং পরিবারকে সময় দেয়া যায়।

শেখ হাসিনা বলেন, নারী অধিকারে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন প্রায় পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। সংসদ উপনেতার পদ কোনো নারীকে দিয়েই আমরা পূরণ করব।

সবাইকে সাশ্রয়ী, সঞ্চয়ী ও মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞা বিশ্বজুড়েই মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। সেজন্য যার যেখানে জমি আছে, উৎপাদন কাজে ব্যবহার করুন।

দ্রব্যমূল্যের জন্য কিছুটা কষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা কিন্তু আন্তর্জাতিক কারণে। বিশ্বের অনেক দেশ মন্দা ঘোষণা করেছে। কিন্তু আমরা মিতব্যয়ী-সাশ্রয়ী হলে আমাদের এমন ঘোষণা দিতে হবে না। নিজেদের পায়েই নিজেরা দাঁড়াতে পারব।

সমাজে নিজেদের মান উন্নয়নে সারা দিন ফেসবুক না দেখে নারীদের ফ্রিল্যান্সিং করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নারীদের পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের উন্নয়নেও সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, অফিসের পাশাপাশি বাসায় ফিরেও কাজ করতে হয় নারীদের। অনেকটা বিনা পারিশ্রমিকে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

তাদের সহযোগিতায় পুরুষদেরও বাসাবাড়ির কাজ ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার ছেলেও বাসাবাড়ির কাজ করে, থালাবাসন নিজের হাতে পরিষ্কার করে।

সমাজকে এগিয়ে নিতে নারী-পুরুষকে সমানতালে কাজ করতে হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, নারী ও শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে সরকার। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের সুরক্ষা বলয়ের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে দেশের চলমান অর্থনৈতিক সঙ্কটের বিষয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সবাইকে আবারও সঞ্চয়ী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, করোনাভাইরাস, ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণেই বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্কট কাটিয়ে উঠছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ২১০০ সালের জন্য ডেল্টা প্ল্যান করে গেলাম, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পারে।

অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের পাঁচ বিশিষ্ট নারীর হাতে বেগম রোকেয়া পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছর এদিন সারা দেশে সরকারিভাবে রোকেয়া দিবস পালন করা হয়।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বেগম রোকেয়া দিবস ও বেগম রোকেয়া পদক প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ বছর পদকপ্রাপ্তরা হলেন:

নারীশিক্ষায় ফরিদপুরের রহিমা খাতুন, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় চট্টগ্রামের প্রফেসর কামরুন নাহার বেগম (অ্যাডভোকেট), নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সাতক্ষীরার ফরিদা ইয়াসমিন, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে নারী জাগরণে নড়াইলের ড. আফরোজা পারভীন এবং পল্লী উন্নয়নে ঝিনাইদহের নাছিমা বেগম।

পদকপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে আঠারো ক্যারেট মানের পঁচিশ গ্রাম স্বর্ণ নির্মিত একটি পদক, পদকের রেপ্লিকা, চার লাখ টাকার চেক ও সম্মাননাপত্র দেয়া হয়।