ঢাকা ০১:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

খুলনায় সবজি পাইকারি থেকে খুচরায় মূল্য বেড়ে দুই-তিনগুণ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:২১:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৪৫৮ বার পড়া হয়েছে

খুলনায় সবজি পাইকারি থেকে খুচরায় মূল্য বেড়ে দুই-তিনগুণ

বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
আবু হেনা মুক্তি, খুলনা ব্যুরো :
খুলনায় পাইকার থেকে খুচরায় হাত বদলে দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা তরিতরকারি। সোনাডাঙ্গাস্থ ট্রাক টার্মিনালে কেসিসি পরিচালিত পাইকারী বাজারে খুলনাসহ আশপাশ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিভিন্ন ধরণের কাঁচা তরিতরকারি আসে। এখান থেকে বিভিন্ন জেলার বাজারগুলোতে সরবরাহ করা হয় শাক-সবজি। তবে বিশেষ সিন্ডিকেটের কারণে বাড়ছে এসব নিত্যপণ্যের দাম; কিন্তু নেই মনিটরিং বা তদারকি। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার প্রতিদিনের হিসাব মেলাতে পারছে না। সেইসাথে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছেন ভোক্তারা।
জানা গেছে, খুলনার সোনাডাঙ্গাস্থ ট্রাক টার্মিনালে দুই ধাপে কাঁচা তরিতরকারি আসে। ভোর থেকে রাত অবধি এখানে কাঁচা পণ্য কেনা-বেচা হয়ে থাকে। এখানে যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া ও খুলনার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কাঁচা পণ্য আসে। প্রতিদিনই কৃষকের মাঠ থেকে শীতকালীন সবজি বাজারে আসছে। বাহারি সব শাক-সবজিতে সেজে উঠেছে শহরের বাজারগুলো। কৃষকের উৎপাদিত এ সকল পণ্য ভোক্তা পর্যন্ত আসতে পাইকারী তিনহাত বদল হয়। বদলের ফলে বেড়ে যায় এ সকল পণ্যের মূল্য। কৃষকের কাছ থেকে ব্যাপারী আর ব্যাপারী থেকে পাইকার, সর্বশেষ খুচরা দোকানীর কাছে পৌঁছায় এসব কাঁচা পণ্য।
পাইকারী বাজারের বিভিন্ন আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজি প্রতি কেজি ফুলকপি ১০ টাকা, বাঁধাকপি ১৫ টাকা, ওলকপি ৮-৯ টাকা, মূলা ৪-৫ টাকা, পেঁয়াজের কালি ১০ টাকা, পালংশাক ৮ টাকা, লাল শাক ১০ টাকা, টমেটো মানভেদে ২৮-৪৫ টাকা, মটরশুটি ১০০ টাকা, ধনেপাতা ১৫ টাকা ও খেরাই ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পাইকারী বাজার থেকে খুচরা বাজারে হাত বদলেই দ্বিগুণ ও তিনগুণ দামে তা বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারী বাজার থেকে খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ২৫-৩০ টাকা, ওলকপি ২৫-৩০ টাকা, মূলা ২০ টাকা, পেঁয়াজের কালি ৩০ টাকা, পালং ও লাল শাক যথাক্রমে ২০-২৫ টাকা, টমাটো ৬০ টাকা, মটরশুটি ১২০ টাকা, খেরাই ৬০ টাকা ও ধনেপাতা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারী বাজারের ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, ‘এ বাজারে কৃষকের মাঠ থেকে কাঁচা পণ্যটি ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে তিন হাত বদল হয়। ব্যাপারীরা আমাদের ঘর ব্যবহার করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। প্রতি কেজিতে আমরা পাইকারদের কাছে ১ টাকা আড়ৎদারি নিয়ে থাকি। তারা বাইরে বেশী দামে বিক্রি করলে আমাদের কিছু করার নেই।’
নগরীর ময়লাপোতা সান্ধ্য বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী শহীদুল বলেন, ‘বাজারের সেরা মাল ক্রয় করে আমরা এখানে নিয়ে আসি। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির পর পরিবহন খরচ ও শ্রমিকের মূল্য বেড়েছে। সবকিছু মেইনটেইন করে আমাদের এই দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
গোলাম ছামদানি সাকিব বলেন, ‘এটা বড় ধরনের পুকুর চুরি। যাদের দেখার তার বিষয়টি দেখেন না। দেখলে আজ এ অবস্থা হতো না। আমাদের তো কিনে খাওয়ার ক্ষমতা আছে। আর যাদের নেই, তাদের কি অবস্থা?’
সোনাডাঙ্গা পাইকারী বাজারে কথা হয় আলী আহমদের সাথে। আগে তিনি নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে কাঁচামাল ক্রয় করতেন। সেখানে দাম বেশী রাখার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তিনি এ বাজার থেকে মালামাল ক্রয় করেন। বাজার তদারকির ব্যবস্থায় চরম অবহেলার কারণে আজ এ অবস্থায় পৌঁছেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

খুলনায় সবজি পাইকারি থেকে খুচরায় মূল্য বেড়ে দুই-তিনগুণ

আপডেট সময় : ০৮:২১:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২
আবু হেনা মুক্তি, খুলনা ব্যুরো :
খুলনায় পাইকার থেকে খুচরায় হাত বদলে দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা তরিতরকারি। সোনাডাঙ্গাস্থ ট্রাক টার্মিনালে কেসিসি পরিচালিত পাইকারী বাজারে খুলনাসহ আশপাশ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিভিন্ন ধরণের কাঁচা তরিতরকারি আসে। এখান থেকে বিভিন্ন জেলার বাজারগুলোতে সরবরাহ করা হয় শাক-সবজি। তবে বিশেষ সিন্ডিকেটের কারণে বাড়ছে এসব নিত্যপণ্যের দাম; কিন্তু নেই মনিটরিং বা তদারকি। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার প্রতিদিনের হিসাব মেলাতে পারছে না। সেইসাথে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছেন ভোক্তারা।
জানা গেছে, খুলনার সোনাডাঙ্গাস্থ ট্রাক টার্মিনালে দুই ধাপে কাঁচা তরিতরকারি আসে। ভোর থেকে রাত অবধি এখানে কাঁচা পণ্য কেনা-বেচা হয়ে থাকে। এখানে যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া ও খুলনার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কাঁচা পণ্য আসে। প্রতিদিনই কৃষকের মাঠ থেকে শীতকালীন সবজি বাজারে আসছে। বাহারি সব শাক-সবজিতে সেজে উঠেছে শহরের বাজারগুলো। কৃষকের উৎপাদিত এ সকল পণ্য ভোক্তা পর্যন্ত আসতে পাইকারী তিনহাত বদল হয়। বদলের ফলে বেড়ে যায় এ সকল পণ্যের মূল্য। কৃষকের কাছ থেকে ব্যাপারী আর ব্যাপারী থেকে পাইকার, সর্বশেষ খুচরা দোকানীর কাছে পৌঁছায় এসব কাঁচা পণ্য।
পাইকারী বাজারের বিভিন্ন আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজি প্রতি কেজি ফুলকপি ১০ টাকা, বাঁধাকপি ১৫ টাকা, ওলকপি ৮-৯ টাকা, মূলা ৪-৫ টাকা, পেঁয়াজের কালি ১০ টাকা, পালংশাক ৮ টাকা, লাল শাক ১০ টাকা, টমেটো মানভেদে ২৮-৪৫ টাকা, মটরশুটি ১০০ টাকা, ধনেপাতা ১৫ টাকা ও খেরাই ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পাইকারী বাজার থেকে খুচরা বাজারে হাত বদলেই দ্বিগুণ ও তিনগুণ দামে তা বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারী বাজার থেকে খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ২৫-৩০ টাকা, ওলকপি ২৫-৩০ টাকা, মূলা ২০ টাকা, পেঁয়াজের কালি ৩০ টাকা, পালং ও লাল শাক যথাক্রমে ২০-২৫ টাকা, টমাটো ৬০ টাকা, মটরশুটি ১২০ টাকা, খেরাই ৬০ টাকা ও ধনেপাতা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারী বাজারের ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, ‘এ বাজারে কৃষকের মাঠ থেকে কাঁচা পণ্যটি ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে তিন হাত বদল হয়। ব্যাপারীরা আমাদের ঘর ব্যবহার করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। প্রতি কেজিতে আমরা পাইকারদের কাছে ১ টাকা আড়ৎদারি নিয়ে থাকি। তারা বাইরে বেশী দামে বিক্রি করলে আমাদের কিছু করার নেই।’
নগরীর ময়লাপোতা সান্ধ্য বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী শহীদুল বলেন, ‘বাজারের সেরা মাল ক্রয় করে আমরা এখানে নিয়ে আসি। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির পর পরিবহন খরচ ও শ্রমিকের মূল্য বেড়েছে। সবকিছু মেইনটেইন করে আমাদের এই দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
গোলাম ছামদানি সাকিব বলেন, ‘এটা বড় ধরনের পুকুর চুরি। যাদের দেখার তার বিষয়টি দেখেন না। দেখলে আজ এ অবস্থা হতো না। আমাদের তো কিনে খাওয়ার ক্ষমতা আছে। আর যাদের নেই, তাদের কি অবস্থা?’
সোনাডাঙ্গা পাইকারী বাজারে কথা হয় আলী আহমদের সাথে। আগে তিনি নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে কাঁচামাল ক্রয় করতেন। সেখানে দাম বেশী রাখার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তিনি এ বাজার থেকে মালামাল ক্রয় করেন। বাজার তদারকির ব্যবস্থায় চরম অবহেলার কারণে আজ এ অবস্থায় পৌঁছেছে।