ঢাকা ০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

তীব্র শীতে বিপর্যস্ত সাঁথিয়ার পত্রিকা পরিবেশকরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৪:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৫০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জালাল উদ্দিন, সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি :

পাবনার সাঁথিয়ায় তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় সাধারণ মানুষ যেমন হয়ে পড়েছেন বিপর্যস্ত তেমনি পত্রিকা পরিবেশকরাও হয়ে পড়েছেন জবুথবু ও তাদের জীবনযাপন হয়ে পড়েছে দুর্বিষহ। মানুষের দুর্ভোগ আর নানা ঘটনার খবরগুলো আমরা সকালেই পত্রিকা পরিবেশকদের মাধ্যমে যখন ঘরে বসে পত্রিকার মাধ্যমে অনায়াসে পেয়ে যাই। একবারও কি ভেবেছি এই তীব্র শীতে পত্রিকা পরিবেশকেরা কতটা কষ্টে পত্রিকা পরিবেশন করছে! তেমনি একজন পাবনার সাঁথিয়ার আলোর ফেরিওয়ালা পত্রিকা বিতানের পত্রিকা পরিবেশক মামুন হোসেন। তিনি সকাল থেকে প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে উপজেলা সদরসহ গ্রাম গঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে নিয়মিত পত্রিকা পরিবেশন করে থাকেন।
মামুন হোসেন জানান, ২০১৪ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার আগেই তার বাবা খালেক বিশ্বাস মারা যান। এরপর অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেওয়ার পর অভাব অনটনের সংসারে আর পড়াশোনা করা হয়নি। সংসারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। পত্রিকা বিক্রি করে যে টাকা উপার্জন হয় সেটা দিয়েই পাঁচ জনের পরিবারে যাবতীয় খরচ মেটাতে হয়। এছাড়া এই সামান্য আয় দিয়ে তার ছোট ভাইকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। ছোট ভাই পাবনার সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে রসায়ন বিষয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে লেখাপড়া করছে। মামুনের গ্রামের বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চোকদার পাড়া গ্রামে। সংসারের তাগিদে সুদূর পাবনা হতে এসে সাঁথিয়াতে পত্রিকা পরিবেশন করে থাকেন। মামুন বলেন, বিত্তবান বা সরকারি সহযোগিতা পেলে পত্রিকা বিক্রির পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যেতেন।
দরিদ্র এবং অসহায় শীতার্ত মানুষের দুঃসহ দিনযাপনের করুণ-কঠোর চিত্র সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় উঠে আসে। আর আসলেও তা বেশির ভাগ মানুষের বিবেককে নাড়া দেয় না। শীতের তীব্র ঘন কুয়াশা যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে করে তোলে ব্যাহত। বিশেষ করে নৌপথে যোগাযোগ ও যাতায়াতে সৃষ্টি হয়ে থাকে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা। কৃষির ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নেই। দরিদ্র কৃষিজীবীরা প্রচন্ড শীতে জবুথবু হয়ে পড়েন। মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ গত কয়েক দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। গ্রামে অনুভূত হচ্ছে প্রচন্ড শীত। কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাস বাড়িয়ে দিয়েছে শীতের তীব্রতা। শীতের কারণে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ইতোমধ্যে শীতজনিত রোগ ও নিপা ভাইরাসের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। শীতবস্ত্রের অভাবে চরম কষ্টে পড়েছে ছিন্নমূল ও দরিদ্র মানুষ। এটা ঠিক, শীতে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি কষ্ট পেয়ে থাকেন। অসুখবিসুখে ভুগে থাকেন। দুঃস্থ মানুষের পক্ষে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া এবং চিকিৎসা গ্রহণ প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। সমাজের ধনবান চিকিৎসকদের কাছে মানুষের প্রত্যাশা তারা নিজ দায়িত্বেই শীতার্ত দুঃস্থ মানুষের চিকিৎসার ভার নেবেন।

সমাজের বিভিন্ন ঘটনা ও নানান চিত্র আমরা পত্রিকা খুললেই দেখতে পাই। আর সে প্রত্রিকা পরিবেশন করে থাকেন পত্রিকা পরিবেশকরা। মামুনের মত সাঁথিয়ার সকল পত্রিকা পরিবেশকরা সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

বা/খ:জই

নিউজটি শেয়ার করুন

তীব্র শীতে বিপর্যস্ত সাঁথিয়ার পত্রিকা পরিবেশকরা

আপডেট সময় : ০৪:৩৪:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৩

জালাল উদ্দিন, সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি :

পাবনার সাঁথিয়ায় তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় সাধারণ মানুষ যেমন হয়ে পড়েছেন বিপর্যস্ত তেমনি পত্রিকা পরিবেশকরাও হয়ে পড়েছেন জবুথবু ও তাদের জীবনযাপন হয়ে পড়েছে দুর্বিষহ। মানুষের দুর্ভোগ আর নানা ঘটনার খবরগুলো আমরা সকালেই পত্রিকা পরিবেশকদের মাধ্যমে যখন ঘরে বসে পত্রিকার মাধ্যমে অনায়াসে পেয়ে যাই। একবারও কি ভেবেছি এই তীব্র শীতে পত্রিকা পরিবেশকেরা কতটা কষ্টে পত্রিকা পরিবেশন করছে! তেমনি একজন পাবনার সাঁথিয়ার আলোর ফেরিওয়ালা পত্রিকা বিতানের পত্রিকা পরিবেশক মামুন হোসেন। তিনি সকাল থেকে প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে উপজেলা সদরসহ গ্রাম গঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে নিয়মিত পত্রিকা পরিবেশন করে থাকেন।
মামুন হোসেন জানান, ২০১৪ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার আগেই তার বাবা খালেক বিশ্বাস মারা যান। এরপর অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেওয়ার পর অভাব অনটনের সংসারে আর পড়াশোনা করা হয়নি। সংসারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। পত্রিকা বিক্রি করে যে টাকা উপার্জন হয় সেটা দিয়েই পাঁচ জনের পরিবারে যাবতীয় খরচ মেটাতে হয়। এছাড়া এই সামান্য আয় দিয়ে তার ছোট ভাইকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। ছোট ভাই পাবনার সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে রসায়ন বিষয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে লেখাপড়া করছে। মামুনের গ্রামের বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চোকদার পাড়া গ্রামে। সংসারের তাগিদে সুদূর পাবনা হতে এসে সাঁথিয়াতে পত্রিকা পরিবেশন করে থাকেন। মামুন বলেন, বিত্তবান বা সরকারি সহযোগিতা পেলে পত্রিকা বিক্রির পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যেতেন।
দরিদ্র এবং অসহায় শীতার্ত মানুষের দুঃসহ দিনযাপনের করুণ-কঠোর চিত্র সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় উঠে আসে। আর আসলেও তা বেশির ভাগ মানুষের বিবেককে নাড়া দেয় না। শীতের তীব্র ঘন কুয়াশা যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে করে তোলে ব্যাহত। বিশেষ করে নৌপথে যোগাযোগ ও যাতায়াতে সৃষ্টি হয়ে থাকে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা। কৃষির ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নেই। দরিদ্র কৃষিজীবীরা প্রচন্ড শীতে জবুথবু হয়ে পড়েন। মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ গত কয়েক দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। গ্রামে অনুভূত হচ্ছে প্রচন্ড শীত। কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাস বাড়িয়ে দিয়েছে শীতের তীব্রতা। শীতের কারণে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ইতোমধ্যে শীতজনিত রোগ ও নিপা ভাইরাসের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। শীতবস্ত্রের অভাবে চরম কষ্টে পড়েছে ছিন্নমূল ও দরিদ্র মানুষ। এটা ঠিক, শীতে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি কষ্ট পেয়ে থাকেন। অসুখবিসুখে ভুগে থাকেন। দুঃস্থ মানুষের পক্ষে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া এবং চিকিৎসা গ্রহণ প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। সমাজের ধনবান চিকিৎসকদের কাছে মানুষের প্রত্যাশা তারা নিজ দায়িত্বেই শীতার্ত দুঃস্থ মানুষের চিকিৎসার ভার নেবেন।

সমাজের বিভিন্ন ঘটনা ও নানান চিত্র আমরা পত্রিকা খুললেই দেখতে পাই। আর সে প্রত্রিকা পরিবেশন করে থাকেন পত্রিকা পরিবেশকরা। মামুনের মত সাঁথিয়ার সকল পত্রিকা পরিবেশকরা সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

বা/খ:জই