ঢাকা ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গুরুদাসপুরে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে শষ্য ক্ষেত ফিরে পেলো প্রাণ

জনি পারভেজ, গুরুদাসপুর প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৮:২২:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪
  • / ৪৮১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
শষ্য ক্ষেতে সেঁচ বন্ধ করায় পানির অভাবে ফেটে চৌঁচির হচ্ছিলো বোরো ক্ষেত। অপরিপক্ক ভুট্টা-রসুনেও সেঁচ সুবিধা বন্ধ করে ফসল বিনিষ্ট করা হচ্ছিল। উদ্দেশ্য ছিল গুরুদাসপুরের কুমারখালী উত্তরপাড়া কাঁচা সড়কের কোল ঘেঁষে অন্তত ২০ বিঘা ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা।
এ কারণে শষ্য ক্ষেতে সপ্তাহ খানেক ধরে সেঁচ সুবিধা বন্ধ করে রেখে ছিলেন প্রভাবশালীরা। তবে স্থানীয় কয়েক’শ কৃষকের প্রতিবাদের মুখে তিন ফসলি এসব জমিতে পুকুর খননের প্রস্তুতি বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. সালমা আক্তার। শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে তিনি সরেজমিনে ফসলের ক্ষেত্রে গিয়ে বোরো ধান, ভুট্টা, ধনিয়া এবং রসুনের জমিতে সেঁচ স্বচল করেন। তাৎক্ষণিক পাশের বরেন্দ্রের স্কীম থেকে ফেটে চৌঁচির হওয়া বোরো ক্ষেতে পানি দেয়া হয়। এতে প্রাণ ফিরে পায় ধান গাছগুলো।
এর আগে পুকুর খনন না করার দাবিতে শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে ফসলি জমির ভেতর দাঁড়িয়ে মানববন্ধনের মাধ্যমে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন স্থানীয় কয়েক’শ কৃষক।
কৃষকেরা জানান, গুরুদাসপুরের বিয়াঘাট ইউনিয়নের কুমারখালী উত্তরপাড়া বিলের জমিতে বছরজুড়েই ফসল উৎপন্ন হয়। ক্ষেতে নির্বিঘ্ন সেঁচ সুবিধা দিতে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে পানির লাইন নির্মাণ করছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। অথচ একই গ্রামের মৃত সদর উদ্দিন মতালেব দুই প্রভাবশালী ছেলে আব্দুল হাকিম ও আব্দুল মমিন নিজেদের দশ বিঘাসহ পাশের আরও দশ বিঘা জমিতে পুকুর খননের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ কারণে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বোরো ধান, রসুন এবং ভুট্টা ক্ষেতে সেঁচ দেয়া বন্ধ ছিল। ফলে ধানগাছগুলো লালচে হয়ে উঠেছে ছিল। ইউএনও’র হস্তক্ষেপে পুনরায় সেঁচ চালু করায় পানি পেয়ে ধাণগাছগুলো আবারো প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
কুমারখালী মাঠে জমি থাকা জমসেদ আলী, মুঞ্জুর আলম, সোলায়মান আলী, শাজাহান আলী, আব্দুল কাদেরসহ অন্তত ২০ জন কৃষক বলেন, কুমারখালী উত্তরপাড়া বিলে অন্তত ২ হাজার বিঘা ফসলি জমি রয়েছে। সেসব জমিতে ধান, পাট, ভুট্টা, রসুন, ধনিয়াসহ সব ধরণের শষ্য চাষাবাদ করা হয়। প্রভাবশালীরা বিলের মুখে ২০ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করলে আশেপাশের অন্তত ৫০ বিঘা জমিতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষক। জলাবদ্ধতার পাশাপাশি কৃষকদের মাঠে চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। সার-বীজ বা চাষের জন্য ভোগান্তিতে পড়তে হবে কৃষকদের। তাই তারা তিন ফসলি এসব জমিতে পুকুর খনন চাননা।
পুকুর খননের প্রস্তুতি নেওয়া আব্দুল হাকিম ও আব্দুল মমিন জানান, নিজেদের লিজ দেয়া দশ বিঘা জমিসহ পাশের আরো দশ বিঘা জমিতে তারা পুকুর খননের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ কারণে ফসলের ক্ষেতে সেঁচ কাজ বন্ধ করা হয়েছিল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার জানান, কুমারখালী বিলের বোরো ক্ষেতে সেঁচ কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন স্থানীয় পুকুর খনন চক্রের লোকজন। খবর পেয়ে তিনি মাঠে গিয়ে ক্ষেতে সেঁচ সুবিধা চালু করে দিয়েছেন। একই সাথে তিন ফসলি এসব জমিতে পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষকদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

গুরুদাসপুরে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে শষ্য ক্ষেত ফিরে পেলো প্রাণ

আপডেট সময় : ০৮:২২:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪
শষ্য ক্ষেতে সেঁচ বন্ধ করায় পানির অভাবে ফেটে চৌঁচির হচ্ছিলো বোরো ক্ষেত। অপরিপক্ক ভুট্টা-রসুনেও সেঁচ সুবিধা বন্ধ করে ফসল বিনিষ্ট করা হচ্ছিল। উদ্দেশ্য ছিল গুরুদাসপুরের কুমারখালী উত্তরপাড়া কাঁচা সড়কের কোল ঘেঁষে অন্তত ২০ বিঘা ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা।
এ কারণে শষ্য ক্ষেতে সপ্তাহ খানেক ধরে সেঁচ সুবিধা বন্ধ করে রেখে ছিলেন প্রভাবশালীরা। তবে স্থানীয় কয়েক’শ কৃষকের প্রতিবাদের মুখে তিন ফসলি এসব জমিতে পুকুর খননের প্রস্তুতি বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. সালমা আক্তার। শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে তিনি সরেজমিনে ফসলের ক্ষেত্রে গিয়ে বোরো ধান, ভুট্টা, ধনিয়া এবং রসুনের জমিতে সেঁচ স্বচল করেন। তাৎক্ষণিক পাশের বরেন্দ্রের স্কীম থেকে ফেটে চৌঁচির হওয়া বোরো ক্ষেতে পানি দেয়া হয়। এতে প্রাণ ফিরে পায় ধান গাছগুলো।
এর আগে পুকুর খনন না করার দাবিতে শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে ফসলি জমির ভেতর দাঁড়িয়ে মানববন্ধনের মাধ্যমে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন স্থানীয় কয়েক’শ কৃষক।
কৃষকেরা জানান, গুরুদাসপুরের বিয়াঘাট ইউনিয়নের কুমারখালী উত্তরপাড়া বিলের জমিতে বছরজুড়েই ফসল উৎপন্ন হয়। ক্ষেতে নির্বিঘ্ন সেঁচ সুবিধা দিতে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে পানির লাইন নির্মাণ করছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। অথচ একই গ্রামের মৃত সদর উদ্দিন মতালেব দুই প্রভাবশালী ছেলে আব্দুল হাকিম ও আব্দুল মমিন নিজেদের দশ বিঘাসহ পাশের আরও দশ বিঘা জমিতে পুকুর খননের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ কারণে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বোরো ধান, রসুন এবং ভুট্টা ক্ষেতে সেঁচ দেয়া বন্ধ ছিল। ফলে ধানগাছগুলো লালচে হয়ে উঠেছে ছিল। ইউএনও’র হস্তক্ষেপে পুনরায় সেঁচ চালু করায় পানি পেয়ে ধাণগাছগুলো আবারো প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
কুমারখালী মাঠে জমি থাকা জমসেদ আলী, মুঞ্জুর আলম, সোলায়মান আলী, শাজাহান আলী, আব্দুল কাদেরসহ অন্তত ২০ জন কৃষক বলেন, কুমারখালী উত্তরপাড়া বিলে অন্তত ২ হাজার বিঘা ফসলি জমি রয়েছে। সেসব জমিতে ধান, পাট, ভুট্টা, রসুন, ধনিয়াসহ সব ধরণের শষ্য চাষাবাদ করা হয়। প্রভাবশালীরা বিলের মুখে ২০ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করলে আশেপাশের অন্তত ৫০ বিঘা জমিতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষক। জলাবদ্ধতার পাশাপাশি কৃষকদের মাঠে চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। সার-বীজ বা চাষের জন্য ভোগান্তিতে পড়তে হবে কৃষকদের। তাই তারা তিন ফসলি এসব জমিতে পুকুর খনন চাননা।
পুকুর খননের প্রস্তুতি নেওয়া আব্দুল হাকিম ও আব্দুল মমিন জানান, নিজেদের লিজ দেয়া দশ বিঘা জমিসহ পাশের আরো দশ বিঘা জমিতে তারা পুকুর খননের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ কারণে ফসলের ক্ষেতে সেঁচ কাজ বন্ধ করা হয়েছিল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার জানান, কুমারখালী বিলের বোরো ক্ষেতে সেঁচ কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন স্থানীয় পুকুর খনন চক্রের লোকজন। খবর পেয়ে তিনি মাঠে গিয়ে ক্ষেতে সেঁচ সুবিধা চালু করে দিয়েছেন। একই সাথে তিন ফসলি এসব জমিতে পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষকদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি।