ঢাকা ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে নিহত হচ্ছে একটি শিশু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৩৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৫৩৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকর্মী সংগঠন হামাসের অপারেশন আল-আকসা ফ্লাডের এক মাস পূর্ণ হলো আজ। হামাস-ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে গাজায় ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বহু। একই সময়ে ধ্বংসস্তুপের নীচে চাপা পড়ে আছেন বহু মানুষের মরদেহ। তাদের বড় একটি অংশই শিশু ও বৃদ্ধ। ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি (ইউএনআরডব্লিউএ) সোমবার (৬ নভেম্বর) জানিয়েছে, গাজায় গত এক মাসে গড়ে প্রতি ১০ মিনিটে ইসরায়েলি হামলায় একজন ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে। খবর আনাদোলু এজেন্সি।

মাইক্রো ব্লগিং প্লাটফর্ম এক্সে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, যুদ্ধের সময় প্রতি ১০ মিনিটে গড়ে এক শিশু নিহত হয় ও দুজন আহত হচ্ছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা শহরের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত ও কয়েক ডজন আহত হয়েছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ আঘাতের শিকার হয়েছে আল-নাসের চিলড্রেনস হাসপাতাল, রান্টিসি স্পেশালাইজড হাসপাতাল, চক্ষু হাসপাতাল এবং সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল।

সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালের জেনারেল ডিরেক্টর জামিল সুলেমান বলেন, ‘গাজার হাসপাতালগুলোতে ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত থাকলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো কাজে আসবে না।’

জামিল সুলেমান আরও বলেন, ‌’যদি একজন রোগীর চিকিৎসা অধিকারের কোনো নিশ্চয়তা না থাকে, তাহলে একটি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা থাকার কোনো মানে নেই। যেখানে একটি জনগোষ্ঠীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে।’

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা চালালে ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়। এরপর হামাসকে লক্ষ্য করে হাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় ৪ হাজারেরও বেশি শিশুসহ প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজায় এখনও নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

সংঘাত থেকে ত্রাণকর্মীরাও বাদ যাচ্ছে না। গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইউএনআরডব্রিউএর ৮৮ জন কর্মী নিহত হয়েছেন। কোনো একটি সংঘাতে জাতিসংঘের কর্মী নিহত হওয়ায় এটি একটি রেকর্ড।

এছাড়া একমাস ধরে চলা এ সংঘাতে ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ১৭৫ জন চিকিৎসাকর্মী ও ৩৪ জন বেসামরিক প্রতিরক্ষাকর্মীও নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা।

ইসরায়েলি হামলার মুখে গাজা উপত্যকায় ২৩ লাখ মানুষ সব ধরনের মৌলিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তীব্র খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসা সংকটে ভুগছেন তারা। ধ্বংস হয়ে গেছে বাড়িঘর। এছাড়া ইসরায়েলি স্থল হামলার পর থেকে কয়েক দফা ইন্টারনেটসহ সব ধরনের যোগাযোগ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে, ফিলিস্তিনের মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবানিজ গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পতনকে একটি ‌‌’বিপর্যয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে নিহত হচ্ছে একটি শিশু

আপডেট সময় : ১০:৩৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর ২০২৩

ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকর্মী সংগঠন হামাসের অপারেশন আল-আকসা ফ্লাডের এক মাস পূর্ণ হলো আজ। হামাস-ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে গাজায় ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বহু। একই সময়ে ধ্বংসস্তুপের নীচে চাপা পড়ে আছেন বহু মানুষের মরদেহ। তাদের বড় একটি অংশই শিশু ও বৃদ্ধ। ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি (ইউএনআরডব্লিউএ) সোমবার (৬ নভেম্বর) জানিয়েছে, গাজায় গত এক মাসে গড়ে প্রতি ১০ মিনিটে ইসরায়েলি হামলায় একজন ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে। খবর আনাদোলু এজেন্সি।

মাইক্রো ব্লগিং প্লাটফর্ম এক্সে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, যুদ্ধের সময় প্রতি ১০ মিনিটে গড়ে এক শিশু নিহত হয় ও দুজন আহত হচ্ছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা শহরের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত ও কয়েক ডজন আহত হয়েছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ আঘাতের শিকার হয়েছে আল-নাসের চিলড্রেনস হাসপাতাল, রান্টিসি স্পেশালাইজড হাসপাতাল, চক্ষু হাসপাতাল এবং সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল।

সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালের জেনারেল ডিরেক্টর জামিল সুলেমান বলেন, ‘গাজার হাসপাতালগুলোতে ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত থাকলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো কাজে আসবে না।’

জামিল সুলেমান আরও বলেন, ‌’যদি একজন রোগীর চিকিৎসা অধিকারের কোনো নিশ্চয়তা না থাকে, তাহলে একটি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা থাকার কোনো মানে নেই। যেখানে একটি জনগোষ্ঠীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে।’

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা চালালে ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়। এরপর হামাসকে লক্ষ্য করে হাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় ৪ হাজারেরও বেশি শিশুসহ প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজায় এখনও নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

সংঘাত থেকে ত্রাণকর্মীরাও বাদ যাচ্ছে না। গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইউএনআরডব্রিউএর ৮৮ জন কর্মী নিহত হয়েছেন। কোনো একটি সংঘাতে জাতিসংঘের কর্মী নিহত হওয়ায় এটি একটি রেকর্ড।

এছাড়া একমাস ধরে চলা এ সংঘাতে ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ১৭৫ জন চিকিৎসাকর্মী ও ৩৪ জন বেসামরিক প্রতিরক্ষাকর্মীও নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা।

ইসরায়েলি হামলার মুখে গাজা উপত্যকায় ২৩ লাখ মানুষ সব ধরনের মৌলিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তীব্র খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসা সংকটে ভুগছেন তারা। ধ্বংস হয়ে গেছে বাড়িঘর। এছাড়া ইসরায়েলি স্থল হামলার পর থেকে কয়েক দফা ইন্টারনেটসহ সব ধরনের যোগাযোগ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে, ফিলিস্তিনের মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবানিজ গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পতনকে একটি ‌‌’বিপর্যয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।