ঢাকা ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

চলনবিলে মুক্তা আহরণে নানা সমস্যা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:০৬:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৪৪৭ বার পড়া হয়েছে

ট্রেতে সাজানো চলনবিলের মুক্তা

বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শামছুর রহমান শিশির :

বৃহত্তর চলনবিল এলাকায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ঝিনুক চাষের মাধ্যেমে মুক্তা আহরণ করে বিদেশে রপ্তানি করে শতশত কোটি কোটি টাকা বৈদশিক মুদ্রা আয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে যথাযথ উদ্যোগ, পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর আর জনসচেতনতার অভাব এবং সুষ্ঠুভাবে বাজারজাতকরণের বিরাজিত সমস্যা দূরীকরণের উদ্যোগ না নেয়ায় বিপুল পরিমানে ব্যাপক সম্ভাবনাময় ওই মুক্তা আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, চাটমোহর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুরসহ বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের নদী-নালা, বীল ও জলাশয়ে ঝিনুক থেকে মুক্তা, চন্দ্রিকা, মতিপাল, চুমকি ও শ্বেতী আহরণ করা হয়ে থাকে। বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের নদী-নালা, খাল-বীল, ডোবা-পুকুরসহ বিস্তৃত জলসীমায় প্রাকৃতিক নিয়মে ঝিনুক জন্মে থাকে। এসব ঝিনুকের মধ্যে সাদা, গোধুলী, ধুসরসহ বিভিন্ন রং ও আকারের মুক্তা ও মতিপাল জন্মে থাকে। এ অঞ্চল থেকে বছরে হাজার হাজার মণ ঝিনুক আহরণ করা হয়। ঝিনুক আহরণকারীদের সিংহভাগই অদক্ষ, আনাড়ি ও কচি কাঁচা। তাদের এ কাজে সম্যক জ্ঞান না থাকায় ও ঝিনুক থেকে মুক্তা আহরণের সঠিক পদ্ধতি জানা না থাকায় চলনবিলে জন্ম নেওয়া বিপুল পরিমান মুক্তা আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ওইসব ঝিনুকের মধ্যে জন্ম নেওয়া মুক্তার সিংহভাগই চলনবিলের নদী-নালা, খাল-বীল ও বিস্তৃর্ণ জলসীমাভ্যান্তরেই থেকে যাচ্ছে। পাশাপাশি সচেতনতার অভাবে এ অঞ্চলের হৎদরিদ্র জেলেরা অজ্ঞতার বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে উঠতে না পেরে বিলাঞ্চলে জন্মানো সিংহভাগ মুক্তা, চন্দ্রিকা, মতিপাল, চুমকি ও শ্বেতী আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে অদক্ষ আনাড়ি জেলেরা ও জেলে কর্তৃক পরিচালিত অদক্ষ কচিকাঁচারা চলবিলাঞ্চল থেকে বছরে মাত্র প্রায় দেড় কোটি টাকার মুক্তা আহরণ করছে।

জানা গেছে, দেশের কক্সবাজার ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা এবং উত্তরাঞ্চলের রংপুরের বিভিন্ন ঝিনুকের হ্যাচারিতে কৃত্রিম উপায়ে উৎপাদিত মুক্তার গুণগত মানের চেয়ে সমুদ্রে ও বিল অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ঝিনুক থেকে আহরিত মুক্তা বহুগুণে মানসম্পন্ন। শুধু তাই নয়, প্রাকৃতিক উপায়ে বিলাঞ্চলে ও সমুদ্রে উৎপাদিত মুক্তার দাম কৃত্রিম উপায়ে উৎপাদিত মুক্তার দামের চেয়েও কয়েকগুণ বেশী দামে বিক্রি হয়।

সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলা পৌর এলাকার মণিরামপুর বাজারস্থ যমুনা জুয়েলার্সের স্বত্ত¡াধিকারী প্রকাশ অধিকারী এ প্রতিনিধিকে জানান, ‘দেশে কৃত্রিম উপায়ে ঝিনুকের হ্যাচারিতে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে যে ধরনের মুক্তা উৎপাদিন করা হচ্ছে তা স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারকদের কাছে আকার ও প্রকারভেদে ভরিপ্রতি দেড়শ’ থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সমুদ্র ও বিলাঞ্চলের ঝিনুকের অভ্যান্তরে জন্ম নেয়া মুক্তার দাম ক্যারেটপ্রতি প্রায় ৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ কৃত্রিম উপায়ে ঝিনুকের হ্যাচারীতে উৎপাদিত মুক্তার মান ও দামের তুলনায় সমুদ্রগর্ভে ও বিলাঞ্চল থেকে আহরণ করা মুক্তার মান ও দাম বহুগুণে বেশী। এছাড়া, সমুদ্রগর্ভে ও বিলাঞ্চল থেকে অহরিত মুক্তা যদি বিদেশে রপ্তানি করা যায় তাহলে দেশীয় বাজারে বিক্রিকৃত প্রাকৃতিকভাবে আহরিত মুক্তার দামের চেয়েও অনেক বেশী মূল্যে রপ্তানি করা সম্ভব।’

জনশ্রতি রয়েছে, বৃহত্তর চলনবিলে জন্ম নেয়া মুক্তা, চন্দ্রিকা, মতিপাল, চুমকি ও শ্বেতীর গুণগত মানের কথা বিদেশেও প্রচলিত রয়েছে। এ অঞ্চলে ঝিনুকের মাঝে জন্ম নেওয়া মুক্তার মান ও গুণ ভালো হওয়ায় বিদেশে রপ্তানির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, চাটমোহর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুরসহ বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের জেলেরা অবসর সময়ে বসে না থেকে নদী-নালা, বীল, ডোবা পুকুরসহ বিস্তৃর্ণ জলসীমা থেকে প্রাথমিক অবস্থায় মুক্তা সংগ্রহের পর ঝিনুকের খোল থেকে চুন তৈরি করছে। মুক্তার দাম নীর্ভর করে এর রং, সৌন্দর্য, মাধুর্য, আকৃতি এর ওপর। মুক্তা সোনার গহনাসহ অলংকারের শোভাবর্ধনের কাজে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া মুক্তা থেকে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ তৈরি করা হয়। গুটিবসন্ত, হৃদরোগ, হাড় ও দাতের রোগের প্রতিষেধক হিসাবে মুক্তা ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। নানা গুণে গুনান্বিত এ মুক্তা সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে দক্ষ জনশক্তির মাধ্যমে চাষাবাদ ও আহরণ করা হলে জাতীয় অর্থনীতিতে নিঃসন্দেহে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে বিজ্ঞ মহল মনে করেন।
জানা গেছে, গবেষনা ও মুক্তা আহরণের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলে বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের শতকরা প্রায় ৮০ শতাংশ মুক্তা সংগ্রহ করা সম্ভব যার মুল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। দেশে মুক্তা বাজারজাতকরনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় সংগ্রহকারী হৎদরিদ্র জেলে ও কঁিচকাচারা চলনবিল অঞ্চল থেকে আহরিত প্রায় ২০ শতাংশ মুক্তা বিভিন্ন স্বর্ণকারদের কাছে পানির দরে বিক্রি করছে। ফলে ওইসব শত শত হাজার হাজার চির অবহেলিত, পতিত, অপাংক্তেয় জেলেদের ভাগ্যোন্নয়ন না হলেও অজ্ঞতাজনিত কারণে স্বর্ণকার স¤প্রদায় চলনবিলে আহরিত মূল্যবান মুক্তা ক্রয় করে বেশ লাভবান হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় মুক্তা সংগ্রহকারীদের মাঝে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহন ও পৃষ্ঠপোষকতা করা হলে মুক্তা আহরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বছরে কোটি কোটি টাকায় আয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় এক নবদিগন্তের সূচনা ঘটবে। ফলে ভাগ্যবিড়ম্বিত হৎদরিদ্র জেলে স¤প্রদায়সহ চলনবিলের মুক্তা আহরনকারীরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলস্বী হয়ে উঠবে। এ অঞ্চলের মুক্তা বিদেশে রফতানি করে বছরে কোটি কোটি টাকা বৈদশিক মুদ্রাও অর্জন করা সম্ভব। আর এটি সম্ভব হলে নিঃসন্দেহে জাতীয় অর্থনীতিতে এর সুপ্রভাব পড়বে বলে বিজ্ঞমহল মনে করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

চলনবিলে মুক্তা আহরণে নানা সমস্যা

আপডেট সময় : ০৫:০৬:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২

শামছুর রহমান শিশির :

বৃহত্তর চলনবিল এলাকায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ঝিনুক চাষের মাধ্যেমে মুক্তা আহরণ করে বিদেশে রপ্তানি করে শতশত কোটি কোটি টাকা বৈদশিক মুদ্রা আয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে যথাযথ উদ্যোগ, পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর আর জনসচেতনতার অভাব এবং সুষ্ঠুভাবে বাজারজাতকরণের বিরাজিত সমস্যা দূরীকরণের উদ্যোগ না নেয়ায় বিপুল পরিমানে ব্যাপক সম্ভাবনাময় ওই মুক্তা আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, চাটমোহর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুরসহ বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের নদী-নালা, বীল ও জলাশয়ে ঝিনুক থেকে মুক্তা, চন্দ্রিকা, মতিপাল, চুমকি ও শ্বেতী আহরণ করা হয়ে থাকে। বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের নদী-নালা, খাল-বীল, ডোবা-পুকুরসহ বিস্তৃত জলসীমায় প্রাকৃতিক নিয়মে ঝিনুক জন্মে থাকে। এসব ঝিনুকের মধ্যে সাদা, গোধুলী, ধুসরসহ বিভিন্ন রং ও আকারের মুক্তা ও মতিপাল জন্মে থাকে। এ অঞ্চল থেকে বছরে হাজার হাজার মণ ঝিনুক আহরণ করা হয়। ঝিনুক আহরণকারীদের সিংহভাগই অদক্ষ, আনাড়ি ও কচি কাঁচা। তাদের এ কাজে সম্যক জ্ঞান না থাকায় ও ঝিনুক থেকে মুক্তা আহরণের সঠিক পদ্ধতি জানা না থাকায় চলনবিলে জন্ম নেওয়া বিপুল পরিমান মুক্তা আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ওইসব ঝিনুকের মধ্যে জন্ম নেওয়া মুক্তার সিংহভাগই চলনবিলের নদী-নালা, খাল-বীল ও বিস্তৃর্ণ জলসীমাভ্যান্তরেই থেকে যাচ্ছে। পাশাপাশি সচেতনতার অভাবে এ অঞ্চলের হৎদরিদ্র জেলেরা অজ্ঞতার বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে উঠতে না পেরে বিলাঞ্চলে জন্মানো সিংহভাগ মুক্তা, চন্দ্রিকা, মতিপাল, চুমকি ও শ্বেতী আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে অদক্ষ আনাড়ি জেলেরা ও জেলে কর্তৃক পরিচালিত অদক্ষ কচিকাঁচারা চলবিলাঞ্চল থেকে বছরে মাত্র প্রায় দেড় কোটি টাকার মুক্তা আহরণ করছে।

জানা গেছে, দেশের কক্সবাজার ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা এবং উত্তরাঞ্চলের রংপুরের বিভিন্ন ঝিনুকের হ্যাচারিতে কৃত্রিম উপায়ে উৎপাদিত মুক্তার গুণগত মানের চেয়ে সমুদ্রে ও বিল অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ঝিনুক থেকে আহরিত মুক্তা বহুগুণে মানসম্পন্ন। শুধু তাই নয়, প্রাকৃতিক উপায়ে বিলাঞ্চলে ও সমুদ্রে উৎপাদিত মুক্তার দাম কৃত্রিম উপায়ে উৎপাদিত মুক্তার দামের চেয়েও কয়েকগুণ বেশী দামে বিক্রি হয়।

সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলা পৌর এলাকার মণিরামপুর বাজারস্থ যমুনা জুয়েলার্সের স্বত্ত¡াধিকারী প্রকাশ অধিকারী এ প্রতিনিধিকে জানান, ‘দেশে কৃত্রিম উপায়ে ঝিনুকের হ্যাচারিতে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে যে ধরনের মুক্তা উৎপাদিন করা হচ্ছে তা স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারকদের কাছে আকার ও প্রকারভেদে ভরিপ্রতি দেড়শ’ থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সমুদ্র ও বিলাঞ্চলের ঝিনুকের অভ্যান্তরে জন্ম নেয়া মুক্তার দাম ক্যারেটপ্রতি প্রায় ৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ কৃত্রিম উপায়ে ঝিনুকের হ্যাচারীতে উৎপাদিত মুক্তার মান ও দামের তুলনায় সমুদ্রগর্ভে ও বিলাঞ্চল থেকে আহরণ করা মুক্তার মান ও দাম বহুগুণে বেশী। এছাড়া, সমুদ্রগর্ভে ও বিলাঞ্চল থেকে অহরিত মুক্তা যদি বিদেশে রপ্তানি করা যায় তাহলে দেশীয় বাজারে বিক্রিকৃত প্রাকৃতিকভাবে আহরিত মুক্তার দামের চেয়েও অনেক বেশী মূল্যে রপ্তানি করা সম্ভব।’

জনশ্রতি রয়েছে, বৃহত্তর চলনবিলে জন্ম নেয়া মুক্তা, চন্দ্রিকা, মতিপাল, চুমকি ও শ্বেতীর গুণগত মানের কথা বিদেশেও প্রচলিত রয়েছে। এ অঞ্চলে ঝিনুকের মাঝে জন্ম নেওয়া মুক্তার মান ও গুণ ভালো হওয়ায় বিদেশে রপ্তানির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, চাটমোহর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুরসহ বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের জেলেরা অবসর সময়ে বসে না থেকে নদী-নালা, বীল, ডোবা পুকুরসহ বিস্তৃর্ণ জলসীমা থেকে প্রাথমিক অবস্থায় মুক্তা সংগ্রহের পর ঝিনুকের খোল থেকে চুন তৈরি করছে। মুক্তার দাম নীর্ভর করে এর রং, সৌন্দর্য, মাধুর্য, আকৃতি এর ওপর। মুক্তা সোনার গহনাসহ অলংকারের শোভাবর্ধনের কাজে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া মুক্তা থেকে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ তৈরি করা হয়। গুটিবসন্ত, হৃদরোগ, হাড় ও দাতের রোগের প্রতিষেধক হিসাবে মুক্তা ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। নানা গুণে গুনান্বিত এ মুক্তা সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে দক্ষ জনশক্তির মাধ্যমে চাষাবাদ ও আহরণ করা হলে জাতীয় অর্থনীতিতে নিঃসন্দেহে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে বিজ্ঞ মহল মনে করেন।
জানা গেছে, গবেষনা ও মুক্তা আহরণের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলে বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের শতকরা প্রায় ৮০ শতাংশ মুক্তা সংগ্রহ করা সম্ভব যার মুল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। দেশে মুক্তা বাজারজাতকরনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় সংগ্রহকারী হৎদরিদ্র জেলে ও কঁিচকাচারা চলনবিল অঞ্চল থেকে আহরিত প্রায় ২০ শতাংশ মুক্তা বিভিন্ন স্বর্ণকারদের কাছে পানির দরে বিক্রি করছে। ফলে ওইসব শত শত হাজার হাজার চির অবহেলিত, পতিত, অপাংক্তেয় জেলেদের ভাগ্যোন্নয়ন না হলেও অজ্ঞতাজনিত কারণে স্বর্ণকার স¤প্রদায় চলনবিলে আহরিত মূল্যবান মুক্তা ক্রয় করে বেশ লাভবান হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় মুক্তা সংগ্রহকারীদের মাঝে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহন ও পৃষ্ঠপোষকতা করা হলে মুক্তা আহরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বছরে কোটি কোটি টাকায় আয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় এক নবদিগন্তের সূচনা ঘটবে। ফলে ভাগ্যবিড়ম্বিত হৎদরিদ্র জেলে স¤প্রদায়সহ চলনবিলের মুক্তা আহরনকারীরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলস্বী হয়ে উঠবে। এ অঞ্চলের মুক্তা বিদেশে রফতানি করে বছরে কোটি কোটি টাকা বৈদশিক মুদ্রাও অর্জন করা সম্ভব। আর এটি সম্ভব হলে নিঃসন্দেহে জাতীয় অর্থনীতিতে এর সুপ্রভাব পড়বে বলে বিজ্ঞমহল মনে করেন।