ঢাকা ১১:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কুয়াকাটায় উচ্ছেদের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৫:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪৬১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :

পর্যটন নগরী কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকায় বসবাসকারী চার শতাধিক পরিবারকে উচ্ছেদ পরিকল্পনার প্রতিবাদে শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ভূক্তভোগিরা। আগে পুনর্বাসন, পরে উচ্ছেদ এমন দাবীতে এ বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে এসব বসবাসকারীরা।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা বলেন, তারা ৫০-৬০ বছর ধরে বেড়িবাধেঁর বাহিরে বসবাস করে আসছে। হঠাৎ করে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের বাড়িঘর সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। কোন প্রকার আগাম নোটিশ না দিয়ে উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে বাধ্য হয়।

বিক্ষোভকারীদের দাবী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করলে তারা বাড়িঘর নিয়ে কোথায় গিয়ে থাকবেন। স্ত্রী সন্তান নিয়ে পথে বসতে হবে। তাই পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদ করলে তারা সর্বোচ্ছ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবেন। প্রয়োজন হলে তাদের জীবন দিয়ে দিবেন। এসময় বিক্ষোভকারীরা আরও বলেন, সরকার ২০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। আর আমরা এদেশের নাগরিক হয়ে কেন আশ্রয়হীন থাকবো এমন প্রশ্ন ছিল সরকারের কাছে তাদের। এসময় বিক্ষোভকারীরা পুনর্বাসণের ব্যবস্থা করার জন্য জেলা প্রশাসকসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানান। বিক্ষোভে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টের পুর্বদিকে বেরীবাধেঁর বাহিরে সরকারী জমিতে বসবাসকারী নারী শিশুসহ ৫ শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে।
জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পুর্বপাশে দুই কিলোমিটার এলাকার ৭৩ একর ভূমির মালিকানা দাবী নিয়ে সরকারের সাথে মনির আহম্মেদ ভূইয়া গং, সিরাজুল ইসলাম মিয়াজী গং এর সাথে ১৯৭২ সাল থেকে মামলা চলে আসছে। এ মামলায় কখনও সরকার পক্ষ আবার কখনও পাবলিকের পক্ষে রায় দেয় আদালত। ৫০ বছর ধরে এ মামলা চলে আসছিল। গত ১০ নভেম্বর ২০২২ ইং পটুয়াখালী জেলা জজ আদালত নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করলে জেলা প্রশাসক সরকারী জমিতে থাকা বাড়িঘর, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

জানা গেছে, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরীতে রূপান্তরের লক্ষ্যে সরকার মেঘা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নে মহা উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে কাজ করছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় কুয়াকাটায় বেড়ীবাধেঁর বাইরের সকল স্থাপনা সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ হাতে নেয়।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, কুয়াকাটায় বেড়িবাধেঁর বাহিরে সৈকত লাগোয়া দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সরকারী জমি। সরকারী জমি দীর্ঘ বছর ধরে ভূয়া মালিকানা দাবীতে ভোগদখল করে আসছিল কতিপয় অবৈধ বসবাসকারীরা। আদালত কর্তৃক মালিকানা দাবী নামা নিস্পত্তি হয়েছে। মালিকানা নিয়ে জটিলতা নিরসন হয়েছে। এই জমি এখন সরকারের। তাই সরকারী জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি আরও বলেন, সরকারী জমিতে যারা অবৈধভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে তাদের সরে যেতে হবে। এসব অবৈধ বসবাসকারীদের বাড়িঘর সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় দেয়া হয়েছে। প্রকৃত ভূমিহীনদের সরকার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবেন বলে জানান তিনি।

বা/খ:জই

নিউজটি শেয়ার করুন

কুয়াকাটায় উচ্ছেদের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৭:৫৫:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :

পর্যটন নগরী কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকায় বসবাসকারী চার শতাধিক পরিবারকে উচ্ছেদ পরিকল্পনার প্রতিবাদে শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ভূক্তভোগিরা। আগে পুনর্বাসন, পরে উচ্ছেদ এমন দাবীতে এ বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে এসব বসবাসকারীরা।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা বলেন, তারা ৫০-৬০ বছর ধরে বেড়িবাধেঁর বাহিরে বসবাস করে আসছে। হঠাৎ করে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের বাড়িঘর সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। কোন প্রকার আগাম নোটিশ না দিয়ে উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে বাধ্য হয়।

বিক্ষোভকারীদের দাবী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করলে তারা বাড়িঘর নিয়ে কোথায় গিয়ে থাকবেন। স্ত্রী সন্তান নিয়ে পথে বসতে হবে। তাই পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদ করলে তারা সর্বোচ্ছ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবেন। প্রয়োজন হলে তাদের জীবন দিয়ে দিবেন। এসময় বিক্ষোভকারীরা আরও বলেন, সরকার ২০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। আর আমরা এদেশের নাগরিক হয়ে কেন আশ্রয়হীন থাকবো এমন প্রশ্ন ছিল সরকারের কাছে তাদের। এসময় বিক্ষোভকারীরা পুনর্বাসণের ব্যবস্থা করার জন্য জেলা প্রশাসকসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানান। বিক্ষোভে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টের পুর্বদিকে বেরীবাধেঁর বাহিরে সরকারী জমিতে বসবাসকারী নারী শিশুসহ ৫ শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে।
জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পুর্বপাশে দুই কিলোমিটার এলাকার ৭৩ একর ভূমির মালিকানা দাবী নিয়ে সরকারের সাথে মনির আহম্মেদ ভূইয়া গং, সিরাজুল ইসলাম মিয়াজী গং এর সাথে ১৯৭২ সাল থেকে মামলা চলে আসছে। এ মামলায় কখনও সরকার পক্ষ আবার কখনও পাবলিকের পক্ষে রায় দেয় আদালত। ৫০ বছর ধরে এ মামলা চলে আসছিল। গত ১০ নভেম্বর ২০২২ ইং পটুয়াখালী জেলা জজ আদালত নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করলে জেলা প্রশাসক সরকারী জমিতে থাকা বাড়িঘর, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

জানা গেছে, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরীতে রূপান্তরের লক্ষ্যে সরকার মেঘা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নে মহা উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে কাজ করছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় কুয়াকাটায় বেড়ীবাধেঁর বাইরের সকল স্থাপনা সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ হাতে নেয়।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, কুয়াকাটায় বেড়িবাধেঁর বাহিরে সৈকত লাগোয়া দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সরকারী জমি। সরকারী জমি দীর্ঘ বছর ধরে ভূয়া মালিকানা দাবীতে ভোগদখল করে আসছিল কতিপয় অবৈধ বসবাসকারীরা। আদালত কর্তৃক মালিকানা দাবী নামা নিস্পত্তি হয়েছে। মালিকানা নিয়ে জটিলতা নিরসন হয়েছে। এই জমি এখন সরকারের। তাই সরকারী জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি আরও বলেন, সরকারী জমিতে যারা অবৈধভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে তাদের সরে যেতে হবে। এসব অবৈধ বসবাসকারীদের বাড়িঘর সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় দেয়া হয়েছে। প্রকৃত ভূমিহীনদের সরকার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবেন বলে জানান তিনি।

বা/খ:জই