ঢাকা ০২:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪, ২ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল- প্রধানমন্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:০৯:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩
  • / ৪৫৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে রোল মডেল বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

‘বিশ্ব আবহাওয়া দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ১৯৩টি সদস্য-রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব আবহাওয়া দিবস ২০২৩’ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত জানিয়ে বলেন, দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্রজন্মান্তরে আবহাওয়া, জলবায়ু ও পানির ভবিষ্যৎ’ প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞানভিত্তিক আবহাওয়া ও জলবায়ুর উন্নততর পূর্বাভাস প্রদানের মাধ্যমে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নে ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক আবহাওয়া ও জলবায়ু সেবা প্রকল্প (কম্পোনেন্ট-এ)’ চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আবহাওয়া পরিষেবার মান বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা-ই আসুক না কেন তা মোকাবিলার জন্য তিনি সবাইকে সদা প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতি প্রশমনকে প্রাধান্য দিয়ে ১০০ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির কারণে বিশ্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট দুর্যোগও বাড়ছে। দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা ও দৈনন্দিন আবহাওয়া বার্তা জানতে মোবাইলে ‘১০৯০’ নম্বরে টোল ফ্রি সার্ভিস চালু করা হয়েছে। আমাদের সরকার কৃষি-আবহাওয়া পূর্বাভাস ও পরামর্শ সেবার মান উন্নয়নে সাতটি নতুন কৃষি-আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার স্থাপনসহ কৃষি-আবহাওয়া বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করেছে।

পাঁচটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার, নয়টি ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এবং ১৪টি নদী বন্দরে নৌ-দুর্ঘটনা প্রশমনের লক্ষ্যে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এছাড়া স্থাপন করা হয়েছে তিনটি স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন। দুটি আধুনিক ডপলার রাডার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। দেশের ১৩টি উপকূলীয় জেলায় স্যাটেলাইট টেলিফোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গৃহীত এসব পদক্ষেপ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭০ সালে সংঘটিত স্মরণকালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এই দুর্যোগের বিষয়ে আগাম কোনো সতর্কতাই দেয়নি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কবার্তা প্রদানের লক্ষ্যে কক্সবাজার ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় দুটি রাডার স্থাপন করেন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)’ গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘূর্ণিঝড় থেকে জনগণের জানমাল রক্ষায় সেই সময় ১৭২টি উঁচু মাটির কিল্লা তৈরি করেন, যা ‘মুজিব কিল্ল’ নামে পরিচিত।

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, এ দিবস পালনের মাধ্যমে দেশবাসীর মধ্যে আবহাওয়া, জলবায়ু ও পানির গুরুত্ব সম্পর্কে সম্যক ধারণা গড়ে উঠবে এবং আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। তিনি ‘বিশ্ব আবহাওয়া দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল- প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ১২:০৯:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে রোল মডেল বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

‘বিশ্ব আবহাওয়া দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ১৯৩টি সদস্য-রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব আবহাওয়া দিবস ২০২৩’ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত জানিয়ে বলেন, দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্রজন্মান্তরে আবহাওয়া, জলবায়ু ও পানির ভবিষ্যৎ’ প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞানভিত্তিক আবহাওয়া ও জলবায়ুর উন্নততর পূর্বাভাস প্রদানের মাধ্যমে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নে ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক আবহাওয়া ও জলবায়ু সেবা প্রকল্প (কম্পোনেন্ট-এ)’ চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আবহাওয়া পরিষেবার মান বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা-ই আসুক না কেন তা মোকাবিলার জন্য তিনি সবাইকে সদা প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতি প্রশমনকে প্রাধান্য দিয়ে ১০০ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির কারণে বিশ্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট দুর্যোগও বাড়ছে। দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা ও দৈনন্দিন আবহাওয়া বার্তা জানতে মোবাইলে ‘১০৯০’ নম্বরে টোল ফ্রি সার্ভিস চালু করা হয়েছে। আমাদের সরকার কৃষি-আবহাওয়া পূর্বাভাস ও পরামর্শ সেবার মান উন্নয়নে সাতটি নতুন কৃষি-আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার স্থাপনসহ কৃষি-আবহাওয়া বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করেছে।

পাঁচটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার, নয়টি ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এবং ১৪টি নদী বন্দরে নৌ-দুর্ঘটনা প্রশমনের লক্ষ্যে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এছাড়া স্থাপন করা হয়েছে তিনটি স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন। দুটি আধুনিক ডপলার রাডার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। দেশের ১৩টি উপকূলীয় জেলায় স্যাটেলাইট টেলিফোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গৃহীত এসব পদক্ষেপ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭০ সালে সংঘটিত স্মরণকালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এই দুর্যোগের বিষয়ে আগাম কোনো সতর্কতাই দেয়নি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কবার্তা প্রদানের লক্ষ্যে কক্সবাজার ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় দুটি রাডার স্থাপন করেন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)’ গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘূর্ণিঝড় থেকে জনগণের জানমাল রক্ষায় সেই সময় ১৭২টি উঁচু মাটির কিল্লা তৈরি করেন, যা ‘মুজিব কিল্ল’ নামে পরিচিত।

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, এ দিবস পালনের মাধ্যমে দেশবাসীর মধ্যে আবহাওয়া, জলবায়ু ও পানির গুরুত্ব সম্পর্কে সম্যক ধারণা গড়ে উঠবে এবং আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। তিনি ‘বিশ্ব আবহাওয়া দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন।