ঢাকা ০৫:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

তাড়াশে দু’দিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বউ মেলা

আশরাফুল ইসলাম রনি, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১২:৫৬:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪
  • / ৫১৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.)  এর ওরশ শরীফ উপলক্ষে প্রতি বছরের চৈত্র্য মাসের প্রথম গ্রামীণ ঐতিহ্য হিসেবে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে বউ মেলা। দিনটি উপলক্ষে সিরাজগঞ্জ,পাবনা, নাটোর এই তিন জেলার মিলনস্থল নওগাঁ গ্রামের করতোয়া নদীর তীরে জমজমাট মেলা বসেছে। সেখানে শত শত বউ-শাশুড়ি উৎসবের আমেজে দিনভর কেনাকাটা করেছেন।
শনিবার (১৬ মার্চ) বিকেল থেকে তাড়াশ উপজেলায় শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজারে এ বউ মেলা শুরু হয়েছে। মেলা রবিবার (১৭ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত চলবে। শত শত বউ-শাশুড়ি এ মেলায় উৎসবের আমেজে কেনাকাটা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভারতের আজমীর শরীফের পীর খাজা  মইনুদ্দিন চিশতী (রহঃ)’র আধ্যাত্মিক গুরু নওগাঁর হাজী শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ) মাজারে তিন দিন ব্যাপী বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠিত হয়। ওরস উপলক্ষে শেষের দিন অর্থাৎ শনিবার ওই ঐতিহ্যবাহী বউ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া,পাবনার ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর ও নাটোরের গুরুদাসপুরের তিন জেলার শতশত নারীদের উপস্থিতিতে মেলা সরগরম হয়ে ওঠে। বিশেষ করে একদিনের জন্য বউ-শাশুড়িরা কেনাকাটায় মেতে ওঠেন। এতে করে ঐতিহ্যবাহী বউ মেলায় এলাকার বউ-শাশুড়ি মিলনমেলায় পরিণত হয়। মেলার বিশেষ আকর্ষণ কাঠ, বাঁশ, বেতসহ স্টিলের আসবাবপত্রসহ গৃহস্থালী জিনিসপত্র, মৃৎপাত্র, প্রসাধনী সামগ্রী, মিঠাই-মিষ্টান্নসহ সব কিছু পাওয়া যায়। বছরের এই দিনটিতে বউ মেলাকে ঘিরে এলাকার ঘরে ঘরে জামাই-ঝিকে নাইওরে আনা হয়। ফলে এলাকায় নারীদের মাঝে ওরস উপলক্ষে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
মেলায় আগত নববধু রুমা, গৃহবধু স্বর্ণালী, বৃদ্ধা রমিছা বেগমসহ আরো অনেকেই জানান, বছর জুড়ে আমাদের তেমন একটা বাড়ির বাইরে আসা হয়না। মেলাকে উপলক্ষ করে অনেক পুরানো সইদের সাথে দেখা হয়েছে। কথা হয়েছে আত্বীয় স্বজনদের সাথে। মেলায় আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কিনে থাকি। তাই প্রতিবছর আমরা এই দিনটির জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করি। কিশোরী রোজিনা খাতুন, মিতু সরকার, বন্যা খাতুন, সাবিনা পারভিন, সেতু রাণী কিনেছেন নেইলপলিস, মাথার ব্যান্ড, কাঁচের চুড়ি। ছোট ভাই-বোনের জন্য কিনেছেন বাঁশি, বেলুন, পটকা এবং মুখরোচক সব খাবার। পড়ালেখার চাপ আর সংসারে কাজ থাকলেও সারা বছর অপেক্ষা শেষে মেলায় ছুটে আসেন আজকের এই দিনটিতে।
শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজারের মুতাওল্লি আব্দুল হাই সরকার বলেন, ভারতের আজমীর শরীফের পীর খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর (রহ.) আধ্যাত্মিক হাজী শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজারে তিনদিন ব্যাপী বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠিত হয়। ওরস উপলক্ষে শেষের দিন শনিবার থেকে ওই ঐতিহ্যবাহী বউ মেলার আয়োজন করা হয়। হাজার হাজার নারীদের উপস্থিতিতে মেলার স্থল সরগরম হয়ে ওঠে। বিশেষ করে দুই দিনের জন্য বউ-শাশুড়িরা কেনাকাটায় মেতে ওঠেন। এতে ঐতিহ্যবাহী বউ মেলা এলাকায় বউ-শাশুড়ির মিলনমেলায় পরিণত হয়।
আব্দুল হাই আরও বলেন, হাজী শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ) মাজারে ৩ দিন ব্যাপী বার্ষিক ওরস শেষে দানবাক্স খুলে টাকা গণণা করা হয়। পরে টাকাগুলো গণনার পরে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে উপজেলার ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়।
বাখ//আর

নিউজটি শেয়ার করুন

তাড়াশে দু’দিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বউ মেলা

আপডেট সময় : ১২:৫৬:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.)  এর ওরশ শরীফ উপলক্ষে প্রতি বছরের চৈত্র্য মাসের প্রথম গ্রামীণ ঐতিহ্য হিসেবে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে বউ মেলা। দিনটি উপলক্ষে সিরাজগঞ্জ,পাবনা, নাটোর এই তিন জেলার মিলনস্থল নওগাঁ গ্রামের করতোয়া নদীর তীরে জমজমাট মেলা বসেছে। সেখানে শত শত বউ-শাশুড়ি উৎসবের আমেজে দিনভর কেনাকাটা করেছেন।
শনিবার (১৬ মার্চ) বিকেল থেকে তাড়াশ উপজেলায় শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজারে এ বউ মেলা শুরু হয়েছে। মেলা রবিবার (১৭ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত চলবে। শত শত বউ-শাশুড়ি এ মেলায় উৎসবের আমেজে কেনাকাটা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভারতের আজমীর শরীফের পীর খাজা  মইনুদ্দিন চিশতী (রহঃ)’র আধ্যাত্মিক গুরু নওগাঁর হাজী শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ) মাজারে তিন দিন ব্যাপী বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠিত হয়। ওরস উপলক্ষে শেষের দিন অর্থাৎ শনিবার ওই ঐতিহ্যবাহী বউ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া,পাবনার ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর ও নাটোরের গুরুদাসপুরের তিন জেলার শতশত নারীদের উপস্থিতিতে মেলা সরগরম হয়ে ওঠে। বিশেষ করে একদিনের জন্য বউ-শাশুড়িরা কেনাকাটায় মেতে ওঠেন। এতে করে ঐতিহ্যবাহী বউ মেলায় এলাকার বউ-শাশুড়ি মিলনমেলায় পরিণত হয়। মেলার বিশেষ আকর্ষণ কাঠ, বাঁশ, বেতসহ স্টিলের আসবাবপত্রসহ গৃহস্থালী জিনিসপত্র, মৃৎপাত্র, প্রসাধনী সামগ্রী, মিঠাই-মিষ্টান্নসহ সব কিছু পাওয়া যায়। বছরের এই দিনটিতে বউ মেলাকে ঘিরে এলাকার ঘরে ঘরে জামাই-ঝিকে নাইওরে আনা হয়। ফলে এলাকায় নারীদের মাঝে ওরস উপলক্ষে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
মেলায় আগত নববধু রুমা, গৃহবধু স্বর্ণালী, বৃদ্ধা রমিছা বেগমসহ আরো অনেকেই জানান, বছর জুড়ে আমাদের তেমন একটা বাড়ির বাইরে আসা হয়না। মেলাকে উপলক্ষ করে অনেক পুরানো সইদের সাথে দেখা হয়েছে। কথা হয়েছে আত্বীয় স্বজনদের সাথে। মেলায় আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কিনে থাকি। তাই প্রতিবছর আমরা এই দিনটির জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করি। কিশোরী রোজিনা খাতুন, মিতু সরকার, বন্যা খাতুন, সাবিনা পারভিন, সেতু রাণী কিনেছেন নেইলপলিস, মাথার ব্যান্ড, কাঁচের চুড়ি। ছোট ভাই-বোনের জন্য কিনেছেন বাঁশি, বেলুন, পটকা এবং মুখরোচক সব খাবার। পড়ালেখার চাপ আর সংসারে কাজ থাকলেও সারা বছর অপেক্ষা শেষে মেলায় ছুটে আসেন আজকের এই দিনটিতে।
শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজারের মুতাওল্লি আব্দুল হাই সরকার বলেন, ভারতের আজমীর শরীফের পীর খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর (রহ.) আধ্যাত্মিক হাজী শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজারে তিনদিন ব্যাপী বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠিত হয়। ওরস উপলক্ষে শেষের দিন শনিবার থেকে ওই ঐতিহ্যবাহী বউ মেলার আয়োজন করা হয়। হাজার হাজার নারীদের উপস্থিতিতে মেলার স্থল সরগরম হয়ে ওঠে। বিশেষ করে দুই দিনের জন্য বউ-শাশুড়িরা কেনাকাটায় মেতে ওঠেন। এতে ঐতিহ্যবাহী বউ মেলা এলাকায় বউ-শাশুড়ির মিলনমেলায় পরিণত হয়।
আব্দুল হাই আরও বলেন, হাজী শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ) মাজারে ৩ দিন ব্যাপী বার্ষিক ওরস শেষে দানবাক্স খুলে টাকা গণণা করা হয়। পরে টাকাগুলো গণনার পরে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে উপজেলার ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়।
বাখ//আর