ঢাকা ০২:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না : ফখরুল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৩৬:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৪৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ডিআরইউতে আয়োজিত পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে শহিদ হওয়া সেনাদের স্মরণে বিএনপির আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের দেয়ালের লেখা পড়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, মানুষের চোখের ভাষা দেখেন। দেখবেন এই সরকারের প্রতি মানুষের শুধু ঘৃণা আর ঘৃণা। এই মুহূর্তে সবাই চায় এই সরকারের পরিবর্তন।

তিনি বলেন, এ সরকারের সঙ্গে রাজপথেই ফায়সালা হবে, আমরা ঐক্যবদ্ধ, ইতোমধ্যে রাজপথে নেমেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার না আসবে, ততক্ষণ কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের অস্তিত্ব সংকটে, বহুদলীয় গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে এ সরকার। জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা নেই বলেই সরকারের মন্ত্রীরা দায়িত্বহীন বক্তব্য দিচ্ছেন। জনগণের চোখের ভাষা পড়ুন, তারা এ সরকারের পরিবর্তন চায়।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, ১৯৭১ সালে যেমন যুদ্ধ করেছি নিজের দেশকে রক্ষা করার জন্য, স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য। আজকে ঠিক একইভাবে এ দেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য এবং মানুষকে বাঁচানোর জন্য, আমার অস্তিত্বকে রক্ষা করার জন্য, আমার স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য, আমার সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, যখনই তারা সরকারে এসেছে বেআইনিভাবে আসুক আর যেভাবে আসুক আবার জবরদখলভাবে আসুক তখনই এদেশের বড় ক্ষতি হয়েছে। ১৯৭২ সালে এবং ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল; ঠিক তখন একই কায়দায় আওয়ামী লীগ এদেশের সর্বনাশ করেছে। তারা দেশের সংবিধানকে ছিন্নভিন্ন করেছে। এদেশের মানুষ যে কারণে যুদ্ধ করেছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য, সেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভাবধারা ভেঙে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিল, সেদিনও তাদের দুঃশাসনের কারণে সেসময় দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। সে সময় তারা এ রাষ্ট্রকে একটা নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল, এখনও করছে।

দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক হতে হবে। এটা শুধু বিএনপির বা অন্য কোনো দলের জন্য নয়। দেশের মানুষের জন্য, দেশকে রক্ষা করার জন্য আজ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

বর্তমান সময়ে কেউ নিরাপদ নয় দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, কেউ এখানে নিরাপদ? এখানে বিএনপি নিরাপদ নয়, জাসদ নিরাপদ নয়, এখানে অন্যান্য ধর্ম পালন করে তারাও নিরাপদ নয়, এখানে আলেমরাও নিরাপদ নয়। কেউ নিরাপদ নয়। এ জন্য আজকে সকলকে একতাবদ্ধ হতে হবে।

পিলখানার ঘটনা প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ২৫ ফেব্রুয়ারির ঘটনা যেন আর কোনোদিন ঘটতে না পারে, সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম-লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে রাজপথে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটা গণবিপ্লব করে এদেরকে পরাজিত করতে হবে। এটাই হচ্ছে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।

বিএনপির চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গত আগস্ট মাস থেকে আমরা যখন চাল, ডাল, তেল ও লবণের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেছি, তখন থেকে সরকার গুলি করে আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ইতোমধ্যে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে, এখনও আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী কারাগারে। এই যে ভয়াবহ, এর থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (তারেক রহমান) আমাদের আহ্বান জানিয়েছেন যে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে নাও। তিনি বলেছেন, আজকে রাজপথেই ফয়সালা করতে হবে। বেগম খালেদা স্লোগান দিয়েছিলেন, সেই স্লোগান অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক যে- ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’। সেগুলোকে একসঙ্গে নিয়ে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

মেজর হাফিজের উদ্ধৃতি দিয়ে ফখরুল বলেন, মেজর হাফিজ খুব সুন্দর কথা বলেছেন- প্রতিবছর শুধু শোক দিবস পালন করব, প্রতি বছরে শুধু রোদন করব, তাতে কোনো লাভ হবে না। আজকে বেরিয়ে আসতে হবে, কোথায় আমাদের সেই তরুণ, কোথায় আমাদের সেই যুবক, কোথায় আমাদের সেই ছাত্ররা- যারা এই দেশে ইতিহাস তৈরি করেছে। যারা প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তের সামনে এসেছে, আজকে তাদের এগিয়ে আসতে হবে দেশকে বাঁচাতে।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ও ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না : ফখরুল

আপডেট সময় : ০২:৩৬:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ডিআরইউতে আয়োজিত পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে শহিদ হওয়া সেনাদের স্মরণে বিএনপির আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের দেয়ালের লেখা পড়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, মানুষের চোখের ভাষা দেখেন। দেখবেন এই সরকারের প্রতি মানুষের শুধু ঘৃণা আর ঘৃণা। এই মুহূর্তে সবাই চায় এই সরকারের পরিবর্তন।

তিনি বলেন, এ সরকারের সঙ্গে রাজপথেই ফায়সালা হবে, আমরা ঐক্যবদ্ধ, ইতোমধ্যে রাজপথে নেমেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার না আসবে, ততক্ষণ কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের অস্তিত্ব সংকটে, বহুদলীয় গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে এ সরকার। জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা নেই বলেই সরকারের মন্ত্রীরা দায়িত্বহীন বক্তব্য দিচ্ছেন। জনগণের চোখের ভাষা পড়ুন, তারা এ সরকারের পরিবর্তন চায়।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, ১৯৭১ সালে যেমন যুদ্ধ করেছি নিজের দেশকে রক্ষা করার জন্য, স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য। আজকে ঠিক একইভাবে এ দেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য এবং মানুষকে বাঁচানোর জন্য, আমার অস্তিত্বকে রক্ষা করার জন্য, আমার স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য, আমার সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, যখনই তারা সরকারে এসেছে বেআইনিভাবে আসুক আর যেভাবে আসুক আবার জবরদখলভাবে আসুক তখনই এদেশের বড় ক্ষতি হয়েছে। ১৯৭২ সালে এবং ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল; ঠিক তখন একই কায়দায় আওয়ামী লীগ এদেশের সর্বনাশ করেছে। তারা দেশের সংবিধানকে ছিন্নভিন্ন করেছে। এদেশের মানুষ যে কারণে যুদ্ধ করেছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য, সেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভাবধারা ভেঙে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিল, সেদিনও তাদের দুঃশাসনের কারণে সেসময় দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। সে সময় তারা এ রাষ্ট্রকে একটা নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল, এখনও করছে।

দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক হতে হবে। এটা শুধু বিএনপির বা অন্য কোনো দলের জন্য নয়। দেশের মানুষের জন্য, দেশকে রক্ষা করার জন্য আজ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

বর্তমান সময়ে কেউ নিরাপদ নয় দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, কেউ এখানে নিরাপদ? এখানে বিএনপি নিরাপদ নয়, জাসদ নিরাপদ নয়, এখানে অন্যান্য ধর্ম পালন করে তারাও নিরাপদ নয়, এখানে আলেমরাও নিরাপদ নয়। কেউ নিরাপদ নয়। এ জন্য আজকে সকলকে একতাবদ্ধ হতে হবে।

পিলখানার ঘটনা প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ২৫ ফেব্রুয়ারির ঘটনা যেন আর কোনোদিন ঘটতে না পারে, সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম-লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে রাজপথে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটা গণবিপ্লব করে এদেরকে পরাজিত করতে হবে। এটাই হচ্ছে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।

বিএনপির চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গত আগস্ট মাস থেকে আমরা যখন চাল, ডাল, তেল ও লবণের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেছি, তখন থেকে সরকার গুলি করে আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ইতোমধ্যে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে, এখনও আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী কারাগারে। এই যে ভয়াবহ, এর থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (তারেক রহমান) আমাদের আহ্বান জানিয়েছেন যে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে নাও। তিনি বলেছেন, আজকে রাজপথেই ফয়সালা করতে হবে। বেগম খালেদা স্লোগান দিয়েছিলেন, সেই স্লোগান অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক যে- ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’। সেগুলোকে একসঙ্গে নিয়ে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

মেজর হাফিজের উদ্ধৃতি দিয়ে ফখরুল বলেন, মেজর হাফিজ খুব সুন্দর কথা বলেছেন- প্রতিবছর শুধু শোক দিবস পালন করব, প্রতি বছরে শুধু রোদন করব, তাতে কোনো লাভ হবে না। আজকে বেরিয়ে আসতে হবে, কোথায় আমাদের সেই তরুণ, কোথায় আমাদের সেই যুবক, কোথায় আমাদের সেই ছাত্ররা- যারা এই দেশে ইতিহাস তৈরি করেছে। যারা প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তের সামনে এসেছে, আজকে তাদের এগিয়ে আসতে হবে দেশকে বাঁচাতে।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ও ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।