ঢাকা ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গাজীপুরে বিটিউটিশয়ান হত্যা : আটক ২

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:২২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ জুন ২০২৩
  • / ৪৬৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// কাজী মকবুল, গাজীপুর //

গাজীপুর মহানগরীর আদাবই সাইনবোর্ড এলাকা থেকে রোববার রাতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রুবিনা খাতুন (২৯) নামে এক বিউটিশিয়ানের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রুবিনার স্বামীর মৃদুল (৩২), গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের খুদেবরমী এলাকার নিতাই ঘোষ।
তবে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার দুই নিকটাত্মীয়কে আটক করেছে পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করেনি সদর থানার ওসি মো. জিয়াউল ইসলাম। মৃদুল পলাতক রয়েছে। তাকেও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেন তিনি।
রুবিনা, গাজীপুর মহানগরীর আদাবই এলাকার আব্দুস সালামের মেয়ে। তিনি প্রায় তিন বছর ধরে বাবার জমিতে ’রাজকণ্যা বিউটিপার্লার’ স্থাপন করে পার্লার ব্যবসা চালাচ্ছিলেন।

মেয়ের বাবা সালাম জানান, প্রায় তিনবছর আগে রুবিনা তাদের বাড়ির পাশে আদাবই সাইনবোর্ড এলাকায় ’রাজকণ্যা বিউটিপার্লার’ স্থাপন করে বিউটি পার্লারের ব্যবসা শুরু করেন। প্রায় দেড় বছর আগে রুবিনার সঙ্গে প্রেম করে মৃদুলের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে মৃদুল ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হন। এটি ছিল রুবিনার দ্বিতীয় বিয়ে। কিন্তু মৃদুলের এটি ছিল প্রথম বিয়ে। রুবিনার আগের সংসারের পাঁচ বছরের মেয়ে রিয়া মনিকে নিয়ে মৃদৃলের সঙ্গে বিয়ে হয়। মৃদুল বিয়ের পর থেকে স্ত্রী রুবিনা ও তার মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরের দেয়া বাড়িতেই বসবাস করতেন। বিয়ের পর মৃদুলকে স্থানীয় একটি কার্টন কারখানায় চাকুরি নিয়ে দেন শ্বশুড়। কিন্তু এক মাস চাকুরি করার পরই চাকুরি ছেড়ে দেন মৃদুল। এরপর থেকে মৃদুল বেকার হয়ে পড়েন এবং স্ত্রীর কাছে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করতেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময় ঝগড়া হতো। তাদের মধ্যে কলহের জেরে মৃদুল ইতোপূর্বেও রুবিনাকে দুইবার গলায় ওড়না ঢুকিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। তারপরও রুবিনা বারবার স্বামী ত্যাগের বদনামের কথা চিন্তা করে ও নির্যাতন সহ্য করে মৃদুলের সঙ্গেই ঘর-সংসার চালিয়ে যেতে থাকেন। সম্প্রতি তারা আলাদাভাবে জীবন যাপন শুরু করেন। রোববার রাতে রুবিনার মা আছিয়া বিবি মেয়ে রুবিনাক খাবার দিতে গিয়ে ঘরে তার হাতপা বাধা লাশ দেখতে পান এবং পুলিশে খবর দেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়াউল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ রাত ১০টার দিকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। রুবিনা তার বাড়ির কাছে একটি রাজকণ্যা নামের একটি বিউটি পার্লার চালাতেন। পার্লারের সঙ্গেই একটি কক্ষে তিনি বসবাস করতেন। রোববার রাতে রুবিনার মা মেয়ের ঘরে খাবার দিতে গিয়ে মেয়েকে ওড়নায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। স্বামীর কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার দুই নিকটাত্মীয়কে আটক করেছে পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

ওসি আরও জানান, তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যাকান্ড হয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে রুবিনার মা আছিয়া বেগম বাদি হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মৃদুল পলাতক রয়েছে। তাকেও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজীপুরে বিটিউটিশয়ান হত্যা : আটক ২

আপডেট সময় : ০৪:২২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ জুন ২০২৩

// কাজী মকবুল, গাজীপুর //

গাজীপুর মহানগরীর আদাবই সাইনবোর্ড এলাকা থেকে রোববার রাতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রুবিনা খাতুন (২৯) নামে এক বিউটিশিয়ানের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রুবিনার স্বামীর মৃদুল (৩২), গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের খুদেবরমী এলাকার নিতাই ঘোষ।
তবে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার দুই নিকটাত্মীয়কে আটক করেছে পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করেনি সদর থানার ওসি মো. জিয়াউল ইসলাম। মৃদুল পলাতক রয়েছে। তাকেও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেন তিনি।
রুবিনা, গাজীপুর মহানগরীর আদাবই এলাকার আব্দুস সালামের মেয়ে। তিনি প্রায় তিন বছর ধরে বাবার জমিতে ’রাজকণ্যা বিউটিপার্লার’ স্থাপন করে পার্লার ব্যবসা চালাচ্ছিলেন।

মেয়ের বাবা সালাম জানান, প্রায় তিনবছর আগে রুবিনা তাদের বাড়ির পাশে আদাবই সাইনবোর্ড এলাকায় ’রাজকণ্যা বিউটিপার্লার’ স্থাপন করে বিউটি পার্লারের ব্যবসা শুরু করেন। প্রায় দেড় বছর আগে রুবিনার সঙ্গে প্রেম করে মৃদুলের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে মৃদুল ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হন। এটি ছিল রুবিনার দ্বিতীয় বিয়ে। কিন্তু মৃদুলের এটি ছিল প্রথম বিয়ে। রুবিনার আগের সংসারের পাঁচ বছরের মেয়ে রিয়া মনিকে নিয়ে মৃদৃলের সঙ্গে বিয়ে হয়। মৃদুল বিয়ের পর থেকে স্ত্রী রুবিনা ও তার মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরের দেয়া বাড়িতেই বসবাস করতেন। বিয়ের পর মৃদুলকে স্থানীয় একটি কার্টন কারখানায় চাকুরি নিয়ে দেন শ্বশুড়। কিন্তু এক মাস চাকুরি করার পরই চাকুরি ছেড়ে দেন মৃদুল। এরপর থেকে মৃদুল বেকার হয়ে পড়েন এবং স্ত্রীর কাছে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করতেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময় ঝগড়া হতো। তাদের মধ্যে কলহের জেরে মৃদুল ইতোপূর্বেও রুবিনাকে দুইবার গলায় ওড়না ঢুকিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। তারপরও রুবিনা বারবার স্বামী ত্যাগের বদনামের কথা চিন্তা করে ও নির্যাতন সহ্য করে মৃদুলের সঙ্গেই ঘর-সংসার চালিয়ে যেতে থাকেন। সম্প্রতি তারা আলাদাভাবে জীবন যাপন শুরু করেন। রোববার রাতে রুবিনার মা আছিয়া বিবি মেয়ে রুবিনাক খাবার দিতে গিয়ে ঘরে তার হাতপা বাধা লাশ দেখতে পান এবং পুলিশে খবর দেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়াউল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ রাত ১০টার দিকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। রুবিনা তার বাড়ির কাছে একটি রাজকণ্যা নামের একটি বিউটি পার্লার চালাতেন। পার্লারের সঙ্গেই একটি কক্ষে তিনি বসবাস করতেন। রোববার রাতে রুবিনার মা মেয়ের ঘরে খাবার দিতে গিয়ে মেয়েকে ওড়নায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। স্বামীর কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার দুই নিকটাত্মীয়কে আটক করেছে পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

ওসি আরও জানান, তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যাকান্ড হয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে রুবিনার মা আছিয়া বেগম বাদি হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মৃদুল পলাতক রয়েছে। তাকেও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেন তিনি।